পড়ো


পড়ো 
🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________________________________________________
.
গভীর রাত নির্জন একটি জায়গা হেরা গুহার নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ইবাদতে মগ্ন ছিলেন। এমন সময় একজন ফেরেস্তা আসলো আর বলল,,,
.
"পড়ো"
.
কিন্তু নবী মুহাম্মদ (ﷺ)  বললেন "আমিতো পড়তে জানি না"
.
আবারো সেই ফেরেস্তা বলল,,,
.
"পড়ো"
.
তখন ফেরেস্তা বলল,,,
.
"পড়ো তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন"........................
.
.
◾এভাবেই আল্লাহ তায়ালা জিব্রাইলের মাধ্যমে নবী মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর ওহী নাজিল করেছিলেন। [১]
.
সর্বপ্রথম যে কথাটা সকল মানবজাতির নিকট উপদেশ হিসেবে নির্দেশ হিসেবে বলা হয়েছে সেটা হচ্ছে "পড়ো",,,,
.
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ
.
💕পড়ো তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। [২]
.
.
আল্লাহ চাইলে আমাদের সালাত কায়েম করতে বলতে পারতেন। সিয়াম রাখার কথা বলতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহ তা না বলে সর্বপ্রথমই বলে দিয়েছেন "পড়ো" এই উপদেশটা যদি আজ মানুষ মানতে পারতো তাহলে তারাই সফল হতো।
.
আজ আমরা পড়ছি না। কে কি বলল কে কি ভাবতো সেটাকেই মেনে চলছি। পূর্বপুরুষরা কি করতো সেটাই অনুসরণ করছি যুগ যুগ ধরে। কখনো নিজের মধ্যে "পড়া" আনতে পারি নি। আর এই না পড়ার জন্যই কত মানুষ অন্যকে বোকা বানিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বিনাশ করে দিয়ে আমাদের জীবন। শুধু জীবনই নয় সাথে আখিরাতও। আজ আমরা পড়ছি না। পাঠ করছি না বরং অন্যের কথাই বিশ্বাস করছি।
.
আমরা কখনো কুরআন-হাদিস খুলে পড়ি নি। যার কারণ ভ্রান্ত দল আমাদের ভ্রান্ত বানিয়ে চলে যায়। আমরা তার টেরি পাই না। আজ আমরা যার কাছে সাহায্য চাইবো তার কাছে না চেয়ে মৃত লোকের কাছে যাই মাজারের কাছে যাই পীরের কাছে যাই। যেখানে সাহয্য যার কাছে চাইতে হয় তিনি হচ্ছে "আল্লাহ সুবাহানু ওয়াতায়ালা" কিন্তু আমরা তা না করে ভ্রান্ত পথে চলে যাই কারণ একটাই "না পড়া"
.
সূরা ফাতিহা পারে না এমন কোন মুসলিম নেই। সেই সূরা ফাতিহাতেও বলা হয়েছে,,,
.
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
💕আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। [৩]
.
সালাতে এ কথা বলে আমরা চলে যাই মাজার পূজা করতে। মৃত ব্যাক্তির কাছে সাহায্য চেতে। আমরা আল্লাহর সাথে মানুষকে করছি শরীক যেখানে কিনা শিরিক করা হচ্ছে সবথেকে ভয়ংকর গুনাহ যার মাফ নেই।
.
আল্লাহ বলেন,,,
وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ۖ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَىٰ وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنْبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا
💕আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও সদয় ব্যবহার কর এবং নিকটাত্নীয়, এতীম-মিসকীন, প্রতিবেশী, অসহায় মুসাফির এবং নিজের দাস-দাসীর প্রতিও। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক-গর্বিতজনকে। [৪]
.
.
তাই আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না। কাউকে আল্লাহ উপরে নেওয়া যাবে না। শরীক করার শাস্তি জাহান্নাম।
.
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ ۚ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا
💕নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। [৫]
.
.
কিন্তু আমরা শরীক করে ফেলি জেনে বুঝেই। আমরা মানুষকে কবরকে মাজারকে পূজা করি। আল্লাহ আমাদের হিদায়াত দান করুক।
.
তাই,, আমাদের সমস্যাই এখানে। আমারা পড়ি না। যার কারণে আমরা সঠিক পথ খুঁজে পাই না। যেমন হিন্দুরা তাদের বেদ কখনো পড়ে না তাই নিজের স্রষ্টার সাথে মূর্তিকে শরীক করে।
যেখানে কিনা তাদের ধর্মশাস্ত্রে মূর্তিপূজা নিষিদ্ধ। [৬] বাইবেলেও তা নিষিদ্ধ। [৭]
.
.
◾কিন্তু আমাদের মধ্যে পড়ার কোন খবর নেই। যার কারণে ভ্রান্তরা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইসলাম সম্পর্কে জানি না বলেই আজ নাস্তিকরা নিজের মতন করে মুসলিমদের মধ্যে ভ্রান্ততা-সংশয়ের বীজ বপন করছে। যার নিরাময় একটিই সেটা হলো
"পড়া"
.
পুরো মানবজাতির জন্য যে Message টি পাঠানো হয়েছে সেটাই হলো পড়ো। আজ নাহলে অমুকের কথা তমুকের কথা আমরা মানতাম না। আল্লাহ تعالى আমাদের দিয়েছেন পবিত্র কুরআন। আমাদের উচিত তা পাঠ করা। কুরআন-হাদিস এর মধ্যেই রয়েছে সমস্যার সমাধান, সংশয়ের নিরসন।
.
আল্লাহ বার বার আমাদের কুরআন পড়তে বলেছেন। আমরা কুরআন পড়বো আরবিতেও পড়বো অনুবাদ সহ পড়বো। গবেষণা করব অনুধাবন করবো। আর এভাবেই উপদেশ গ্রহণ করব।
.
আল্লাহ বলেন,,,
.
وَلَقَدْ يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ لِلذِّكْرِ فَهَلْ مِنْ مُدَّكِرٍ
💕আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণ করার জন্যে। অতএব, কোন উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? [৮]
.
একটি সূরায় চার বার এ কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ تعالى আমাদের বার বার জ্ঞান অর্জন করতে বলেছেন। কিন্তু আমরা তা সীমাবদ্ধ করে রেখেছি। যে জায়গায় "পড়া" নেই সেই জায়গা কখনো উন্নত হতে পারবে না।
.
.
(صحيح) وروي عَنْ أنَسِ بْنِ ماَلِكٍقَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ. رواه ابن ماجه وغيره

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উপর ফরয।” [৯]
.
.
.
তাই আমাদের উচিত যাচাই করে কথা বলা। পড়ে গবেষণা করে কথা বলা। জ্ঞানার্জন করা। আর এই জ্ঞানই আমাদের দিবে মুক্তি।
.
.
"জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, যুক্তি যেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব"
.
.
তথ্যসূত্র
[১] আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) পৃষ্ঠা:- ১৩-১৪/ সহীহ বুখারী হাদিস নং ৩ (ihadis.com)
[২] সূরাঃ আলাক, আয়াতঃ ১
[৩] সূরাঃ আল ফাতিহা, আয়াতঃ ৫
[৪] সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৩৬
[৫] সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৪৮
[৬] যজুর্বেদ ১৩/৪১
[৭] যাত্রা পুস্তক ২০/৪
[৮] সূরাঃ আল ক্বামার, আয়াতঃ ১৭
[৯] সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব, হাদিস নং ৭২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
Source: ihadis.com

Post a Comment

0 Comments