অভিযোগঃ আল্লাহ বলেন "যে অধিক শপথ করে আপনি তার আনুগত্য করবেন না" (৬৮ঃ১০) অথচ আল্লাহই কোরআনে অধিক শপথ করেছেন।


🖋Author:- Sami Ul Alim
____________________________________________________________________________________

জবাবঃ আয়াত কাটছাঁট করা হয়েছে না করলে অভিযোগ করতে পারতো না কেউ। তা আপনাদের দেখাব। ইনশাআল্লাহ

এখন উত্তরে আসি,

প্রথমতঃ আল্লাহ তায়ালা কোরআন নাযিল করেছেন শুধুমাত্র জ্বীন এবং মানবজাতির জন্যে যাতে সর্বদাই আল্লাহ তায়ালার কথা মতো আমরা চলে বা চলার চেষ্টা করে। তাই উক্ত আয়াত (৬৮:১০) শুধু আমাদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, আমাদের মাঝে যারা এটা করে। তাই এখানে আল্লাহ তায়ালা অধিক শপথ করেছে কি করেছে না তা দেখার বিষয় না।

দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর শপথ আর আমাদের শপথ এক নয়। কারণ আমরা শ্রেষ্ঠ কারো নামে অর্থাৎ মহান আল্লাহর নামে শপথ করি কোনো কিছুকে সত্য বুঝাতে বা সেটা যে মিথ্যা নয় তা বুঝাতে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা উপরে তো কেউ শ্রেষ্ঠ নয় এবং তিনি কখনোই মিথ্যা বলেন না, তিনি এ থেকে পবিত্র। তাঁর প্রতিটি বাণীই সত্য। তাই তিনি যখন তাঁর কোনো সৃষ্টির বিষয়ে শপথ করেন তখন বুঝতে হবে যে সেই বিষয় তো অবশ্যই সত্য কিন্তু সত্যটাকে আরো জোর বা গুরুত্ব দেওয়ার জন্যে বলেন। সুতরাং তাঁর শপথ আর আমাদের শপথ অনেক পার্থক্য। 

তৃতীয়তঃ আয়াতটি একটু কাটছাঁট করা হয়েছে। তারা সূরা আল-ক্বালামের (৬৮:১০) যেই আয়াতটি পেস করে, সেই আয়াতটি যদি সবটা দিত বা যেই শব্দটি দেওয়ার বাকি রয়েছে সেটা দিত তাহলে তাদের এই অভিযোগটি আর করতে পারত না।
দেখুন আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,, 

"যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না।" (সূরা আল-ক্বালামঃ ১০)

দেখলেন তো, তারা "লাঞ্ছিত" শব্দটি দেয়নি । দিলে তো অভিযোগই হত না। শুধু এতটুকুই নয় আয়াতের সামনে পিছনে আরো আছে।
দেখুন... 

আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

فَلَا تُطِعِ الۡمُکَذِّبِیۡنَ؎
وَدُّوۡا لَوۡ تُدۡہِنُ فَیُدۡہِنُوۡنَ؎
وَ لَا تُطِعۡ کُلَّ حَلَّافٍ مَّہِیۡنٍ ۙ؎
ہَمَّازٍ مَّشَّآءٍۭ بِنَمِیۡمٍ ۙ؎
مَّنَّاعٍ لِّلۡخَیۡرِ مُعۡتَدٍ اَثِیۡمٍ ۙ؎
عُتُلٍّۭ بَعۡدَ ذٰلِکَ زَنِیۡمٍ ۙ؎

অতএব, আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না।

তারা চায় যদি আপনি (বাতিলের বিরুদ্ধে) নমনীয় হন, তবে তারাও (সত্যের বিরুদ্ধে) নমনীয় হবে।

যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না।

যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে।

যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমালংঘন করে, সে পাপিষ্ঠ,
কঠোর স্বভাব, তদুপরি কুখ্যাত।"
(সূরা আল-ক্বালামঃ ৮-১৩)

অর্থাৎ শুধু অধিক শপথ না এর পিছনে তাদের অন্যান্য দোষও রয়েছে যার মাধ্যমে তারা সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করে, তারা মিথ্যাবাদী। তাই এখানে ঐসব ব্যক্তিদের আনুগত্য না করার কথা বলা হয়েছে। আর এসব দোষ থেকে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র। তাই এখানে শুধু ব্যক্তিদের কথা বলা হয়েছে।

◾এরপরও যদি বলেন আল্লাহ তায়ালা অধিক শপথ করেছেন কেন, তাহলে আমি বলব এখানে অধিক শপথের কি আছে? কোরআন তো একদিনে নাযিল হয়নি, ২৩ বছরে অল্প অল্প করে নাযিল হয়েছে। ২৩ বছরে এই শপথগুলো করা কি অধিক হয়ে গেল নাকি? আর অধিক বললেও কোনো সমস্যা নাইক্কা। কারণ উপরে আমি দেখিয়েছি, আয়াতে ঐসব ব্যক্তিদের আনুগত্য না করতে বলা হয়েছে, তাহলে এই ব্যক্তির জায়গায় আল্লাহ তায়ালা আসবে কেন? তিনি কখনো মিথ্যা বলেন না। তিনি তো সৃষ্টিকর্তা, কোনো ব্যক্তি নয়। সুতরাং কোরআনে কোনো পরস্পর বিপরীত আয়াত নেই। 

Post a Comment

0 Comments