কুরআন স্পষ্ট না অস্পষ্ট!?



কুরআন স্পষ্ট না অস্পষ্ট?
(বিভ্রান্তির নিরসন)
🖋Author:- Ahmed Al-Ubaydullaah
____________________________________________________________________________________

নাস্তিকের অভিযোগ: কুরআনের কোনো কোনো আয়াত বলছে, কুরআনের সবকিছু স্পষ্ট (যেমন সূরা বাকারা, আয়াত ২)। অথচ অন্য আয়াতে বলছে – এর (কুরআনের) কিছু অংশ স্পষ্ট, আর কিছু অংশ অস্পষ্ট (সূরা আল-ইমরান, আয়াত ৭)। এটা কি পরস্পরবিরোধিতা নয়?

জবাবঃ
আসুন প্রথমেই আমরা সূরা বাকারার ২নং আয়াতের তরজমাটি দেখে নিই।

“এটা সে কিতাব; যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত”
[আল-কুরআন, ২:২; অনুবাদঃ ড. আবু বকর যাকারিয়া]

এখন, যদি উক্ত আয়াতের বিবৃতির দিকে লক্ষ্য করা হয়, তবে আয়াতের শেষাংশের বক্তব্যে আমরা পাই – এই কুরআন “মুত্তাকীদের জন্য হেদায়াত”।

সুতরাং, এখানে দুটি বিষয় লক্ষ্যণীয় – ১) মুত্তাকীদের প্রসঙ্গ, ২) হেদায়াতের ইঙ্গিত।

অর্থাৎ,
এক – এটা প্রতীয়মান হয় যে, কুরআনুল কারীম এমন এক কিতাব, যে কিতাবের প্রতি মুত্তাকীগণ কোনো সন্দেহ পোষণ করে না, যেমনটি অন্য আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে, 
“তারাই প্রকৃত মু’মিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর প্রতি ঈমান আনার পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করে না এবং জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে…” (আল-কুরআন, ৪৯:১৫; অনুবাদঃ মুজীবুর রহমান)
“মু’মিনদেরকে যখন তাদের মাঝে ফয়সালা করার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে ডাকা হয়, তখন মু’মিনদের জওয়াব তো এই হয় যে, তারা বলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম…” (আল-কুরআন, ২৪:৫১; অনুবাদঃ তাইসীরুল কুরআন)
বরং সন্দেহ পোষণ করে তারাই যাদের অন্তরে রয়েছে অবিশ্বাস ও সন্দেহপ্রবণতা!
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, “ফিরাউন সম্প্রদায় এবং তাদের পূর্ববর্তীদের প্রকৃতির ন্যায় তারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি অসত্যারোপ করেছে…” (আল-কুরআন, ৩:১১; অনুবাদঃ মুজীবুর রহমান)

দুই – এই কুরআন এমন এক কিতাব যেখানে হেদায়াত সুস্পষ্ট। যারা মুত্তাকী, প্রকৃত সত্য বিশ্বাসী, তারা এই কিতাব হতে হেদায়াত লাভ করতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী, সন্দেহপোষণকারী, তাদের পক্ষে হেদায়াত লাভ করা খুবই কঠিন! 

মহান আল্লাহ বলেন,

“…তিনি এর দ্বারা অনেককে বিপথগামী করে থাকেন এবং অনেককে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন, আর এর দ্বারা তিনি শুধু ফাসিকদেরকেই (পাপীষ্ট, অনাচারী) বিপথগামী করে থাকেন।” (আল-কুরআন, ২:২৬; অনুবাদঃ মুজীবুর রহমান)

তাফসীরে আহসানুল বায়ানে উক্ত আয়াতের (সূরা বাকারা, আয়াত নং ২) 
ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে,

