আটজনের মূত্রপানের ঘটনা!

মুহাম্মদ আলী সিরিজ - ২৪

বিষয়:- আটজনের মূত্রপানের ঘটনা! 

🖋Author:- Aminur Rashid

____________________________________________________________________________




টেবিলের উপরে অগোছালো কিছু বই। অনেক ধরনের বইয়ে ঘিরা। সেই অগোছালো জ্ঞানের বইগুলির মধ্যে আছে নানান ক্যাটাগরির বই। 

কিছুটা একাডেমিক কিছুটা ইতিহাস History কিছুটা আবার নানান অল্প খানিক story 


এই সকল বইয়ের ভিড়ে আছে কিছু বিশেষ মস্তিষ্কের মানুষের বই। যারা সব কিছুকেই কাকতালীয় ভাবে। তবে নিজের হালকা জ্বরের জন্যও কারণ খোঁজে,, 


যে বেশি গরমের জন্য। নাহলে বেশি ঘেমে যাওয়ার কারণে। ও হো সেদিন বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে। 

নাহ ভাইরাস জ্বর বোধহয়..... 


যাইহোক, বইগুলো গোছাতে লাগলাম। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি ভালোই কড়া রোদ। 


চেয়ারে বসলাম। বইগুলির ভিড়ে একটি বই হাতে নিলাম। কফিতে চুমক দিয়ে বই পড়া শুরু করলাম। 


কয়েক পৃষ্ঠা পড়তে পড়তে হঠাৎ যে আসরের নামাজের সময় চলে এলো টেরই পেলাম না। 


তখনই বই পড়ার ইতি টানলাম। 

ওজু করতে গেলাম। আমি আবার অনেক সময় বাসা থেকেই ওজু করে যাই। 


যাইহোক, সালাতের জন্য যাচ্ছি, সিড়ি দিয়ে নামার পর চোখের সামনে দেখলাম আরিফ আর সুরুজ এর আগমন। সালাম বিনিময়ের পর, 


আমি বললাম,,, 


মুহাম্মদ আলী:- কিরে হঠাৎ এদিকে। 


আরিফ:- এইতো দেখা করতে আসলাম। 


সুরুজ:- আমি আসলাম তোর কাছ থেকে একটা বই নিতে। 


মুহাম্মদ আলী:- ওহ, আচ্ছা নিস।


আরিফ:- হুম নে। ফ্রি লাইব্রেরি, হা হা


মুহাম্মদ আলী:- হুম। পড়া শেষ হলে ফিরিয়ে দিলেই হবে। জ্ঞান অর্জনে নাই কোন বাঁধা। ওহো, নামাজের সময় হয়ে গিয়েছে। নামাজ পড়ি তারপর কথা বলবো নাহয়।


আরিফ:- বই কাউকে দিলে সেটা নেওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার। 


মুহাম্মদ আলী:- তা সত্য। হা হা


[ মুহাম্মদ আলী আর আরিফ সামনের মসজিদে নামাজে চলে গেলো। আর সুরুজ ফোনে ব্যাস্ত হয়ে পরলো ]


নামাজ শেষে,,, 


আরিফ:- কিরে সুরুজ, নামাজে আসলি না? 


সুরুজ:- এমনেই। 


[ সুরুজ মুহাম্মদ আলীর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো ]


সুরুজ:- একটু আগে অজয় ফোন দিলো। তোর খোঁজ নিলো। 


মুহাম্মদ আলী:- তাই নাকি। কারণ? 


সুরুজ:- আরিফের নামে নাকি কি একটা বলবে। 


আরিফ:- আমার নামে আবার কি বলবে? আমার সাথে কি ওর? 


[ মুহাম্মদ আলী আরিফকে লক্ষ্য করে বলল ]


মুহাম্মদ আলী:- কোন ঝামেলা হয়েছে নাকি তোর সাথে ওর? 


