নবী মোহাম্মদ নিজেই কি সমকামী ছিলেন? (নাউজুবিল্লাহ্)



প্রশ্নঃ- নবী মোহাম্মদ নিজেই কি সমকামী ছিলেন? (নাউজুবিল্লাহ্)
লিখেছেন:- নয়ন চৌধুরী
=============================

জবাবঃ-
********
অভিযোগকারী কোরআন ও হাদিস থেকে ৮টি প্রমাণ ও যুক্তি দিয়েছে। আমি সে সব মিথ্যাচারের প্রমাণ দিয়ে  যুক্তি খন্ডন করলাম। 

১। 
বাচ্চাদের আদরের সময় তাদের চুমু দেয়াটা স্বাভবিক। কিন্তু তাদের জিহবা বা ঠোঁট চোষাটা অস্বাভাবিক নয় কি? নবী মোহাম্মদ তাঁর নাতি হাসানের ঠোট ও জিহবা চুষতেন। (Musnad Ahmad, Hadith number: 16245)

জবাবঃ-
*******
ইমাম বুখারি (রহ.) সাহাবী হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, একদিন রাসুল (সা.) নিজ নাতি হাসান (রা.)কে চুমু খেলেন। সে সময় তাঁর কাছে আকরা বিন হারেস উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, আমি দশ সন্তানের জনক। কিন্তু আমি কখনও তাদের আদর করে চুমু খাইনি। তখন মহানবী (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘যে দয়া করে না, তার প্রতিও দয়া করা হয় না’। (বুখারি: ৫৬৫১)।

এই হাদিসে বাচ্চাদের আদর করতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনায় দেখাযায় রাসুল(সাঃ) শিশুদের অত্যন্ত স্নেহ ও আদর করতেন এবং অন্যদেরও স্নেহ ও আদর করার জন্য নসিহত করতেন। তাঁর এই মহৎ গুণ নিয়ে চলছে তাদের মিথ্যাচার!!!

আর কত নীচে নামবে মূত্রমনারা?

২।
 জান্নাতের এক ধরণের নিয়ামত হিসেবে কিশোরদের কথা বলা হয়েছে। "সুরক্ষিত মুক্তাসদৃশ কিশোরেরা তাদের(জান্নাতিদের) সেবায় ঘুরাফেরা করবে।" উক্ত আয়াতের শুধু মাত্র কিশোর জান্নাতিদের সেবায় নিযুক্ত থাকবে সেটা বলা হলে কোনো সমস্যা ছিলো না। কিন্তু যখনই বলা হবে 'ভার্জিন ও মুক্তার ন্যায় ছেলেপেলে' তখনই বিষয়টা যৌনতার দিকে ইঙ্গিত করে। (কোরান সূরাঃআত-তুর, আয়াতঃ ২৪)

জবাবঃ 
আয়াতটি দেখুন--

﴿ وَيَطُوۡفُ عَلَيۡهِمۡ غِلۡمَانٌ لَّهُمۡ كَاَنَّهُمۡ لُؤۡلُؤٌ مَّكۡنُوۡنٌ‏﴾

 

 তাদের সেবার জন্য সেসব বালকেরা ছুটাছুটি করতে থাকবে যারা কেবল তাদের জন্য নির্দিষ্ট হবে তারা এমন সুদর্শন যেন সযত্নে লুকিয়ে রাখা মোতি।

এখানে তিনি যেভাবে দিয়েছে আয়াতটি কি সে অর্থ বহন করে?

৩।
 নবী মোহাম্মদ আয়েশার জামা পরিধান করতেন। কারণ তার ভাষ্যমতে তিনি আয়েশা ব্যাতিত অন্য কারো জামা পরিহিত অবস্থায় থাকলে তিনি অনুপ্রেরণা পান না। একজন মানুষ কোনো মহিলার জামা পরিহিত অবস্থায় বসে থাকলে তাকে আর কি বলা যায়? (Sahih al-Bukhari, Hadith Number 2393)

জবাবঃ
*******
দেখুন হাদিসে কি বলেছে---

 মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাদর গায়ে দিয়ে সাদাত আদায় করলেন। চাঁদরটি ছিল কারুকার্য খচিত। তিনি কারুকার্যের দিকে এক দিকে তাকালেন, তারপর সালাম ফিরিয়ে বললেনঃ এ চাদরটি আবূ জাহমের কাছে নিয়ে যাও। কারণ এখনই তা আমার সালাত (নামায/নামাজ) থেকে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে। আর আবূ জাহম ইবনু হুযায়ফার আনবিজানিয়্যা (কারুকার্য বিহীন চাদর)-টি আমার জন্য নিয়ে এসো। সে হচ্ছে আদি ইবনু কাব গোত্রের লোক।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) http://www.hadithbd.com/share.php?hid=6045

আচ্ছা, স্ত্রীর চাদর পরিধান করা কি অপরাধ? আমাকে কেউ বুঝিয়ে দেন প্লিজ!!!

