বিষয়:- আল্লাহ কি সর্বশক্তিমান? আল্লাহ কেনো গ্রীবা কাঁটেন না?
🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________________________________________________
বিরাট এক ইসলামিক অনুষ্ঠান। একজন বিখ্যাত বক্তা বক্তব্য দিচ্ছেন। মুহাম্মদ আলী, মিনার, সুরুজ, আরিফ চার জন বক্তব্য শুনছে। আরিফ হলো মুহাম্মদ আলীর আরেক বন্ধু। যাইহোক,,, বক্তব্য শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে আসলো প্রশ্ন উত্তর পর্ব। সুরুজ মাইকে গিয়ে প্রশ্ন করলো।
সুরুজ:- আচ্ছা,, আল্লাহ যদি সর্বশক্তিমান হয়ে থাকেন তিনি কি নিজে নিজেকে হত্যা করতে পারবেন? আল্লাহ কি মিথ্যা কথা বলতে পারবেন? মন্দ কাজ করতে পারবেন?? যদি না পারে তাহলে কেমন স্রষ্টা আল্লাহ? কিভাবে সর্বশক্তিমান?
বক্তা:- আল্লাহ তায়ালার যা চান তাই করেন। আল্লাহ সব পারবেন তবে তিনি যদি চান তাহলে। যা চান না তা কখনো করেন না। আল্লাহর ইচ্ছা নেই তাই করেন না। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
[ সুরুজ আলী আর কিছুই বলল না। বক্তব্য শেষ হওয়ার পর একটি বাগানে গাছের নিচে বসার সিট ছিলো। সেখানে চারজন বসলো। সুরুজ বলতে লাগল ]
সুরুজ:- এই হলো অবস্থা।
মুহাম্মদ আলী:- মানে?
সুরুজ:- এইযে তোদের মোল্লাদের অপব্যাখ্যা।
মুহাম্মদ আলী:- কি অপব্যাখ্যা?
সুরুজ:- তুই বলতো তাহলে। আল্লাহ কি সর্বশক্তিমান?
মুহাম্মদ আলী:- অবশ্যই আল্লাহ হলেন সর্বশক্তিমান।
.
أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللَّهَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَمْ يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقَادِرٍ عَلَىٰ أَنْ يُحْيِيَ الْمَوْتَىٰ ۚ بَلَىٰ إِنَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
.
তারা কি জানে না যে, আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং এগুলোর সৃষ্টিতে কোন ক্লান্তিবোধ করেননি, তিনি মৃতকে জীবিত করতে সক্ষম? কেন নয়, নিশ্চয় তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। [১]
.
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ وَنَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا قَفَلَ مِنَ الْغَزْوِ أَوِ الْحَجِّ أَوِ الْعُمْرَةِ يَبْدَأُ فَيُكَبِّرُ ثَلَاثَ مِرَارٍ ثُمَّ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ سَاجِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ صَدَقَ اللهُ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধ, হাজ্জ, বা ‘উমরাহ্ থেকে ফিরে আসতেন তখন প্রথমে তিনবার তাকবীর বলতেন। এরপর বলতেন, সত্যিকার অর্থে আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শারীক নেই। রাজত্ব এবং প্রশংসা একমাত্র তাঁরই। সব বিষয়ে তিনিই সর্বশক্তিমান। আমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাহ্কারী, তাঁরই ইবাদাতকারী। আমরা আমাদের প্রভুর কাছে সাজদাহ্কারী, তাঁরই প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছেন। তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং সম্মিলিত বাহিনীকে পরাভূত করেছেন। [২]
