পূণর্জন্মের মাধ্যমে পৌত্তলিকতা ধ্বংস!



মুহাম্মদ আলী সিরিজ - ১৮
বিষয়:- পূণর্জন্মের মাধ্যমে পৌত্তলিকতা ধ্বংস! 
🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________________________________________________

খুবি বজ্রপাত হচ্ছে। বজ্রপাতের বিকট শব্দ কানকে একদম ঝালাপালা করে দিচ্ছে। 

চোখ খুলে দেখি এটা হলো স্বপ্ন!! 

আসলে এটা বজ্রপাত নয় বরং গাড়ির হনের আওয়াজ! 

মেজাজটা তখন অনেকটা খিটখিটে হয়ে গেলো! তখনই ফোন বাঁজতে লাগলো! আমি ধরলাম অতঃপর,,,, 

ফোন-আলাপ

অজয়:- কিরে মুহাম্মদ আলী কি খবর!? তোর বাসার নিচে কফির দোকানে আছি। তাড়াতাড়ি আয়। 

মুহাম্মদ আলী:- আচ্ছা। 

কফির দোকানে গেলো,, 

অজয়, বিনয়, আরিফ এক সাথে বসে আছে। মুহাম্মদ আলী আসলো। সালাম বিনময় হলো। 

তারপর অজয় বলতে লাগলো,,, 

অজয়:- আসলে ইসলাম ধর্মে জান্নাত জাহান্নাম আছে। কিন্তু হিন্দুধর্মে স্বর্গ নরকের কোন অস্তিত্ব নেই। হিন্দু ধর্মই লজিকাল। 

[ মুহাম্মদ আলী কফি আনলো আর কফিতে চুমুক দিয়ে বলতে লাগলো ]

মুহাম্মদ আলী:- কি বলছো অজয়। তোমার ধর্মে তো স্বর্গ নরকের কথা শুনেই আসছি। পড়েও আসছি। কেনো তুমি কি স্বর্গ নরক বিশ্বাস করো না? 

অজয়:- না। স্বর্গ নরক অনেক হিন্দু বিশ্বাস করলেও আমি করি না। আমরা আর্য পূণর্জন্ম আমরা বিশ্বাস করি। জান্নাত জাহান্নাম সব অযৌক্তিক! 

মুহাম্মদ আলী:- না ব্রো! জান্নাত জাহান্নাম কখনোই অযৌক্তিক নয় বরং পূণর্জন্ম এমন একটা ভুল যা পৌত্তলিক ধর্ম হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মকে ভুল প্রমাণিত করে। 

অজয়:- কিভাবে? 

[ মুহাম্মদ আলী কফিতে চুমুক দিয়ে বলতে লাগলো ]

মুহাম্মদ আলী:- এই যে পূণর্জন্ম এটাই হিন্দুধর্মকে ভুল প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। এমন কি পূণর্জন্ম বিশ্বাস করলে নাস্তিকরা বেঁচে যাবে। 

অজয়:- (বিরক্ত সূরে) মনগড়া কথাবার্তা বাদ দিয়ে দে। 

মুহাম্মদ আলী:- আচ্ছা আমি ২টি বিষয় কথা বলবো। প্রথমে তুমি আমায় বলো কোন মানুষ যদি পাপ করে তাহলে সেই মানুষ কি হয়ে জন্মগ্রহণ করবে? 

অজয়:- জানি না। 

মুহাম্মদ আলী:- আমি তাহলে মনুসংহিতা থেকে তোমায় বলি কি হয়ে জন্মগ্রহণ করবে,,, 

📎"পরমাত্মা এই জগত বারবার রচনা করেন" [যজুর্বেদ ৩১/৪]
📎"প্রকৃতির নিয়মে এই জগত পুণঃ পুণঃ সৃষ্টি হয় এবং ধ্বংস হয়।" [গীতা ৯/১০]
📎 "মানুষ যেমন পুরান কাপড় ছেড়ে নতুন কাপড় পড়ে তেমনিভাবে মানবাত্মা একটা শরীর ছেড়ে অন্য শরীরে প্রবেশ করে।" [গীতা ২/২২]
📎 "ব্রহ্মা থেকে শুরু করে সমস্ত কিট পতঙ্গের পুনর্জন্ম হয়।" [গীতা ৮/১৬]
◾কিন্তু যারা পরমাত্মাকে লাভ করে তার পূনর্জন্ম হয় না,,, 
📎 "যারা পরমাত্মাকে লাভ করতে পারে তাদের পুনর্জন্ম হয় না।" [গীতা ৮/১৫]
◾অর্থাৎ,, পাপীদের পূনর্জন্ম হয়। 
কিন্তু যারা পাপী তারা কোন রূপে জন্ম নিবে সেটা নিয়ে বিস্তারিত বলেছে মনুস্মৃতি। 
আসুন দেখি,,, 
📎"যে যে পাপকর্ম দ্বারা ইহলোকে যে যে যোনি প্রাপ্ত হয়, সে সকল তোমাদিগকে বলিতেছি, শ্রবণ করো" [মনুস্মৃতি ১২:৫৪]
📎"যে ব্রহ্মণ হত্যা করে সে পরে জন্মে 'কুকুর, শূকর,গো,গর্দভ,উষ্ট্র,অজ, পক্ষী' হয়ে জন্ম নিবে।" [মনুস্মৃতি ১২:৫৫]
📎"যে ধান চুরি করে সে ইঁদুর হয়ে জন্ম নিবে।" [মনুস্মৃতি ১২:৬২]
📎"মাংস চুরি করলে পাখি, তেল চুরি করলে হবে তেলাপোকা, লবণ চুরি করলে কীট হয়" [মনুস্মৃতি ১২:৬৩]

