🖋Author:- Aminur Rashid
________________________________________________________________________
.
আসসালামু আলাইকুম,,,
সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা। খ্রিষ্টানদের কাজ হচ্ছে মিথ্যাচার করা আর আজ তাদের আরেকটি মিথ্যাচারের জবাব দিব ইনশাআল্লাহ।
.
খ্রিষ্টানরা যীশুকে বানিয়েছে ঈশ্বর কিন্তু যীশু আদৌ ঈশ্বর নয় তার পরে তারা কুরআন অনুসারে যীশুকে ঈশ্বর প্রমাণ করার ব্যার্থ চেষ্টা করেছিলো সেখানেও তারা ব্যার্থ হয়েছে। এই বিষয়ে আমার পোষ্ট পড়তে পারেন আসলেই কি যীশু ঈশ্বর নাকি ঈশ্বর নয়। [১]
.
তারা এভাবেই মিথ্যা বলে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে। ঠিক এমন একটি মিথ্যাচার হলো ইসলাম অনুযায়ী নাকি পৌল যার আগের নাম শৌল সে নাকি নবী।
.
▪ ইসলামে নাকি পৌল হলো নবী সেটা নিয়ে আমি আগে পোষ্ট পাই নাই তাই কোন জবাব দেই নাই কিন্তু আমার চোখে পড়ল যে খ্রিষ্টানরা আবার আরেক জ্বালিয়াতী শুরু করেছে সেটা হলো পৌল নাকি ইসলাম অনুযায়ী নবী।
.
তাই ভাবলাম এর জবাব দেওয়া প্রয়োজন আসুন দেখে নেওয়া যাক,,,
.
▪ পবিত্র কুরআন এবং হাদিস তন্ন তন্ন করে খোঁজলেও পৌলের নাম গন্ধ পাওয়া যাবে না। আর আজ পর্যন্ত কেউ পৌল কে কুরআন-হাদিস থেকে নবী প্রমাণ করতে পারে নি। তবে আমি দেখলাম খ্রিষ্টানরা নানান জায়গায় ইবনে কাসীর এর একটি রেফারেন্স হাজির করে প্রমাণ করতে চায় পৌল নাকি নবী।
.
ইবনে কাসীরের বিখ্যাত নবীদের জীবনী বই "কাসাসুল আম্বিয়াতে" নাকি পৌল যে নবী তা বলে হয়েছে। এবার দেখুন এরা কত ভাওতাবাজ।
.
তারা যে রেফারেন্স দেয় সেটা হলো,,,
.
Qasas al-Anbiya’ by Ibn Kathir (D. 774H), Vol. 1, Page Number. 575
قصص الانبياء لابن كثير ( المتوفى774هـ ) الجزء الأول ص575
باب ذكر صفة عيسى عليه السلام وشمائله وفضائله.
وكان ممن آمن بالمسيح وصدقه من أهل دمشق رجل يقال له ضينا وكان مختفيا في مغارة داخل الباب الشرقي قريبا من الكنيسة المصلبة خوفا من بولس اليهودي وكان ظالما غاشما مبغضا للمسيح ولما جاء به وكان قد حلق رأس ابن أخيه حين آمن بالمسيح وطاف به في البلد ثم رجمه حتى مات رحمه الله
Section mentioning the status of E’esa (upon him peace) and his virtues.
And one who believed in The Messiah and believed him from the people of Damascus was a man who was called Dina and was hiding in a cave inside the eastern door close to the solid church for fear of the Jew Paul, and he was unjust and oppressive, with hatred for the Messiah, and when he came to him, he shaved the head of his nephew when he believed in The Messiah and roared him in the country and then stoned him until he died, Allah’s mercy be upon him.
And one who believed in The Messiah and believed him from the people of Damascus was a man who was called Dina and was hiding in a cave inside the eastern door close to the solid church for fear of the Jew Paul, and he was unjust and oppressive, with hatred for the Messiah, and when he came to him, he shaved the head of his nephew when he believed in The Messiah and roared him in the country and then stoned him until he died, Allah’s mercy be upon him.
