হিন্দুশাস্ত্রের আলোকে যেসব নারীকে বিয়ে করা যাবে না! (হিন্দুশাস্ত্রে নারী) আমার জিজ্ঞাসা - ৪


অগ্নি,ব্রহ্মবৈর্বত,মৎস,ব্রহ্ম,বিষ্ণু,শিব-পুরাণ ও আমার জিজ্ঞাসা - ৪
বিষয়: হিন্দুশাস্ত্রের আলোকে যেসব নারীকে বিয়ে করা যাবে না! (হিন্দুশাস্ত্রে নারী) (পর্ব: ২)
হিন্দুশাস্ত্র রেফারেন্সে: নাজমুস সাকিব
জিজ্ঞাসায় ও বিস্তারিত আলোচনায়: 
Aminur Rashid
☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳☰ ☱ ☲ ☳

এই আর্টিকেল যে সকল টপিক দেখবেন,,

◕ হিন্দুশাস্ত্রে যেসব নারীদের বিয়ে করতে নিষেধ করেছে!
পয়েন্ট নং:- ১৮,১৯,২০,২১,২২

◕ হিন্দুশাস্ত্রে নারীদের যেসব কাজে দেশের বিনাশ নিশ্চিত!
পয়েন্ট নং:- ২,৮,৯,১০

◕ হিন্দু বা সনাতন শাস্ত্রে নারী!
পয়েন্ট নং:- ১,৩,৪,৫,৬,৭,১১,১২,১৩,১৪,১৫,১৬,১৭,২৩,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮,২৯,৩০

"অগ্নিপীর না হয়ে অগ্নিপুরাণ পড়ুন। বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের বিশ্বাসী হলে ব্রহ্মপুরাণ পড়ুন। যদি ভক্ত হন ঈশ্বর দেবতা অবতারদের তবে পড়ুন শিব-বিষ্ণুদের পুরাণ। তবে পড়ুন। আগের আর্টিকেলে মোট ৫০ টি শ্লোক ছিলো। এইবার মোট ৩০ টি শ্লোক উপস্থাপন করা হলো। আর হ্যাঁ ইহা শুধুমাত্র জিজ্ঞাসা, যারা জ্ঞানী তারা জবাব দিবেন। জিজ্ঞাসা করা কোন ধর্মই নিষেধ করে না যদি মানেন তাহলে জিজ্ঞাসা করায় কোন সমস্যা নেই। কটুক্তি পছন্দ নয়, আমরা সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় আপনাদের কাছে প্রশ্ন ছুড়বো!

প্রশ্ন ছুড়ার যৌক্তিক কারণ হলো আপনাদের ইসলামে নারী নিয়ে নানান মিথ্যাচার ও কটুক্তি অশ্লিল কথাবার্তার ফলসরূপ পাল্টা প্রশ্ন।

মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী ইসলামকে যেভাবে ছোট করে তার মিথ্যার্থ প্রকাশ বই বের করেছে। যদি ইসলামকে এভাবে কটুক্তি করে বই লেখা যায়। তাহলে এটি তো শুধু একটা প্রশ্নপত্র তাও দয়ানন্দের মত নয় বরং সাবলিল ও সুন্দর ভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে।

আর হ্যাঁ বেশিরভাগ হিন্দুরাই পুরাণ মানে পুরাণ কে পঞ্চম বেদ মানে এবং খুবই কম মানুষই ইহাকে বর্জন করে।"

[১]

অসবর্ণা নারীর সহিত কোনো প্রকার ধর্ম কার্য্য করা বিধেয় নহে।
◑ অগ্নিপুরাণঃ ১৫০.২

আমার জিজ্ঞাসাঃ কেন? ইহা কেমন পাপ?