মনুসংহিতা থেকে দেখা যাচ্ছে মানুষ যদি পাপ করে তাহলে সে কীটপতঙ্গ/পশুপাখি-জন্তুজানোয়ার হয়ে জন্মগ্রহণ করবে। Right!? 

অজয়:- ইয়ে মানে হুম। 

মুহাম্মদ আলী:- তাহলে বলো তো দিন দিন পাপী বাড়ছে না কমছে? দিন দিন মানুষ বাড়ছে না কমছে? 

অজয়:- দিন দিন অপরাধীও বাড়ছে এবং জনসংখ্যাও বাড়ছে। এটা আমি জানি জাকির নায়েকের এই অপপ্রচার অনেক আগেই জানি।

মুহাম্মদ আলী:- কেনো? এটা অপপ্রচার কেনো হবে? মনুসংহিতাই তো বলছে পশুপাখি হয়ে জন্ম নিবে। তাহলে তো জনসংখ্যার হাড় কমার কথা কিন্তু দিন দিন অপরাধীও বাড়ছে জনসংখ্যাও বাড়ছে সুতরাং ১ মিনিটেই পূণর্জন্ম আর হিন্দুধর্ম ভুল প্রমাণিত! 

[ সকলে চুপচাপ শ্রবণ করছে। অজয় বিরক্ত সূরে বলতে লাগলো ]

অজয়:- মামার বাড়ির আবাদার? তুমি কি জানো আমি মনুসংহিতা মানি না। মনুসংহিতা কোন ধর্মগ্রন্থ নয়। বেদ হলো ধর্মগ্রন্থ সুতরাং তোমার সব দাবীই নাকচ! আমি আর্য সুতরাং মনুসংহিতা কখনো মানবো না। 

মুহাম্মদ আলী:- ওও তাই নাকি। মনুসংহিতা তো আর মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ নয়! মনুসংহিতা হলো হিন্দু শাস্ত্র! প্রথমে বলব সকল হিন্দু গীতা মানে বেদ-গীতা। আর এই গীতা হলো মহাভারতের একটি অংশ। [উইকিপিডিয়া]

এখন এই মহাভারতে মনু শাস্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। 

মহাভরতে বলা হয়েছে মনু হলো শাস্ত্র আর এই শাস্ত্রকে অবাধে পালন করতে হবে এবং বলা হয়েছে যুক্তিতর্ক দ্বারা এই শাস্ত্র খন্ডন করিবে না।
[ মহাভারত অশ্বমেধিকপর্ব্ব/- ১২২:৮ ]

[ অজয় বিরক্ত সূরে বলতে থাকলো ]

অজয়:- এসব আমাকে বলতে এসো না আমি মনুসংহিতা মানি না তো মানি না। বেদ আমার বিধান।

মুহাম্মদ আলী:- তাই নাকি? যদি তাই হয় তাহলে তুমিই বলো যে ব্যক্তি পাপকাজ করে তার পূণর্জন্ম হলে সে কি হয়ে জন্মগ্রহণ করবে? মনুসংহিতা অনুযায়ী তো হবে পশুপাখি/কীটপতঙ্গ যদি মনুসংহিতা নাই মানো তাহলে কি হয়ে জন্মগ্রহণ করবে পাপীরা? মানুষ হয়ে? 

[ আজয়ের চেহারা কিছুটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো ]

অজয়:- ইয়ে মানে বুধহয় মানুষ হয়ে জন্ম নিবে তবে গরীব-ধনী প্রতিবন্ধী হিসেবে হয়তো। 

মুহাম্মদ আলী:- এটা তো তোমার মনগড়া কথা। মনুসংহিতায় তো সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে। বেদ তো আর এসব নিয়ে বিস্তারিত বলে নি। সুতরাং তুমি যে বলছো মানুষ হয়ে জন্মাবে তার কোন প্রুফ নেই। 

অজয়:- (নিশ্চুপ) 

মুহাম্মদ আলী:- তর্কের খাতিরে আমি মেনে নিলাম মানুষ হয়েই জন্ম নিবে। তাহলে হিন্দুধর্ম না মানলেই হবে। নাস্তিকদেরও প্রবলেম নেই। পাপ করলেও প্রবলেম নেই। 

[ সবাই অবাক হয়ে গেলো! অজয় বলতে লাগলো ]

অজয়:- কিভাবে? 