আরিফ:- না তো ঠিক মনে পড়ছে না। 


মুহাম্মদ আলী:- মনে করো। 


আরিফ:- ওহো, মনে পড়ছে, আমি একটা ভিডিও শেয়ার দিছিলাম ওর ইনবক্সে। 


মুহাম্মদ আলী:- কিসের ভিডিও? 


আরিফ:- একটা নিউজের ভিডিও, হিন্দুদের গো মূত্র পান করার আর গোবর খাওয়ার।


মুহাম্মদ আলী:- এসব না দিলেও পারতি। 


আরিফ:- দিতাম না। আসলে অজয় নিজেই আমাকে একটা ভিডিও দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, গরুকে রুটি খাওয়ানোর মানুষ আর গরুকে রুটির সাথে খাওয়া মানুষ কখনো ভাই ভাই হতে পারে না। 


তাই আমি ওকে দেখালাম যে আমাদের মধ্যে আরও পার্থক্য আছে। আমরা গরুর মূত্র খাইনা গরুর দুধ খাই। আর গরুর গোবর খাইনা, মাংস খাই। 


সুরুজ:- রাখ তগো ইস্টোরি, ওই আলী আমি যে বই এর কথা বলেছি ওইটা দে। 


মুহাম্মদ আলী:- ওহ, ভুলেই গিয়েছিলাম। চল বাসায় গিয়ে দিচ্ছি। 


[ আরিফ, মুহাম্মদ আলী, সুরুজ বাসায় সেই টেবিলে চলে গেলো। আর সেখান থেকে সুরুজ তার বইটা হাতে নিলো। এমন সময় সুরুজের আবার ফোন বাজতে লাগলো। সুরুজ ধরলো না, এভাবে দুই-তিনবার বাজলো। ]


মুহাম্মদ আলী:- ফোন ধর, জরুরি হতে পারে। 


সুরুজ:- Unknown number ধরার দরকার নেই। মনোযোগ দিয়ে পড়তে দে। 


আরিফ:- এমন ভাবে পড়ছে মনে হচ্ছে ওর পরীক্ষার বই পড়তেছে। হা হা


সুরুজ:- আরিফ ফোনটা ধরে দেখ। সমস্যা নেই। 


[ আরিফ ফোনটা ধরলো। ফোনটা করেছে বিপ্লব। ]


আরিফ:- আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন? 


বিপ্লব:- মানেহ? সুরুজ তোর কি মাথা গেছে? তুই কবের থেইকা আবার সালাম দেছ? তুই না নাস্টিক?


আরিফ:- জ্বী না, আমি নাস্টিক ও না আর নাস্তিক ও না। আমি আরিফ, 


বিপ্লব:- ওরে আরিফ নাকি তুই। অজয় এর সাথে ফাজলামি করস। 


আরিফ:- কিছুই করি নাই। ওর মেসেজ দেখো। যাচাই করে বলতে আসো। 


বিপ্লব:- তাই নাকি। তুই কোথায়? আমি অজয়কে নিয়ে আসবো। 


আরিফ:- আমি মুহাম্মদ আলীর বাসায়। সুরুজ ও এখানে। 


বিপ্লব:- ওই ধর্মব্যবসায়ী এর বাসায় হা হা। 


আরিফ:- তুমি অধর্ম ব্যবসায়ী নাকি? 


বিপ্লব:- হাপ, আমি ওর বাসার নিচে একটা রেস্টুরেন্টে বসবো ওখানে আসিস। 


আরিফ:- আসার চেষ্টা করবো। ইনশাআল্লাহ


[ ফোন সমাপ্ত ]


মুহাম্মদ আলী:- এতো লম্বা আলাপ। 


আরিফ:- বিপ্লব তোর বাসার নিচে আসবে। আমাকে বলল দেখা করতে। 


মুহাম্মদ আলী:- ওহ,


আরিফ:- তোরা সহ একসাথে যাবো। 


মুহাম্মদ আলী:- আচ্ছা। 


[ বিপ্লব নিচের একটা কফির দোকানে বসে আছে। ফোন করার পরে আরিফ, মুহাম্মদ আলী আর সুরুজ চলে গেলো একই দোকানে। চেয়ারে বসতে না বসতেই,, ]


বিপ্লব:- কিরে আরিফ, সুরুজকে আনছোছ ভালো কথা। ওরে আনলি কেন? 


