কুরআন কি কাফেরদের হত্যা করতে বলে??
🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________
___________________________________
.
আসসালামু আলাইকুম,,
.
একজন মুসলিম ভাই আমায় ইনবক্সে একটি মেসেজ করলেন যেখানে পবিত্র কুরআন অনুসারে কাফিরদের হত্যার কথা বলা হয়েছে। মুসলিম ভাইটি এর ব্যাখ্যা চাইলেন। আসলে এসব আর নতুন নয়। ইসলাম বিরুধীদের মিথ্যাচারের জন্য অনেকেই ঘাবড়ে যান।
আসুন আজ কিছু আলোচনা করি এই বিষয়টি নিয়ে। ইনশাআল্লাহ অনেক বিষয়ে সকলের ভ্রান্তি দূর হবে।
.
📌 সূরা তওবা, আয়াত:- ৫
.
সূরা তওবার আয়াত ৫ নিয়ে নাস্তিক/ইসলাম বিরুধীদের যেনো শরীরে জ্বালা উঠে আসলে এরা আংশিক তথ্য তুলে ধরে ইনশাআল্লাহ তা প্রমাণ করব।
.
▪ فَإِذَا انْسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ ۚ فَإِنْ تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَحِيمٌ
• অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ৫)
.
এই আয়াত দিয়ে ইসলাম বিরুধীরা প্রমাণ করতে চায় ইসলাম কাফিরদের অকারণে হত্যা করার কথা বলে।
.
.
💕 জবাব:- সর্বপ্রথম বলব পবিত্র কুরআনের সূরা তওবার পাঁচ নং আয়াত নাজিল হওয়ার প্রক্ষাপট রয়েছে।হত্যা করার কারণ রয়েছে।
.
হত্যা করার আদেশের কারণ,,,
.
১) রাসুলের মিত্রদের হত্যা।
২) চুক্তি ভঙ্গ।
৩) দোষারোপ গালাগালি ।
৪) নবীকে গালাগালি।
৫) নবী মুহাম্মদ (স:) কে হত্যা করতে চেয়েছিলেন।
৬) মুসলিমদের মক্কা থেকে বের করতে চেয়েছিলো মুসলিমদের নির্যাতন করেছিলো।
[ তাফসীর ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৬৩০-৬৩২/তাফসীরে মাযহারী পৃষ্ঠা:- ২৩৫-২৪১ ]
.
এই ছয়টি কারণে সূরা তওবার পাঁচ আয়াতে হত্যা করতে বলা হয়েছে তার পরেও যারা যুদ্ধ করবে না তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া ও আশ্রয় দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে মুশরিকরা যেনো তার কুরআন শুনতে পায় এবং তাদের বসবাসের জায়গায় তাদের দিয়ে আসবে এর ফলে হয়তো তার চিন্তাভাবনা করে সত্য দ্বীন কবুল করে নিবে। [ সূরা তওবা আয়াত ৬/তাফসীরে ইবনে কাসীর ]
.
নবী মুহাম্মদ (স:) প্রথমে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নি বরং মুশরিকরা হুদাইবিয়ার চুক্তি ভঙ্গ করেছে।যেখানে কিনা হুদাইবিয়ার চুক্তিতে বলা হয়েছে একটানা ১০ বছর কোন পক্ষ যুদ্ধ করবে না।
[ সীরাতে রাসুল (স:) পৃষ্ঠা:- ৪৫২/তাফসীর ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৬২৬]
.
এবং মুশরিকরা ষড়যন্ত্র চালিয়েই যাচ্ছিল। [ তাফসীরে মাযহারী পৃষ্ঠা:- ২৪১ ]
.
তার পরে মুহাম্মদ (স:) কে হত্যা করতে চেয়েছিলো এবং মুসলিমদের মক্কা থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল।
[ তাফসীরে মাযহারী পৃষ্ঠা:- ২৪০ ]
.
কাফেররা মুসলিমদের উপর নির্যাতন করেছিলো। [ তাফসীরে মাযহারী পৃষ্ঠা:- ২৩৩ ]
.
.
▪ এত এত অপরাধের কারণেই বলে হয়েছে হত্যা করার জন্য সূরা তওবার পাঁচ নং আয়াতে। কত সুন্দর মানবিক কথা। এখানে কোনভাবেই অমানবিক কথা বলা হয় নি। কিন্তু আফসোস ইসলাম বিরুধীরা এই আয়াত নিয়ে মিথ্যাচার করে পুরো ঘটনা না বলে। এতো কিছুর করার পরেও কি মুসলিমরা বসে থাকবে???