[২]

যে দেশে ম্লেচ্ছ ও নারী জাতি বেশি সে দেশে বসবাস করা যাবে না।
◑ অগ্নিপুরাণঃ ১৫৫.২৪

আমার জিজ্ঞাসাঃ নারী জাতি বেশি হলে সে দেশে বসবাস করা যাবে না এমন বিধান কেন? পুরুষের ক্ষেত্রেও এমন কথা নেই কেন? আর নারী বেশি হলেই দেশ ছাড়তে হবে কেন? নারী কি COVID- 19 Virus নাকি? যে পলায়ন করতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী দেশ থেকে? নাকি এটি বিদ্বেষের বহিপ্রকাশ?

[৩]

নারীদের কে বিশ্বাস করা যাবে না৷
◑ অগ্নিপুরাণঃ ১৫৫.২৯

আমার জিজ্ঞাসাঃ বিশ্বাসঘাতকতা শুধু কি নারীরাই করে? এ তো নারী পুরুষ দুজনেই করে। এ জন্য নারীদের কে বিশ্বাস করা যাবে না কেন বলা হলো? সব নারী কি বিশ্বাসঘাতকতা করে নাকি? না মিথ্যা বলে যে তাদের বিশ্বাস করা যাবে না? আর পুরুষরা কি সাধু সন্যাসী? যদি বলা তো "যাচাই না করে নারী বা পুরুষকে বিশ্বাস করা যাবে না" তাহলেও যৌক্তিক হতো। তাই নয় কি?

[৪]

নারীরা হলো ভোগের বস্তু। নারীদের কে আগে দেবতারা ভোগ করেছে কিন্তু এখন মানুষেরা ভোগ করছে।
◑ অগ্নিপুরাণঃ ১৬৫.১৯

আমার জিজ্ঞাসাঃ নাঊজুবিল্লাহ, প্রথমে বলা হলো নারীরা ভোগের বস্তু তারপর বলা হচ্ছে নারীদেরকে দেবতারা আগে ভোগ করেছে। দেবতাদের চরিত্র তাহলে কি এমন ছিলো? যে তারা নারী ভোগ করতে মত্ত থাকতো? আর বলা হচ্ছে মানুষেরা ভোগ করছে। "মানুষ = পুরুষ" নারী = "ভোগের বস্তু"?

[৫]

পরপুরুষগামিনী স্ত্রী, স্ত্রীজিত (যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর কথাই সব কিছু করে), পুংশ্চলী (কুলহীন নারীর) অন্ন ভক্ষণ নিষিদ্ধ।
◑ অগ্নিপুরাণঃ ১৬৭.৩,৫ ও ৬

আমার জিজ্ঞাসাঃ স্ত্রীজিত বা যে ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সব কিছু করে তাদের অন্ন ভক্ষণ করা কেনো যাবে না? এর সাথে অন্ন ভক্ষণের কি সম্পর্ক?

[৬]

ঋতুস্রাব চলা অবস্থায় নারীকে স্পর্শ করলে পবিত্র হওয়া যায় না।
◑ অগ্নিপুরাণঃ ১৭০.৩৪

আমার জিজ্ঞাসাঃ ঋতুস্রাব চলা অবস্থায় স্পর্শ করলে পবিত্র হওয়া যায় না এটি কেমন কথা? এককথা হতো যদি বলা হতো অপবিত্র হবে। এখানে তো বলা হচ্ছে পবিত্র নাকি হওয়া যায় না। যদি ঋতুবতী নারীকে স্পর্শ করা হয়!