মুহাম্মদ আলী:- ওহ, সমস্যা হলে চলে যাই। 


বিপ্লব:- হুম যাও। অন্য টেবিলে গিয়ে বসো। দরকার হলে ডাকবো। 


মুহাম্মদ আলী:- ওহ, ওকে No problem


[ এই বলে মুহাম্মদ আলী পাশের টেবিলে চলে গেলো। একটা কফি অর্ডার দিলো। ]


বিপ্লব:- অজয়, বল আরিফরে কি বলবি। 


অজয়:- তুই আমাকে গোমূত্র শিখাছ? উটমূত্র খাও তো ভালোই। 


আরিফ:- সুন্দর ভাবে কথা বলো। নাহয় আমি চললাম। 


সুরুজ:- না। যাওয়ার দরকার নেই। অজয় তুই সুন্দর ভাবে কথা বল। 


অজয়:- ইসলামে তো উট মূত্র পান করা হয় হা হা। এটার জবাব কি দিবি? 


আরিফ:- ওয়েট, মুহাম্মদ আলীকে বলি। 


[ আরিফ, মুহাম্মদ আলীকে ইশারা করে আসতে বলল। সেও চলে আসলো। অতঃপর,, ]


মুহাম্মদ আলী:- হুম, বল।


আরিফ:- অজয় এর প্যাচাল টা একটু শেষ কর। 


মুহাম্মদ আলী:- আচ্ছা বল। মাগরিব পর্যন্ত আছি। 


অজয়:- তোমরা যে গোমূত্র এর কথা বলো। তোমরা নিজেরা জানো? তোমাদের ইসলাম তো উট মূত্র খেতে বলে। 


[ মুহাম্মদ আলী একটু নড়েচড়ে বসলো। কফি তে চুমক দিয়ে শান্ত ভাবে বসে রইলো। আর অজয় তার ফোন থেকে একটা সফটওয়্যার বের করে একটা হাদিস দেখিয়ে পড়তে লাগলো ]


অজয়:- হাদিসে বলা আছে,,, 


মুহাম্মদ আলী:- একটু থামো।


অজয়:- কেন? 


মুহাম্মদ আলী:- প্রথমে কয়েকটা প্রশ্ন করতে চাই তোমাকে। 


অজয়:- আসলাম আমি জিজ্ঞাসা করতে তুমি উল্টো আমাকে প্রশ্ন করবে? 


মুহাম্মদ আলী:- আরে,, এ ব্যাপারেই করবো। 


অজয়:- (নিশ্চুপ) 


মুহাম্মদ আলী:- প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। কোন রকম ইয়ে মানে মানে বলা যাবে না। উত্তর দিবে ব্যাখ্যা করা লাগলে তাও করবে। 


অজয়:- হুম বলো। 


মুহাম্মদ আলী:- প্রথম প্রশ্ন,,, 


নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কি নিজে কখনো উটের মূত্র খেয়ছেন?


[ সবাই চুপচাপ, একদম নিরবতা, সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছে। ]


অজয়:- (মুখটা ফ্যাকাশে করে) ইয়ে মানে। 


মুহাম্মদ আলী:- না না। কোন মানে মানে হবে না। অভিযোগ করেছো তো উত্তর দেও। ব্যাখ্যা লাগলে দেও। পর্যাপ্ত সময় আছে সমস্যা নেই। 


অজয়:- ইয়ে মানে নাহ। 


মুহাম্মদ আলী:- ভালো কথা। দ্বিতীয় প্রশ্ন,,, 


নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কি তার সাহাবীদের উট মূত্র পান করতে বলেছেন? 


