মুহাম্মাদ (সাঃ) কি আসলেই পেডোফাইল ছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)?


লেখক:- আফিফ আলী
------------------------------------------------------

খ্রিষ্টান মিশনারী সহ নাস্তিকরা দাবি করে যে মুহাম্মাদ সাঃ নাকি পেডোফাইল ছিলেন। এর কারণ যদি জিজ্ঞাস করা হয় প্রতিত্তরে সেই পুরাতন আয়েশা রাঃ এর সাথে ৬ বছরে বিয়ে এবং ৯ বছর বয়সে যৌন সঙ্গম এর প্রসঙ্গ উপস্থাপন করা হয়। তবে এই অভিযোগ এর জবাব দেয়ার আগে সবার আগে আমাদের যে জিনিস জানা অত্যাবশ্যক আর তা হল 

পেডোফিলিয়া কাকে বলে? 

পেডোফিলিয়া হচ্ছে এমন একটি মানসিক সমস্যা যার দ্বারা একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ কোন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের প্রতি আকর্ষনবোধ করে [১]। 

এইদিয়ে তারা প্রমাণ করে যে মুহাম্মাদ সাঃ নাকি পেডোফাইল ছিলেন নাউযুবিল্লাহ কেননা, রাসুলুল্লাহ সাঃ ৯ বছর বয়সী আয়েশা রাঃ কে বিবাহ করেছিলেন। 

মেডিকেল সাইন্স অনুযায়ী একজন মেয়ের বয়ঃসন্ধিকাল বা যৌন সঙ্গম করার জন্য উপযুক্ত বয়স শুরু হয় ৯ - ১২ বছরের মাঝে, সেই সময় তার দেহের নানা ধরণের অঙ্গ - প্রত্যঙ্গ বৃদ্ধি লাভ করে, তবে একেক মেয়ের ক্ষেত্রে একেক বছর প্রযোজ্য । কেউ কেউ ৯ বছর বয়সেই যৌন সঙ্গমের উপোযোগী হয় আবার কেউ কেউ ১২ বছর বয়সে [২]। 

হাদিস কি ইংগিত দেয় তখন আয়েশা রাঃ সেইসময়ে সাবালকত্বে পৌছায় নি? 

এখন প্রশ্ন হল আয়েশা রাঃ কি সেইসময়ে? প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা যৌন সঙ্গমের উপোযোগী ছিলেন? এই ব্যপারে আমি নিজের থেকে কিছু বলার আগে নাস্তিকদের দলিল দেখানো যাক। কিছু হাদিথ এবং ফতোয়া দিয়ে তারা প্রমাণ করে যে, আয়েশা রাঃ সেই সময়ে প্রাপ্তবয়স্ক হয়নি। 

প্রথমত তারা হাদিস দিয়ে প্রমাণ কর‍তে চায় [৩], যেখানে বলা হচ্ছে, 

৬১৩০. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সাথে খেলা করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলত [৪]। 

এই হাদিস দিয়ে তাদের দাবি হল যে,  

হাদিসটি মূলত ইংগিত দেয়, ইসলামে পুতুল ঘরে রাখা, পুতুল নিয়ে খেলা করা ইত্যাদি হারাম হলেও বাচ্চাকাচ্চাদের জন্য এসব গ্রহণযোগ্য, অর্থাৎ সাবালকত্বে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত এসব হালাল [৫]। 

কিন্তু ইসলাম কি আসলে এরকম কিছু বলে?  

শায়েখ আমজাদ রাশেদ বলেন, 

বাচ্চাদের পুতুল বা খেলনা কোন অনুসরণীয় জিনিস নয় ( যা মানুষ দেবতা বা অন্য ইলাহ মনে করে)। তাই এটি হারাম বা নিষিদ্ধ নয়। এই বিধান ছেলে এবং মেয়ে উভয় বাচ্চার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য [৬]। 

এছাড়া আরেক হাদিসের মাধ্যমে জানা যায় যেখানে বলা হচ্ছে, 

একদা মুহাম্মাদ সাঃ তাবুক অথবা খায়বার যুদ্ধের পর বাড়ি ফিরলেন এবং আয়েশা রাঃ ছিলেন তার নির্দীষ্ট জায়গায় যা পর্দা দিয়ে ঢাকা ছিল। হঠাৎ এক বাতাস এসে সেই পর্দা সরিয়ে দিল অতঃপর সেখানে বেশ কিছু পুতুল ছিল যা দিয়ে আয়েশা রাঃ খেলছিলেন। সেটি দেখে মুহাম্মাদ সাঃ বলেন, এগুলো কি আয়েশা? তখন আয়েশা রাঃ বলেন এগুলো আমার বাচ্চা [৭]। 