মুহাম্মদ আলী:- কারণ পাপ করলে যেহেতু মারা গেলে কোন জাহান্নামে শাস্তি পাবে না বা কোন রকম কীটপতঙ্গ/পশুপাখি হিসেবে জন্ম নিবে না। মানুষ হয়ে জন্ম নিবে তাহলে তো আর কোন প্রবলেম নাই। হিন্দুধর্ম যদি সত্যও হয়ে থাকে তার পরেও পাপীরা বেঁচে যাবে অহিন্দুরাও বেঁচে যাবে নাস্তিকরাও বেঁচে যাবে। আমারা আবার জন্ম নিবো শেষ প্রবলেম। আমাদের তো আর কোন শাস্তি হবে না। তাহলে All is well কি বলো? 

অজয়:- (হতাশ কণ্ঠে) ইয়ে মানে মানুষ হয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নিবে। এটা তো শাস্তি। 

মুহাম্মদ আলী:- প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়া শাস্তি হবে কিভাবে? অনেক প্রতিবন্ধীকে ডাক্তাররা সুস্থ করতে পারেন। তাহলে কি ভগবান এতোই দূর্বল যে তার শাস্তি অন্যরা ঠিক করে দিচ্ছে? 

অজয়:- ইয়ে মানে!! 

মুহাম্মদ আলী:- আচ্ছা অজয় দিন দিন অপরাধী বাড়ছে না কমছে? 

অজয়:- বাড়ছে! 

মুহাম্মদ আলী:- জনসংখ্যা বাড়ছে না কমছে? 

অজয়:- বাড়ছে। 

মুহাম্মদ আলী:- পৃথিবীরতে স্বাভাবিক মানুষের সংখ্যা বেশি না প্রতিবন্ধী/প্যারালাইসিস এর সংখ্যা বেশি? 

অজয়:- ইয়ে মানে স্বাভাবিক মানুষের সংখ্যা বেশি। 

[ সবাই এবার হা হা করে হাসছে। মুহাম্মদ আলী সবাইকে থামিয়ে বলতে লাগলো ]

মুহাম্মদ আলী:- এইতো প্রমাণ হলো হিন্দুধর্ম ভুল কারণ পাপীরা যেহেতু বাড়ছে সেহেতু প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা স্বাভাবিক মানুষের থেকে বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু স্বাভাবিক মানুষই বেশি সুতরাং পূণর্জন্ম যদি হিন্দুধর্মের আক্বীদা হয় তাহলে তা সম্পূর্ণ ভুল ভুল ভুল! কেউ যদি মনুসংহিতা মানে তাহলেও ভুল কারণ জনসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে আর অপরাধীও বাড়ছে। আর মনুসংহিতা না মানলেও ভুল! 

[ হঠাৎ আরিফ বলে উঠলো ]

আরিফ:- এই কারণেই তো দেখি বেশিরভাগ নাস্তিক হলো হিন্দু। কারণ তাদের তো কোন শাস্তি হবে না। পাপ কাজ করলেও কোন শাস্তি হবে না। 

[ অজয় একদম নিশ্চুপ ]

মুহাম্মদ আলী:- আছরের আজান হয়েছে আমি আর আরিফ নামাজে যাবো। তোমাকে একটা কথা বলি তুমি যদি পূণর্জন্ম মানো অর্থাৎ বেদেও পূণর্জন্মের কথা আছে। সুতরাং পূণর্জন্ম যদি তুমি মানো তাহলে তোমার ধর্ম যে ভুল তা এক মিনিটেই প্রমাণ করা সম্ভব আর সেই ভুলকে কেউ কখনো খন্ডন করতে পারবে  না। ওপেন চ্যালেঞ্জ! সুতরাং আমি মুসলিম। হিন্দু ধর্ম যদি সত্যিও হয়ে থাকে তর্কের খাতিরে তাহলেও আমরা বেঁচে যাবো আমাদের পূণর্জন্ম হলে আমরা মানুষ হয়ে জন্ম নিবো। 

গাণিতিক ভাবে যৌক্তিক ভাবে প্যাগান ধর্মের পূণর্জন্ম আক্বীদা বিশ্বাস ভুল।

তুমি যদি মনুসংহিতা নাও মানো তাহলেও ভুল।  সুতরাং ISLAM IS BEST যাই তাহলে। 

[ মুহাম্মদ আলী আর আরিফ চলতে থাকলো মসজিদের পথে ]

Post a Comment

2 Comments

  1. Replies
    1. জাযাকাল্লাহ খায়রান। শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন। ইনশাআল্লাহ

      Delete