আল্লাহর একটি সিফাত হলো তিনি হলেন কাদির বা সর্বশক্তিমান।
সুরুজ:- কখনোই নয়। আমি এক সেকেন্ডেই প্রমাণ করতে পারবো আল্লাহ সর্বশক্তিমান নন।
মুহাম্মদ আলী:- করো। যদি পারো আরকি।
[ মিনার/আরিফ দুজনেই মনোযোগ দিয়ে শুনছে সব ]
সুরুজ:- তোমাদের আল্লাহ অনেক কিছুই করতে পারে না। একটা প্রচলিত যুক্তি হচ্ছে আল্লাহ এমন কোনো পাথর তৈরি করতে পারে না যা সে তুলতে পারে না। যদি তৈরি করতে বা তুলতে না পারে তাহলে সে সর্বশক্তিমান হতে পারে না।
শুধু তাই নয় আল্লাহ আরো অনেককিছুই করতে পারবে না। যেমন:
◾আল্লাহ নিজেকে সৃষ্টি করতে পারবে না।
◾আল্লাহ চাইলেও ঠিক আজকেই মানবজাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারবে না।
◾আল্লাহ মানুষ তাকে ডাকলেও সাড়া (ভাষার মাধ্যমে) দিতে পারবে না।
◾আল্লাহ চাইলেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারবে না।
◾আল্লাহ সবকিছু ভুলে যেতে পারবে না।
◾আল্লাহ ভুল করতে পারবে না কিংবা ভুল করলেও নিজের বিচার করে,নিজেকে শাস্তি দিতে পারবে না
◾আল্লাহ ঠিক এই মুহূর্তে আমাকে মেরে ফেলতে বা পৃথিবী ধ্বংস করে ফেলতে পারবে না
◾এমন অসংখ্য জিনিস আল্লাহ করতে পারবে না, যা সর্বশক্তিমান আল্লাহর ধারণার বিপরীত। এথেকে প্রমাণিত হয় আল্লাহ সর্বশক্তিমান নন। আল্লাহ শুধুমাত্র মানুষের কল্পনার সৃষ্টি!
মুহাম্মদ আলী:- ওও এই ব্যাপার? আসলেই তুমি এখনো অবুঝ রয়ে গেলে।
সুরুজ:- উত্তর নাই? হা হা হা
মুহাম্মদ আলী:- শুনো সুরুজ। প্রথমতঃ বলব সর্বশক্তিমান হলো আল্লাহ তায়ালা একটি সিফাত বা গুণ তিনি এমন কিছু করবেন না যা তার সিফাতের বিরুদ্ধে যায়। যেমন তিনি মিথ্যা বলবেন না। মন্দ কাজ করবেন না। আল্লাহ যা চান তাই করেন। যা চান না তা করেন না।
সুরুজ:- আল্লাহ যা চান তাই করেন। আর যা চান না করেন না। এসব কে বলেছে তোমায়? তুমি কি নতুন নবী নাকি? হা হা হা
[ মিনার কি একটা বলতে চেয়েছিলো মুহাম্মদ আলী মিনারকে থামিয়ে বলতে লাগলো ]
মুহাম্মদ আলী:- পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন,,,
.
فَعَّالٌ لِمَا يُرِيدُ
তিনি যা চান, তাই করেন। [৪]
.
.
❣ অর্থাৎ,,, আল্লাহ তায়ালা যা চান তাই করেন। তিনি যা চান না তা করেন না। আল্লাহ সর্বশক্তিমান তিনি সব কিছুর স্রষ্টা। তিনি সব করতে পারেন কিন্তু সব করেন না। একজন ভালো মানুষ "চুরি" করতে পারবে কিন্তু সে করবে না। আল্লাহ এমন কাজ করবেন না যা তার সিফাতের বাইরে। আর আল্লাহ তাই করেন যা তিনি চান। এই সকল প্রশ্নের জবাব একটি প্যাটার্ন সেটা হলো,,,
.
আল্লাহ সব পারেন। কিন্তু এমন কিছু করবেন না যা তার সিফাতের বিরুদ্ধে এবং তিনি যা চান তাই করেন যা চান না তা করেন না। তিনি সর্বশক্তিমান এবং বিশ্বজাহানের পালনকর্তা।
[ সুরুজের মূখ খানিকটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো ]
সুরুজ:- তুমি মিথ্যা বলছো কেনো?
মুহাম্মদ আলী:- কি মিথ্যা বললাম?
সুরুজ:- তোমার দেওয়া আয়াতে তো কোথাও বলা নেই "আল্লাহ যা চান না তা করেন না" শুধু বলা আল্লাহ যা চান তা করেন।
মুহাম্মদ আলী:- তোমার কি কমন সেন্স নেই?