উল্লেখ্য যে উপোরোক্ত হাদিসে খায়বার অথবা তাবুক যুদ্ধের কথা বলা হচ্ছে। এবং সেই সময়েও আয়েশা রাঃ পুতুল নিয়ে খেলেছেন। আমরা যদি সামান্য একটু ক্যালকুলেশন করি তাহলে দেখা যাবে যে, তাবুক যুদ্ধের সময়কাল।ছিল ৬৩০ খ্রিস্টাব্দ আর খায়বারের সময়কাল ছিল ৬২৮ খ্রিস্টাব্দ [৮]। 

পক্ষান্তরে আয়েশা রাঃ এর জন্ম ৬১৩ - ৬১৪ খ্রিস্টাব্দ [৯]। 

তাহলে তাবুক যুদ্ধের সময়ে আয়েশা রাঃ এর বয়স

৬৩০ - ৬১৪ - ১৬ বছর। 

আর খায়বারের সময়ে

৬২৯ - ৬১৪ - ১৪ বছর। 

এরমানে আয়েশা রাঃ ১৪ - ১৬ বছর বয়সেও পুতুল দিয়ে খেলেছেন আর ১৪ বছরের আগেই আনুমানিক ৯-১২ বছর বয়সেই একজন নারী যৌন সঙ্গমের উপযোগী হয়ে যায় [১০]। এরমানে আয়েশা রাঃ বালেগা হবার পরেও পুতুল নিয়ে খেলেছেন। তাই এই কথা একটি সম্পুর্ন মিথ্যাচার যে, ইসলামে পুতুল ঘরে রাখা, পুতুল নিয়ে খেলা করা ইত্যাদি হারাম হলেও বাচ্চাকাচ্চাদের জন্য এসব গ্রহণযোগ্য, অর্থাৎ সাবালকত্বে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত এসব হালাল যা নাস্তিকেরা দাবি করে। 

এছাড়া তাদের দাবি হল যে, মুসলিম এপোলজিস্ট রা দাবি করে যে, মুহাম্মাদ সাঃ যদি শিশুকামী (নাউযুবিল্লাহ) হয়েই থাকে তাহলে উনি কেন ৩ বছর অপেক্ষা করলেন আয়েশা রাঃ এর ৯ বছর হবার জন্য [১১] এই প্রসঙ্গে তারা (নাস্তিকেরা) বলে যে, পেডফিলিয়া রোগে আক্রান্ত লোকেরা সাধারোণত ৮-১০ বছর বয়সী বাচ্চাদের বেশি পছন্দ করে সংগম করার জন্য নাউযুবিল্লাহ । 

আসলেই কি মেডিকেল সাইন্স এরকম কোন তথ্য দেয়? 

সাধারণত পেডোফিলিয়া হচ্ছে এমন একটি রোগ যার জন্য একজন মানুষ কোন এক বাচ্চার প্রতি আকৃষট হয় সেটা সাধারণত ১৩ বছর কিংবা তার চেয়ে কম [১২]। এখন প্রশ্ন হল কত কম?  

মূলত পেডোফিলিয়ার বিশেষ প্রকারভেদ রয়েছে তন্মোধ্যো একটি হল Infantophilia এই প্রকারভেদের লোকেরা সাধারণত ৫ বছরের নিচের শিশুদের প্রতি আকৃষট থাকে [১৩]। 

আরেক প্রকারভেদ হল Hebephilia এই প্রকারভেদের লোকেরা ১১-১৪ বছরের মেয়েদের প্রতি আকৃষট থাকে [১৪]। 

এছাড়া শিশুকামীতার আরেকটি প্রকারভেদ হল Ephebophilia এরা।সাধারণত ১৫-১৯ বছরের মেয়েদের প্রত আকৃষট থাকে [১৫]। 

অথচ কোন প্রকারভেদের মাঝে আমরা এমন কোন বয়স দেখিনা যে বয়সকে পেডোফাইল রা পছন্দ করে যা আয়েশা রাঃ এর বয়সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এবার আসুন একজন পেডোফাইল রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির কিছু শারিরীক - মানসিক সমস্যা দেখে নেয়া যাক এবং নিজের থেকে নিজেই শনাক্ত করা যাক যে এইসকল আলামত / symptoms আদৌ মুহাম্মাদ সাঃ এর মাঝে পাওয়া যায় নাকি। 