৪। 
মোহাম্মদ যাহীর নামক সাহাবীকে পেছন থেকে অস্বাভাবিক ভাবে জড়িয়ে ধরেছিলেন এবং যাহির বুঝতে না পেরে বলে উঠেছিলেন, "ছড়ো আমাকে, তুমি কে?" কিন্তু যখনই সে বুঝতে পারে এটা নবী মোহাম্মদ সে আর কিছুই বলে নি। 
উক্ত যাহীর নামক সাহাবীই সর্বদা বলে বেড়াতেন, "নবী আমাকে ভালোবসেন!" সেই ভালোবসাটা কেমন সেটা আশাকরি পাঠক বুঝতেই পারছেন। (Musnad Ahmad 12237)

জবাবঃ মূল হাদিস খানা দেখুন---
*******************************
. আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। যাহির (ইবনে হিযাম আশজায়ী বদরী) নামে এক বেদুঈন প্রায়ই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাদিয়া দিত। যখন সে চলে যেতে উদ্যত হতো তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, যাহির আমাদের পল্লিবন্ধু, আমরা তার শহুরে বন্ধু। সে কদাকার হলেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ভালোবাসতেন। একবার সে বেচাকেনা করছিল আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অলক্ষ্যে পেছন দিক থেকে ধরে ফেললেন। তারপর সে বলল, কে? আমাকে ছেড়ে দাও! দৃষ্টিপাত করতেই সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখে তাঁর পিঠ আরো নৰী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বুকের সাথে মিলালো। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ গোলামটিকে কে ক্রয় করবে?

যাহির বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে বিক্রি করে কেবল অচল মুদ্ৰাই পাবেন। এরপর তিনি বললেন, কিন্তু তুমি আল্লাহর নিকট অচল নও। অথবা তিনি বলেছেন, আল্লাহর নিকট তোমার উচ্চমর্যাদা রয়েছে।[1]

[1] মুসনাদে আহমদ, হা/১২৬৬৯ সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৫৭৯০ বায়হাকী, হা/২০৯৬১; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬০৪; মুসনাদুল বাযযার, হা/৬৯২২। 
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) 
ব্যাখ্যাঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পেছন থেকে এসে যাহের (রাঃ) কে জড়িয়ে ধরা ছিল রসিকতা। যাহের (রাঃ) কে গোলাম আখ্যায়িত করাও ছিল এক ধরনের কৌতুক। কারণ তিনি গোলাম ছিলেন না। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মজা করার জন্য গোলাম বলেছেন।

আচ্ছা, এই হাদিসের কোথায় বলা হয়েছে যে রাসুল(সাঃ) অশালীনভাবে জড়িয়ে ধরেছে? 
খেয়াল করে দেখুন হাদিসে জড়িয়ে ধরেছে কথাটিও বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে
পেছন থেকে ধরে ফেললেন"।(স্ক্রিনশট দিলাম)

 এখন আপনারাই বলেন এটা কি নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর অপব্যাখ্যা নয়?

৫।
 হুদায়ার নামক এক ব্যক্তি কোনো এক বৈঠকে লোকেদের সাথে মজা করছিলেন। এমন সময় নবী মোহাম্মদ তার পাঁজরের নীচে খোঁচা দেন। তখন হুদায়ার বললেন, "হে নবী আমাকে বদলা নিতে দিন।" নবী বললেন, "বদলা নাও" তখন হুদাইয়ার বললেন, "আপনি একটি জামা পড়ে আছেন কিন্তু আমি কোনো জামা পড়া অবস্থায় নেই।" তখন নবী মোহাম্মদ তার তারা জামা উপরে তুলে ধরলেন। 
এবং হুদায়ার নামক ব্যাক্তি তখন নবীকে আলিঙ্গন করে তাঁর ধড়ে(পেট থেকে কাঁধ) চুমু দিতে থাকলেন। তখন নবী বললেন, "আমি সেটাই চেয়েছিলাম!!!!!!!!!!" (Sunan Abu Dawud 5224) হদীস এর মান সহীহ।