সুরুজ:- মানে?
মুহাম্মদ আলী:- আল্লাহ বলেছেন তিনি যা চান তাই করেন। এখন যদি আল্লাহ কোন কিছু না চাইলেও করেন তাহলে তো আয়াতটা ভুল হয়ে যাবে।
আমি যদি বলি আমি যা চাই তাই করি। কিন্তু আমি যদি এমন কিছু করি যা আমি চাই না তাহলে আমি যে পূর্বে বলেছিলাম "যা চাই তাই করি" তা ভুল প্রমাণ হয়। সুতরাং আল্লাহ যা চান না তা করেন না। এই কারণেই তিনি বলেছেন তিনি যা চান তাই করেন। যদি আল্লাহ কিছু নাই চান তাহলে সেটা করারো কোন প্রয়োজন নেই।
সুরুজ:- (নিশ্চুপ)
মুহাম্মদ আলী:- সুতরাং আল্লাহ চান না বলেই তিনি সবকিছু ভুলেন না। মন্দ কাজ করেন না। ভুল কাজ করেন না। কারণ তিনি চান না।
তবে তোমার মনে রাখতে হবে আল্লাহ সব পারেন তবে সব করেন না। তাই করেন যা তিনি চান। যা করতে তিনি ইচ্ছা পোষণ করেন।
যেমন একটি আয়াতে এসেছে,,,
[৩৬:৬৬] ইয়াসীন
وَلَو نَشاءُ لَطَمَسنا عَلى أَعيُنِهِم فَاستَبَقُوا الصِّراطَ فَأَنّى يُبصِرونَ
আর যদি আমি চাইতাম তবে তাদের চোখসমূহ অন্ধ করে দিতাম। তখন এরা পথের অন্বেষণে দৌড়ালে কী করে দেখতে পেত?
দেখো। আল্লাহ যদি চাইতেন তাহলে করতেন কিন্তু তিনি যা চান না তা করেন না।
আশা করি উত্তরটা পেয়েছো।
[ মুহাম্মদ আলীর ফোনে তার মায়ের একটা কল আসলো। মুহাম্মদ আলী দূরে গিয়ে ফোনে আলাপ করতে লাগলো। সুরুজ আরিফ আর মিনারের দিকে লক্ষ্য করে বলতে লাগলো ]
সুরুজ:- দেখলে আরিফ আর মিনার। তোমার বন্ধু মুহাম্মদ আলী কতো বড় গোঁজামিল মাস্টার? কোন উত্তর আমি পাই নি।
[ আরিফের কাছে এক বোতল পানি ছিলো। আরিফ ঢক ঢক করে পানি পান করে বলতে লাগলো। ]
আরিফ:- সুরুজ, তোমার কথাবার্তা পুরোপুরি নাস্তিকদের মতো।
সুরুজ:- প্রশ্ন করলেই নাস্তিক হয়ে যায়?
আরিফ:- প্রশ্ন করলে নাস্তিক হয় না। কিন্তু ইসলাম সম্পর্কে না জেনে তুমি আলতু ফালতু প্রশ্ন করো। যাইহোক তুমি এখনো উত্তর পাও নি?
সুরুজ:- না।
আরিফ:- তাহলে বলো কি সমস্যা।
সুরুজ:- আচ্ছা আমি যদি বলি আমি আল্লাহকে মেরে ফেলতে পারবো তুমি বিশ্বাস করবে?
আরিফ:- না কখনোই না।
সুরুজ:- কি করলে বিশ্বাস করবে? প্রমাণ দেখালে?
আরিফ:- হুম। তুমি কখনোই তা পারবে না।
সুরুজ:- আমি যদি বলি,পারি কিন্তু মারবো না এটা আমার ইচ্ছা! তখন কি বলবি?