অজয়:- ইয়ে মানে,, না। 


মুহাম্মদ আলী:- শেষ প্রশ্ন,, 


নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কি আমাদেরকে উটের মূত্র পান করার নির্দেশ বা আদেশ দিয়েছেন?? 


অজয়:- (হতাশ হয়ে) নাহ.... 


মুহাম্মদ আলী:- এটাই তো। এর পরেও যারা এসব বলে নিজেদের গো মূত্রের দোষ ঢাকার জন্য। তারা যে আসলেই কত জ্ঞানের সাগর তা আশা করি বুঝতে পেরেছো।


এই তিনটি প্রশ্ন করে প্রথমে আমরা একটা বিষয় ক্লিয়ার হলাম যে। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) না নিজে পান করেছেন না সাহাবীদের করতে বলেছেন। না মুসলিমদের পান করতে বলেছেন। 


এবার তুমি তোমার কাঙ্ক্ষিত হাদিসটি পেশ করতে পারো। 


অজয়:- (অনেকটা হতাশ হয়ে) ইয়ে মানে ওই হাদিসটা। আচ্ছা শুনো,,, 


হাদিসে বলা হয়েছে,, 


আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত যে, "উকল" গোত্রের আটজনের একটি দল রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলো। তারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ইসলামের উপর বাই’আত করল। অতঃপর মদীনার আবহাওয়া তাদের প্রতিকূল হওয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অভিযোগ করল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করতে পারবে? তখন তারা বলল, জী- হ্যাঁ। এরপর তারা বের হয়ে গেলে এবং এর (উটের) মূত্র ও দুগ্ধ পান করল। এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল্.... 


মুহাম্মদ আলী:- জানি এই টাইপের হাদিস গুলি বলবে। 


যাইহোক, মূলকথায় আসি, 


নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে খেয়েছেন? নাহ, তার সাহাবীরাও না বরং যারা খেয়েছে তারা ছিলো খারাপ লোক। তারা এসবে নিশ্চই অভ্যস্ত। এই লোকগুলো খারাপ। এরা অসুস্থ হয়ে আল্লাহর রাসুলের কাছে অভিযোগ করলো। এরা যে সুস্থ হয়ে কি করেছে তা তো পরেই বলছি। আগে বলি তারা যে এসব খেতো তার নমুনা। 


আল্লাহর রাসুল যখন তাদের বলেছেন,, 


"তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করতে পারবে?"


রাসুল (সাঃ) এটা জিজ্ঞেস করেছিলেন। তখন তারা বলেছে পারবে। তাদের কোন সমস্যা নেই। 


এখান থেকেও দেখা যায় যে ওদের ইচ্ছা আছে বলেই। কারণ নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ওদেরকে আদেশ করে নি। আর ওরা না ছিলো সাহাবী না ছিলো কোন ভালো ব্যাক্তি। 


ওদেরকে বলার পর। ওরা পান করলো। সুস্থতা বোধ করলো। 


এখন কথা হলো, উটের মূত্র কি তাহলে পান হবে? 


না কখনোই না কারণ রাসুল নিজে বা আমাদের বলেন নি। এমন কি তাদেরকে শুধু জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। আর সেই মুহূর্তে মরুভূমি তে উট ই ছিলো


আর রাসুল তাদেরকে পান করিয়ে দিলেও ভালো হতো। কারণ এমন নিকৃষ্ট মানুষদের মূত্রপান করাটাই ঠিক। 


তবে হাদিস থেকে দেখা যায় রাসল (সাঃ) তাদের আদেশ নয় বরং জিজ্ঞেস করেছিলো তারা পান করে ফেলল। তারা নিশ্চই এসবে অভ্যস্ত বা তাদের এসবে কিছু আসে যায় না। 