জবাবঃ-
*******
 দেখুন মূত্রমনাদের মিথ্যাচার। বক্তাপাল্টে কিভাবে হাদিস বদলে দিলেন---
উসাইদ(রাঃ) বলেছিল " আমার এটাই ইচ্ছা ছিল হে আল্লাহর রাসুল"
অথচ সে উল্লেখ করল রাসুল(সাঃ) বলেছে "আমার এটাই ইচ্ছা ছিল"!!!!

হাদিস খানা দেখুন----
 উসাইদ ইবনু হুদাইর (রাঃ) নামক এক আনসারী সূত্রে বর্ণিত। তিনি লোকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছিলেন এবং মাঝে মধ্যে রসিকতা করে লোকদের হাসাচ্ছিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কাঠের টুকরা দিয়ে তার পেটে খোঁচা দিলেন। উসাইদ (রাঃ) বললেন, আপনি আমাকে এর বদলা নিতে দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার থেকে বদলা নাও। উসাইদ বললেন, আপনার গায়ে তো জামা আছে, অথচ আমার গায়ে জামা ছিলো না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর গায়ের জামা খুললেন। তখন উসাইদ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জড়িয়ে ধরে তাঁর এক পাশে চুমু দিতে লাগলেন, আর বললেনঃ আমার এটাই ইচ্ছা ছিলো হে আল্লাহর রাসূল।[1]

সনদ সহীহ।

[1]. বায়হাক্বী। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) http://www.hadithbd.com/share.php?hid=62592

৬।
 নবী মোহাম্মদ চুলে মেহেদী দিতেন এবং তার লম্মা(সিলকি সিলকি) চুল তার কানের লতি বেয়ে কাঁধের উপরে পড়তো। এবং সেটা তৎকালীন সময়ে মেয়েদের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্টাইল ছিলো। (Musnad Ahmad 17043, Adwa alBayaan,al-Shanqiti 518/৫)

জবাবঃ
******
 রাসুল(সাঃ) কখনোই চুলে ও দাঁড়িতে খেজাব ব্যাবহার করেননি। 

হাদিস--
৫৮৬৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাককার ইবনু রায়য়্যান (রহঃ) ... ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে জিজ্ঞাস করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি খেযাব ব্যবহার করেছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন (তিনি) রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেযাব ব্যবহারের সময় (বার্ধক্যে) পৌছোনি। অতঃপর তিনি বললেন, তাঁর দাঁড়িতে কয়েকটি চুল সাদা ছিল। রাবী বললেন, আমি তাকে [আনাস (রাঃ) কে] বললাম, আবূ বকর (রাঃ) কি খেযাব ব্যবহার করেছিলেন? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ, মেহদী ও নীল দ্বারা।

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) http://www.hadithbd.com/share.php?hid=15735

৭।
 মোহাম্মদ তার চোখে সুর্মা দিতেন যেটা মেয়েরাই বেশি ব্যবহার করতেন তাদের চোখ সুন্দর দেখনোর জন্যে। (Musnad Ahmad 3308)

জবাবঃ
********

হজরত রাসুল সা. বলেন,  তোমরা ‘ইসমিদ সুরমা’ ব্যবহার কর, এতে তোমাদের চোখের  জ্যোতি বা  চোখের পালক বৃদ্ধি পাবে। তিরমিজি শরিফ

ইবন আব্বাস রা.  সূত্রে বর্ণিত নবীজি  বলেছেন, তোমাদের উত্তম সুরমা হলো ইসমিদ নামক সুরমা। কেননা তা  দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং চুল উৎপন্ন করে । সুনান নাসাঈ

সুনান নাসায়ি গ্রন্থে উল্লেখ্য, নবীজি সা. রাতে ঘুমের আগে তিনবার সুরমা লাগাতেন। সুনান নাসায়ি ও শামায়েলে তিরমিজি