.
.
📌 সূরা নিসা, আয়াত ৮৯
.
আসুন প্রথমে আয়াতটা দেখে নেয়া যাক,,,
.
وَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ كَمَا كَفَرُوا فَتَكُونُونَ سَوَاءً ۖ فَلَا تَتَّخِذُوا مِنْهُمْ أَوْلِيَاءَ حَتَّىٰ يُهَاجِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَخُذُوهُمْ وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ ۖ وَلَا تَتَّخِذُوا مِنْهُمْ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
• তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৮৯)
.
এই আয়াত দিয়ে ইসলাম বিরুধীরা প্রমাণ করতে চায় যে ইসলাম কাফেরদের হত্যা করতে বলে।
.
.
💕 জবাব:- এটাই হলো ইসলাম বিরুধীদের ভাওতাবাজি। তারা আংশিক তথ্য তুলে ধরে পুরোটা তুলে ধরে না ধরা খাবে বলে। কারণ এটাই তাদের পেট চালায়। তো যাইহোক,, আয়াতের আগে-পিছে যদি পড়ি উত্তরটা পেয়ে যাবো।
.
فَمَا لَكُمْ فِي الْمُنَافِقِينَ فِئَتَيْنِ وَاللَّهُ أَرْكَسَهُمْ بِمَا كَسَبُوا ۚ أَتُرِيدُونَ أَنْ تَهْدُوا مَنْ أَضَلَّ اللَّهُ ۖ وَمَنْ يُضْلِلِ اللَّهُ فَلَنْ تَجِدَ لَهُ سَبِيلًا
• অতঃপর তোমাদের কি হল যে, মুনাফিকদের সম্পর্কে তোমরা দু’দল হয়ে গেলে? অথচ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন তাদের মন্দ কাজের কারনে! তোমরা কি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করতে চাও, যাদেরকে আল্লাহ পথভ্রষ্ট করেছেন? আল্লাহ যাকে পথভ্রান্ত করেন, তুমি তার জন্য কোন পথ পাবে না।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৮৮)
.
وَدُّوا لَوْ تَكْفُرُونَ كَمَا كَفَرُوا فَتَكُونُونَ سَوَاءً ۖ فَلَا تَتَّخِذُوا مِنْهُمْ أَوْلِيَاءَ حَتَّىٰ يُهَاجِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَخُذُوهُمْ وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ وَجَدْتُمُوهُمْ ۖ وَلَا تَتَّخِذُوا مِنْهُمْ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا
• তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৮৯)
.
إِلَّا الَّذِينَ يَصِلُونَ إِلَىٰ قَوْمٍ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ مِيثَاقٌ أَوْ جَاءُوكُمْ حَصِرَتْ صُدُورُهُمْ أَنْ يُقَاتِلُوكُمْ أَوْ يُقَاتِلُوا قَوْمَهُمْ ۚ وَلَوْ شَاءَ اللَّهُ لَسَلَّطَهُمْ عَلَيْكُمْ فَلَقَاتَلُوكُمْ ۚ فَإِنِ اعْتَزَلُوكُمْ فَلَمْ يُقَاتِلُوكُمْ وَأَلْقَوْا إِلَيْكُمُ السَّلَمَ فَمَا جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ عَلَيْهِمْ سَبِيلًا
• বকিন্তু যারা এমন সম্প্রদায়ের সাথে মিলিত হয় যে, তোমাদের মধ্যে ও তাদের মধ্যে চুক্তি আছে অথবা তোমাদের কাছে এভাবে আসে যে, তাদের অন্তর তোমাদের সাথে এবং স্বজাতির সাথেও যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক। যদি আল্লাহ ইচ্ছে করতেন, তবে তোমাদের উপর তাদেরকে প্রবল করে দিতেন। ফলে তারা অবশ্যই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। অতঃপর যদি তারা তোমাদের থেকে পৃথক থাকে তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের সাথে সন্ধি করে, তবে আল্লাহ তোমাদের কে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ দেননি।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৯০)
.