আয়েশা রাঃ এর প্রতি রাসুল সাঃ এবিউজিভ ছিলেন? এবং পেডোফিলিয়ার কিছু সিম্পটম

সাধারণত পেডোফাইল রোগে আক্রান্ত লোক নানা যৌন সমস্যায় ভুগে। এছাড়া বেশিরভাগ পেডোফিলিয়া যৌন সমস্যায় ভোগে এমনকি তারা তাদের বৈবাহিক।জীবনেও।নানা।সমস্যার সম্মুখীন হয় ১৬]। 

- উক্ত আলামতগুলোর মাঝে ১% আলামতও মুহাম্মাদ সাঃ এর মাঝে পাওয়া যায়না। কেননা উনি নিজ জীবনের ২৫ বছর কাটিয়েছেন খাদিজা রাঃ এর সাথে যিনি রাসুল সাঃ এর বয়সের অরায় দীগুন বড় ছিলেন এবং উনার পরে ছিলে সাওদা রাঃ যার বয়স ছিল ৬৫। এবং মুহাম্মাদ সাঃ আয়েশা রাঃ এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার আগেই উনার ৬ সন্তান জন্ম নিয়ে নেয় [১৭]। 

সাধারণত পেডোফিলিয়া রা Abused হয় অথচ রাসুল সাঃ আয়েশা রাঃ এর সাথে কখনো এরকম আচরণ করেন নি এবং আয়েশা রাঃ এই বিবাহে সর্ব সম্মত ছিলেন।  

আমাদের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নাস্তিকেরা নিম্নক্ত হাদিসটি পেশ করে বলতে পারেন যে।, ইসলামে কন্যার সম্মতি মানেই চুপ থাকা তাহলে কিসেত ভিত্তিতে বলা যায় যে, আয়েশা রাঃ সম্মত ছিলেন?  

❏ হাদিসটি হলঃ

উবায়দুল্লাহ ইবনু উমার আল কাওয়ারীরী (রহঃ) ..... আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ব বিবাহিতাকে তার সুস্পষ্ট অনুমতি না নিয়ে এবং কুমারীকে তার সম্মতি না নিয়ে বিবাহ দেয়া যাবে না। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! তার (কুমারীর) সম্মতি কিভাবে নেয়া যাবে? তিনি বললেন, সে নীরব থাকলে [১৮]।

মূলত এই হাদিসের ব্যাখ্যা জানতে হবে। এই হাফিস দ্বারা এটি বোঝানো হয়নি যে, ইসলামে কন্যার সম্মতি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাখ্যাটা তাদেত নিজের বরং হাদিসে স্পষ্ট এসেছে যে, 

কোন মেয়ে যদি কোন ছেলেকে পছন্দ না করে তাহলে তার পিতা - মাতা জবরদস্তি তাকে তার সাথে বিবাহ দিতে পারবেনা [১৯]। এটা স্পষ্ট হারাম ইসলামে। 

❏ ইবনে তাইমিয়া খুব সুন্দর এক ব্যাখ্যা দিয়েছে এই প্রসঙ্গে যে, 

Allah did not allow her guardian to force her into buying or renting without her permission, or to eat or drink or wear something that she does not want, so how can he force her into sleeping with and living with someone she does not want to sleep with, and living with someone she does not want to live with. 

অর্থঃ আল্লাহ কখনো অনুমতি দেন না কোন অভিভাবক কে যারা তার মেয়েকে জবরদস্তি করবে কোনকছু কিনতে অথবা ভাড়া দিতে তার অনুমতি ছাড়া, কোন কিছু পরিধান করতে, খেতে বা এমন কোন কিছু করতে যা সে (মেয়েটি) চায়না। তাই কিভাবে তারা (অভিভাবক) তাকে (মেয়েকে) জবরদস্তি করতে পারে এমন কারও সাথে বিছানায় শুতে যাকে সেই মেয়ে মোটেও পছন্দ করেনা [২০] 

এখন অনেকে সেই আয়েশা রাঃ এর হাদিসের প্রসঙ্গ টেনে বলতে পারে যে, তাহলে এই হাদিসের মানে কি? বস্তুত সালফে সলেহীন এবং অন্যান্য হাদিস থেকে এইটাও পরিলক্ষিত হয় যে মেয়েদের সম্মতির বেলায় চুপ থাকাটা হচ্ছে নেয়ে কতৃক "হা" সূচক সম্মতি এবং এটি ইসলামের একটি রেওয়াজ। 

