প্রশ্ন: ঈসা নবীর পার্থিব কোনো পিতা ছিল না। তাহলে আল্লাহ কি ঈসার মা মরিয়মকে গর্ভবতী করে নি?


Answer

প্রশ্ন: ঈসা নবীর পার্থিব কোনো পিতা ছিল না। তাহলে আল্লাহ কি ঈসার মা মরিয়মকে গর্ভবতী করে নি?
লিখেছেনঃ- আহমেদ আলি
____________
.
উত্তর:
নাস্তিক আর মুক্তমনাদের চিন্তাধারা এতটাই মুক্ত যে, তারা যেন সর্বত্র উন্মুক্ত দেহের মুক্ত ক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না! ভোগবাদের বিষবাষ্পে দিশেহারা হয়ে যৌনবিকৃতিকেই তারা যেন আজ অমৃতসুধা হিসেবে গ্রহণ করেছে!
.
স্বাধীনতার বুলির মুখোসের আড়ালে স্বেচ্ছাচারী এই সকল মুক্তমনাদের এক অংশের দাবি এই যে, মহান আল্লাহ ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মা মারইয়াম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে গর্ভবতী করেছেন (নাউজুবিল্লাহ); যেহেতু নবী ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কোনো পার্থিব পিতা ছিল না!
.
স্বাভাবিকভাবে নারীর গর্ভধারণের জন্য নারীর দেহে পুরুষের শুক্রাণু প্রবেশ করা জরুরি। কেননা সেই শুক্রাণু বা পুং গ্যামেট এর সাথে ডিম্বাণু বা স্ত্রী গ্যামেটের মিলনে বিভিন্ন ধাপে সন্তান তৈরির প্রাথমিক উপাদান ভ্রূণ তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে মাতৃদেহ থেকে পুষ্টি লাভ করে বিভিন্ন ধাপে বৃদ্ধি পেয়ে শিশুর দৈহিক আকৃতি গঠন করে।
এখানে তাই মূলত নারীর গর্ভধারণের পূর্বশর্ত হল ডিম্বাণু বা স্ত্রী গ্যামেটের সাথে শুক্রাণু বা পুং গ্যামেটের মিলন।
আর পুং গ্যামেট বা শুক্রাণু এর কাজটা হল স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করা; এই নিষিক্ত করার অর্থ হল ডিম্বাণুকে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যাতে সেটি থেকে সন্তান উৎপাদনের মূল উপাদান ভ্রূণ তৈরি হয়। এই ক্রিয়াকে "নিষেক" বা "ফার্টিলাইজেশন"(Fertilization) বলে।
.
তাই এক কথায় বললে, সন্তান উৎপাদনের পূর্বশর্ত হল স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণুর "নিষেক" বা "ফার্টিলাইজেশন"(Fertilization) সম্পন্ন হওয়া।
.
জনন প্রক্রিয়ার আরও একটি বিশেষ ধরণ রয়েছে, যাকে বলে "অপুংজনি" বা "পার্থেনোজেনেসিস" (Parthenogenesis)। এই প্রক্রিয়ায় মৌমাছি, বোলতা প্রভৃতি কিছু জীবে স্ত্রী গ্যামেটের এরূপ ফার্টিলাইজেশনের মাধ্যমে 'অপত্য জীব'(যে জীব জনন ক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়) তৈরি হতে পুং গ্যামেটের সাহায্য লাগে না। তাই বলা হয়ে থাকে যে, এরূপ জনন প্রক্রিয়ায় পুং গ্যামেটের সাথে মিলনের মাধ্যমে স্বাভাবিক নিষেক ছাড়াই কেবল স্ত্রী গ্যামেট থেকেই এসকল জীবের অপত্য জীব তৈরি হতে পারে।
.
তাহলে আল্লাহর হুকুমে যদি কোনো কোনো জীবের অপত্য জীব তৈরিতে পুং গ্যামেটের প্রয়োজন না হয়, তাহলে যেহেতু প্রকৃতির নিয়মের উদ্ভবকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী হলেন আল্লাহ, সেহেতু এটা কেন সম্ভব হবে না যে, কেবল আল্লাহর হুকুমেই ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্ম হওয়ার জন্য মারইয়াম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কোনো পুরুষের পুং গ্যামেট বা শুক্রাণুর প্রয়োজন হয়নি?
.
নাস্তিক আর মুক্তমনাদের সবচেয়ে বড় মূর্খতা হল এই যে, তাদের অনেকে মনে করে যে, আল্লাহর হুকুমে ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্ম হওয়ার অর্থ হল আল্লাহর সাথে ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মা মারইয়াম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ভিন্ন স্তরের শারীরিক সম্পর্ক ছিল, যার ফলে ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জন্মগ্রহণ করেন (নাউজুবিল্লাহ)।
.
যেমনটা আরও দেখা যায় হিন্দু শাস্ত্রের উপাখ্যানগুলোতে, যেখানে মর্ত্যের কোনো পুণ্যবান নারী মন্ত্র উচ্চারণে দেবতাদের আহবান করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রের দেবতা আবির্ভূত হয়ে বিশেষ ক্ষমতাবলে সেই নারীকে সন্তান প্রদান করে যেত। এমন একটি উপাখ্যান মহাভারতের পাণ্ডুর স্ত্রী কুন্তির ক্ষেত্রেও রয়েছে, যেখানে কুন্তি বিবাহের পূর্বেই মন্ত্রের শক্তি পরীক্ষা করার জন্য সূর্যদেবতার মন্ত্র উচ্চারণ করে, আর তারপর সূর্যদেবতা প্রকট হয়ে কুন্তির অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে সূর্যপুত্র "কর্ণ"-কে গর্ভধারণ ও জন্ম দিতে বাধ্য করে; যে পুত্র পরবর্তীতে সারা জীবন পিতৃপরিচয়হীনতায় সকলের কাছে লাঞ্ছিত হয়!