سَتَجِدُونَ آخَرِينَ يُرِيدُونَ أَنْ يَأْمَنُوكُمْ وَيَأْمَنُوا قَوْمَهُمْ كُلَّ مَا رُدُّوا إِلَى الْفِتْنَةِ أُرْكِسُوا فِيهَا ۚ فَإِنْ لَمْ يَعْتَزِلُوكُمْ وَيُلْقُوا إِلَيْكُمُ السَّلَمَ وَيَكُفُّوا أَيْدِيَهُمْ فَخُذُوهُمْ وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ ۚ وَأُولَٰئِكُمْ جَعَلْنَا لَكُمْ عَلَيْهِمْ سُلْطَانًا مُبِينًا
বাংলা অনুবাদঃ এখন তুমি আরও এক সম্প্রদায়কে পাবে। তারা তোমাদের কাছেও স্বজাতির কাছেও এবং নির্বিঘ্ন হয়ে থাকতে চায়। যখন তাদেরকে ফ্যাসাদের প্রতি মনোনিবেশ করানো হয়, তখন তারা তাতে নিপতিত হয়, অতএব তারা যদি তোমাদের থেকে নিবৃত্ত না হয়, তোমাদের সাথে সন্ধি না রাখে এবং স্বীয় হস্তসমূহকে বিরত না রাখে, তবে তোমরা তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। আমি তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে প্রকাশ্য যুক্তি-প্রমাণ দান করেছি।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৯১)
.
.
আলহামদুলিল্লাহ,, এই আল্লাহ কখনোই কাফরদের অকারণে হত্যা করার নির্দেশ দেন নি। আপনার যদি ৮৯ নং আয়াত পড়েন সেখানে বলাই আছে কাফেররা চায় আমরাও যেন তাদের মতন কাফের হয়ে যাই।
দেখুন ৯০ নং আয়াতে বলা হয়েছে,,
.
"তোমাদের কাছে এভাবে আসে যে, তাদের অন্তর তোমাদের সাথে এবং স্বজাতির সাথেও যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক। যদি আল্লাহ ইচ্ছে করতেন, তবে তোমাদের উপর তাদেরকে প্রবল করে দিতেন। ফলে তারা অবশ্যই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করত। অতঃপর যদি তারা তোমাদের থেকে পৃথক থাকে তোমাদের সাথে যুদ্ধ না করে এবং তোমাদের সাথে সন্ধি করে, তবে আল্লাহ তোমাদের কে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ দেননি।"
.
দেখুন যদি আমাদের সাথে প্রথমে কাফিররা যুদ্ধ করে নির্যাতন করে তাহলে আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করব আর যদি তারা যুদ্ধ না করে সন্ধি করে তাহলে আমাদের আল্লাহ তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ দেননি।
.
"যদি তারা যুদ্ধ করা থেকে তোমাদের সাথে বিরত থাকে এবং সন্ধি প্রার্থনা করে তাহলে তোমাদের জন্য তাদের সাথে যুদ্ধ করার অনুমতি নেই" [ তাফসীর ইবনে কাসীর ৪৩৪ ]
.
▪ আলহামদুলিল্লাহ দেখলেন কাফেররা যদি আমাদের সাথে যুদ্ধ না করে আমাদের তাদের সাথে যুদ্ধ করার কোন অনুমতি নেই। আর কাফের যদি তাদের হস্তদ্বয় বিরত রাখা ও আমাদের সাথে সন্ধি বজায় রাখে তাহলে তাদেরকে হত্যা করা যাবে না। কিন্তু যদি তারা সন্ধি ভঙ্গ করে আমাদের সাথে যুদ্ধ করে এবং ৯১ আয়াতে বলা যদি হস্তদ্বয় বিরত না রাখে তাহলে তাদের পাকরাও করো এবং হত্যা করো।
.
.
দেখলেন এই কারণেই তাদের হত্যা করার কথা বলেছে কারণগুলি হলো,,,
.
১) মুসলিমদেরকে হত্যা না করার সন্ধি না করে মুসলিমদের নির্যাতন ও হত্যা করা। আর যদি তারা মুসলিমদের উপরে যুদ্ধ না করে তাহলে আমরা তাদের হত্যা করতে পারব না।
[ সূরা নিসা ৯০-৯১/ তাফসীর ইবনে কাসীর ৪৩৪ ]
.
আশা করি সকলে বুঝেছেন আয়াতটি।
.
.
📌 সূরা বাকারা আয়াত ১৯১
.