আরিফ:- আমি একই কথা বলবো। তুমি কখনোই পারবে না। কারণ তুমি তো আর স্রষ্টা না তাই তুমি যদি বলো তুমি সক্ষম কিন্তু করছো না তাহলে প্রমাণ করতে হবে। কারণ তুমি নিজেই এক সৃষ্টি। তুমি নিজ থেকে একটা মাছিও বানাতে পারবে না। অন্যদিকে আল্লাহ তায়ালা মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন তিনি সর্বশক্তিমান। সুতরাং তিনি চান না তাই করেন না।
সুরুজ:- (হতাশ কণ্ঠে) ইয়ে মানে।
আরিফ:- তুমি প্রথম নিজেকে স্রষ্টা প্রমাণ করো। তাহলে গিয়ে মনে করবো তুমি আল্লাহকে মারতে পারবে তবে মারবে না।
সুরুজ:- হ্যাঁ আমি দাবি করলাম আমি স্রষ্টা। আর আমি আল্লাহকে মারতে পারবো।
আরিফ:- তুমি যদি সত্যিই স্রষ্টা হতে তাহলে আর জন্মগ্রহণ করতে না। সূরা ইখলাসে যে চারটা শর্ত আছে তোমার সাথে মিলে না। তুমি যদি অক্সিজেন না নিতে পারো কয়েক মিনিটেই মারা যাবে। তুমি কোন ভাবেই স্রষ্টা না। সুতরাং তুমি যদি দাবি করো তুমি আল্লাহকে মারতে সক্ষম তাহলে মেরে দেখাও। তুমি হলে সৃষ্টি তাই তুমি যদি বলো তুমি চাও বা তবে পারো তাহলে সেটা কু যুক্তি হবে। কিন্তু আল্লাহ হলে স্রষ্টা তিনি সব কিছু পারেন। আর পারেন বলেই এই জটিল মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। তাই তোমার সাথে আল্লাহর চাওয়া না চাওয়া মিলানোর কোন প্রশ্নই আসে না। আল্লাহ স্রষ্টা তাই তিনি সর্বশক্তিমান। তুমি তো সৃষ্টি তুমি দাবি করলে প্রমাণ পেশ করো।
[ মুহাম্মদ আলীর ফোনে আলাপ শেষ হলো। মুহাম্মদ আলী চারটা আইসক্রিম নিয়ে আসলো। চারজন খেতে লাগলো। মুহাম্মদ আলী বলতে লাগলো ]
মুহাম্মদ আলী:- সুরুজ, আইস্ক্রিম আনতে গিয়ে একটু লেট হয়েছে। এবার বলো তুমি কি কিছু বলবে?
সুরুজ:- হুম বলবো। তবে আগে আইস্ক্রিম খেয়ে নেই।
[ খাওয়া শেষ হওয়ার পর সুরুজ বলল ]
সুরুজ:- আল্লাহ মরে গেছে,মরার আগে আমাকে বলে গেছে,"কুরআন আমার কথা নয়।"
মুহাম্মদ আলী:- বললেই হলো নাকি? প্রমাণ কি এটা আল্লাহ তোকে বলেছে?
সুরুজ:- কুরআনে আছে,
"সে যদি আমার নামে কোনো কথা রচনা করতো, তবে আমি তাঁর ডান হাত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তাঁর গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।" ৬৯:৪৪-৪৭
এখন কুরআন যদি আল্লাহর কথা হয়,তাহলে এটা সত্য। ভেবে দেখ,তোরা সবাই মানিস মুহাম্মদ আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয়। সবচেয়ে প্রিয় মানুষকে যদি আল্লাহ গ্রীবা কাটতে পারে,তাহলে আমি যে একটু আগে আল্লাহর নামে একটা কথা রচনা করলাম আমার তো আরো ভয়ানক শাস্তি হওয়ার কথা,তাই না? কিন্তু,কিছু তো হলো না! এর মানে বুঝতে পারছিস? কুরআন স্রষ্টার বাণী নয়,মুহাম্মদের ভাঁওতাবাজি! কুরআন স্রষ্টার বাণী হলে হয় আমার গ্রীবা কাটা যেতো স্রষ্টার নামে কথা রচনার শাস্তি হিসেবে অথবা স্রষ্টা তার কথা পালনে অক্ষম। যেহেতু আমার গ্রীবা ও কাটা যায়নি আর স্রষ্টা অক্ষমও হতে পারে না। অতএব,কুরআন স্রষ্টার বাণী নয়,মুহাম্মদের ভাঁওতাবাজি।
[ মিনারের খুব বিরক্ত লাগলো। মিনার নিজেকে থামিয়ে বলতে লাগলো ]
মিনার:- আরিফ আর মুহাম্মদ আলী তোমরা দুজন তো কথা বললে এবার আমাকে বলতে দেও। আমার গলা চুলকাচ্ছে কথা বলার জন্য।
মুহাম্মদ আলী:- আচ্ছা মিনার তুমিই বলো।
মিনার:- সুরুজ তোমাকে একটা কথা বলি। তুমি যে আয়াত দিল সেই আয়াতে বলা নবী মুহাম্মদ (সাঃ) যদি কোন মিথ্যা রচনা করতো তাহলে তার গ্রীবা কাঁটা হতো।
সুরুজ:- আমি যে এখন আল্লাহর নামে রচনা করলাম। আমার গ্রীবা কাঁটছেনা কেনো?