“এ কিতাবের অবতরণ যে আল্লাহর নিকট থেকে এ ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। যেমন অন্য আয়াতে এসেছে, “এ কিতাবের অবতরণ বিশ্বপালনকর্তার নিকট থেকে এতে কোন সন্দেহ নেই।” (সূরা সাজদা ২) …এ ছাড়াও এতে যেসব ঘটনাবলী উল্লেখ করা হয়েছে তার সত্যতা সম্পর্কে, যেসব বিধি-বিধান ও মসলা-মাসায়েল বর্ণিত হয়েছে সে সবের উপর মানবতার কল্যাণ ও মুক্তি যে নির্ভরশীল সে ব্যাপারে এবং যেসব আক্বীদা (তাওহীদ, রিসালাত ও আখেরাত) সংক্রান্ত বিষয় আলোচিত হয়েছে তার সত্য হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ নেই।” [তফসীর আহসানুল বায়ান (বঙ্গানুবাদ), আল-কুরআন ২:২ আয়াতের তাফসীর হতে বিবৃত]

অর্থাৎ, সূরা বাকারার ২নং আয়াত এটা নির্দেশ করছে না যে, কুরআনের প্রতিটি আয়াতের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করা যাবে কী যাবে না; বরং উক্ত আয়াত এটা নির্দেশ করে যে, কুরআন হতে হেদায়াত স্পষ্ট ও সন্দেহাতীত। ফলস্বরূপ, যে ব্যক্তি প্রকৃত মুমিন, তার পক্ষে – কুরআন ইহকাল ও পরকালের যে সকল বিষয় ও নিদর্শন তুলে ধরছে – সে সকল বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করার কোনো অবকাশ নেই। মুমিন মাত্রই স্বভাবগতভাবে কুরআনের সকল বিষয়ে বিশ্বাস-স্থাপন করবে এবং এর মাধ্যমে সে আল্লাহর পক্ষ হতে হেদায়াত লাভ করবে (ইনশাআল্লাহ)।

এখন নাস্তিকদের উত্থাপিত দ্বিতীয় আয়াতটি (সূরা আল-ইমরান, আয়াত ৭) দেখা যাক।

“তিনিই আপনার প্রতি এই কিতাব নাযিল করেছেন যার কিছু আয়াত ‘মুহ্‌কাম’, এগুলো কিতাবের মূল; আর অন্যগুলো ‘মুতাশাবিহ্‌’, সুতরাং যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে শুধু তারাই ফেৎনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে। অথচ আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, ‘আমরা এগুলোতে ঈমান রাখি, সবই আমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে’; এবং জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।” (আল-কুরআন, ৩:৭; অনুবাদঃ ড. আবু বকর যাকারিয়া)

উক্ত আয়াতে আমরা কুরআনের আয়াতসমূহের দুই ধরণের শ্রেণিবিভাগ দেখতে পাইঃ-
১) মুহকামাত আয়াত, ২) মুতাশাবিহাত আয়াত।

এখন, উক্ত আয়াত হতে আমরা জানতে পারি যে, ‘মুহকামাত’ আয়াতসমূহের অর্থ স্পষ্ট এবং তা কুরআনের সেই মূল অংশ – যা হতে কোনো ব্যক্তি উপযুক্ত সঠিক ব্যাখ্যা, বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে হেদায়াত লাভ করতে পারবে ইনশাআল্লাহ।
অন্যদিকে আয়াতসমূহের আরেকটি ধরণ হল ‘মুতাশাবিহাত’ যার সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। সেসকল আয়াতের প্রতি মুমিনগণের ঈমান আনার কথা বলা হয়েছে।