ولما سمع بولص أن المسيح عليه السلام قد توجه نحو دمشق جهز بغالة وخرج ليقتله فتلقاه عند كوكبا فلما واجه أصحاب المسيح جاء إليه ملك فضرب وجهه بطرف جناحه فأعماه فلما رأى ذلك وقع في نفسه تصديق المسيح فجاء إليه واعتذر مما صنع وآمن به فقبل منه وسأله أن يمسح عينيه ليرد الله عليه بصره فقال اذهب إلى ضينا عندك بدمشق في طرف السوق المستطيل من المشرق فهو يدعو لك فجاء إليه فدعا فرد عليه بصره وحسن إيمان بولص بالمسيح عليه السلام أنه عبد الله ورسوله.
When Paul heard that The Messiah had gone to Damascus, he prepared a mule and went out to kill him, and he received it at Kokuba; when he faced the companions of The Messiah, an Angel came to him, and he hit his face at the end of his wing, so when he saw that he fell. He believed the Messiah, and came to him and apologized for what he did and believed in him and he accepted it. And he asked him to wipe his eyes so that God would return his sight to him. He said, “Go to our city in Damascus, at the end of the rectangular market of the East. He called you and came to him and returned to him his eyesight.” And Paul had solid faith in the Messiah (upon him peace) that he is a slave of Allah and His Messenger.
.
▪ তো আসুন এখানে নাকি পৌলকে নবী বলা হয়েছে। এই পুরো লেখায় কোথাও পৌলকে নবী বলা হয় নি এমন কি কাসাসুল আম্বিয়াতে পৌল জীবনী নিয়ে কোন অধ্যায় নেই।
.
শেষ লাইনে বলা হয়েছে,,,
"Paul had solid faith in the Messiah (upon him peace) that he is a slave of Allah and His Messenger."
.
দেখুন এখানে কি বলা হয়েছে আর খ্রিষ্টানরা কি প্রমাণ করার চেষ্টা করে। এখানে বলা হয়ে
.
"পোল আন্তরিক ভাবে ঈসা মসীহ এর উপর ঈমান এনেছেন, তিনি তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।"
.
দেখুন এখানে পোলকে রাসুল নয় বরং বলা হয়েছে পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।
.
আর যদি বাংলা কাসাসুল আম্বিয়া পড়েন সেখানে আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে,,
.
"পোল আন্তরিক ভাবে ঈসা মসীহ এর উপর ঈমান এনেছেন, তিনি তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।তার নামে দামিশকে একটি গির্জা তৈরি করা হয়।" [৩]
.
.
অর্থাৎ "পোল আন্তরিক ভাবে ঈসা মসীহ এর উপর ঈমান এনেছেন, পোল তাকে অর্থাৎ (ঈসাকে) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।তার অর্থাৎ (পোলের) নামে দামিশকে একটি গির্জা তৈরি করা হয়।"
.
এই বিষয়টা খ্রিষ্টানরা কখনোই বুঝে না আর না বুঝে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে। যেখানে কিনা বলা হয়েছে পোল ঈসা (আ:) প্রতি ঈমান-বিশ্বাস এনেছেন, তিনি তাকে আল্লহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
.
আর ভন্ড খ্রিষ্টানরা বলছে এখানে নাকি পৌলকে নবী বলা হয়েছে। কত বড় জ্বালিয়াতী। পৌলকে যদি ইবনে কাসীর নবীই মানতো তাহলে নবীদের জীবনীর মধ্যে পৌলের জীবনী দেওয়া থাকতো।
.
আমরা জানি রাসুল তাদের বলা হয় যাদের উপর কিতাব নাজিল করা হয়েছে আর নবী ঈসা (আ:) এর উপর ইঞ্জিল নাজিল হয়েছে। এই কারণেই পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
.
আর পোল নামক কারো উপর কোন লোকের উপর কোন কিতাব নাজিল হয় নি। কাসাসুল আম্বিয়াতে ও তার জীবনী নামে কোন "জীবনী নাই"।
.