[৭]

যে নারীর কনিষ্ঠ আঙ্গুল মাটি স্পর্শ করে না সে নারী সাক্ষাৎ মৃত্যু রুপি।
◑ অগ্নিপুরাণঃ ২৪৪.৬

আমার জিজ্ঞাসাঃ চমৎকার,, ৫ নাম্বার পয়েন্টে দেখা গেলো যে, যে পুরুষ নারীর সব কিছু করে তার অন্ন ভক্ষণ করা যাবে না। এখন আবার যে নারীর কনিষ্ঠ আঙুল সে নারী নাকি সাক্ষাৎ মৃত্যু রুপি!? এ কেমন বিধান? কনিষ্ঠ আঙুলের সাথে মৃত্যু রুপি হওয়ার কি সম্পর্ক? এসব কি কু লক্ষণ, কুসংস্কার নয়? ইসলামে কু লক্ষণ বলে কিছু নেই। অশুভ বলে কিছু নেই আলহামদুলিল্লাহ। আর কারো যদি জন্মগতভাবে সমস্যা থাকে কনিষ্ঠ আঙুল মাটিতে না লাগে তাহলে সেও মৃত্যু রুপি হবে কি? আর মূল কথা হলো এটির সাথে এটার সম্পর্ক কি? যৌক্তিকতা কি? এর থেকে তো ডিম খেয়ে পরীক্ষা দিলে পরীক্ষায় ডিম পাবে এটাও logical. কিন্তু এই শ্লোক কি lame মনে হচ্ছে না!?

[৮]

যে নারী সন্তান একেবারেই প্রসব করে না সে নারী যে কুলে থাকে বা দেশে থাকে সে কুল বা দেশ নিশ্চিত বিনাশ হইবে।
◑ মৎস্য পুরানঃ ১৩৫.১

আমার জিজ্ঞাসাঃ নারী যদি শারীরিক বা অন্য যেকোন সমস্যার কারণে বাচ্চা জন্মদানে সক্ষম না হয় তাহলে এর সাথে দেশ বিনাশের কি সম্পর্ক? নাকি যেভাবেই হোক নারী বিদ্বেষ করাটাই মূল লক্ষ্য? আর অন্যভাবে বললে বর্তমান যুগে সিজার করে বাচ্চা ডেলিভারী হয়ে থাকে। সুতরাং কেউ যদি সিজার করে কিন্তু প্রসব না করে তাহলে দেশের বিনাশ ঘটবে?

আরেকটি বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর সকল দেশেই এমন অনেকেই আছেন যারা বন্ধা বা প্রসব করে না। বা এমনও আছে যে সিজার করেছে প্রসব করে নি। তাহলে সকল দেশেরই তো বিনাশ হবার কথা!?

[৯]

যে নারী জমজ সন্তান জন্ম দেয় সে নারী যে কুলে থাকে বা দেশে থাকে সে কুল বা দেশ নিশ্চিত বিনাশ হইবে।
◑ মৎস্য পুরানঃ ১৩৫.১

আমার জিজ্ঞাসাঃ জন্ম না দিলেও দোষ। আবার জন্ম দিলেও দোষ!! আচ্ছা জমজ হবে নাকি একা হবে এটি কি নারীর কাজ? নারী কি জানে কিভাবে জমজ হয় আর কিভাবে জমজ হয় না? এসব কি নারীর হাতে? এসব তো নারী পুরুষ কারো হাতেই না। তাহলে জমজ হলে নারীকে কেন দায়ী করা হবে? আর শুধু দায়ী নয় বরং সেই দেশের নাকি নিশ্চিত বিনাশ? এমন জমজ শিশু তো সব দেশেই আছে তাহলে এতদিনে সব দেশ বিনাশ হয়ে যাবার কথা। আর যারা বর্তমানে জমজ শিশু তারাও তো শাস্ত্র পড়লে নিজেকে অপরাধী ভাববে এমনকি নিজের মাতাকেও অপরাধী ভাববে। জমজ হওয়া কি দোষের কিছু?

