দয়ানন্দ স্বরস্বতীর মিথ্যাচার! [ খন্ডন ও পাল্টা প্রশ্ন ]


মুহাম্মদ আলী, সিরিজ - ১৪
বিষয়:- দয়ানন্দ স্বরস্বতীর মিথ্যাচার! 
____________________________________________________________________________

মুহাম্মদ আলী খোলা মাঠে হেঁটে হেঁটে মুক্ত বাতাসের স্বাদ নিচ্ছে। এমন সময় অজয় দা হাজির! অজয় বলতে লাগলো। 

অজয়:- আচ্ছা মুহাম্মদ আলী, স্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতীর সত্যার্থ প্রকাশ বই তোর কেমন লাগলো? 

মুহাম্মদ আলী:- খুবই হাস্যকর। বইটিতে লাইনে লাইনে ভুল কথা। যা থেকে আমি বেহুশ না হয়ে পারি নি। এতো অজ্ঞ মানুষ কিভাবে একটা বই লিখতে পারে সেটাই চিন্তা করি সবসময়। 

অজয়:- হা হা হা। তোদের কাঠ মোল্লারা কখনো পারে নি দয়ানন্দের জবাব দিতে আর তুই তো মশা। যাকে বলে "হাতি ঘোড়া গেলো তল আর মশা বলে কত জল" হা হা হা। 

মুহাম্মদ আলী:- তাই নাকি? তা মশাই আমায় উনার কিছু যুক্তি দেখান তো। 

অজয়:- এই যে আজ পড়লাম আমি সত্যার্থ প্রকাশ। আর সেই সত্যার্থ প্রকাশের ২২২ নং পৃষ্ঠায় একটা প্রশ্ন করা হয়েছে সেটাই তোকে করছি যদি তুই সত্যিই পারিস আমার জবাব দে!

মুহাম্মদ আলী:- বলো, কি প্রশ্ন! 

অজয়:- এইযে, সূরা ফাতিহার মধ্যে তোরা পরিস "তোমারই কাছে সাহয্য প্রার্থনা করি" তাহলে আমায় তুই বল। সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে বলে কি কুকর্মের সময়ও সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে? 

[ মুহাম্মদ আলী এক গ্লাস পানি পান করলো। ]

মুহাম্মদ আলী:- বেচারা এতো অজ্ঞতা দেখালো। শুনো অজয়দা দয়ানন্দ শুধু এই কথাই বলে নি তার আগে বলেছে,,, 

"খুদা কি সকল সময় ন্যায়বিচার করেন না? কোন বিশেষ দিনেই কি তিনি ন্যায় বিচার করেন?" (সত্যার্থ প্রকাশ পৃষ্ঠা:- ২২২) 

এই হল অবস্থা। আল্লাহ সূরা ফাতিহাতে বলেছেন "তিনি বিচার দিনের মালিক" এখানে কোথাও বলা নেই যে তিনি শুধু সেই দিনেই ন্যায়বিচার করেন। কত বড় মিথ্যাবাদী উনি। বরং আয়াতে বলা বিচার করা হবে। 

আর আল্লাহ সব সময় ন্যায়বিচার করেন। কিন্তু উপরের আয়াতে শেষ বিচারের কথা বলা হয়েছে। কোথাও বলা হয় নি যে সেই দিনেই শুধুমাত্র ন্যায়বিচার করেন। এতো মিথ্যাবাদী কেনো উনি? 

[ অজয় একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেলো ]

অজয়:- (হতাশ কণ্ঠে) ইয়ে মানে। 

মুহাম্মদ আলী:- আল্লাহ যে "শুধুমাত্র" শেষ বিচারের দিনেই ন্যায়বিচার করেন তা কোথাও বলা নেই। কিন্তু বেচারা দয়ানন্দ মিথ্যা বলেছে। 

বরং আল্লাহ নিজেই বলেছেন তিনি কারো উপর যুলুম করেন না,,, 

[৪১:৪৬] হা-মীম সেজদাহ্

مَن عَمِلَ صالِحًا فَلِنَفسِهِ وَمَن أَساءَ فَعَلَيها وَما رَبُّكَ بِظَلّامٍ لِلعَبيدِ

যে সৎকর্ম করে সে তার নিজের জন্যই তা করে। আর যে অসৎকর্ম করে তা তার উপরই বর্তাবে। তোমার রব তাঁর বান্দাদের প্রতি মোটেই যালিম নন।

আল্লাহ নিজেই আমাদের ন্যায়বিচার করতে আদেশ দিয়েছেন,,, 

[৬০:৮] আল মুম্‌তাহিনাহ্‌

لا يَنهاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذينَ لَم يُقاتِلوكُم فِي الدّينِ وَلَم يُخرِجوكُم مِن دِيارِكُم أَن تَبَرّوهُم وَتُقسِطوا إِلَيهِم إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ المُقسِطينَ

দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে তোমাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।

[৭:২৯] আল আরাফ

قُل أَمَرَ رَبّي بِالقِسطِ وَأَقيموا وُجوهَكُم عِندَ كُلِّ مَسجِدٍ وَادعوهُ مُخلِصينَ لَهُ الدّينَ كَما بَدَأَكُم تَعودونَ

বল, ‘আমার রব ন্যায়বিচারের নির্দেশ দিয়েছেন আর তোমরা প্রত্যেক সিজদার সময় তোমাদের চেহারা সোজা রাখবে এবং তাঁরই ইবাদাতের জন্য একনিষ্ঠ হয়ে তাঁকে ডাক’। যেভাবে তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, সেভাবে তোমরা প্রথমে ফিরে আসবে।

সব থেকে আফসোস এই যে স্বামী দয়ানন্দ যা দাবী করলেন তার পক্ষে তিনি রেফারেন্স দিতে অক্ষম হলেন। তিনি মিথ্যা দাবী করলেন। কোথাও বলা নেই যে বিশেষ দিনেই ন্যায়বিচার করা হয় বাকি সময় করা হয় না। যেখানে আল্লাহ নিজেই বলেছেন তিনি কারো প্রতি যুলুম করেন না। আয়াতের সাথে উনার দাবীর কোন মিল নেই। 

[ অজয়ের মূখের হাসি ভাবখানা যেনো চলে গেছে কোন গহীন বনে ]

অজয়:- (হতাশ হয়ে) আচ্ছা বুঝলাম। এবার আমার প্রশ্নের উত্তরটা? 

মুহাম্মদ আলী:- হুম অবশ্যই। কেনো নয়? তুমি প্রশ্ন করেছো সূরা ফাতিহায় বলা হয়েছে "আমার তোমার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি" আর এই বাক্য নিয়ে দয়ানন্দ বলেছেন,,, 

"তাঁহাকে ভক্তি করা ও তাহার সহয়তা প্রার্থনা করা অবশ্য সঙ্গত; কিন্তু তাই বলিয়া কুকর্মের জন্যও কি তাঁহার সহয়তা তার প্রার্থনা করিতে হইবে?" (সত্যার্থ প্রকাশ, পৃষ্ঠা:- ২২২) 

আচ্ছা অজয় দাদা উপরের আয়াতের কোথাও কি বলা হয়েছে কুকর্মের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করিতে হইবে??? কোথাও বলা আছে??? নেই নেই নেই। তাহলে এমন নিচু মানের জ্বালিয়াতী কিভাবে করলো??? উনার তো লজ্জা হওয়া উচিত ছিলো এসব দাবী করার আগে। 

অজয়:- (নিশ্চুপ) 

মুহাম্মদ আলী:- এমনি যদি হয়, তাহলে বেদে যে বলা হয়েছে,,, 

যজুর্বেদ ৩২/১৪

..."হে ঈশ্বর আমি জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সাহস এবং শক্তি কামনা করিতেছি।"

তাহলে কুকর্মের আগেও শক্তি-সাহস কামনা করা যাবে? যেমন চুরির আগে সাহস। খুনের আগে শক্তি???? যাবে???

[ অজয় খুবই লজ্জা পেলো। এবং চলেও গেলো, অজয় মনে মনে ভাবলো "আসলেই দয়ানন্দ খুবি মিথ্যাচার করেছে" ]

Post a Comment

4 Comments

  1. Dur baal Dayananda Saraswatir Satyartha Prakash-er ekta reference nei athacha just bole dilo "...Se naaki mithyachar korechhe...". Reference tule bolna ki mithyachar korechhe. No reference from Satyartha Prakash. Tuito just Quran-eri gungaan geye geli( tate amar apotti nei...). No reference from satyartha prakash.

    ReplyDelete
    Replies
    1. আসসালামু আলাইকুম,
      মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। কিছু মনে করবেন না একটা কথা বলি আপনি একটা চশমা কিনুন যাতে করে ভালো দেখতে পারেন। কারণ আপনি না পড়েই মন্তব্য করলেন তাও শালীনতা রাখলেন না। আপনি কি পুরোটা পড়েছেন? চোখে সমস্যা? আর্টিকেলে রেফারেন্স দেওয়াই আছে "(সত্যার্থ প্রকাশ, পৃষ্ঠা:- ২২২)"

      সুতরাং, আগে চোখের ডাক্তার দেখান। আবারো ধন্যবাদ।

      @Admin

      Delete
  2. ভাই দারুণ হয়েছে। জাযাকাল্লাহ

    ReplyDelete