✔ তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম কাসাসুল আম্বিয়াতে বাইবেলের-পৌলের কথা বলা নয় নি আর যে পোলের কথা বলা হয়েছে সে রাসুল তা বলা হয় নি। বরং কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোলের কথা বলা হয়েছে সে "ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন"।
.
.
▪ এবার আসুন আমরা দেখি বাইবেলের পৌল আর ইবনে কাসীর যে পোলের কথা বলেছেন তার মধ্যে পার্থক্য।
.
.
বাইবেলের পৌল যীশুকে ঈশ্বর ভাবতো,,
.
পৌল বলেছেন: যীশু খোদার পুত্র বরং তিনিই খোদা ( রোমীয় ৯:৫/ফিলিপীয় ২:১১)।
.
আর যীশু যে ঈশ্বর নন তা উপরের লিঙ্ক দিয়েছি।
.
▪ দেখুন বাইবেলের পৌল ভাবতো যে যীশু বা ঈসা (আ:) হলো ঈশ্বর। আর কাসাসুল আম্বিয়ার পোল বিশ্বাস করতো ঈসা (আ:) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল।
.
✔ অতএব আমরা বুঝলাম কখনোই বাইবেলের পৌল আর কাসাসুল আম্বিয়ার পোল এক নয়।
.
অনেকে বলবেন নাম তো একরকম তাদের আমি বলব বাইবেলের হারুণ কে নিয়ে বলা হয়েছে হারুণ মূর্তিপূজা করেন। [৪]
আর কুরআনের হারুণ (আ:) মূর্তিপূজা করতেন না। [৫]
.
এখানেও কিন্তু নাম একরকম এর মানে এই নয় বাইবেলের হারুণ হলো কুরআনের। বরং বাইবেল মিথ্যা বলেছে হারুণ নিয়ে আর যা বলেছে তা আমারা মানব না ঠিক তদ্রূপ বাইবেল বলেছে লূত নবী নাকি তার মেয়েদের সাথে যৌনকর্ম করেছে তার মেয়েকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছে। [৬]
কিন্তু কুরআন লূত কে দিয়েছে সম্মান। [৭]
.
সুতরাং,, বাইবেলের পৌলের যে বৈশিষ্ট্য দেখা যায় তা কাসাসুল আম্বিয়ার সাথে মিল নেই।
.
✖ বাইবেল অনুযায়ী পৌল বলেছেন যীশু ঈশ্বর।
.
✔ কাসাসুল আম্বিয়া অনুযায়ী পোল বলেছে ঈসা (আ:) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।
.
আশা করি সকলে বুঝতে পেরেছেন। পোল নামের কেউ যদি কেউ রাসুল হয়ে থাকতো তাহলে কাসাসুল আম্বিয়াতে তার জীবনী এবং তার উপর নাজিলকৃত কিতাবের নাম বলা হতো। পোল কখনোই রাসুল নয় তাই ইবনে কাসীর কোথাও তাকে নিয়ে বলে নি কুরআন-হাদিসেও পৌল বলে কোন নবী আছে তার নাম গন্ধ নাই। আর কাজ নাই কাম ইবনে কাসীর পৌলকে রাসুল বলবে। আর কাসাসুল আম্বিয়া অনুযায়ী পোলের নামে একটা গির্জা তৈরি করা হলো।
আরো উপরের দিকে যদি পড়েন সেখানে বলা হয়েছে।
.
"দামিশকে এক ব্যাক্তি ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান আনেন, তার নাম যায়ন। তবে তিনি পোল নামক জনৈক ইহুদীর ভয়ে দামিশকের পূর্ব গেটে গীর্জার নিকটে একটি গুহায় আত্মগোপন করে থাকেন।"[৮]
.
দেখুন কাসাসুল আম্বিয়ার পোল ছিলেন একজন ইহুদি।যদি সে রাসুল হতো তাহলে ইহুদি নয় বরং মুসলিম থাকতো এবং আল্লাহর তাওহিদের বানী ছড়িয়ে দিতো। কিন্তু পৌল ছিলো ইহুদি। তার পরে ঈসা (আ:) যখন দামশিকের দিকে গেলো পোল ঈসা (আ:) কে মারতে এলো কিন্তু পোলের চোখ হয়ে গেলো অন্ধ। তার পরে যখন পোল সুস্থ হল তখন "পোল ঈসার উপর ঈমান আনলো, তিনি তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।"[৯]
.