[১০]

যে নারীর গর্ভ থেকে সন্তান বৈকল্য বা পঙ্গু হয়ে জন্ম গ্রহন করে সে নারী যে কুলে থাকে বা দেশে থাকে সে কুল বা দেশ নিশ্চিত বিনাশ হইবে।
◑ মৎস্য পুরানঃ ১৩৫.২ ও ৩

আমার জিজ্ঞাসাঃ খুবি দুঃখজনক। নারীর গর্ভ থেকে পঙ্গু হয়ে জন্মগ্রহণ করলে এতে নারীর দোষ কি? এজন্য নারীকে কেন দোষ দেয়া হবে? আর নারীকে শুধু নয় বলা হচ্ছে দেশে নাকি হবে নিশ্চিত বিনাশ?? এমন বিনাশ বিনাশ বলা হচ্ছে। এসব সত্যিই হলে এতদিনে পৃথিবীর কোন দেশের কোন অস্তিত্ব থাকতো না!

[১১]

ঋতুমতী নারীকে স্পর্শ করা যাবে না বরং স্পর্শ করা ত্যাগ করতে হবে।
◑ ব্রহ্মপুরাণঃ ২২১.৭৫

আমার জিজ্ঞাসাঃ স্পর্শ করলে তো পবিত্র হওয়াও যাবে না। আচ্ছা শুধু স্পর্শ করলে কি এমন সমস্যা? ঋতুমতী হলে শরীরে স্পর্শ কেন এত খারাপ ভাবে দেখতে হবে?

[১২]

নারীরা হলো উপভোগের বস্ত বা উপভোগের কারন হবে।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৪, শ্লোকঃ ২১

আমার জিজ্ঞাসাঃ আগেরবার বলা হয়েছে নারী দেবতাদেরও ভোগের বস্তু ছিলো। এবং এখন সবাইকেই বলা হচ্ছে নারী ভোগের বস্তু। যাদের আবার দেবতার ভোগ করেছে সেই রীতি কি সবার অনুসরন করতে হবে!?

[১৩]

নারীরা স্বেচ্ছাচারণী, বিলাসোপকরণে অতিশয় অনুরাগী।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৬, অধ্যায়ঃ ১, শ্লোকঃ ২১

আমার জিজ্ঞাসাঃ এসব কেন পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়? সব দোষ নারীদেরই?

[১৪]

নারীরা হলো নিতান্তই লোভী।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৪, শ্লোকঃ ২৮

আমার জিজ্ঞাসাঃ কেন পুরুষ কি লোভী হয় না?

[১৫]

নারীরা ভাগ্যহীন।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৪, শ্লোকঃ ২৮

আমার জিজ্ঞাসাঃ হিন্দু সাংস্কৃতি থেকে হিন্দু পরিবারের বাস্তব জীবনে ব্যাবহার করা কিছু শব্দ হচ্ছে: বউ লক্ষ্মী না, অলক্ষ্মী,  অপয়া, অভাগী। এসব কি তাহলে শাস্ত্রীয় কথা? যদি না হয় তাহলে নারীরা কেন ভাগ্যহীন! বর্তমানে যেসব নারী বিপ্লব ঘটিয়েছে। মানব সেবা করেছে বা Rich person তারাও কি ভাগ্যহীন? ভাগ্যহীন হলে কিভাবে ভাগ্যবতী হয় এরা? তাহলে কি ঈশ্বরের নির্ধারিত বিষয়কে নারীরা নিজেদের উন্নতি সাধন করে ভুল প্রমাণিত করছে!?

[১৬]

নারীরা নিতান্তই কঠোর ও মিথ্যা কথা বলে।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৪, শ্লোকঃ ৩০

আমার জিজ্ঞাসাঃ বাস্তবতা দেখলে আমরা দেখছি পুরুষরা কঠোর নারীরা নয়। আর নারীরা হলেও তা হবে ৩ ভাগের ১ ভাগ। পুরুষরাই বেশি কঠোর হয়ে থাকে। তাহলে শুধু মাত্র নারীদের কঠোর বলে নারী বিদ্বেষ করা হচ্ছে না? আর মিথ্যা কথা কি Gender এর ওপর নির্ভরশীল?

