বৈদিক সন্ত্রাসবাদ! - সব দোষ শুধু ইসলামের?

বিষয়: অহিন্দু, নাস্তিক, দুষ্ট, ঈশ্বর অবিশ্বাসী, অমান্যকারীদের হত্যা, খুন, পা দিয়ে মারা, অগ্নি দগ্ধ করা, অপমান, ধ্বংস, বিনাশ করা। যুদ্ধ, হত্যা ও সন্ত্রাসবাদ। আমার জিজ্ঞাসা - ৫
Author: নাজমুস সাকিব
Details By: Aminur Rashid

☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳


"যাহারা পারিবেন খন্ডন করিয়া যাইবেন। ইসলাম নিয়ে বিদ্বেষ দেখিয়াছি তবে আমি বিদ্বেষ, অশালীন কথাবার্তা বলিতে ইচ্ছুক নই। তাই জিজ্ঞাসা করিবো, যাহারা পারিবেন খন্ডন করিবেন। আর হ্যাঁ অনুবাদ ভাষ্য সবই অথেনটিক কোন মুসলিম অনুবাদকের নহে। এই আর্টিকেল শুধু সেই সকল পাব্লিকদের জন্য যারা ইসলামকে সন্ত্রাসবাদ বলে আর নিজেদের হিমালয়ের সাধু সন্নাসী, ধোয়া তুলসিপাতা বলিয়া আখ্যায়িত করে।"

___

সব সময় সর্বক্ষেত্রে একটি কথা আমরা শুনে এসেছি আসছি এবং এখনো শুনছি। ইসলামের উপর মিথ্যা অপবাদের কোন শেষ নেই। নাস্তিকরা তো করছে আবার এদের সাথে সমান অনুপাতে কিছু ইসলামবিদ্বেষী-হিন্দু প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। কি প্রপাগান্ডা জানেন? ওইযে ইসলাম নাকি সন্ত্রাসবাদ শিখায় ইসলামে নাকি অমুসলিমদের হত্যা করতে বলা হয়েছে। ইসলাম নাকি অমুসলিমদেরকে যেখানে পাও সেখানে হত্যার আদেশ দিয়েছে এমন কত অভিযোগ।

আমারা সাধারণ বা ধার্মিক হিন্দু বা সনাতনীদের নিয়ে কিছু বলছি না বা এই আর্টিকেল তাদের জন্যও নয়। এই আর্টিকেল শুধু সেই সকল ইসলামবিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদীদের জন্য যারা অনলাইন অফলাইনে ইসলামকে সন্ত্রাসবাদ বলে, যা কিনা পুরোই মিথ্যা গল্পে সাজানো থাকে।

হিন্দুত্ববাদীদের বড় অংশ অনালাইনে মুসলিম নাম দিয়ে নাস্তিক সেজে ইসলাম বিদ্বেষ করে। যারা কিনা কোনদিন কুরআন খুলে দেখেনি তারাও সেই বস্তা পঁচা সস্তা টপিকটা তুলে আনে,,

যেটি হলো কুরআনের সূরা তওবার ৫ নাম্বার আয়াত। এরা কোন কিছু না জানলেও কুরআন না পড়লেও সূরা তওবার এই আয়াত নিয়ে সারাজীবন মিথ্যাচার করেই গেছে।

ইসলাম যে সন্ত্রাসবাদ নয় এ ব্যাপারে জবাব দেয়া সত্যেও তারা মিথ্যাচার থামায় না। তার সাথে তাদের দাবী তাদের ধর্মগ্রন্থ পরম অসাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী এবং সবাইকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করে সবাই সমান।

যেখানে বাস্তবতা ভিন্ন।

ইসলাম নিয়ে তো এদের এসব দাবী নিয়ে যুগ যুগ ধরেই আলোচনা করা হয়েছে আসুন এবার দেখি বৈদিক সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে।

আর আলোচনা টি হবে বেদ নিয়ে! বেদ হিন্দু ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হিসেবে বিবেচ্য। তাই আজকে প্রধান ধর্মগ্রন্থ থেকেই আলোচনা, জিজ্ঞাসা করা হবে।

