প্রশ্ন করলেই কি ইসলাম বিদ্বেষ!?



প্রশ্ন করলেই কি ইসলাম বিদ্বেষ!? 
🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________________________________________________

আমরা সকলেই জানি সব থেকে বেশি যে ধর্মকে বিদ্বেষ করা হয় সেটাই ইসলাম। বঙ্গীয় নাস্তিক থেকে যত নাস্তিক আছে সবাই ইসলাম বিদ্বেষী কথাবার্তা বলে থাকে। শুধু নাস্তিক বললে ভুল হবে। নাস্তিকদের সাথে অমুসলিমরাও করে ইসলাম বিদ্বেষ। আর তাদেরকে যখন বলা হয় তোমরা কেনো ইসলাম বিদ্বেষ করছো তখন তারা দুটি কথাই বলে সেটা হলো। 

১) এটা আমাদের FREEDOM 
২) প্রশ্ন করলেই কি ইসলাম বিদ্বেষ!?

দুইটি পয়েন্ট তারা হরহামেশাই বলে থাকে। আসলে তারা জানেই না কাউকে আঘাত দেওয়া কখনোই ফ্রিডম নয়। কাউকে ব্যাঙ্গ করা কখনোই ফ্রিডম নয়। কাউকে অশ্লীল ভাষায় গালি দেওয়া। নামের সাথে অশ্লীল বাক্য ট্যাগ দেওয়া কখনোই Freedom নয়। 

আমাদের মুসলিমদের গালি দিলে এতোটা সমস্যা নেই কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে কেউ কখনো গালি দিলে সেটা আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। 

তাই কোন ধর্মকেই ব্যাঙ্গ করা গালিগালাজ থেকে অশ্লীল বক্তব্য ট্যাগ দেওয়া ঠিক নয়। অনেক মুসলিম আছে যারা অন্য ধর্মের সমলোচনা করতে গিয়ে নানা রকম অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে। তারা যীশু খ্রীষ্টের নামকে বিকৃত করে ভগবান-কৃষ্ণ-রাম এদের বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করে। এসব কিন্তু কখনোই ঠিক নয়। এমনকি কোন ধর্ম নিয়ে কথা বলতে গেলে সেখানে গালি ব্যাবহার কখনোই ঠিক হবে না। 

এবার প্রশ্ন আসতে পারে,, 

প্রশ্ন করলেই কি ইসলাম বিদ্বেষ!? 

আমার উত্তর:- না কখনোই নয় প্রশ্ন করা কোনরূপ ভাবেই ইসলাম বিদ্বেষ নয়। আমরা মুসলিমরা সকলেই উন্মুক্ত প্রশ্ন করার সুযোগ দেই। ডাঃ জাকির নায়েক কে তো সকলেই চিনেন উনার কাছেও বহু মানুষ প্রশ্ন করেছেন। তিনি কখনোই বাঁধা দেন নি। এমনকি অনেক আলেম আছে যারা নাস্তিক মতেরও জবাব দিয়ে থাকেন। 

যেমন শায়েখ আহমাদুল্লার একটি ভিডিও এর মধ্যে প্রশ্ন করা হয়েছে টিকিটিকি হত্যা সম্পর্কে যেটা প্রায় সকল নাস্তিক করে থাকে। শায়েখ কিন্তু প্রশ্নদাতাকে আঁটাকান নি। বরং সুন্দর ভাবে উত্তর দিয়েছেন। এটাই ইসলাম! 

আল্লাহর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে কত ইহুদি-নাসারারা প্রশ্ন করতো আমরা তো তা সকলেই জানি। আল্লাহর রাসুলকে কাফিররা বলত, আল্লাহ কি দিয়ে তৈরি সোনা না রূপা (নাঊজুবিল্লাহ) 

তখন কি নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাদেরকে গালি দিয়েছেন? না কখনোই না বরং নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর ওহী নাজিল হলো আর নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) তাদেরকে উত্তর দিলেন। (সূরা ইখলাস ও তার শানে নাজুল) 

শুধু নবীই নয়। আল্লাহ তায়ালা যখন আদম (আঃ) কে তৈরি করার কথা বলেছেন তখন ফেরেস্তারা বলেছিলো "মানুষরা যদি পৃথিবীতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে!?" তখন আল্লাহ কিন্তু তাদের উপর রাগেন নি। 

কারণ একটাই, ইসলাম প্রশ্ন করতে গবেষণা করতে উৎসাহ প্রদান করে। 

◾তাহলে নাস্তিকদের কথা কেনো আঘাত? 