[১৭]

নারী জাতি দুঃশীল হইবে ও নিতান্তই অসদাচারে রত থাকিবে।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৪, অধ্যায়ঃ ২৪, শ্লোকঃ  ৩১

আমার জিজ্ঞাসাঃ কেন? পুরুষদের ক্ষেত্রে কেন নয়? এমন হলে ঈশ্বর নারী জাতি কেনই বা সৃষ্টি করিলেন?

[১৮]

যে নারী কালো ও যার চুল অল্প সে নারীকে বিবাহ করা যাবে না।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ১৬

আমার জিজ্ঞাসাঃ বর্ণবাদী চেতনা নয় কি? তাও high level এর! বর্ণবাদী করার সাথে সাথে এটাও বলছে যে তাদের নাকি বিবাহ করা যাবে না! তাহলে যারা কালো মেয়ে তারা কি বিবাহ না করে ভোগের পণ্য হবে নাকি? না তারা বিবাহ না করে জনগণের সম্পত্তি হবে? আর চুল অল্প হলেও বিবাহ করা যাবে না কেন? যাদের চুল বড় হয় না তারাও কি জনগণের সম্পত্তি হবে? আফ্রিকান নারীরা কালো বর্ণের তো তারাও কি বিবাহ ছাড়া থাকবে? এ কেমন নীতি?

(৮) নাম্বার পয়েন্টে আমরা দেখেছি যে যে নারী প্রসব করে না সে দেশ নাকি বিনাশ হবে। তাহলে যারা কালো তারা যদি বিবাহ না করে তাহলে তো তাদের কুমারী জীবন অতিবাহিত করতে হবে তাদের প্রসব বা বাচ্চাও হবে না। তাহলে সে দেশ বিনাশ হবে। তার মানে তো দেখা যাচ্ছে পতিতাবৃত্তি বা জনগণদের সম্পত্তি হয়ে যেতে হবে? পতিতাবৃত্তিও যদি পাপ হয় তাহলে একজন কালো নারী কিভাবে বাঁচবে?একজন অল্প চুল ওয়ালা নারীও বা কিভাবে বাঁচবে?

[১৯]

যে নারী ঘর্ঘর স্বরা (কথা বলার সময় জোড়ে কথা বলে), অতিক্ষীনবচনা (চিকন করে কথা বলে)  ও কাক স্বরা (কাকের মতো করে কথা বলে) তাদের বিবাহ করা যাবে না।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ১৯

আমার জিজ্ঞাসাঃ ঘর্ঘর হলে বিবাহ করা যাবে না চিকন স্বরের হলেও না! এ কেমন কথা?

[২০]

যে নারীর গণ্ডদ্বয়ে গর্ত্ত (গালের মধ্যে গর্ত্ত) আছে তাকে বিবাহ করা যাবে না।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ২০

আমার জিজ্ঞাসাঃ গালে গর্ত বলতে একমাত্র যেটা বুঝা যায় সেটি হলো টোল! মেয়েদের টোল পড়লে নাকি সুন্দর দেখায় জানতাম। আর এদিকে শাস্ত্র বলছে টোল পড়লে নাকি তাকে বিবাহ করা যাবে না। শুধুমাত্র গালের টোলের জন্য বিবাহ করাটাই কেন বাদ! টোল কি কোন খারাপ জিনিস??

[২১]

যে নারী খাটো ও অধিক লম্বা তাদের বিবাহ করা যাবে না।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ২২

আমার জিজ্ঞাসাঃ এত এত পয়েন্ট দিয়ে বিবাহ করার নিষেধাজ্ঞা করার কি কোন মানে হয়? যে পুরুষ খাটো তাকে তো খাটো মেয়ে বিয়ে করতে হবে। তাহলে সেটাও যদি করতে না পারে তাহলে তো বিয়েই হবে না। কারণ খাটো হলে তো লম্বা মেয়েরা বিয়ে নাও করতে পারে তবে খাটো হলে খাটো মেয়ের সাথে বিয়ে হতে পারে। কিন্তু শাস্ত্র মানলে তো সেটা করা যাচ্ছে না।