তাই তারা খেয়েছে। যারা মূত্রপান করেছে তারা না ছিলো নবী না ছিলো সাহাবী। 


তারা রাসুলের কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করলো। তারা যখন অসুস্থ হলো তখন আসে-পাশে উট থাকায় উটের মুত্র ও দুধ খাবে নাকি জিজ্ঞাসা করা হলো। 


তারা কোন সংকোচন বোধ না করেই পান করলো। তাদের কিছুই আসে যায় না। 


সুস্থ হওয়ার পরে তারা ইসলাম পরিত্যাগ করলো। 

এমনকি তারা রাখালকে নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করে উট গুলি নিয়ে যায়। 


এদের মত নিকৃষ্ট দের উটের মূত্র খাওনাটাও কম। আল্লাহ এদের মত নিকৃষ্টদের সিফা-সুস্থতা রেখেছেন মূত্রের মধ্যেই। 


[ সবাই মনযোগ দিয়ে শুনছে। মুহাম্মদ আলী কফিতে চুমক দিয়ে আবার বলতে লাগলো ]


মুহাম্মদ আলী:- এদের ছাড়া আর কোন হাদিস পাওয়া যাবে না যেখানে কোন ঈমানদার মুসলিম কিংবা কোন অসুস্থ মুসলিমকে তিনি উট মূত্র পান করতে বলেছেন কিংবা নিজে করেছেন। 


যদি উট মূত্র এতই ভালো তাহলে সাহাবীরাও পান করতো। 


এই মূত্র টা শুধুমাত্র ওইসব নিকৃষ্টরাই পান করেছে যারা এসবে অভ্যস্ত তাদেরকে শুধু জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো তারা রাজি হয়ে পান করলো পরে ইসলাম ত্যাগ করলো আর রাখালকে হত্যা করলো, উট নিয়ে পালালো। 


এখন হয়তো বলতে পারো যে, সবই মানলাম তবে রাসুল (সাঃ) কেনই বা মূত্রপানের কথা বলল। 


আসলে একটা কথা মাথায় রাখা উচিত। 


এমন কোন সিচুয়েশন বা পরিস্থিতি যদি আসে যেখানে হারাম ছাড়া কোন বিকল্প ঔষধ নেই তখন সেই হারাম ঔষধটাই খাওয়া জায়জ। 


সেই নিকৃষ্ট লোকদের কি রোগ হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। তাদের রোগ এবং তাদের চালচলন অনুযায়ী তাদেরকে বলা হয়েছিলো তারা তা পান করেছে। কোন বাধ্য করা বা আদেশ নয়।


আর যদি বলি, ইসলামে তো মূত্র পান করা তো দূরে থাক। 


মূত্র এতটাই অপবিত্র নাপাক যে মূত্রের ছিটা সেটা হোক মানুষের বা পশুর। সেই ছিটা থেকে তুমি নিজেকে না বাচালে তোমার কবরের আজাব আছে। 


আবু হুরায়রাহ্ (রা:) থেকে বর্ণিত

 «اسْتَنْزِهُوا مِنَ الْبَوْلِ فَإِنَّ عَامَّةَ عَذَابِ الْقَبْرِ مِنْهُ»

অর্থাৎ, “তোমরা পেশাবের ছিটা হতে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখো। কেননা, সাধারণত: কবরের ‘আযাব এর কারণেই হয়ে থাকে।” (বুলুগুল মারাম, হাদিস – ১০২) 


সুতরাং, নিকৃষ্ট লোকদের নিজ ইচ্ছায় মূত্র সেবন নিজ ইচ্ছায় উট চুরি আর নিজ ইচ্ছায় নির্মম হত্যা। 