এখানে সূরা বাকারার ২নং আয়াতের ক্ষেত্রে আমরা পূর্বেই দেখিয়েছি যে, উক্ত আয়াত (সূরা বাকারা, আয়াত ২) এটা নির্দেশ করছে না যে, কুরআনের প্রতিটি আয়াতের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করা যাবে কী যাবে না; বরং উক্ত আয়াত (সূরা বাকারা, আয়াত ২) এটা নির্দেশ করছে যে, কুরআন হতে হেদায়াত স্পষ্ট ও সন্দেহাতীত। আর সেই হেদায়াত লাভের জন্য কোনো ব্যক্তির যদি কুরআনের আয়াতসমূহের অর্থ, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন পড়ে, তবে মুহকামাত আয়াতসমূহ তার জন্য যথেষ্ট। সুতরাং কুরআন এক্ষেত্রে হেদায়াত এর ক্ষেত্রে স্পষ্ট বিধায় সূরা বাকারার ২নং আয়াতের সাথে সূরা আল-ইমরানের ৭ নং আয়াতের কোনো বিরোধ নেই। তবে অভিযোগকারীরা এখানে প্রশ্ন তুলতে পারে, ‘যদি বিরোধ না-ই থাকে, তবে মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহ আল্লাহ কেন নাযিল করলেন? যদি হেদায়াত লাভই করতে হয়, তবে কুরআনের সমগ্র অংশের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণই সুস্পষ্ট হওয়া উচিৎ। কেন তবে মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহের সঠিক ব্যাখ্যা আল্লাহ গোপন রাখলেন?’

এর একটি জবাব এই হতে পারে যে, এটা আল্লাহর ইচ্ছা – তিনি কীভাবে তাঁর আয়াতসমূহ অবতীর্ণ করবেন! কারও ভাল লাগুক বা না লাগুক – এতে কিছুই যায় আসে না। হেদায়াত লাভের জন্য আত্ম-অহংকার বিসর্জন দেওয়া বাঞ্ছনীয়! যার অন্তর আল্লাহদ্রোহিতায় লিপ্ত, তার পক্ষে কীভাবে সম্ভব যে, সে রাব্বুল আলামীনের প্রতি স্বেচ্ছায় আত্ম-নিবেদন করতে সক্ষম হবে? যেমনটা কঠোর স্বভাবের তৎকালীন আরব বেদুঈনদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেন, 

“বেদুঈনরা বলে, ‘আমরা ঈমান আনলাম’। বলুন, ‘তোমরা ঈমান আননি, বরং তোমরা বল, ‘আমরা আত্মসমর্পণ করেছি’, কারণ ঈমান এখনো তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি…” (আল-কুরআন, ৪৯:১৪; অনুবাদঃ ড. আবু বকর যাকারিয়া)

এবার উক্ত আয়াতের (সূরা আল-ইমরান, আয়াত নং ৭ এর) এই অংশটি লক্ষ্য করুন, “যাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে শুধু তারাই ফেৎনা এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে মুতাশাবিহাতের অনুসরণ করে…”।
এখানে, যারা মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহের পিছে পড়ে যায় ও অপব্যাখ্যা করে, তাদের ক্ষেত্রে দুটি উল্লেখযোগ্য বিষয় আমরা পাই – ১) তাদের অন্তরে বক্রতা রয়েছে, ২) তারা ফিতনা ছড়িয়ে থাকে।
আর মহান আল্লাহ বলেন, “মানুষ কি মনে করেছে যে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’ এ কথা বললেই তাদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেয়া হবে? …আল্লাহ্‌ অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা সত্যবাদী এবং তিনি অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা মিথ্যাবাদী।” (আল-কুরআন, ২৯:২-৩; অনুবাদঃ ড. আবু বকর যাকারিয়া)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ যেহেতু কারা প্রকৃত মুমিন বা বিশ্বাসী, আর কারা অবিশ্বাসী – এটা প্রকাশ করে দেবেন, একারণেও হয়ত তিনি মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহের মাধ্যমে অবিশ্বাসী, সন্দেহপোষণকারীদের প্রকাশ করে দেবেন। কেননা, একজন অবিশ্বাসী ব্যক্তির অন্তরে যখন সন্দেহ কাজ করছে, তখন মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহের গুপ্ত ব্যাখ্যা জানতে না পারলে সেগুলো নিয়ে স্বাভাবিকই সে সন্দেহ পোষণ করার অযুহাত পেয়ে যাবে। ফলস্বরূপ তার অন্তরের সন্দেহ, তার কথা ও কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে প্রকাশিত হয়ে পড়বে। এখানে অবিশ্বাসীর এই সন্দেহপ্রবণতা তার অন্তরের বক্রতারই এক বহিঃপ্রকাশ যার ফলশ্রুতিতে সে মহান আল্লাহর নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখান করতে থাকে ও ক্রমাগত ফিতনা বিস্তারের কর্মে লিপ্ত হয়!