রেফারেন্স এর গ্রহণযোগ্যতা

প্রথমতঃ এই আর্টিকেলে শুধুমাত্র বেদ থেকে রেফারেন্স দেয়া হয়েছে। কোন পুরান, মনুস্মৃতি থেকে নয় সুতরাং কেউ আবার অস্বীকার করতে আসবেন না। আর বেদ হিন্দুধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ।

দ্বিতীয়তঃ এই আর্টিকেলের সকল ভাষ্য আর্যদের। কোন মুসলিম প্রকাশনীর না বা মুসলিম, অহিন্দু ভাষ্যের না। এই ভাষ্য আর্যদের যাদের আর্য ভক্তরা ভক্তি করে তাদের মেইন স্কলার হিসাবে। অগ্নিপীররাও যাদের মুরিদ এমনকি যাদের ভাষ্য তারা পড়ে, প্রচার করে, ইবুকও তৈরি করে।

তৃতীয়তঃ পরবর্তীতে আমরা সায়ন ভাষ্য নিয়ে আসবো। আর্যরা যেহেতো পৌরণিক অনুবাদ মানতে চায় না তাই এখানে তার ছিটেফোঁটাও নেই। আর পরবর্তীতে যারা পৌরণিক তাদের জন্যও আর্টিকেল আসবে। কারণ ইসলাম, খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মগ্রন্থের নামে অজুহাত দেয়া হয় না যতটা দেয়া হয় হিন্দুইজমে। কোন কারণ ছাড়া অনুবাদ, গ্রন্থ, ভাষ্যকার, প্রকাশনীর নামে সবকিছুকে অস্বীকার করে নাকচ করে। মূল টেক্সট এ থাকলেও নাকচ যা কিনা অজুহাতের একটি নিচু প্রমাণ। এমন নিচু মানসিকতা আর কারো নেই।

আসুন দেখে নেই এবার বিষয়গুলো,,,

১. ঈশ্বর বিরোধী ও নাস্তিকদের বিনাশ করতে হবে!

◑ যাহারা ব্রহ্মবিরোধী (ঈশ্বর বিরোধী) ও নাস্তিকতা মানসিক শত্রু তাহাদের বিনাশ করে দিন।
.সামবেদঃ ১৯৪
.ভাষ্যকারঃ
○স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমার জিজ্ঞাসাঃ এ হলো অবস্থা। যে গ্রন্থে এমন কথা আছে সেই গ্রন্থের অনুসারীরা ইসলামকে নিয়ে কথা বলে। যেখানে ইসলামে কোন নিরপরাধী অমুসলিমকে হত্যার কথা বলা হয় নি। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর চাচা আবু তালেব-ই ছিলো অমুসলিম, তাকে হত্যা করেছেন? এত গভিরে গেলাম না। সুতরাং কেন বলা হলো নাস্তিক ইসলাম বিদ্বেষীদের "বিনাশ" করে দিতে, এটাই কি তাহলে তথাকথিত দাবীকরা সেই বিধান যেটি কিনা মানবতার পক্ষে, অসাম্প্রদায়িক মতবাদের উপর অটল।

২. ঈশ্বরকে অমান্যকারী,নাস্তিক ও বেদ নিন্দাকারীকে বিনাশ করতে হবে?

◑ যাহারা ব্রহ্মকে অমান্যকারী (ঈশ্বরের নিন্দাকারী), নাস্তিক ও বেদের জ্ঞানের নিন্দুক কে এই ব্রহ্মাণ্ড (বিশ্ব জগত) থেকেই বিনাশ করে দিন।
.সামবেদঃ ১৩৫৪
.ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী
○ স্বামী ব্রহ্মমুনি পরিব্রাজক