ইসলামে এতো এতো নিষেধাজ্ঞা নেই। ইসলাম অনুযায়ী ৪ টি জিনিস দেখে মেয়ে বিয়ে করতে হবে। যথাঃ সৌন্দর্য,বংশ পরিচয়,অর্থ সম্পদ, দ্বীনদারীতা আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনদারীতাকেই প্রাধান্য দিতে বলেছেন। ৪ টার ৩ টা হোক বা না হোক দ্বীনদারীতা যেনো থাকে। 

[বিস্তারিত পাত্রী পছন্দ by: আবদুল হামীদ ফাইযী] 

আলহামদুলিল্লাহ!

[২২]

যে নারীর দাঁতের মধ্যে ছিদ্র আছে তাকে বিবাহই করা যাবে না।
◑ বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ২৩

আমার জিজ্ঞাসাঃ একটা বাজে রীতি হয়তো আপনারা দেখে থাকবেন। আগেকার গ্রামীণ এলাকায় এটি বেশি ছিলো। মুসলিম/হিন্দু সমাজ সবার ভিতরেই এটি ছিলো যে মেয়েকে যাচাইকরণ! অর্থাৎ মেয়ে দেখতে গিয়ে নানান ধরনের উদ্ভট কাজকর্ম লক্ষ্য করা হয়। যেমন মেয়ের হাটা, পা, চুল, গায়ের রং, কণ্ঠস্বর, লম্বা নাকি বেটে এসব দেখা হতো এবং নানান আলাপ সালাপ করা হতো। ইসলামিক থিওলজিতে এসব না থাকলেও হিন্দুশাস্ত্রে দেখা যাচ্ছে যা উপরেই দেখতে পেলাম।

কালো হলে বিয়ে করা যাবে না।
বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ১৬

চুল ছোট হলে বিয়ে করা যাবে না।
বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ১৬

গালে গর্ত-টোল থাকলে বিয়ে করা যাবে না।
বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ২০

কাক স্বরা, ঘর্ঘর স্বরা, অতিক্ষীনবচনা (চিকন স্বর) হলে বিয়ে করা যাবে না।
বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ১৯

দাঁতে ছিদ্র থাকলে সেই নারীকে বিয়ে করা যাবে না।
বিষ্ণু পুরাণঃ অংশঃ ৩, অধ্যায়ঃ ১০, শ্লোকঃ ২৩

সুতরাং এসব রীতি শাস্ত্রে দেখা যাচ্ছে বরং এরেচেয়েও বেশি। দাঁতের ছিদ্র পর্যন্ত দেখা হচ্ছে। যা একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না?

[২৩]

নারীদের শরীর দর্শন করলেই মৃত্যু হয়।
◑ শিবপুরাণঃ ধর্ম্ম-সংহিতা, অধ্যায়ঃ ১৩, শ্লোকঃ ৩৪

আমার জিজ্ঞাসাঃ একচোখা হয়ে যায় না? স্বামী স্ত্রীর কথা বললে তো ভুল। আর যদি স্বামী স্ত্রীর না হয়ে থাকে তাহলে একপাক্ষিক হবে।

কারণ বলা উচিত ছিলো, "স্বামী স্ত্রী বাদে কোন নারী কোন পুরুষের শরীর দর্শন করতে পারবে না। কোন পুরুষও পর-নারীর শরীর দর্শন করতে পারবে না"

ইসলামের কথা বললে, ইসলাম শরীর দর্শন তো দূরা থাক। চোখ দিয়ে তাকাতেই পারবে না, আর পরপুরুষের দিকে চোখ তোলা। ইসলামে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।