সুতরাং, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হয়ত মুতাশাবিহাত আয়াতের মাধ্যমে অবিশ্বাসীগণের বক্রতা তথা অবিশ্বাস, সন্দেহপ্রবণতা এবং তাদের দ্বারা সংঘটিত ফিতনা ইত্যাদিকে প্রকাশ করে দেবেন যাতে করে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীগণ পৃথক হয়ে যায় এবং মুমিনগণ অবিশ্বাসীগণকে চিহ্নিত করতে ও তাদের থেকে নিজেদেরকে পৃথক রাখতে সক্ষম হয়।

অন্যদিকে যারা প্রকৃত মুমিন, মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহ তাদেরকেও প্রকাশ করে দেয়, যেমনটা উক্ত আয়াতে (সূরা আল-ইমরান, আয়াত 

৭) বলা হয়েছে, “…আর যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, ‘আমরা এগুলোতে ঈমান রাখি, সবই আমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে’…” (আল-কুরআন, ৩:৭; অনুবাদঃ ড. আবু বকর যাকারিয়া)

এছাড়া মহান আল্লাহ আরও বলেন,
“যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন তোমাদেরকে পরীক্ষা করবার জন্য; কে তোমাদের কর্মে সর্বোত্তম…” (আল-কুরআন, ৬৭:২; অনুবাদঃ তফসীর আহসানুল বায়ান (বঙ্গানুবাদ)

অর্থাৎ এই পার্থিব জীবন পরীক্ষাস্বরূপ। সেক্ষেত্রে মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহ ঈমানের সেই পরীক্ষা যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে হয়ত মহান আল্লাহ পরীক্ষা করছেন। আর সফলকাম সেই ব্যক্তি, যে মুতাশাবিহাত আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে; ফলস্বরূপ, মুহকামাত আয়াতসমূহও সে সহজে গ্রহণ করতে পারে এবং আল্লাহ কুরআনে যে হেদায়াত দান করেছেন, তার অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছায় হেদায়াত লাভ করতেও সে সক্ষম হয়।
মহান আল্লাহ এহেন বিশ্বাসীদেরকে ‘জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “…যারা জ্ঞানে সুগভীর তারা বলে, ‘আমরা এগুলোতে ঈমান রাখি, সবই আমাদের রবের কাছ থেকে এসেছে’; এবং জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা ছাড়া আর কেউ উপদেশ গ্রহণ করে না।” (আল-কুরআন, ৩:৭; অনুবাদঃ ড. আবু বকর যাকারিয়া)

সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, বস্তুতপক্ষে সূরা বাকারার ২নং আয়াত এবং সূরা আল-ইমরানের ৭নং আয়াতের মধ্যে কোনো বিরোধিতার লেশমাত্র নেই। উপরন্তু এই দুটি আয়াত – অবিশ্বাসীদের সত্য-প্রত্যাখানের স্বরূপকেই বরং যথার্থভাবে তুলে ধরে – যা অবিশ্বাসীদের জন্য এক অস্বস্তির কারণই বটে!

লেখাটি শেষ করব পবিত্র কুরআন এর একটি আয়াত দিয়ে যেখানে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অবিশ্বাসীদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন,

“যারা অবিশ্বাস করেছে, তুমি তাদেরকে বলঃ অচিরেই তোমরা পরাভূত হবে এবং তোমাদেরকে জাহান্নামের দিকে একত্রিত করা হবে এবং ওটা নিকৃষ্টতর স্থান।”
[মহাগ্রন্থ আল-কুরআন, ৩:১২; অনুবাদঃ মুজীবুর রহমান]

কোনোরূপ ভুল-ত্রুটি হলে আল্লাহ মার্জনা করুন এবং আমাদের সকলকে হেদায়াতের পথে পরিচালিত করুন। আমিন।

Post a Comment

0 Comments