আমার জিজ্ঞাসাঃ আরেকটা বিষয় বলে রাখা ভালো। হিন্দু আর বৌদ্ধ বিশ্বাসীদের মধ্যে অনেকগুলি বিরোধ সংঘর্ষ রয়েছে। আর এটিও একটি বিরোধ অর্থাৎ অহিন্দু বিরোধ যাকে বলে। বৌদ্ধরা কিন্তু ঈশ্বরে বিশ্বাসী না। বেদের এসব মন্ত্র দ্বারা নাস্তিক ও বৌদ্ধ ধর্মের যে ঈশ্বরহীন মতবাদ এটাকেই কাটক্ষ করা হয়েছে। একইসাথে যারা বেদে বিশ্বাসী নয়, ঈশ্বর অমান্যকারী, বেদে নিন্দাকারী দেরও বিনাশ করতে বলা হয়েছে। কোন কথা নেই এক কথায় বিনাশ তথা ভেনিস।

৩. যারা ঈশ্বরের উপাসনা করে না তাদের পা দিয়ে পাড়িয়ে হত্যা করতে হবে?

◑ যাহারা স্তুতি প্রার্থনা উপাসনাদি না করে এমন সাপের ফনা সাদৃশ্য বিষাক্ত বৃত্তির সঞ্চারকারী,পাপী নাস্তিক, ধূর্তদেরকে কোন সময় যে পদচ্যুত করে বিনাশ করে দেয়।
.সামবেদঃ ১৩৪৩
.ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমার জিজ্ঞাসাঃ ইহা কি অমানবিক সন্ত্রাসবাদ সাম্প্রদায়িকতা নহে!? নাকি ইসলামেই এসব খোঁজার জন্য বসে থাকেন? নিজেদের খবর না রেখে? এখান থেকে আমরা বুঝলাম,,

যারা ঈশ্বর উপাসনা করে না

যারা বৌদ্বধর্মের

যারা নাস্তিক

তাদের সবাইকে পা দিয়ে পাড়িয়ে হত্যা করতে হবে। হত্যা!! এ কেমন কথা? ইসলামে এমন বিধান থাকলে আবু লাহাব, আবু তালেবকেও দাওয়াত না দিয়ে হত্যা করা হতো।

৪. পাপী মানুষদের দগ্ধ করে চূর্ণ বিচূর্ণ করতে হবে?

◑ রাক্ষসদের (পাপী মানুষদের) ককে আপনে নিজের শক্তি দিয়ে দগ্ধ করার মাধ্যমে চূর্ণ বিচূর্ণ করে বিনাশ করে দিন।
.সামবেদঃ ১০৬
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী
মন্তব্যঃ বেদে রাক্ষস মানে কোনো দৈত্য বা দানব না বরং রাক্ষস মানে হলো পাপী মানুষ দেখুনঃ
○ নিরুক্তঃ ৪.১০ ১১.২

আমার জিজ্ঞাসাঃ দগ্ধ, দাহ শব্দটা অনেক জায়গায় ব্যবহার হচ্ছে। যেমন মরার পর দাহ, সতীদাহ.. আবার যারা পাপী তাদেরকেও চূর্ণ বিচূর্ণ করে বিনাশ করতে হবে, দগ্ধ করে বিনাশ করতে বলা হচ্ছে। কতটা মানবিক?

৫. বিদ্বেষকারী শত্রুদের বিনাশ করতে হবে?

◑ হে সদা-সর্বদা সমস্ত প্রকারের ঈর্ষ্যা,বিদ্বেষ,বাধা ও বিঘ্ন উৎপন্নকারী শত্রুদেরকে হে ইন্দ্র পরমাত্মা তুমি এদের বিনাশ করে দাও।
.সামবেদঃ ১৩৪
.ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমার জিজ্ঞাসাঃ তাহলে কি সন্ত্রা,,,বাদকে বিদ্বেষ না করে মেনে নিব?

৬. শত্রুদের ভালোভাবে বিনাশ করতে হবে?