এটা খুবি মজার আয়াত ইসলাম বিরুধীরা কখনো পুরা আয়াত দিবে না। এতো খারাপ আর নিম্ন লেভেল এরা। আসুন আয়াতটা দেখে নেই,,,
.
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُمْ مِنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ ۚ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقَاتِلُوهُمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّىٰ يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ ۖ فَإِنْ قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ ۗ كَذَٰلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ
• আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে। বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ। আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি।
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১৯১)
.
.
💕 জবাব:- আলহামদুলিল্লাহ,, আল্লাহ কি বলেছেন আসুন আমরা ভালোভাবে বুঝে নেই।
.
সূরা বাকারার ১৯০ নং আয়াত দেখি,,
.
وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ
আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
(সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১৯০)
.
দেখুন বলা হয়েছে "লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে। অবশ্য কারো প্রতি বাড়াবাড়ি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।"
.
আল্লাহ কত মহান আমাদের সাথে লড়াই যদি আগে করে কেউ তাহলে আমরা করব লড়াই তারপরেও আমরা যেনো বাড়াবাড়ি না করি। আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।
.
আল্লাহ কত সুন্দর বিধান আর ইসলাম বিরুধীরা কি বলে। আল্লাহ এদের হেদায়েত দিক না হয় ধ্বংস করুক।
পরের আয়াতে বলা হয়েছে
.
"তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে"
.
এবার দেখুন কাফিররা যদি আমাদের উপর লড়াই করে আমাদের বের করে দেয় তখন আমারা কি বসে বসে আঙ্গুল চুষবো??
.
.
📌 সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ৪
.
আসুন প্রথমে এই আয়াতটাও দেখে নেই,,,
.
فَإِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا فَضَرْبَ الرِّقَابِ حَتَّىٰ إِذَا أَثْخَنْتُمُوهُمْ فَشُدُّوا الْوَثَاقَ فَإِمَّا مَنًّا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَاءً حَتَّىٰ تَضَعَ الْحَرْبُ أَوْزَارَهَا ۚ ذَٰلِكَ وَلَوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَانْتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَٰكِنْ لِيَبْلُوَ بَعْضَكُمْ بِبَعْضٍ ۗ وَالَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَلَنْ يُضِلَّ أَعْمَالَهُمْ
• অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।
(সূরাঃ মুহাম্মদ, আয়াতঃ ৪)
.
.
💕 জবাব:- এই আয়াতে বলা হয়েছে "অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও" এখন আমাদের বুঝতে হবে এই যুদ্ধ কোন যুদ্ধ এই যুদ্ধ হলো বদরের যুদ্ধ।
[ তাফসীর ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৭৪০ ]
.
আয়াতের শেষে বলা হয়েছে "তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে" আমরা এখান থেকে বুঝতে পারছি শত্রুরা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে এসেছে।
.
আর এটা সুস্পষ্ট করেছে মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব তার সীরাত গ্রন্থে। আসলে বদরের যুদ্ধ শুরু হওয়ার বিষয়ে উনি বলেছেন।
.
"কুরাইশ পক্ষ প্রথমে মুসলিমদের যুদ্ধের জন্য আহ্বান করেছে। রাসুল (স:) শত্রুদের ধুরে রাখতে চেষ্টা করলেন। এবং রাসুল (স:) বলেছেন যখন শত্রুরা ঝাপিয়ে পড়বে তখন মুসলিমরা তীর নিক্ষেপ করবে।"
[ সীরাতে রাসুল (স:) আসাদুল্লাহ আল-গালিব পৃষ্ঠা:- ২৯৭-২৯৮ ]
.
অতএব,, আমরা বুঝলাম আয়াতটি হলো বদরের যুদ্ধের আর নবী মুহাম্মদ (স:) প্রথমে যুদ্ধ করেন নি বরং কুরাইশ পক্ষ আহবান করেছিল। আর যখন কাফিররা ঝাপিয়ে পড়লো তখন গিয়ে যুদ্ধ শুরু হলো। এখানে কোন অমানবিক কিছু নেই বরং অপরাধ নির্যাতন বন্ধ করার জন্য।
.
.
📌 সূরা নিসা, আয়াত ৭৬
.
আসুন আয়াতটা দেখে নেই,,,
.
الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا
যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৭৬)
.
.
💕 জবাব:- ইসলাম বিদ্বেষীরা কখনোই এই আয়াতের আগের আয়াত দিবে না কারণ তারাও জানে আগের আয়াত দিলে তারা হাতে নাতে ধরা খাবে।
.
وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ وَلِيًّا وَاجْعَلْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ نَصِيرًا
• আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৭৫)
.
الَّذِينَ آمَنُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُوا أَوْلِيَاءَ الشَّيْطَانِ ۖ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا
যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।
(সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৭৬)
.
.
দেখুন, ৭৫ নং আয়াতেই বলা হয়েছে,,
.
"তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী!"
.
এখানে যেসকল পুরুষ, নারী ও শিশুদের কথা বলা হচ্ছে তারা হলো মুসলিম যাদের উপর কাফিররা অত্যাচার করেছে। তাই আল্লাহ বলেছেন "এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী!" আর এই বিষয়টা ইবনে কাসীর স্পষ্ট ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন,,,
.
"গুটি কয়েক অসহায় লোক মক্কায় রয়ে গেছে। যাদের উপর কাফিররা নানারকম উৎপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সূতরাং তোমারা তাদেরকে মুক্ত করে আনো।সাহায্যের জন্য জিহাদ"
[ তাফসীর ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৪১২ ]
.
কত নিচু মানের এই নাস্তিক/হিন্দু-খ্রিষ্টানরা । মূল বিষয় এরা গোপন করে। কারণ তা ফাঁস হলে তো জার্মান ভিসা পাওয়া যাবে না। তাই সত্যকে এরা গোপন করতে থাকে।
.
.
📌 সূরা ফাতহ, আয়াত ১৬
.
আসুন আয়াতটা দেখে নেই।
.
قُلْ لِلْمُخَلَّفِينَ مِنَ الْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُولِي بَأْسٍ شَدِيدٍ تُقَاتِلُونَهُمْ أَوْ يُسْلِمُونَ ۖ فَإِنْ تُطِيعُوا يُؤْتِكُمُ اللَّهُ أَجْرًا حَسَنًا ۖ وَإِنْ تَتَوَلَّوْا كَمَا تَوَلَّيْتُمْ مِنْ قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
গৃহে অবস্থানকারী মরুবাসীদেরকে বলে দিনঃ আগামীতে তোমরা এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে আহুত হবে। তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা মুসলমান হয়ে যায়। তখন যদি তোমরা নির্দেশ পালন কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দিবেন। আর যদি পৃষ্ঠপ্রদর্শন কর যেমন ইতিপূর্বে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছ, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দিবেন।
(সূরাঃ আল ফাতহ, আয়াতঃ ১৬)
.
.
💕 জবাব:- এই আয়াতের মধ্যেও বড় প্রক্ষাপট লুকিয়ে রয়েছে। যুদ্ধ করতে আসবে শত্রুপক্ষ আর কিছু বেদুঈনকে নবী মুহাম্মদ (স:) বলেছে যে যুদ্ধ করার সময় যেনো তার নবীর সাথে শত্রুদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেন। কারণ নবী মুহাম্মদ (স:) এর দলের সংখ্যা ছিলো খুবি কম। নবী মুহাম্মদ (স:) আরো বলছে বেদুঈনদেরকে যে তোমরা এসো। যদি তোমারা রুগ্ন হও তাহলে ওযর দেওয়া যাবে না আসলে তিরস্কার হবে না। কিন্তু বেদুঈনরা আসলো না এই বিপদের সময়। আর আয়াতে সে সকল মরুবাসী বেদুঈনদের কথা বলা হয়েছে যারা ইচ্ছা করেই আসে নি। কারণটা কি জানেন??
.