.
আর এটাকে ঘুরাতে ঘুরাতে পৌলকে রাসুল বানালো। এই হলো বিকৃত করার প্রপাগান্ডা। পুরো কুরআন যদি খোঁজেন কোথাও পাবেন না যে বলা হয়েছে পৌলের কথা। ইবনে কাসীরেে কাসাসুল আম্বিয়াতে যুলকারনাইন কে নিয়ে বলা হয়েছে কি্তু পৌলকে নিয়ে কোন অধ্যায় তৈরি করা হয় নি। পোলকের শুধু এই জায়গায় পাওয়া যায় যেখানে পোল ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান এনেছে, তিনি অর্থাৎ পোল তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন। আমরা জানি রাসুলের উপর কিতাব পাঠানো হয় নবুয়ত পায় আর ঈসা (আ:) তা পেয়েছেন। কিন্তু কোন পোল নামের কেউ পেয়েছে এর কোন উল্লেখ নাই। কাসাসুল আম্বিয়াতে "যায়ন" নামে এক ব্যাক্তি ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান আনেন।যায়ন যেমন কোন রাসুল নন ঠিক তদ্রূপ পোলও নয়। পোল নামক একজন ঈমান আনেন ঈসা (আ:) এর উপর এবং ঈসাকে রাসুল মেনেছেন।
.
.
.
✔ এবার যে সকল খ্রিষ্টান মনে করে কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোলের কথা বলে হয়েছে সে পোল তাহলে সকল খ্রিষ্টানকে মানতে হবে,,,
.
১) পোল নামক ব্যাক্তি কোন রাসুল বা নবী নন এর কোন উল্লেখ নেই।
২) পোল বলেছেন ঈসা (আ:) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। অর্থাৎ ঈসা (আ:) কোন ঈশ্বর নয়। পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর পুত্র নয় বরং বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।
৩) পোল ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান এনেছে এবং তাকে আল্লাহর বান্দা রাসুল মেনেছেন মুসলিম হয়েছেন।
৪) পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ভাবতো অর্থাৎ পোল আল্লাহকে বিশ্বাস করতো। তাহলে খ্রিষ্টানরা কি আল্লাহ ও তার রাসুল (স:) কে বিশ্বাস করবে!?
.
এই তিনটি বিষয় কখনোই মানবে না খ্রিষ্টানরা কারণ। খ্রিষ্টানরা মানে পৌল মুসলিম নন পৌল ঈসাকে ঈশ্বর বলেছে পৌল নবী ইত্যাদি ইত্যাদি।
.
.
▪ অবশেষে বলব,,,
কাসাসুল আম্বিয়াতে পোলকে রাসুল বলা হয় নি। আর কুরআন হাদিসের কোথাও পোলের নাম গন্ধ নেই। পারলে আমায় কেউ দেখাবেন কোন হাদিসে বা আয়াতে আছে। আর কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোল সে ইহুদি থেকে মুসলিম হয়েছে আর পোল ঈসাকে রাসুল মনে করতে আল্লাহর বান্দা মনে করতেন ঈশ্বর মনে করতেন না। তাই বাইবেলের পৌলকে কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোল সেটার সাথে মিলালে খ্রিষ্টানরা এমনিতেই ধরা খাবে।
সকলকে ধন্যবাদ,,,
.
وَلَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوا الْحَقَّ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ
💕তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না।
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ৪২)
.
.
তথ্যসূত্রঃ
[১]
যীশু কি ঈশ্বর!
[২] কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা - পৃষ্ঠা:- ৭৯০
[৩] যাত্রাপুস্তক ৩২ : ১-৬
[৪] সূরা ত্ব-হা ২০ : ৮৬-৯১
[৫] আদিপুস্তক ১৯:৩৩/আদিপুস্তক ১৯:৩১ /আদিপুস্তক ১৯:৮
[৬] আল-আ‘রাফ ৭:৮১/আল-আ‘রাফ ৭:৮০/আল-আন‘আম ৬:৮৬
[৭] কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা - পৃষ্ঠা:- ৭৮৯
[৮] কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা - পৃষ্ঠা:- ৭৮৯-৭৯০
.