◑ যে কোনো কারনেই যাহারা আমাদের উপর যে কোনো শত্রুতা বা বিদ্বেষ করে তাদেরকে আপনে কৃপা করে ভালোভাবে বিনাশ করে সমাপ্ত করে দিন।
. সামবেদঃ ২৭৪
. সামবেদঃ ১৩২১
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমার জিজ্ঞাসাঃ হ্যাঁ, সব দোষ শুধু ইসলামের।  অমুসলিমরা আমাদের উপর হামলা করলে আমরা যুদ্ধ না করে বসে থাকবো। আত্মরক্ষা আর ন্যায়ের পথে লড়াই সংগ্রাম বা জিহাদ করলেই দোষ। আর শত্রুদের বিনাশ করতে বলা কি মানবিক?? তুমি করলে ভলো আমি করলে কালো? কৃষ্ণ, বৌদ্ধ, যিশু নয় সব দোষ নবী মুহাম্মদ (সাঃ) আর ইসলামের?

৭. কত জঘন্য ভাবে পাপী মানুষ বিদ্বেষ?

◑ হে মনুষ্য এই শুদ্ধ পবিত্র নির্মল পরমেশ্বরের নিয়ম বিধি ব্যবস্থায় দুষ্ট ও পাপবুদ্ধির নীচ মানুষ অবহেলা করতে বা অবমাননা করতে পারে না। যাহারা আপনার (ঈশ্বরের) বিরোধ এবং অবমাননা করে তাহাদেরকে আপনে দুঃখ ও কষ্টের মধ্যে কান্না করাতে থাকুন।
. সামবেদঃ ১৭১৬
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমার জিজ্ঞাসাঃ আমরা অন্যায়ের পথে জিহাদ করলে দোষ আর শুধু ঈশ্বরকে অবহেলা করলেই তাদের শান্তি হরণ করা হয় যেখানে সেখানে আবার সেটিকে মানবতার ফেরিওয়ালার ফেরি বললে ভুল হবে। এই ফেরিওয়ালার ফেরিটা ডুবিয়া যাইবে।

৮. যারা ঈশ্বরের গুণ গান করে তারা ভালো আর যারা শত্রু তাদের বিনাশ?

◑ হে পরমেশ্বর যত দুর্ববনা যুক্ত আমাদের হত্যাকারী বিরোধী শত্রুপক্ষ আছে সেই সকল শত্রুদের কে বিনাশ করার জন্য অস্ত্র শস্ত্র পরিচালনা করুন আর যাহারা আপনার গুন গান করে তাহার কে সুব্যবস্থা প্রদান করুন।
.সামবেদঃ ১৮০৩
.ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমার জিজ্ঞাসাঃ জিজিয়া শব্দটা তো শুনেছেন যেটা নিয়েও অপপ্রচার করে থাকে অনেকে। এই জিজিয়া কর কিন্তু সামর্থবান অমুসলিমদের জন্য যা অমুসলিমদের নিরাপত্তার জন্য। আর সেখানে হিন্দু শাস্ত্র তাদেরকেই সুব্যবস্থা দিতে বলেছে যারা ঈশ্বররে গুনগান করে যারা করে না তারা শত্রু তাদের বিনাশ করতে হবে।

যেখানে অহিন্দুদের বিনাশ আর হিন্দুদের সুব্যবস্থা সেখানে ইসলামে অমুসলিমরা যদি আমাদের সাথে অন্যায় ভাবে যুদ্ধ না করে, নির্যাতন না করে, দেশ জায়গা থেকে বহিস্কার না করে তাহলে তাদেরকে!???

[৯:৬] আত তাওবাহ্

وَإِن أَحَدٌ مِنَ المُشرِكينَ استَجارَكَ فَأَجِرهُ حَتّى يَسمَعَ كَلامَ اللَّهِ ثُمَّ أَبلِغهُ مَأمَنَهُ ذلِكَ بِأَنَّهُم قَومٌ لا يَعلَمونَ

আর যদি মুশরিকদের কেউ তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাহলে তাকে আশ্রয় দাও, যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনে, অতঃপর তাকে পৌঁছিয়ে দাও তার নিরাপদ স্থানে। তা এই জন্য যে, তারা এমন এক কওম, যারা জানে না।

আলহামদুলিল্লাহ।

৯. যাহারা ঈশ্বরের আরাধনা করে না তাদের পা দিয়ে পাড়াতে হবে?