আমি সব নাস্তিকদের অনুমতি দিলাম তারা প্রশ্ন করতে পারবে। তারা তাদের ব্লগেও প্রশ্ন করতে পারবে ইসলাম নিয়ে কোন অসুবিধা নেই। এমন কি অনেক ওয়েবসাইট আছে যেখানে প্রশ্ন করলে অনেক আলেমরা উত্তর দিয়ে থাকেন। 

প্রশ্ন করা নিয়ে আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমি যেমন বাইবেল, বেদ, ত্রিপিটক এসব নিয়ে লেখালেখি করি ঠিক সেভাবে সকলেই করতে পারবে। প্রশ্ন করতে পারবে এতে কোন বাঁধা নেই কিন্তু নাস্তিকরা তা করে না। তারা প্রশ্নের বদলে এমন বক্তব্য পেশ করবে যা খুবি খারাপ। তাদের এরুপ বক্তব্যই প্রমাণ করে যে তারা উত্তর পেলেও তা মানতে নারাজ। 

যেমন কয়েকটা উদাহরণ দেই, আপনি যে কোন নাস্তিকদের ওয়েবসাইটে গিয়ে সার্চ করুন "নারী লোভী" লেখে! 

চোখের পলকেই দেখবেন অনেক গুলি আর্টিকেল হাজির আর সেখানে লেখা পাবেন,, 

"নবী মুহাম্মাদ নারীলোভী"

এটাই হ্যাঁ এটাই আমাদের আপত্তি! আপনি কেনো নিজের অল্প জ্ঞান নিয়ে নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এমন অশ্লীল ট্যাগ দিবেন?? কেনো? আপনি কি সুন্দর ভাবে বলতে পারলেন না যে,, 

"নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) তো ১১ টা বিয়ে করেছেন তার কারণগুলি যদি বলতেন। আমি তো জানি না তাই জানতে চাচ্ছি"

এমন প্রশ্ন করলে কিন্তু আমরা কখনোই আঘাত পবো না বা রাগবো না। কিন্তু নাস্তিক-অমুসলিমরা এটা না করে বলে,,, 

"নবী মুহাম্মাদ ১১ টা বিয়ে করেছে ছি ছি। নবী ছিলো নারী লোভী হর্স পাওয়ার ছিলো নাকি তার?" (নাঊজুবিল্লাহ) 

যদি সুন্দর ভাবে শালীনতা বজায় রেখে নাস্তিকরা প্রশ্ন করতো তাহলে কিন্তু কোন সমস্যা থাকতো না। অনেকই এসবের জবাব দিয়েছেন। 

তারা জানে না কিসের প্রেক্ষিতে ১১ টি বিয়ে করেছেন নবী মুহাম্মদ (সাঃ)। আর তা না জেনেই নাস্তিক অমুসলিমরা নবীকে নানান রকমের গালিগালাজ করে থাকে। আর এটাই আমাদের আপত্তি! 