▪ তো আসুন এখানে নাকি পৌলকে নবী বলা হয়েছে। এই পুরো লেখায় কোথাও পৌলকে নবী বলা হয় নি এমন কি কাসাসুল আম্বিয়াতে পৌল জীবনী নিয়ে কোন অধ্যায় নেই।
.
শেষ লাইনে বলা হয়েছে,,,
"Paul had solid faith in the Messiah (upon him peace) that he is a slave of Allah and His Messenger."
.
দেখুন এখানে কি বলা হয়েছে আর খ্রিষ্টানরা কি প্রমাণ করার চেষ্টা করে। এখানে বলা হয়ে
.
"পোল আন্তরিক ভাবে ঈসা মসীহ এর উপর ঈমান এনেছেন, তিনি তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।"
.
দেখুন এখানে পোলকে রাসুল নয় বরং বলা হয়েছে পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।
.
আর যদি বাংলা কাসাসুল আম্বিয়া পড়েন সেখানে আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে,,
.
"পোল আন্তরিক ভাবে ঈসা মসীহ এর উপর ঈমান এনেছেন, তিনি তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।তার নামে দামিশকে একটি গির্জা তৈরি করা হয়।" [৩]
.
.
অর্থাৎ "পোল আন্তরিক ভাবে ঈসা মসীহ এর উপর ঈমান এনেছেন, পোল তাকে অর্থাৎ (ঈসাকে) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।তার অর্থাৎ (পোলের) নামে দামিশকে একটি গির্জা তৈরি করা হয়।"
.
এই বিষয়টা খ্রিষ্টানরা কখনোই বুঝে না আর না বুঝে মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে। যেখানে কিনা বলা হয়েছে পোল ঈসা (আ:) প্রতি ঈমান-বিশ্বাস এনেছেন, তিনি তাকে আল্লহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
.
আর ভন্ড খ্রিষ্টানরা বলছে এখানে নাকি পৌলকে নবী বলা হয়েছে। কত বড় জ্বালিয়াতী। পৌলকে যদি ইবনে কাসীর নবীই মানতো তাহলে নবীদের জীবনীর মধ্যে পৌলের জীবনী দেওয়া থাকতো।
.
আমরা জানি রাসুল তাদের বলা হয় যাদের উপর কিতাব নাজিল করা হয়েছে আর নবী ঈসা (আ:) এর উপর ইঞ্জিল নাজিল হয়েছে। এই কারণেই পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন।
.
আর পোল নামক কারো উপর কোন লোকের উপর কোন কিতাব নাজিল হয় নি। কাসাসুল আম্বিয়াতে ও তার জীবনী নামে কোন "জীবনী নাই"।
.
✔ তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম কাসাসুল আম্বিয়াতে বাইবেলের-পৌলের কথা বলা নয় নি আর যে পোলের কথা বলা হয়েছে সে রাসুল তা বলা হয় নি। বরং কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোলের কথা বলা হয়েছে সে "ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন"।
.
.
▪ এবার আসুন আমরা দেখি বাইবেলের পৌল আর ইবনে কাসীর যে পোলের কথা বলেছেন তার মধ্যে পার্থক্য।
.
.
বাইবেলের পৌল যীশুকে ঈশ্বর ভাবতো,,
.
পৌল বলেছেন: যীশু খোদার পুত্র বরং তিনিই খোদা ( রোমীয় ৯:৫/ফিলিপীয় ২:১১)।
.
আর যীশু যে ঈশ্বর নন তা উপরের লিঙ্ক দিয়েছি।
.
▪ দেখুন বাইবেলের পৌল ভাবতো যে যীশু বা ঈসা (আ:) হলো ঈশ্বর। আর কাসাসুল আম্বিয়ার পোল বিশ্বাস করতো ঈসা (আ:) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল।
.