যাহারা ঈশ্বরের আরাধনা করে না, তাহার উদ্দেশ্যে  হবি প্রদান করে না, কবেই বা তাহাদিগকে ইন্দ্র অহিচ্ছত্রকের (ব্যাঙ্গের ছাতার) ন্যায় পা দিয়ে পাড়াবেন৷
.ঋগ্বেদঃ ১.৮৪.৮
. নিরুক্তঃ ২.৫.১৭.১
. ভাষ্যকারঃ
○ আচার্য ধর্মদেব বিদ্যামার্তন্ড
○ তুলশী রাম শর্মা

আমার জিজ্ঞাসাঃ ব্যাঙ্গের ছাতার মত পা দিয়ে পাড়াতে হবে কাদের??? যারা ঈশ্বরের আরাধনা করে না। ইসলামে নামাজ না পড়লে হালকা পাতলা প্রহার বা শাসন করে নামাজের কথা শুনলে যাদের চুলকায় যদিও তারা অন্নান্য বিষয়ে শাসন করে থাকে। তাদের গ্রন্থ তো বলছে আরাধনা না করলেই পিসে মারতে!?

১০. শত্রুকে ছিন্ন ভিন্ন করা?

◑ যাহারা বীর্য আদি কাম ক্রোধাদি দ্বারা পাপাচরণ অন্যায় কর্মে লিপ্ত থাকে, তুমি তাহাদের মস্তককে ছিন্ন ভিন্ন করে দাও।
.সামবেদঃ ২১১
.ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী চেতনানন্দ সরস্বতী

আমরা জিজ্ঞাসাঃ যুদ্ধ শুধু ইসলামেই। জিহাদ মানেই ইসলাম, যুদ্ধ মানেই ইসলাম। আর সনাতন ধর্মে তো এর ছিটেফোঁটাও নেই!!? তাইতো প্রমাণ হচ্ছে?

১১. অধার্মিক শত্রুদের ধবংস করতে হবে?

◑ আপনে অধার্মিক শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করুন ও তাদের ধবংস করুন।
.ঋগ্বেদঃ ৭.৯৮.৯
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

আমরা জিজ্ঞাসাঃ ধর্মহীন হলেই না অধর্মীক বা ধর্ম না মানলেও আপনি শত্রু হিসেবে গণ্য হবেন এবং একইসাথে আপনাকে ধ্বংস করতে হবে। এরাই বলে ইহাতে কোন ধ্বংস যুদ্ধ নেই।

১২. মন্দ চোখের মানুষ, নাস্তিক ও নিন্দাকারীদের বিনাশ করতে হবে।

◑ মন্দ চোখের মানুষ, নাস্তিক ও নিন্দুক বাদ দিন। তাদের জন্য, তাদের প্রাপ্য অসম্মান করুন এবং হয় তাদের সংশোধন করুন বা তাদের বিনাশ করুন।
. ঋগ্বেদঃ ৭.১০৪.২
. অথর্ববেদঃ ৮.৪.২
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

আমার জিজ্ঞাসাঃ এবার কি করবে মন্দ চোখের মানুষ, নাস্তিক আর নিন্দুকরা। তাদের জীবনে অসম্মান আর সংশোধন না হলে বিনাশ ধার্য করা হয়েছে। আর এই নাস্তিকরাই আবার নাকি শিবলিঙ্গে দুধ ঢালে। (তাসলিমা) চমৎকার না?

১৩. দুষ্টু মানুষের মাথা ও পা কেটে ফেলার হুমকি ধামকি?

◑ হে দুষ্টু একবারে বন্ধ হও। আমি তার মাথা ও পা কেটে ফেলবো।
. অথর্ববেদঃ ১০.১.২১
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

আমার জিজ্ঞাসাঃ ধর্ষন, ব্যাভিচার এ রজম, বেত্রাঘাত আর চুরির শাস্তি হাত কাঁটা(অনেক নিয়মকানুন মেনে) নিয়ে ইসলামকে অমানবিক বলে। তাহারা কি দেখিতে পায় না যে তাদের গ্রন্থ বলছে শুধু দুষ্ট হলে "মাথা ও পা" কেটে ফেলতে।

১৪. ঈশ্বরের আইনের নিন্দাকারী,ব্রাহ্মণদের কষ্ট দেওয়াকারী কে ও দেবতাদের নিন্দাকারী করুন অবস্থা?