হাদিসগুলোর বক্তব্য এক ও অভিন্ন। তার মানে নবীজি সুরমা ব্যবহার করেছেন। ব্যবহারে উৎসাহিত করেছেন। সহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ি ও ইমামদের মাঝেও সুরমা ব্যবহারের বেশ প্রচলন ছিল। এখনও সৌখিনরা সুরমা ব্যবহার করেন। 

সুরমা মূলত একটি খণিজ দ্রব্য | এর মূল উপাদান হলো লেড সালফাইড বা সীসা, যা চূর্ণ করে তৈরী হয় সুরমা | প্রাচীনকালে সুরমার ব্যবহার শুরু হয় চোখের যত্ন, রোগ নিরাময় ও প্রতিরোধের জন্য।নারী-পুরুষ উভয়েই সুরমা ব্যবহার করতো।

৮।
 নবী মোহাম্মদ দাঁড়িতে মেহেদি দিতেন। লাল রঙ এতো বেশি পছন্দ কেনো ছিলো জনিনা। রেফারেন্স প্রয়োজন নেই। 

জবাবঃ-
*******

বিভিন্ন রেওয়ায়েত অনুযায়ী দেখা যায়- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাদা চুল ও দাড়ী মুবারক উনার সংখ্যা ছিল মোট- ১৪, ১৭, ১৮, ২০ ইত্যাদি। যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে দেখেছেন, তিনি সেভাবেই বর্ণনা করেছেন। তবে ২০টির বেশী কেউ বর্ণনা করেননি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن عيد الله بن عمر رضى الله عنهما قال انما كان شيب رسول الله صلى الله عليه وسلم نحوا من عشرين شعرة بيضاء.
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চুল মোবারক বিশটির মত সাদা হয়েছিল।”
উক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দাড়ী মুবারক ও চুল মোবারকসহ মোট ২০টি সাদা হয়েছিল। তাও আবার চুল মুবারক বা দাড়ী মোবারক উনার একস্থানে নয় বরং বিভিন্ন স্থান মিলিয়ে, যার কারণে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চুল বা দাড়ী মোবারক কালোই দেখা যেতো। খেয়াল না করলে পাকা চুল মুবারক বা দাড়ী মুবারক দেখা যেতো না। যদি তাই হয়ে থাকে, তবে মাত্র ২০টি চুল মুবারক ও দাড়ী মুবারক উনার জন্যে খেযাব ব্যবহার করার প্রশ্নই উঠেনা। কারণ খেযাব ব্যবহার করা হয় সাদা চুলের জন্যে।
নিম্মোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা একথাটি আরো সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়-
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عن قتادة قال قلت لانس بن مالك هل خضب رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لم يبلغ ذلك اغاكان شيبا فى صدغيه. (ترمذى شريف)
অর্থঃ- “হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- আমি হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খেযাব ব্যবহার করেছেন কি? হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চুল মুবারক বা দাড়ী মুবারক ওগুলো খেযাব ব্যবহার করার অবস্থায় পেীঁছেনি, উনার কান মোবারকদ্বয়ের পাশে মাত্র কয়েকখানা চুল মোবারক সাদা হয়েছিল।” (তিরমিযী শরীফ)
কাজেই হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বর্ণনা দ্বারাও স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো খেযাব ব্যবহার করেননি। আর যারা বলেছেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খেযাব ব্যবহার করেছেন, তাদের এরূপ বলার কারণ হলো- চুল বা দাড়ী সাদা হওয়ার পূর্বে সাধারণতঃ কিছুটা লালচে রং ধারণ করে থাকে, সম্ভবতঃ যারা খেযাবের পক্ষে বলেছেন, তারা উক্ত লালচে রং দেখেই বলেছেন।
তবে হ্যাঁ, খলীফাতু রাসূলিল্লাহ্ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালামসহ অনেক হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা খেযাব ব্যবহার করেছেন। কিন্তু সে খেযাব ছিল কাতম মিশ্রিত মেহদী বা মেন্দি। অর্থাৎ মেহদী পাতার সাথে কাতম নামক গাছ মিশ্রিত করে, তার দ্বারা খেযাব লাগানো হতো, ওটা ব্যবহারে দাড়ী লাল বা জাফরানী রং ধারণ করতো।

আল্লাহ্‌ এই অপপ্রচার ও অপবাদ প্রদানকারী নাস্তিকদের হেদায়াত নসিব করুক, আমাদেরকে তাদের অপপ্রচার থেকে হেফাজত করুন আমিন।

Post a Comment

0 Comments