নবীকে তারা বলে নারী লোভী, ডাকাত, সন্ত্রাস, শিশুকামী, ধর্ষক আরো অনেক গালিগালাজ করে  (নাঊজুবিল্লাহ) 

এসব আমরা কখনোই মানতে পারবো না। আর মুসলিমদেরো এবং আমারো কোন অধিকার নেই কোন ধর্মকে গালিগালাজ দেওয়া বা অশ্লীল বক্তব্য প্রকাশ করা। আমরা মুসলিমরা কখনোই কৃষ্ণকে গালি দিতে পারবো না বা পারবো না যীশুকে গালি দিতে! আমরা শুধু প্রশ্ন করতে পারি শালীনতা বজায় রেখে। কিন্তু কখনোই কোন ধর্মকে ছোট করা যাবে না। এটাই ইসলামের শিক্ষা। 

ধর্মকে গালি দেওয়া তো দূরে থাকে ধর্মের ঈশ্বরকে গালি দেওয়া পর্যন্ত ইসলামে হারাম। কুরআন আমাদের সেই শিক্ষা দিয়েছে,,, 

[৬:১০৮] আল আনআম


وَلا تَسُبُّوا الَّذينَ يَدعونَ مِن دونِ اللَّهِ فَيَسُبُّوا اللَّهَ عَدوًا بِغَيرِ عِلمٍ كَذلِكَ زَيَّنّا لِكُلِّ أُمَّةٍ عَمَلَهُم ثُمَّ إِلى رَبِّهِم مَرجِعُهُم فَيُنَبِّئُهُم بِما كانوا يَعمَلونَ

আর তোমরা তাদেরকে গালমন্দ করো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত। এভাবেই আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য তাদের কর্ম শোভিত করে দিয়েছি। তারপর তাদের রবের কাছে তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তিনি জানিয়ে দেবেন তাদেরকে, যা তারা করত।

[১৬:১২৫] আন নাহল

ادعُ إِلى سَبيلِ رَبِّكَ بِالحِكمَةِ وَالمَوعِظَةِ الحَسَنَةِ وَجادِلهُم بِالَّتي هِيَ أَحسَنُ إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبيلِهِ وَهُوَ أَعلَمُ بِالمُهتَدينَ

তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন।

আলহামদুলিল্লাহ, এটাই ইসলাম। সুতরাং আমি অমুসলিম-মুসলিম সকলকেই বলব। বিদ্বেষ করবেন না। অশ্লীল বা ব্যাঙ্গ করবেন না। যেমনটা করেছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট যেটা খুবি খারাপ। যীশুকে কিংবা কৃষ্ণকেও যদি এমন ভাবে করা হত সেটাও খারাপ। আমাদের কারোর অধিকার নেই কাউকে গালি দেওয়া। কিন্তু এর মানে এই নয় আমরা প্রশ্ন করতে পারবো না। প্রশ্ন সকলেই করতে পারবে প্রশ্ন করা মানুষের স্বভাব। সুতরাং কেউ কাউকে ছোট করবো না। 

এতে আল্লাহও অসন্তুষ্ট থাকবেন। সুতরাং প্রশ্ন করা কখনোই খারাপ বা প্রশ্ন করাটাই ইসলাম বিদ্বেষ বা ধর্ম বিদ্বেষ নয়। প্রশ্নের ধরণ আমাদের পাল্টাতে হবে। আপনার কাছে কোন কিছু অবৈজ্ঞানিক হলে আপনি বলতে পারবেন না,,, 

"মহা উম্মাদ কুরআন লেখছে তাই ভুলে ভরা"

বরং আপনি বলতে পারেন,, 

"ভাই এই আয়াত টা আমি বুঝতে পারছি না আমায় একটু বুঝিয়ে দিন"

আসুন  ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ বাদ দিয়ে সুন্দরতম প্রন্থায় কাজ করি। 

দাওয়াত দিবো জ্ঞানের সাথে সুন্দর ভাবে। প্রশ্ন করা সবার জন্যই উন্মোক্ত। 

যারা করেছে ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপ তাদের বয়কট করুন,,, 

#Boycott_France_Products
#Boycott_France
#We_Love_Mohammad_ﷺ
#We_Follow_Mohammad_ﷺ
#We_Are_Ummah_of_prophet_Mohammad
#We_Hate_France_government
#Boycott_French_Products
#boycot_france
#Love_Prophet_Muhammad_SAW 
#My_Prophet_My_Honour
#La_Ilaha_Illallahu_Muhammadur_Rasulullah

 MAKE PEACE 

Post a Comment

0 Comments