◑ ঐশ্বরিক আইন লঙ্ঘনকারী, ব্রাহ্মণকে যন্ত্রণাদাতা, পাপের অপরাধী, দেবতাদের বিদ্বেষকারী এবং ধার্মিকতা ও স্বাধীনতা প্রলোভনকারী মাথা চূর্ণ করতে হবে।
. অথর্ববেদঃ ১২.৫.৬৫-৭০
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

আমার জিজ্ঞাসাঃ অহিন্দু, নাস্তিকরা কি করবে এখন?

১৫. সাম্প্রদায়িক উসকানি, গরুর নামে মানুষ হত্যা?

◑ যাহারা গরুর মাংস ভক্ষণ করে, হে অগ্নি! আপনে তাদের মাথা কেটে ফেলুন নিজের শক্তির মাধ্যমে আর এ ধরনের ব্যক্তি প্রধানদের কেও।
. অথর্ববেদঃ ৮.৩.১৫
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

আমার জিজ্ঞাসাঃ সর্বনাশ গরুর মাংস ভক্ষণ করলে মাথা কাটা যাবে, কত মানবিক কথা। পৃথিবীর সবাইকেই এখন মাথা হারাতে হবে।

১৬. শত্রুদের ভাঙতে হবে ইচ্ছা মতো?

◑ হে ন্যায়ের ক্রোধ জেগে উঠুন আমাদের প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ করুন ও তাদের কে ভাঙ্গুন ও ভেঙ্গে ফেলুন।
. ঋগ্বেদঃ ১০.৮৪.৩
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

আমার জিজ্ঞাসাঃ থাক কি বলবো যুদ্ধ, প্রতিপক্ষ সব ইসলামের। হিন্দু শাস্ত্রে এসব নাই!?

১৭. যুদ্ধের উসকানি?

◑ রথের দ্বারা পাপাত্মাদের বিনাশকারী, শত্রুদের প্রতিহতকারী তাদের বাহিনী কে ভাঙ্গুন ও বিপদগামি করুন। যুদ্ধ করে যুদ্ধ করে জয়ী হোন।
. ঋগ্বেদঃ ১০.১০৩.৪
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

১৮. যারা বৈদিক ঈশ্বরের বিরোধিতা করে তাকে বিনাশ করতে হবে?

◑ হে সোম যে তোমার বিরোধিতা করে তাকে উন্মুক্ত করে ধবংস করো।
. ঋগ্বেদঃ ৯.৫৪.৩
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা
মন্তব্যঃ সোম বৈদিক ঈশ্বরের একটি নাম। কারন বৈদিক ঈশ্বরের অনেক অনেক নাম আছে দেখুনঃ
. ঋগ্বেদঃ ১.১৬৪.৪৬।
আর বৈদিক ঈশ্বরের এ অনেক গুলো নামের মধ্যে একটি হলো সোম দেখুনঃ
. নিরুক্তঃ ৪.১১.৪.৪
. নিরুক্তঃ ৪.১১.৫.১

১৯. পাথরে দিয়ে মানুষ হত্যা?

◑ ইন্দ্র বিশ্বের শক্তিমান ও শক্তিশালী শাসক দুষ্টুকে মাটির টুকরোগুলির মতো চূর্ণ করুন।
. ঋগ্বেদঃ ৭.১০৪.২২
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

২০. বেদে আদৌও কি মানবিকতা আছে?

◑ ইন্দ্র মহিমার অধিপতি, আমি নীচে গোপন শত্রুদের গর্জন শুনতে পাচ্ছি। তাদের উপর প্রচন্ড বজ্রপাত করুন। তাদের মূল উপড়ে ফেলুন। চ্যালেঞ্জ করুন এবং তাদের মারুন, তাদের ধবংস করুন, তাদের ধবংস করুন, তাদের গোড়া থেকে নির্মূল করুন।
. ঋগ্বেদঃ ৩.৩০.১৬
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

২১. দুঃখ প্রদান কারী শত্রুদের ধবংস করতে হবে?