এইসব টেনে ইসলামে উটের মূত্রের কথা বলাটা আসলেই ঠিক না। 


ইসলামে মূত্রের জন্য কঠোর সতর্কতা রয়েছে। 


ওদের ক্ষেত্রে হয়তো আল্লাহর রাসুল জানেন যে ওরা খারাপ তাই ওদের উট মূত্র এর কথা বলেছেন। কিংবা ওদের এমন অসুখ ছিলো যার ঔষধ তখন সেই জায়গায় ছিলো না উট ব্যাতীত তাই তিনি বলেছেন যে পারবে নাকি পান করতে। 


তারা নির্দ্বিধায় পান করেছে। 


আশা করি বুঝতে পেরেছো। 


[ সবাই মনোযোগ দিয়ে সব শুনলো। ]


অজয়:- (নিরাস হয়ে) ওহ। 


মুহাম্মদ আলী:- যেমন, রেশমি কাপড় ইসলামে পড়া একদম হারাম। আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেব স্বর্ণ ও রেশমি কাপড় পুরুষদের জন্য হারাম। 


কিন্তু চর্মরোগের এক ব্যাক্তিকে রেশমি পড়ার কথা বলেছেন।


"আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবায়র ইবনু আওয়াম ও আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) কে তাদের চর্ম রোগের দরুণ রেশমী কাপড় পরিধানের অনুমতি দিয়েছেন। অথবা তিনি বলেন, তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছিল।"


( সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)  ৩৮/ পোশাক ও সাজসজ্জা (كتاب اللباس والزينة) হাদিস নং ৫২৫৭ ) 


এর মানে কি এখনো রেশমি কাপড় পড়বো চর্মরোগ হলে। 


নাহ, কখনোই না। বুঝতে হবে যখন হারাম ছাড়া আপনি নিরুপায় তখন সেটাই আপনাকে ব্যাবহার করতে হবে। 


সেই আটজন ব্যাক্তির যে রোগ ছিলো সেটা কি রোগ আমরা জানি না। সেই ক্ষেত্রে তাদেরকে বলা হয়েছে। মূত্র হারাম এবং তার ছিটাই ভয়াবহ আযাবের কারণ। তবে যেহেতু হারাম ছাড়া নিরুপায়। সেহেতু তা করা যাবে। 


এই আটজনের এক অসুখের ক্ষেত্রেই মূত্র এর কথা বলা হয়েছে এ ছাড়া আর কোন হাদিস নেই এতো এতো রোগ অসুস্থতা একটা হাদিসেও মূত্রকে পান করার কথা পাওয়া যাবে না। 


সুতরাং যখন কোন কিছুর হালাল নেই। যখন হারাম ছাড়া আপনি নিরুপায়। তখন তার ব্যাবহার করতে পারবেন। ( সূরা আনআম আয়াত:- ১১৯ ) 


আর আরেকটা কথা। এত কিছুর পরও উটের মূত্র কেন বললেন তার কারণ হতে পারে যে এতেই তাদের সুস্থতা ছিল। বা আল্লাহ তায়ালার মাধ্যমে রাসুল (সাঃ) জানেন যে এরা নিকৃষ্ট, ইসলাম ত্যাগ করবে তাই তাদেরকে এই ট্রিটমেন্ট দিয়েছেন। 


কারণ এ ছাড়া এমন আদেশ আর পাওয়া যাবে না। কত রোগের এমন হাদিস আছে কোথাও মূত্র পাবেন না। 


তবে এই নিকৃষ্টদের সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) অবগত ছিলেন বিধায় এদের এই ট্রিটমেন্ট তিনি দিয়েছেন। আর আল্লাহ নিজেই এই উটের মূত্রের ভিতরেই ওদের মত নিকৃষ্ট লোকদের সুস্থতা রেখেছেন। 


[ আকাশ লাল হয়ে গেছে। আজানের সময় বুঝি চলে এলো। মুহাম্মদ আলী পানি পান করে বলতে লাগলো। ]


মুহাম্মদ আলী:- আশা করি বুঝতে পেরেছো। ওহ হ্যা, এবার হয়তো ভাববে যে যদি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এই নিকৃষ্ট লোকদের কাজ সম্পর্কে জেনেই থাকেন তাহলে শুরুতেই কেন মারলেন না? 