এছাড়া পেডোফাইল রোগে আক্রান্ত লোকেরা এবিউজিভ হয়ে থাকে মেয়ে বাচ্চা কাচ্চাদের প্রতি [২১]

অথচ এমন কোন হাদিস পাওয়া যায়না যেখানে আয়েশা রাঃ বলেছেন যে, রাসুল সাঃ উনার সাথে এবিউজিভ আচরণ করেছেন। 

❏ রাসুলুল্লাহ সাঃ এবং আয়েশা রাঃ এর বিবাহের পরেও তাদের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত সুমধুর 

❏ হাদিস - ১ 

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেন : তুমি কখন আমার উপর সন্তুষ্ট থাক আর কখন গোস্বা কর আমি তা বুঝতে পারি। তিনি বলেন, আমি বললাম : কিভাবে আপনি তা বুঝেন ? তিনি বললেন : তুমি যখন আমার উপর সন্তুষ্ট থাক, তখন বল, এমন নয়- মুহাম্মদের রবের কসম, আর যখন আমার উপর গোস্বা কর, তখন বল, এমন নয়- ইবরাহিমের রবের কসম। তিনি বলেন, আমি বললাম : অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল, তবে আমি শুধু আপনার নামটাই ত্যাগ করি”। [২২]

❏ হাদিস - ২ 

এমনকি আয়েশা রাঃ নিজেও রাসুলুল্লাহ সাঃ কে ভালোবাসতেন যার কারণে তিনি খাদিজা রাঃ এর প্রতি ঈর্ষাও করেছিলেন। 

সাহল ইবনু উসমান (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি খাদীজা ছাড়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীদের আর কাউকে ঈর্ষা করি নি, যদিও আমি তাঁকে পাই নি। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বকরী যবেহ করতেন তখন বলতেন, এর গোশত খাদীজার বান্ধবীদের পাঠিয়ে দাও। একদিন আমি তাঁকে রাগান্বিত করার জন্য বললাম, শুধু খাদিজা খাদিজা (খাদীজাকে এতই ভালবাসেন?) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ তার ভালোবাসা আমার অন্তরে গেঁথে দেয়া হয়েছে।[২৩]

❏ হাদিস - ৩

“হে আল্লাহর রাসূল, আপনার নিকট সবচেয়ে প্রিয় কে ?” তিনি বললেন : “আয়েশা”। আমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন : পুরুষদের থেকে ? তিনি বললেন : “তার পিতা[২৪]

❏ হাদিস - ৪

“কেন আমার মত একজন নারী, আপনার মত একজন পুরুষকে নিয়ে কেন আত্মসম্মান বোধ করবে না ?” [২৫]

❏ সেই সময়ে আরবের গড় আয়ু , সংস্কৃতি, জলবায়ু এবং এই বিয়ে। 


সাধারণত প্রি ইসলামিক যুগে আরবের গড় আয়ু ছিল ৩৫ + ; [২৬]। এমনকি প্রি ইসলামিক আরব যুগ পেড়িয়ে মুঘল যুগেও বয়সসীমা ছিল ৩৫ [২৭]। তাহলে তখন যদি গিড় আয়ু ৩৫+ হয় তাহলে সেই সময়ের লোকেরা ৯-১৫ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ে না করলে বাচ্চা - কাচ্চা লালন করবে কখন? আর ঘড় সংসার করবে কখন? 

এখন অনেকে এই দাবি উত্থাপন করতে পারেন যে, কেন? মুহাম্মাদ সাঃ তো ৬৩ বছর বেচেছিল আবু বকর রাঃ ৬১ আয়েশা রাঃ ৬৪ বছর। 

এইরকম দাবি অনেকে উত্থাপন করতে পারেন সেটা অসম্ভব কিছু না এই তো সেদিন এক নাস্তিক তার ব্লগেই এরকম কথা উল্লেখ করেন। 

তাদের দাবি দিয়ে মূলত তাদেরকেই মিথ্যা প্রমাণ করা সম্ভব। World Health Organization এর তথ্যানুযায়ী জাপানের গড় আয়ু হচ্ছে ৮৩.৭ [২৮]। অথচ পৃথিবীর বৃদ্ধতম ১০০ জন লোকদের মাঝে ১ নম্বরেই রয়েছেন জাপানের Jiroemon Kimura যার বয়স ১১৬ বছর ৫৪ দিন [২৯]। এরমানে কি জাপানের সকল।মানুষ কি ১১৬ বছর আয়ু হিসেবে বিবাহ করবে? মূলত গড় আয়ু বলতে আমরা বুঝি কোন স্থানে বেশিরভাগ মানুষের সাধারণত মৃত্যুর বয়স কত? একজন কিংবা দুইজনের আয়ুর ভিত্তিতে কোন স্থানের গড় আয়ু নির্ধারিত হয় না। সুতরাং এই প্রশ্নটাই অযৌক্তিক। 

❏ সেই সময়ে আরবরা কয় বছর বয়সে বিবাহ করতো? 

