বিবর্তনবাদ - ৪



বিবর্তনবাদ ও বাস্তবতা...



লেখক:- সাব্বির আহমেদ

আমাদের প্রকৃতির চারপাশে রয়েছে অবিশ্বাস্য বৈচিত্র্য ও সূক্ষ্ম জটিলতাপূর্ণ সৃষ্টিকর্ম। প্রত্যেকটি জীবই সূক্ষ্ম ফাংশন ও গঠনের সৃষ্টি। কোনো একটা প্রাণের একটা ফাংশন অনুপস্থিত থাকা, আংশিক বা অসম্পূর্ণ থাকা মানে প্রাণীটি ধ্বংস হওয়া ও বিপর্যস্ত হওয়া। কিন্তু বিবর্তনবাদীরা এই মহা সত্যকে কোটি কোটি বছরের কল্পনারস মিশ্রিত করে সত্য বলে চালানোর সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলে। কয়েকটা পয়েন্টে বিবর্তনবাদ ও এর বাস্তবতা নিয়ে আলোচনা করা যাক।


১। সাইন্টিফিক রিসার্চ হিসট্রিতে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়না; non-living matter থেকে living organism সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বিবর্তনবাদীরা এই অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাসকে আঁকড়ে রয়েছে। কারণ তাদের বিশ্বাস কোনো একসময় কোটি কোটি বছর ব্যবধানে তা সৃষ্টি হয়েছিলো। যা নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে প্রমাণ করা সম্ভব হয়নি তা কোনো একটা অন্ধ প্রক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বিশ্বাস করা অন্ধ বিশ্বাস ও অবৈজ্ঞানিক মতবাদ ছাড়া কিছুই না।


২। এখন পর্যন্ত কোনো জীব তার চেয়ে আরো জেনেটিক্যালি কমপ্লেক্স কোনো জীব জন্ম দেয়নি বা এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিবর্তনবাদীদের ধারণা কোনো একসময় ইহা সম্ভব হয়েছিলো। যদিও এখন পর্যন্ত জিনোমে নতুন কোনো ফাংশনাল তথ্য যোগ হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বরঞ্চ লস অফ ফাংশন পরিলক্ষিত হয়।


৩। সিঙ্গল সেল, মাল্টি সেল-এ বিবর্তিত হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষিত হয়নি। কিন্তু বিবর্তনবাদীদের দাবী কোনো একসময় এমন ঘটনা ঘটেছিলো যা শুধুমাত্র অনুমান। যার বাস্তবতা ভিন্ন।


৪। এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণী এমন কিছু উদ্ভব বা জন্ম দেয়নি যা তার চেয়ে ভিন্ন অর্গানিজমের। বিবর্তনবাদীদের এটাও আরেকটি বিশ্বাস যা কোনো একসময় ঘটেছিলো। যদিও সাইন্টিফিক হিসট্রিতে এমন কোনো প্রমাণ নেই বা পর্যবেক্ষণ লব্ধ কোনো উপাত্তই নেই। বিবর্তনবাদীদের বিশ্বাস, কোটি কোটি বছরে গ্র‍্যাজুয়াল পরিবর্তনের মাধ্যমে লিজার্ড পরিবর্তিত হয়ে বার্ডে ও ফিস পরিবর্তিত হয়ে ম্যামল রূপ লাভ করেছে। কিন্তু বর্তমানেও এইসকল প্রাণীগুলো অসংখ্য রয়েছে কিন্তু তাদের কেউই একটা থেকে অন্যটাতে পরিবর্তিত হচ্ছেনা, গ্র‍্যাজুয়ালি পরিবর্তিত হচ্ছে এমন কোনো প্রমাণও পরিলক্ষিত হয়নি। তাহলে কি তাদের বিবর্তিত হওয়া বন্ধ হয়ে গেছে? বিবর্তনবাদ অনুযায়ী যোগ্যরা টিকে থাকবে এবং তারা অন্য প্রজাতিতে পরিবর্তিত হবে পূর্বের প্রাণীটি বিলুপ্ত হবে। যদিও অনেকে বলে থাকে এটা সবক্ষেত্রে


প্রযোজ্য নয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কেন নয়? অন্যান্য অনেক প্রাণী বিবর্তিত হয়েও তাদের পূর্ববর্তী প্রজাতি টিকে রয়েছে। সেক্ষেত্রে মানুষের অনেক পূর্বপুরুষ অল্পসময়ে কেন বিলুপ্ত হলো?


৫। সাইন্টিফিক হিসট্রিতে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, কোনো একটা পপুলেশনে কোনো একটা বেনিফিসিয়াল মিউটেশন লম্বা সময় ধরে কন্সট্যান্টলি ঘটছে যা উক্ত পপুলেশনকে অন্য কোনো পপুলেশনে পরিবর্তিত করে। বিবর্তনের জন্য এইসব মিউটেশন অতীত ও বর্তমানেও বিলিয়ন বিলিয়ন ঘটতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অব্জার্ভাবল প্রমাণ পাওয়া যায়নি।


৬। শীতল-রক্ত বিশিষ্ট প্রাণীর জন্য এটা অসম্ভব যে, সে উষ্ণ-রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী জন্ম দিবে। কিন্তু বিবর্তনবাদীরা এটাও ফিশ টু ম্যামল ও লিজার্ড টু বার্ড থিওরি অনুযায়ী বিশ্বাস করে থাকে।


৭। এখন অবধি এমন কোনো দৃষ্টান্ত নেই যে, উদ্ভিদ, প্রাণী বা প্রাণী, উদ্ভিদে বিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু বিবর্তনবাদীদের অন্ধ বিশ্বাসে এটাই সম্ভব বলেই বিবেচিত হয়ে আছে।


৮। মাকড়সার প্রাপ্ত ফসিল রেকর্ডস ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত থেকে জানা যায়, মাকড়সা প্রায় প্রথম অবস্থা থেকে জাল তৈরি করতে পারতো। তাহলে প্রশ্ন জাগে তারা এই কৌশল কিভাবে ও কার কাছ থেকে রপ্ত করেছিলো? এটা কি শুধুই বাই চান্স এর ফলে উদ্ভব ঘটেছিলো?


পরিশেষে, এমন অসংখ্য অন্ধ বিশ্বাসের সমষ্টি নিয়ে টিকে আছে বিবর্তনবাদ। বস্তুবাদী ও নাস্তিকবাদের ভিত্তি হিসেবে প্রচার হচ্ছে দাঁড় করানো হচ্ছে স্রষ্টার সৃষ্টিতত্ত্বের বিপক্ষে, অবিশ্বাস্য এই সৃষ্টিজগতকে ঢেলে দেয়া হচ্ছে কাকতালীয়তার অন্ধকূপে। কিন্তু তাদের এই অপচেষ্টা কখনই সফল হবেনা।


আল্লাহ'তালা এইসব ধোঁকাবাজদের উদ্দেশ্যে কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন: "ইউখা-দি'ঊনাল্লা-হা ওয়াল্লাযীনা আ-মানূ ওয়ামা-ইয়াখদা'ঊনা ইল্লাআনফুছাহুম ওয়ামাইয়াশ'উরূন"।


অর্থাৎ-- "আল্লাহ ও মুমিনগণকে তারা ধোকা দিতে চায় কিন্ত তারা নিজেদেরকে নিজেরাই ধোঁকা দেয়,অথচ তারা তা বুঝতে পারে না।"

Post a Comment

0 Comments