আসলে এমন অনেক ঘটনা আছে যেখানে সব জানা থাকা সত্ত্বেও আগে পদক্ষেপ নেয়া হয়না। 


আরেহহ, আল্লাহ তায়ালাই তো জানেন কারা পৃথিবীতে কি কি কাজ করবে তার পরেও তিনি পৃথিবীতে পরীক্ষা করতে পাঠিয়েছেন। যেনো তারা দোষারোপ না টানতে পারে। 


আচ্ছা। অনেক বকবক করলাম। এবার সলাতের সময়। 


[ আজানের শব্দ চলে এলো,, মুহাম্মদ আলী, আরিফ চলে গেলো সালাতের উদ্দেশ্যে। অজয় বিপ্লব আর সুরুজ চুপচাপ কফির দোকানটার বাইরে বসে রইলো। ]


বিপ্লব:- কিরে অজয়। বাড়ি যাবি না? 


অজয়:- (ফ্যাকাশে চেহারা) হ্যা। 


বিপ্লব:- তো চেহারা এত শুকনো হয়ে গেলো কেনো। 


অজয়:- এমনি। 


[ কিছুক্ষণ পর ]


সুরুজ:- ওইযে মসজিদ থেকে বের হয়েছে। ওইতো এদিকেই আসছে। 


মুহাম্মদ আলী:- কিরে তোরা এখনও দাড়িয়ে আছিস। কথা কি শেষ হয়নি? 


সুরুজ:- ওই আটজনের হত্যাকান্ড আর তাদের শাস্তির ঘটনা তো কিছু বললি না। 


মুহাম্মদ আলী:- শুক্রবার বিকেলে যখন গল্প করবো তখন মনে করিয়ে দিস, এখন বাসায় যাবো। 


আরিফ:- ওহ, আরেকটা কথা মুহাম্মদ আলী, হিন্দুধর্মে গো মূত্র সম্পর্কে কি বলা হয়েছে সেটা একটু বলো। আমি তো আবার তেমন জানি না। 


[ অজয় আর বিপ্লব থমকে দাঁড়ালো ]


মুহাম্মদ আলী:- কি দরকার এসব নিয়ে কথা বলার। 


অজয়ঃ আমাকে বলতে দেও। 


মুহাম্মদ আলীঃ হুম আর কি বলবে? 


অজয়ঃ কুরআনেই স্পষ্ট উট মূত্র পানের কথা বলা হয়েছে। 


মুহাম্মদ আলীঃ তাই নাকি? বলেন কোথায় আছে। 


অজয়ঃ বলছি বলছি মোবাইলে রেফারেন্স টা আছে। 


মুহাম্মদ আলীঃ হুম দেও। 


অজয়ঃ পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,,,,


[২৩:২১] আল মুমিনূন

وَإِنَّ لَكُم فِي الأَنعامِ لَعِبرَةً نُسقيكُم مِمّا في بُطونِها وَلَكُم فيها مَنافِعُ كَثيرَةٌ وَمِنها تَأكُلونَ

আর নিশ্চয় গবাদিপশুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। তাদের পেটে যা আছে তা থেকে আমি তোমাদেরকে পান করাই। আর এতে তোমাদের জন্য প্রচুর উপকারিতা রয়েছে এবং তা থেকে তোমরা খাও।


মুহাম্মদ আলীঃ হুম। 


অজয়ঃ এই আয়াতে বলা হয়েছে চতুষ্পদ যন্তুর পেটের যা আছে তা হতে পান করো। 


আর আমরা জানি যে স্তনে দুধ থাকে। পেটে জল বা মূত্র থাকে। সুতরাং কুরআনও বলছে মূত্র পানের কথা। 