কারণ বেদুঈনা ভাবছে যে নবী মুহাম্মদ (স:) ও সাহাবারা সব মারা যাবে। তাই বেদুঈনা যুদ্ধের সময় আসার কথা বলেও আসে নি। আর তারা মুসলিমদের সুখের সময় ঠিকি আকাঙ্ক্ষা করে কিন্তু বিপদের সময় না এসে সকলকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে এই বেদুঈনরা। তার পরেও নবী মুহাম্মদ (স:) তাঁদের মারেন নি বরং কম সংখ্যক হয়েও নবী মুহাম্মদ (স:) বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু যখন নবী মুহাম্মদ (স:) আর সাহাবারা আনন্দিত হয়ে আসছিলো তখন বেদুঈনরা মিথ্যা ওযর দিলো যা আসলে মিথ্যা। নবী মুহাম্মদ (স:) কে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন যে এরা মিথ্যা ওযর দিবে। বেদুঈনরা চেয়েছিলো যুদ্ধে না গিয়েও গনিমত লাভ করতে। কিন্তু বেদুঈনরা বিপদের সময় না এসেও বলছে যে তারা নাকি নবী মুহাম্মদ (স:) এর সঙ্গী। আর আগে থেকেই হুদাইবিয়ার যুদ্ধের গনিমত পাওয়ার ওয়াদা করেছিলো তাই বেদুঈনরা বুদ্ধি করে চেয়ছিলো যে কোন যুদ্ধে না গিয়েও তারা গনিমত নিবে। যখন বেদুঈনরা বলল তারা নবী মুহাম্মদ (স:) এর সঙ্গী তখন নবী বললেন "তোমরা কিছুতেই আমাদের সঙ্গী হতে পারবে না।"
.
তখন সেই মিথ্যাবাদী বেদুঈনরা বলল,,
.
"তোমরাতো আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করছো। তোমাদের উদ্দেশ্যে হলো আমাদের গনিমত না দেওয়া।"
.
▪ এতো কিছু হওয়ার পরে গিয়ে নাজিল হয়েছে আায়তটি। দেখাই যাক আসলেই কি বেদুঈনরা মুহাম্মদ (স:) এর সঙ্গী নাকি আর দেখাই যাক যে বেদুঈনরা কত সত্যবাদী। তাই আয়াতটি নাজিল হলো,,,
.
قُلْ لِلْمُخَلَّفِينَ مِنَ الْأَعْرَابِ سَتُدْعَوْنَ إِلَىٰ قَوْمٍ أُولِي بَأْسٍ شَدِيدٍ تُقَاتِلُونَهُمْ أَوْ يُسْلِمُونَ ۖ فَإِنْ تُطِيعُوا يُؤْتِكُمُ اللَّهُ أَجْرًا حَسَنًا ۖ وَإِنْ تَتَوَلَّوْا كَمَا تَوَلَّيْتُمْ مِنْ قَبْلُ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
• গৃহে অবস্থানকারী মরুবাসীদেরকে বলে দিনঃ আগামীতে তোমরা এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সাথে যুদ্ধ করতে আহুত হবে। তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে, যতক্ষণ না তারা মুসলমান হয়ে যায়। তখন যদি তোমরা নির্দেশ পালন কর, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দিবেন। আর যদি পৃষ্ঠপ্রদর্শন কর যেমন ইতিপূর্বে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছ, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দিবেন।
(সূরাঃ আল ফাতহ, আয়াতঃ ১৬)
.
তার আগের আয়াতেও এ বিষয়ে বলা হয়েছে,,
.
سَيَقُولُ الْمُخَلَّفُونَ إِذَا انْطَلَقْتُمْ إِلَىٰ مَغَانِمَ لِتَأْخُذُوهَا ذَرُونَا نَتَّبِعْكُمْ ۖ يُرِيدُونَ أَنْ يُبَدِّلُوا كَلَامَ اللَّهِ ۚ قُلْ لَنْ تَتَّبِعُونَا كَذَٰلِكُمْ قَالَ اللَّهُ مِنْ قَبْلُ ۖ فَسَيَقُولُونَ بَلْ تَحْسُدُونَنَا ۚ بَلْ كَانُوا لَا يَفْقَهُونَ إِلَّا قَلِيلًا
তোমরা যখন যুদ্ধলব্ধ ধন-সম্পদ সংগ্রহের জন্য যাবে, তখন যারা পশ্চাতে থেকে গিয়েছিল, তারা বলবেঃ আমাদেরকেও তোমাদের সঙ্গে যেতে দাও। তারা আল্লাহর কালাম পরিবর্তন করতে চায়। বলুনঃ তোমরা কখনও আমাদের সঙ্গে যেতে পারবে না। আল্লাহ পূর্ব থেকেই এরূপ বলে দিয়েছেন। তারা বলবেঃ বরং তোমরা আমাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করছ। পরন্তু তারা সামান্যই বোঝে।
(সূরাঃ আল ফাতহ, আয়াতঃ ১৫)
.
.