মিনার:- তুমি কি রচনা করেছো? বাবলু?
সুরুজ:- এই যে আল্লাহর নামে বললাম।
মিনার:- কুরআন ছিলো ওহী। Right?
সুরুজ:- হুম।
মিনার:- আর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) যদি নিজে রচনা করে আল্লাহর ওহী দাবি করতো তাহলে তার গ্রীবা কাঁটে দিতেন যদি মিথ্যা হতো।
সুরুজ:- হুম তাহলে আমার কাঁটছেনা কেনো?
মিনার:- তুমি মিথ্যা বলেছো এর কারণে আখিরাতে শাস্তি পাবে তবে তোমার গ্রীবা কাঁটা হয় নি। কেনো জানো?
সুরুজ:- কেনো?
মিনার:- কারণ তুমি মিথ্যা দাবি করেছো। কিন্তু তোমার কথাটা কোন ওহী নয়।
সুরুজ:- কিভাবে প্রমাণ করলে যে আমার কথা ওহী নয়?
মিনার:- কারণ তুমি কোন নবী না। আর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর পরে কোন নবী আসবেন না। মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন শেষ নবী। সুতরাং তুমি যে বললে আল্লাহ তোমাকে বলেছে কুরআন মিথ্যা এটা শুধু মাত্র তোমার মিথ্যা দাবী। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) যেহেতু শেষ নবী সেহেতু তোমাকে আল্লাহ কখনোই কোন ওহী প্রেরণ করেন না। আর করেন নি যেহেতু সেহেতু তুমি যাই দাবী করো না কেনো সেটা সত্য নয়। তুমি কোন নবী হলে যদি এমন দাবী করতে তাহলে গ্রীবা কাঁটার কথা বলতে পারতে।
সুরুজ:- (হতাশ কণ্ঠে) আমার কাছে ওহী এসেছে যে কুরআন মিথ্যা।
মিনার:- হা হা হা। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর পর কোন নবীই আসবে না তাহলে তোমার কাছে কিভাবে ওহী আসলো???
[ মুহাম্মদ আলী, আরিফ, মিনার তিনি জন হাসতে লাগলো ]
সুরুজ:- ইয়ে মানে। আমি যাই তাহলে।
মিনার:- আর যাওয়ার আগে শুনে রাখো। গ্রীবা কাটবেন সেটা শুধুমাত্র নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে। সকল মানুষদের লক্ষ্য করে বলা হয় নি। আয়াতেও বলা "সে যদি" অর্থাৎ মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্যই। (আহসানুল বয়ান)
[ সুরুজের প্রস্থান ]
মিনার:- বেচারা সুরুজ ভুলেই গেছে কুরআন হলো শেষ ওহী। আর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) শেষ নবী। যদি না ভুল তো তাহলে ওহী পেয়েছে বা আল্লাহর সাথে কথা বলেছে তা দাবি করতো না। আর আয়াতটাও নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে উল্লেখ করেই বলা হয়েছে।
আরিফ:- চরম ফাঁসা ফাঁসলো সে। হা হা
[ সকলেই হাঁটতে লাগলো। চলে গেলো মসজিদের পথে ]

0 Comments