[২৪:৩০] আন নূর

قُل لِلمُؤمِنينَ يَغُضّوا مِن أَبصارِهِم وَيَحفَظوا فُروجَهُم ذلِكَ أَزكى لَهُم إِنَّ اللَّهَ خَبيرٌ بِما يَصنَعونَ

মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।

[২৪:৩১] আন নূর

وَقُل لِلمُؤمِناتِ يَغضُضنَ مِن أَبصارِهِنَّ وَيَحفَظنَ فُروجَهُنَّ وَلا يُبدينَ زينَتَهُنَّ إِلّا ما ظَهَرَ مِنها وَليَضرِبنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلى جُيوبِهِنَّ وَلا يُبدينَ زينَتَهُنَّ إِلّا لِبُعولَتِهِنَّ أَو آبائِهِنَّ أَو آباءِ بُعولَتِهِنَّ أَو أَبنائِهِنَّ أَو أَبناءِ بُعولَتِهِنَّ أَو إِخوانِهِنَّ أَو بَني إِخوانِهِنَّ أَو بَني أَخَواتِهِنَّ أَو نِسائِهِنَّ أَو ما مَلَكَت أَيمانُهُنَّ أَوِ التّابِعينَ غَيرِ أُولِي الإِربَةِ مِنَ الرِّجالِ أَوِ الطِّفلِ الَّذينَ لَم يَظهَروا عَلى عَوراتِ النِّساءِ وَلا يَضرِبنَ بِأَرجُلِهِنَّ لِيُعلَمَ ما يُخفينَ مِن زينَتِهِنَّ وَتوبوا إِلَى اللَّهِ جَميعًا أَيُّهَ المُؤمِنونَ لَعَلَّكُم تُفلِحونَ

আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।

[২৪]

নারী জাতি পাতাল, বিষ, সর্প ও অসির তুল্য শত শত মায়া জানে।
◑ শিবপুরাণঃ ধর্ম্ম-সংহিতা, অধ্যায়ঃ ১৩, শ্লোকঃ ৪০

আমার জিজ্ঞাসাঃ ইসলামের ২-১ টা বিষয় নিয়ে যারা অপপ্রচার করেন। তাদের একটু এসবের দিকে দেখা উচিত। নারী জাতির যদি এসব মায়া জেনে থাকে তাহলে, ভালো নারীরা কি করলো? এটি কি নারী বিদ্বেষ বুঝাচ্ছেনা?

[২৫]

নারী সকল অতিশয় ধূর্ত্ত।
◑ শিবপুরাণঃ ধর্ম্ম-সংহিতা, অধ্যায়ঃ ১৩, শ্লোকঃ ৪১

আমার জিজ্ঞাসাঃ নারী বিদ্বেষ নয় কি?

[২৬]

নারীরা স্বৈরাচারী।
◑ ব্রহ্মবৈর্বত্তপুরাণঃ শ্রীকৃষ্ণ-জন্মখণ্ড,অধ্যায়ঃ ১২৮,শ্লোকঃ ১৪

আমার জিজ্ঞাসাঃ যত অভিযোগ শুধু নারীদের উপর। যেখানে স্বৈরাচারী পুরুষ আছে। নারীরা স্বৈরাচারী বলার কোন মানে হয় না। স্বৈরাচারী পুরুষ, মহিলা, শাসক,রাজা-বাদশাহ সব আছে। তাও কেন সব দোষ নারীদের?

[২৭]

পুত্র সন্তানহীন নারী নিষ্ফল।
◑ ব্রহ্মবৈর্বত্তপুরাণঃ গণেশ-খণ্ড, অধ্যায়ঃ ২,শ্লোকঃ  ২২

আমার জিজ্ঞাসাঃ অতিতকাল থেকে মানুষ পুত্র সন্তান কে চাইতো। কন্যা সন্তানকে ঘৃণা করতো। এটি বলা কি পুরুষতান্ত্রিক ও নারী বিদ্বেষ হয়ে গেলো না?