✔ অতএব আমরা বুঝলাম কখনোই বাইবেলের পৌল আর কাসাসুল আম্বিয়ার পোল এক নয়।
.
অনেকে বলবেন নাম তো একরকম তাদের আমি বলব বাইবেলের হারুণ কে নিয়ে বলা হয়েছে হারুণ মূর্তিপূজা করেন। [৪]
আর কুরআনের হারুণ (আ:) মূর্তিপূজা করতেন না। [৫]
.
এখানেও কিন্তু নাম একরকম এর মানে এই নয় বাইবেলের হারুণ হলো কুরআনের। বরং বাইবেল মিথ্যা বলেছে হারুণ নিয়ে আর যা বলেছে তা আমারা মানব না ঠিক তদ্রূপ বাইবেল বলেছে লূত নবী নাকি তার মেয়েদের সাথে যৌনকর্ম করেছে তার মেয়েকে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছে। [৬]
কিন্তু কুরআন লূত কে দিয়েছে সম্মান। [৭]
.
সুতরাং,, বাইবেলের পৌলের যে বৈশিষ্ট্য দেখা যায় তা কাসাসুল আম্বিয়ার সাথে মিল নেই।
.
✖ বাইবেল অনুযায়ী পৌল বলেছেন যীশু ঈশ্বর।
.
✔ কাসাসুল আম্বিয়া অনুযায়ী পোল বলেছে ঈসা (আ:) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।
.
আশা করি সকলে বুঝতে পেরেছেন। পোল নামের কেউ যদি কেউ রাসুল হয়ে থাকতো তাহলে কাসাসুল আম্বিয়াতে তার জীবনী এবং তার উপর নাজিলকৃত কিতাবের নাম বলা হতো। পোল কখনোই রাসুল নয় তাই ইবনে কাসীর কোথাও তাকে নিয়ে বলে নি কুরআন-হাদিসেও পৌল বলে কোন নবী আছে তার নাম গন্ধ নাই। আর কাজ নাই কাম ইবনে কাসীর পৌলকে রাসুল বলবে। আর কাসাসুল আম্বিয়া অনুযায়ী পোলের নামে একটা গির্জা তৈরি করা হলো।
আরো উপরের দিকে যদি পড়েন সেখানে বলা হয়েছে।
.
"দামিশকে এক ব্যাক্তি ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান আনেন, তার নাম যায়ন। তবে তিনি পোল নামক জনৈক ইহুদীর ভয়ে দামিশকের পূর্ব গেটে গীর্জার নিকটে একটি গুহায় আত্মগোপন করে থাকেন।"[৮]
.
দেখুন কাসাসুল আম্বিয়ার পোল ছিলেন একজন ইহুদি।যদি সে রাসুল হতো তাহলে ইহুদি নয় বরং মুসলিম থাকতো এবং আল্লাহর তাওহিদের বানী ছড়িয়ে দিতো। কিন্তু পৌল ছিলো ইহুদি। তার পরে ঈসা (আ:) যখন দামশিকের দিকে গেলো পোল ঈসা (আ:) কে মারতে এলো কিন্তু পোলের চোখ হয়ে গেলো অন্ধ। তার পরে যখন পোল সুস্থ হল তখন "পোল ঈসার উপর ঈমান আনলো, তিনি তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।"[৯]
.
.
আর এটাকে ঘুরাতে ঘুরাতে পৌলকে রাসুল বানালো। এই হলো বিকৃত করার প্রপাগান্ডা। পুরো কুরআন যদি খোঁজেন কোথাও পাবেন না যে বলা হয়েছে পৌলের কথা। ইবনে কাসীরেে কাসাসুল আম্বিয়াতে যুলকারনাইন কে নিয়ে বলা হয়েছে কি্তু পৌলকে নিয়ে কোন অধ্যায় তৈরি করা হয় নি। পোলকের শুধু এই জায়গায় পাওয়া যায় যেখানে পোল ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান এনেছে, তিনি অর্থাৎ পোল তাকে আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতেন। আমরা জানি রাসুলের উপর কিতাব পাঠানো হয় নবুয়ত পায় আর ঈসা (আ:) তা পেয়েছেন। কিন্তু কোন পোল নামের কেউ পেয়েছে এর কোন উল্লেখ নাই। কাসাসুল আম্বিয়াতে "যায়ন" নামে এক ব্যাক্তি ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান আনেন।যায়ন যেমন কোন রাসুল নন ঠিক তদ্রূপ পোলও নয়। পোল নামক একজন ঈমান আনেন ঈসা (আ:) এর উপর এবং ঈসাকে রাসুল মেনেছেন।
.