বেদুঈনরা এতো মিথ্যাচারেে পরেও যখন গনিমতের জন্য বলছে রাসুলের (স:) এর সঙ্গী। যুদ্ধ না এসেও এখন রাসুল (স:) এর সঙ্গী দেখচ্ছে। তাহলে আসো ইসলাম কবুল করো অনেক তো নবীদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছো তার পরে মিথ্যা ওযর দিয়েছো তার পরে আবার গনিমত চাচ্ছ আবার বলছো নবী মুহাম্মদ (স:) নাকি বিদ্বেষ করছে অর্থাৎ মিথ্যা অপবাদ। আবার বলছে নবী মুহাম্মদ (স:) এর সঙ্গী। তাহলে যদি সত্যিই সঙ্গী হয়ে থাকো তাহলে ইসলাম কবুল করো। নহয় তোমাদের সাথে হবে যুদ্ধ। কিন্তু যদি তোমরা মুসলিম না হও তাহলে শুনে রাখো,,,
.
"আর যদি পৃষ্ঠপ্রদর্শন কর যেমন ইতিপূর্বে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছ, তবে তিনি তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি দিবেন।"
.
দেখুন এই আয়াত নাকি অমানবিক। এতোই মিথ্যাচার করে এরা। আল্লাহ এদের হেদায়েত দিক না হয় ধ্বংস করুক।
.
[ উপরের প্রক্ষাপট সহ বিস্তারিত পাবেন তাফসীরে ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৭৯৩-৭৯৯ ]
.
.
📌 সূরা আনফাল, আয়াত ১২
.
আসুন আয়াতটা দেখে নেই,,,
.
إِذْ يُوحِي رَبُّكَ إِلَى الْمَلَائِكَةِ أَنِّي مَعَكُمْ فَثَبِّتُوا الَّذِينَ آمَنُوا ۚ سَأُلْقِي فِي قُلُوبِ الَّذِينَ كَفَرُوا الرُّعْبَ فَاضْرِبُوا فَوْقَ الْأَعْنَاقِ وَاضْرِبُوا مِنْهُمْ كُلَّ بَنَانٍ
• যখন নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদিগকে তোমাদের পরওয়ারদেগার যে, আমি সাথে রয়েছি তোমাদের, সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।
(সূরাঃ আল-আনফাল, আয়াতঃ ১২)
.
.
💕 জবাব:- এই আয়াতটিও হলো বদরের যুদ্ধের। আর বদরের যুদ্ধ নিয়ে আমি উপরেই বলেছি। তাদেরকে হত্যা করার কারণ তারাই এসে যুদ্ধের আহ্বান করেছে যা উপরেই দিয়েছি। কারণ তারা আল্লাহ ও রাসুলের বিরোধিতা করেছে। আর নবী মুহাম্মদ (স:) এর সাথে যুদ্ধ করেছিলো। এই কারণে আয়াতটি নাজিল হয়।
[ তাফসীর ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৫২৯ ]
.
আর তাদের হত্যা করার কথা বলা হয়েছে কারণ কুরাইশেরা মুসলিমদের ঘৃণার চোখে দেখতো এবং মুসলিমদের উপর নানান নির্যাতন চালাতো। যার কারণে হত্যার কথা বলা হয়েছে।
[ তাফসীর ইবনে কাসীর পৃষ্ঠা:- ৫২২/বিস্তারিত ৫২২-৫২৯ ]
.
আমার প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:) সেই বদরের সময় বলেছেন,,,
"চূড়ান্ত নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কেউ যুদ্ধ করবে না। ব্যাপকভাবে তীরবৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কেউ তীর ছুঁড়বে না এবং তোমাদের উপরে তরবারি ছেয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তরবারি চালাবেনা।" আরো অনেক আদেশ আমার প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:) দিয়েছেন।
[ সীরাতে রাসুল (স:) - আসাদুল্লাহ আল-গালিব পৃষ্ঠা:- ২৯৭ ]
.
.
এই হলো ইসলাম বিদ্বেষীদের মিথ্যাচারের জবাব। আল্লাহ এদের হেদায়েত দান করুন। আমীন,,,,
.
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ كَذَّبَ بِآيَاتِهِ ۗ إِنَّهُ لَا يُفْلِحُ الظَّالِمُونَ
💕আর যে, আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অথবা তাঁর নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার চাইতে বড় জালেম কে? নিশ্চয় জালেমরা সফলকাম হবে না।💕
(সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ২১)
.
.
💕নিশ্চয় জালেমরা সফলকাম হবে না,,,,
0 Comments