আরিফঃ মূত্র শব্দটাই নাই। হা হা


অজয়ঃ কি হলো উত্তর দেও মুহাম্মদ আলী। আমার আবার সময় নেই। 


মুহাম্মদ আলীঃ হুম শান্ত হও। বলছি, কুরআনে এই আয়াতে কোন ভাবেই মূত্র এর কথা বলে নি। আর মূত্র হালাল হলে স্পষ্ট ভাবেই অনেক বর্ণনা পাওয়া যেতো কুরআন ও হাদিসে। যতইহোক যে আয়াত দিয়েছো তা নিয়েই বলি। 


অজয়ঃ হুম হুম বলো বলো। 


মুহাম্মদ আলীঃ যে আয়াত থেকে তুমি প্রমাণ করতে চাচ্ছো এখানে গরুর মূত্র পান। যা পুরাই তোমার মুখের কথা। 


আল্লাহ তায়ালা কুরআনের আরেক আয়াতেও বলেছেন পেটের কথা এবং কি পান করান তাও স্পষ্ট ভাবে তিনি বলে দিয়েছেন। 


[১৬:৬৬] নাহল


وَإِنَّ لَكُم فِي الأَنعامِ لَعِبرَةً نُسقيكُم مِمّا في بُطونِهِ مِن بَينِ فَرثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خالِصًا سائِغًا لِلشّارِبينَ


আর নিশ্চয় চতুষ্পদ জন্তুতে রয়েছে তোমাদের জন্য শিক্ষা। তার পেটের ভেতরের গোবর ও রক্তের মধ্যখান থেকে তোমাদেরকে আমি দুধ পান করাই, যা খাঁটি এবং পানকারীদের জন্য স্বাচ্ছ্যন্দকর।


আলহামদুলিল্লাহ। কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে পেটে গোবর ও রক্তের মধ্যখান থেকে তিনি মূত্র নয় দুধ পান করান। 


অজয়ঃ (নিশ্চুপ) 


বিপ্লবঃ এটা কি বৈজ্ঞানিক ভাবে সত্য? 


[ মুহাম্মদ আলী তার মোবাইল থেকে তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে ঠু মারলো এরপর বলতে লাগলো ]


মুহাম্মদ আলীঃ গরু যখন ঘাস খায় তখন তা ৪ টি পথে গমন করে যা হলো, 


Rumen

Reticulam

Omasum

Abomasum


এরপরে খাদ্যর মধ্যে থাকা ভিটামিন , মিনারেলস , পানি , কার্বোহাইড্রেড , ফ্যাট ইত্যাদি দেহের ( Bloodstream ) তথা রক্তপ্রবাহ বা রক্ত স্রোতের এর সাথে মিশে যায় । এই রক্ত প্রবাহ যখন দেহের প্রাসঙ্গিক অঙ্গ বা বিশেষ অঙ্গে সঞ্চালিত হয় । অন্যান্য প্রাসঙ্গিক অঙ্গ বা বিশেষ অঙ্গের মত এটি গাভীর ( Milk Gland ) এর সংস্পর্শে আসে। এভাবে এত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে দুধ উৎপন্ন হয় । পক্ষান্তরে যেসকল ঘাস বা চারা হজম হয় না 

সেগুলো গোবরে পরিণত হয় । [ অপবিজ্ঞানের অ্যালেগেশন ]


আলহামদুলিল্লাহ। একই সাথে এটা কোরআনের অলৌকিকতা প্রমাণ করে। 


অজয়ঃ ইয়ে মানে। 


মুহাম্মদ আলীঃ আর হিন্দুইজমে মনুস্মৃতিতে বলা হয়েছে,,, 


Manusmriti 11/213


গোমুত্র, গোবর, দুধ-দই, ঘি এবং কুশোদক এগুলো মিশিয়ে একদিন খেয়ে থাকতে হবে,

সেদিন আর অন্য কিছু খাওয়া চলবে না এবং পরের দিন উপবাস করতে হবে!


[ সবার প্রস্থান ]

Post a Comment

0 Comments