.
.
✔ এবার যে সকল খ্রিষ্টান মনে করে কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোলের কথা বলে হয়েছে সে পোল তাহলে সকল খ্রিষ্টানকে মানতে হবে,,,
.
১) পোল নামক ব্যাক্তি কোন রাসুল বা নবী নন এর কোন উল্লেখ নেই।
২) পোল বলেছেন ঈসা (আ:) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। অর্থাৎ ঈসা (আ:) কোন ঈশ্বর নয়। পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর পুত্র নয় বরং বান্দা ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করতো।
৩) পোল ঈসা (আ:) এর উপর ঈমান এনেছে এবং তাকে আল্লাহর বান্দা রাসুল মেনেছেন মুসলিম হয়েছেন।
৪) পোল ঈসা (আ:) কে আল্লাহর বান্দা ভাবতো অর্থাৎ পোল আল্লাহকে বিশ্বাস করতো। তাহলে খ্রিষ্টানরা কি আল্লাহ ও তার রাসুল (স:) কে বিশ্বাস করবে!?
.
এই তিনটি বিষয় কখনোই মানবে না খ্রিষ্টানরা কারণ। খ্রিষ্টানরা মানে পৌল মুসলিম নন পৌল ঈসাকে ঈশ্বর বলেছে পৌল নবী ইত্যাদি ইত্যাদি।
.
.
▪ অবশেষে বলব,,,
কাসাসুল আম্বিয়াতে পোলকে রাসুল বলা হয় নি। আর কুরআন হাদিসের কোথাও পোলের নাম গন্ধ নেই। পারলে আমায় কেউ দেখাবেন কোন হাদিসে বা আয়াতে আছে। আর কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোল সে ইহুদি থেকে মুসলিম হয়েছে আর পোল ঈসাকে রাসুল মনে করতে আল্লাহর বান্দা মনে করতেন ঈশ্বর মনে করতেন না। তাই বাইবেলের পৌলকে কাসাসুল আম্বিয়াতে যে পোল সেটার সাথে মিলালে খ্রিষ্টানরা এমনিতেই ধরা খাবে।
সকলকে ধন্যবাদ,,,
.
وَلَا تَلْبِسُوا الْحَقَّ بِالْبَاطِلِ وَتَكْتُمُوا الْحَقَّ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ
💕তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বে সত্যকে তোমরা গোপন করো না।
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ৪২)
.
.
তথ্যসূত্রঃ
[১]
যীশু কি ঈশ্বর!
[২] কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা - পৃষ্ঠা:- ৭৯০
[৩] যাত্রাপুস্তক ৩২ : ১-৬
[৪] সূরা ত্ব-হা ২০ : ৮৬-৯১
[৫] আদিপুস্তক ১৯:৩৩/আদিপুস্তক ১৯:৩১ /আদিপুস্তক ১৯:৮
[৬] আল-আ‘রাফ ৭:৮১/আল-আ‘রাফ ৭:৮০/আল-আন‘আম ৬:৮৬
[৭] কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা - পৃষ্ঠা:- ৭৮৯
[৮] কাসাসুল আম্বিয়া বাংলা - পৃষ্ঠা:- ৭৮৯-৭৯০

4 Comments
জাযাকাল্লাহ্ খাইরান প্রিয় ভাই
ReplyDeleteশুকরিয়া ভাইজান।
Deleteএটা নিয়ে পাকুইটা গার্সিয়া অরফে ফ্লোরেন্স উইলিয়াম বেশি লাফায়
ReplyDeleteহো ভাই। 🤣🤣🤣🤣 নামডা সেই রাখছেন। 😁😁
Delete