◑ হে বীর পুরুষ যে দুষ্টু শত্রু আমাদিগকে দুঃখ দান করে তাহাকে ধবংস করঁ এবং যে কেহ চোর ইত্যাদি আছে তাহারও নাশ করো।
. যজুর্বেদঃ ১.৮
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

২২. বেদ মানেই শত্রুদের মারতে হবে?

◑ শত্রুদিগকে মারিয়া প্রজাদের কে সুখ, ধর্ম্মাত্মাদিগকে নির্ভয়তা এবং দুষ্টদিগকে ভয় প্রদান করিবেন।
. যজুর্বেদঃ ৭.৩৭
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

২৩.  শুধু হত্যা আর হত্যা?

◑ হে ইন্দ্র তুমি আমাদের, আমাদের সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য সৈন্যর ইচ্ছুক শত্রুদিগকে বধ করো এবং সেই সব নিম্ন ব্যক্তিদিগকে অধীন করুন।
. যজুর্বেদঃ ৮.৪৪
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

২৪. প্রিয় হতে হলে দুষ্টু মানুষদের কে বধ করতে হবে?

◑ হে মনুষ্যগণ! যেমন বিদ্বানগণ অগ্নি আদি পদার্থ গুলিকে বিদ্যাকে গ্রহন করিয়া বিদ্বানদিগের প্রিয় হয়, দুষ্টুদের কে বধ করে এবং গাভি আদির রক্ষা করিয়া মনুষ্যদিগের প্রিয় হয় সেইরুপ তোমরাও কর।
. যজুর্বেদঃ ৩৩.১৪
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

২৫. অগ্নির মতো করে মানুষ কে মারতে হবে?

◑ যেমন অগ্নি বনকে, সেইরুপ দুষ্টু শত্রুদিগকে মারিবে।
. যজুর্বেদঃ ৩৩.২৬
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

২৬. মানুষ কে মারার উসকানি?

◑ যাহারা কেউ প্রশংসা করে না, সেই সব দুষ্টুদিগের হন্তা সুখ উৎপন্নকারী সকল শত্রুদিগকে হত্যাকারী হইয়া আপনে বিজয়ী হইয়াছেন, এইজন্য হননকারী শত্রুদিগকে মারুন।
. যজুর্বেদঃ ৩৩.৬৬

আমার জিজ্ঞাসাঃ যে সকল হিন্দু ইসলাম বিদ্বেষীরা বলে থাকে মুসলিমরা আলহামদুলিল্লাহ প্রশংসা করে। তাদের ঈশ্বরকে তো প্রশংসা না করলে মানুষ হত্যা করতে হবে, মারতে হবে।

২৭. ঠাণ্ডা মাথায় মানুষ হত্যার উসকানি?

◑ সমাজ ব্যবস্থায় ইতিবাচকতা এবং দেবতাদের শত্রুদের ধবংস করুন।
.অথর্ববেদঃ ২০.৯৬.৪
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

২৮. মানুষ কে মারার জন্য চরম পর্যায়ের উসকানি?

◑ আপনে কি আমাদের নিন্দুক ও কুৎসাকারীদের দেখতে পাচ্ছেন না, আভিজাত্য এবং আধ্যাত্মিকতার সার্বজনীন মূল্যবোধের বিদ্বেষকারীদের উপর প্রজ্জলিত বজ্রপাত করুন।
. ঋগ্বেদঃ ৬.৫২.৩
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

২৯. যারা বৈদিক ঈশ্বরের আরাধনা করে না ও তার উদ্দেশ্যে কি উৎসর্গ করে না তাদের ব্যাপারে কঠিন হুশিয়ার বানী?