মূলত আয়েশা রাঃ এর সাথে রাসুলুল্লাহ সাঃ এর বিবাহ হবার আগেই আয়েশা রাঃ জুবায়ের ইবন মুতিম এর সাথে Engaged ছিলেন যদি আরবের সংস্কৃতি এটা না হত তাহলে কিভাবে জুবাইর ইবন মুতিম আয়েশা রাঃ এর সাথে Engaged হন? [৩০]

এছাড়া উমর রাঃ মুহাম্মাদ সাঃ এর মেয়ে উম্মে কুলসুম কে বিবাহ করেন যখন উম্মে কুলসুম এর বয়স মাত্র ৪ কিংবা ৫ বছর। ভাবতে পারেন? মাত্র ৪ কিংবা ৫ বছর [৩১]। 

এছাড়া ফাতিমা রাঃ এর বিয়ের সময় উনার বয়স ছিল ৯ বছর মতান্তরে ১৪, ১৯ [৩২]।

এছাড়া আল দাউদি বলেন, 

Aa’ishah (may Allaah be pleased with her) was reached physical maturity (at the time when her marriage was consummated). 

অর্থঃ আয়েশা রাঃ শারিরীকভাবে পরিপক্ব ছিলেন উনার বিয়ের সময়। [৩৩]

এতসব যুক্তি দেবার পরেও কিছু অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিক বলতে পারেন,  

ঐসময়ের আরবের মানুষদের মধ্যে ৯ বছর বয়সী বাচ্চা মেয়েদের সাথে যৌনসংগম করা স্বাভাবিক ঘটনা হলেও সর্বসময়ের জন্য আদর্শ চরিত্রের একজন মহামানবের জন্য তা কখনওই স্বাভাবিক ঘটনা হবে না। তাহলে ঐসময়ের সাধারণ মানুষ এবং সর্বসময়ের জন্য আদর্শ চরিত্রের মহামানবের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকেনা। ঐসময়ের কোনো সাধারণ মানুষ সর্বসময়ের জন্য আদর্শ কোনো চরিত্র নন। ইসলাম অনুযায়ী, ইসলামের শেষ নবী সর্বসময়ের জন্য একজন আদর্শ চরিত্র যাকে সারাবিশ্ব অনুসরণ করবে। 

জি.... সেইসকল নাস্তিকদের কথা ধরে যদি আমরা এগোই তাহলে তারাও এইক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ হবে জি হ্যা। 

আপনার কথা আমরা মেনে নিলাম যে সেই সময়ে আরবের সংস্কৃতি এরকম ছিল বলেই তা বর্তমান যুগে সমর্থনযোগ্য নয়। আচ্ছা তাদের কাছে প্রশ্ন হল যে, আমেরিকার ১৭ টি স্টেট এর মাঝে বিবাহের কোন বয়সসীমা নেই [৩৪]। এক্ষেত্রে কোন আইনটি সমর্থনযোগ্য কোন আইনটি সমর্থনযোগ্য নয় এটি কোন মানদন্ডের উপর বিচার করবে? এর উত্তর যদি হয় বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী ১৮ বছর বয়স পারফেক্ট। তাহলে Nebraska এবং Mississippi তে বিবাহের বয়স ১৮ এর চেয়ে বেশি যথাক্রমে ১৯ এবং ২১ কেন [৩৫]? তারমানে যেসব নাস্তিকেরা নিজেদের মানবতার ধারক এবং বাহক বলে পরিচয় দেয় তারা কি ১৮ বছর বয়সের মেয়েকে বিবাহ করে অপরাধ করছে না তো যেমনটা তারা মুহাম্মাদ সাঃ এর ক্ষেত্রে দাবি করে থাকে ?  