[২৮]

নারীদের একমাত্র প্রভুই হলো তাদের স্বামী।
◑ ব্রহ্মবৈর্বত্তপুরাণঃ গণেশ-খণ্ড, অধ্যায়ঃ ৪,শ্লোকঃ ৩

আমাদের জিজ্ঞাসাঃ কিছু হিন্দুদাদারা বলেন ইসলামে নাকি স্বামীকে সিজদা দেবার কথা বলা হয়েছে। যেখানে কিনা বলা হয়েছে,,

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِغَيْرِ اللهِ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا وَالَّذِى
نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا وَلَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ لَمْ تَمْنَعْهُ
 
“যদি আমি কাউকে নির্দেশ দিতাম আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে সিজদা করার, তাহ’লে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য।” (ইবনে মাজাহ হা/১৮৫৩; সহীহাহ হা/১২০৩।)

আল্লাহ আদেশ দেন নি বরং বলেছেন যদি কাউকে নির্দেশ দিতাম তখন শ্রদ্ধার জন্য স্বামীকে সিজদার কথা বলতেন। তবে আল্লাহ বলেন নি সিজদা দেবার কথা।

কিন্তু উপরের শ্লোকে স্বামীকে সরাসরি নারীদের প্রভু বলা হচ্ছে। শুধু প্রভুই নয় বরং বলা হচ্ছে একমাত্র প্রভু। (নাঊজুবিল্লাহ)

[২৯]

যে পুরুষ সর্ব্বদা স্ত্রীর বশীভূত,  যাহার স্ত্রী বেশ্যা, যাহার মা বেশ্যা তাদের ঘড়ে গমন করা উচিত না।
◑ ব্রহ্মবৈর্বত্তপুরাণঃ গণেশ-খণ্ড, অধ্যায়ঃ ২৩,শ্লোকঃ ২৫

আমার জিজ্ঞাসাঃ স্ত্রীর বশীভূত হলে সমস্যা তবে স্বামীকে প্রভু বানিয়ে দিলেও সমস্যা না! দ্বিচারিতা নয় কি?

[৩০]

যে সংসারে নারীরা প্রধাণ তাদের ঘরে গমন করা উচিত না।
◑ ব্রহ্মবৈর্বত্তপুরাণঃ গণেশ-খণ্ড, অধ্যায়ঃ ২৩,শ্লোকঃ ২৬

আমার জিজ্ঞাসাঃ ইসলামে নারী নেতৃত্ব নিষেধ নিয়ে যেখানে অনেকে বিদ্বেষ করেন। সেখানে তাদের শাস্ত্রে পরিবারেই নারীদের কর্তা মানতে নারাজ। শুধু কর্তা মানতে নয় বরং যারা মানে তাদের ঘরে গমন করাও অনুচিত! কেন?


Extra: 

স্ত্রীরা হলো যজ্ঞের বাধার কারন। সে জন্য স্বামী তার স্ত্রী কে রজ্জুর দ্বারা বেঁধে রেখে যজ্ঞের সম্মুখে প্রসারিত হয়ে গমন করবে। আর স্ত্রীর বাঁধা অবস্থায় মাটিতে বসে বসে তার স্বামীর যজ্ঞ দেখতে হবে। 

◑ শতপথ ব্রাহ্মণঃ ১.৩.১.১২

আমার জিজ্ঞাসঃ নারী কেন যজ্ঞের বাঁধা হবে? তাদের কি ধর্ম পালনের অধিকার নেই? 

__

Last Question: এসব দ্বারা নারী বিদ্বেষ বুঝাচ্ছেনা নাতো? 

Post a Comment

1 Comments

  1. সনাতন ধর্ম নারীদের দারুন মর্যাদা দিয়েছ,এগুলো কি কোন ধর্মের শিক্ষা হতে পারে?

    ReplyDelete