◑ স্বার্থপর দেশের গরু গুলো তোমার জন্যই  কি করবে! তারা দুধ দেয় না, যজ্ঞে আগুন জ্বালায় না তারা কৃপণ ও সরাসরি লোভী। তাদের কে আইনের আওতায় করুন।
. ঋগ্বেদঃ ৩.৫৩.১৪
. অনুবাদকঃ
○ তুলশী রাম শর্মা

মন্তব্যঃ তবে নিরুক্তে ভয়ংকর ভাবে অনুবাদ করা হয়েছে উক্ত মন্ত্রের দেখুনঃ
◑ নিরুক্তঃ ৩.৬.৩২.১
◑ নিরুক্তঃ ৩.৬.৩২.৩

৩০. শত্রুকে মারার পাশাপাশি তার রান্না ঘড় পর্যন্ত ধবংস করতে হবে?

◑ হে অগ্নি! যেহেতু আপনে উত্তম হউন,ধর্মের অনুকূল হইয়া দুষ্টু শত্রুদিগকে তাড়না করুন,আমাদের নিশ্চল বিদ্বানদিগকের রচিত পদার্থগুলিকে প্রকট করুন,সুখ কে বিস্তার করুন পরপদার্থ প্রাপ্ত হইবার এবং বেগযুক্ত শত্রুদিগের ভোজনের এবং অন্য ব্যবহারের স্থানকে সম্যক ভাবে বিস্তারপূর্বক নষ্ট করুন এবং শত্রুদিগকে বলপূর্বক বধ করুন।
. যজুর্বেদঃ ১৩.১৩
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

⊕ বোনাস হিসাবে একটি

১. ধর্ম বিদ্বেষকারী আগুনে পুড়তে হবে?

◑ হে তীব্র দণ্ডদাতা রাজপুরুষ! ধর্মবিদ্বেষী শত্রুদিগকে নিরন্তর দাহন করুন।
. যজুর্বেদঃ ১৩.১২
. ভাষ্যকারঃ
○ স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী

মন্তব্যঃ দাহন মানে হলো আগুন দিয়ে জ্বালানো বা আগুন দিয়ে পুড়ানো ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার জিজ্ঞাসাঃ এ ধারা কি উপলব্ধি করলেন? সনাতন ধর্ম অহিন্দুদের কিরুপ দৃষ্টিতে দেখে তা তো বুঝতেই পেরেছেন।

যারা ঈশ্বরকে মানে না

ঈশ্বরে অবিশ্বাসী

বৌদ্ধ

নাস্তিক

নিন্দুক

দুষ্ট

ঈশ্বরকে প্রশংসা না করলে

গরুর মাংস ভক্ষণ করলে

ইত্যাদি ইত্যাদি সবাইকে হত্যা, পা দিয়ে মারা, বিনাশ করা, বাসস্থান ধ্বংস করা, যুদ্ধ করা সবই অনুমোদন করা হয়েছে।

আর এরাই আবার ইসলামের নামে মিথ্যা অপবাদ দিতে ব্যস্ত থাকে।

[৫:৩২] আল মায়িদাহ

مِن أَجلِ ذلِكَ كَتَبنا عَلى بَني إِسرائيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفسًا بِغَيرِ نَفسٍ أَو فَسادٍ فِي الأَرضِ فَكَأَنَّما قَتَلَ النّاسَ جَميعًا وَمَن أَحياها فَكَأَنَّما أَحيَا النّاسَ جَميعًا وَلَقَد جاءَتهُم رُسُلُنا بِالبَيِّناتِ ثُمَّ إِنَّ كَثيرًا مِنهُم بَعدَ ذلِكَ فِي الأَرضِ لَمُسرِفونَ

......যে ব্যক্তি কাউকে বিনা কারণে হত্যা করলো কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল। আর যে তাকে বাঁচাল, সে যেন সব মানুষকে বাঁচাল।...........

Post a Comment

3 Comments

  1. মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর আর্টিকেল,চালিয়ে যান সাথে আছি

    ReplyDelete
  2. অসাধারণ একটি উপাস্থাপনা, আল্লাহ্ তায়ালা আপনাকে আরো বেশি ইলম অর্জন করার তৌফিক দান করুন আমীন

    ReplyDelete