আরে ভাই আপনারা তো মুহাম্মাদ সাঃ কে অনুসরণ করেন সেই কারণেই তো সমস্যা। 

জি ইসলামও বলেনা বাচ্চা মেয়েকে সংগম করতে বরং ইসলাম বলে মেয়েদের বালেগা হওয়া অব্দি অপেক্ষা করতে। যে মেয়ে বালেগা বা যৌন সংগমের উপযোগী হবে তার সাথে তখনই যৌন সংগম করা যাবে। 

The fact that it is permissible to marry a young girl does not mean that it is permissible to have intercourse with her; rather that should not be done until she is able for it. [৩৬]

অর্থঃ এটির অনুমতি আছে কোন অল্পবয়সী মেয়েকে বিবাহ করা তবে এটি দিয়ে এটা বোঝানো হয়না যে, তার সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন জায়েয হয়ে গেছে। তার সাথে এই সম্পর্ক তখনই স্থাপন করা যাবে যখন সে এর উপযুক্ত হবে। 

তাহলে যেসকল নাস্তিকেরা ১৮ বছর বয়সী মেয়েকে বিয়ে করেছেন তারা অবশ্যই Nebraska এবং Mississippi এর আইন অনুযায়ী একজন ধর্ষক

এবং একজন পেডোফাইল রোগে আক্রান্ত। 

❏ তথ্যসূত্রঃ

1. Gavin H (2013). Criminological and Forensic Psychology. SAGE Publications. p. 155. 

2. PUBERTY INFORMATION FOR BOYS AND GIRLS - [ https://www.avert.org/sex-stis/puberty]


4. [মুসলিম৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪০, আহমাদ ২৬০২০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৮৭)


6. Playing with dolls and stuffed animals - [ https://islamqa.org/shafii/qibla-shafii/33749]

7. Exemption of (baby) dolls from the ruling on haraam images [ https://www.google.com/amp/s/islamqa.info/amp/en/answers/9473



10. রেফারেন্স [2] দ্রষ্টব্য। 

11. রেফারেন্স [3] দ্রষ্টব্য। 

12. Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders, 5th Edition

13. Greenberg, David M.; Bradford, John; Curry, Susan (1995). "Infantophilia—a new subcategory of pedophilia?: a preliminary study" (PDF). The Bulletin of the American Academy of Psychiatry and the Law. 23 (1): 63–71. PMID 7599373.

14. Blanchard R, Lykins AD, Wherrett D, Kuban ME, Cantor Jm, Blak T, Dickey R, Klassen PE (June 2009). "Pedophilia, hebephilia, and the DSM-V". Arch Sex Behav. 38 (3): 335–50. doi:10.1007/s10508-008-9399-9. PMID 18686026.




18. সহীহ মুসলিম হাঃ একাডেমি ৩৩৬৪

19.. Bukhaari, 6968; Muslim, 1419. Source: https://www.google.com/amp/s/islamqa.info/amp/en/answers/163990

20. Majmoo‘ al-Fataawa, 32/25


22. মুসলিম, অষ্টম খণ্ড, পনেরতম অংশ, পৃষ্ঠা : (২০৪) দারু ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবি, বইরুত, দ্বিতীয় মুদ্রণ, হি.১৩৯২, ই.১৯৭২

23. সহিহ মুসলিম ৬০৬০

24. বুখারি ও মুসলিম

25. মুসলিম

26. Conrad, Lawrence I. (2006). The Western Medical Tradition. Cambridge University Press. p. 137. ISBN 978-0-521-47564-8.

27. Salman, Peerzada (August 21, 2015). "Mughals were at the right place at the right time". Dawn. Retrieved March 22, 2019.



30. মুসনাদে আহমাদ, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠাঃ ২১১

31. আল ফারুক ২য় খন্ড ৫৩৯ এবং তারীখে আবুল।ফিদা ১ম খন্ড ১৭১ 

32. Fatimah", Encyclopaedia of Islam. Brill Online, "Fatimah bint Muhammad". Muslim Students' Association (West) Compendium of Muslim Texts. Archived from the original on 28 May 2009, Ordoni (1990) pp.42–45

33. Sharh Muslim, 9/206
 [❏ On acting; and the ruling on marrying young girls - https://islamqa.info/en/answers/22442/on-acting-and-the-ruling-on-marrying-young-girls]

34.https://en.m.wikipedia.org/wiki/Child_marriage_in_the_United_States


36. On acting; and the ruling on marrying young girls Islamqa Fatwaa 22442 [ https://islamqa.info/en/answers/22442/on-acting-and-the-ruling-on-marrying-young-girls]

Post a Comment

0 Comments