.
মুক্তমনাদের মধ্যে এহেন সুপ্ত মুশরিকি চিন্তাধারা আর তার সাথে মিশ্রিত যৌনবিকৃতির বিষক্রিয়ার মানদণ্ডে তারা ইসলামকে বিচার করতে আসে বিধায় সত্য সামনে আসার পরও তার কিছুই তাদের মাথায় ঢোকে না!!!
.
তাই ইসলামিক আকিদার মানদণ্ড বুঝতে হলে প্রথমেই কোনো ব্যক্তিকে এহেন চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে এসে ইসলামিক দৃষ্টিতেই ইসলামকে দেখতে হবে!
.
তাহলে প্রথমেই দেখা যাক, কোরআন ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্মের ক্ষেত্রে কী বলছে!
.
وَٱلَّتِىٓ أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهَا مِن رُّوحِنَا وَجَعَلْنَٰهَا وَٱبْنَهَآ ءَايَةً لِّلْعَٰلَمِينَ
.
"স্মরণ কর সেই নারীর (অর্থাৎ মারইয়ামের) কথা যে তার সতীত্বকে সংরক্ষণ করেছিল। অতঃপর আমি তার ভিতর আমার রূহ ফুঁকে দিয়েছিলাম আর তাকে ও তার পুত্রকে বিশ্বজগতের জন্য নিদর্শন করেছিলাম।"[১]
.
এখানে নাস্তিক আর মুক্তমনারা হয়ত ভেবেছে যে, "আমার রূহ" বলতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজের অংশকে বুঝিয়েছেন। তাই পুরুষের শরীরের অংশ হিসেবে যেমন শুক্রাণু নারীর জরায়ুতে প্রবেশ করে, তেমনি আল্লাহর নিজের অংশই হয়ত মারইয়াম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শরীরে প্রবেশ করেছে! নাউযুবিল্লাহ!
.
তাদের এই সুপ্ত মুশরিকি চিন্তা থেকে বোঝা যায় যে, তারা আসলে নাস্তিকতার আড়ালে হিন্দুধর্মেরই অনুসরণ করে!
ভগবতগীতা থেকেই তাদের এহেন চিন্তাধারার সাদৃশ্য পাওয়া যায়:
.
"হে পান্ডব, এইভাবে তত্ত্বজ্ঞান লাভ করে তুমি আর মোহগ্রস্ত হবে না যখন জানবে, সমস্ত জীবই আমার বিভিন্ন অংশ এবং তারা সকলেই আমাতে অবস্থিত এবং তারা সকলেই আমার।"[২]
.
"হে ভারত, ব্রহ্ম এই জড় জগতের উৎপত্তির কারণ এবং **সেই ব্রহ্মে আমি গর্ভদান করি। ফলে সর্বভূতের সৃষ্টি হয়।**
হে কৌন্তেয়, সমস্ত যোনিতে যত মূর্তি প্রকাশিত হয় ব্রহ্মরূপ যোনিই তাদের জননী স্বরূপা এবং **আমি তাদের বীজ প্রদানকারী পিতা।"**[৩]
.
তাহলে এই ভণ্ড মুক্তমনাদের যদি হিন্দু দর্শন এতই ভালো লাগে, তাহলে নিজেদের নাস্তিক না বলে হিন্দু বলে পরিচয় দিলেই তো হয়! একদিকে নাস্তিকদেরও দলে থাকবে, আবার অন্যদিকে হিন্দুদেরও তোষামোদ করবে - এটাই আসলে এসকল নাস্তিকদের দুমুখো সাপবিশিষ্ট চরিত্র!!!
.
আব্দুল আলীম ইবনে কাওসার তাঁর "প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষা" গ্রন্থে লিখেছেন:
.
"..ইমামগণ একমত পোষণ করেছেন যে, মহান আল্লাহ যমীনে অবতরণ করেন না। যে ব্যক্তি এই আক্বীদা পোষণ করে যে, আল্লাহ তাঁর কোনো সৃষ্টির মধ্যে প্রবিষ্ট হন, সে ব্যক্তির কুফরীতে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারেও তাঁরা একমত পোষণ করেছেন..."[৪]
.
উল্লিখিত আল-কোরআন ২১:৯১ আয়াতের "আমার রূহ" অংশটি বুঝতে তাই আমরা আরও দুটি আয়াত দেখব।
.
وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَٰٓئِكَةِ إِنِّى خَٰلِقٌۢ بَشَرًا مِّن صَلْصَٰلٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ
فَإِذَا سَوَّيْتُهُۥ وَنَفَخْتُ فِيهِ مِن رُّوحِى فَقَعُوا۟ لَهُۥ سَٰجِدِينَ
.
"স্মরণ কর যখন তোমার প্রতিপালক ফেরেশতাদেরকে বলেছিলেন, ‘আমি কাল শুষ্ক ঠনঠনে মাটির কাদা থেকে মানুষ সৃষ্টি করছি।
আমি যখন তাকে পূর্ণ মাত্রায় বানিয়ে দেব আর তাতে আমার পক্ষ হতে রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার প্রতি সাজদায় পড়ে যেও।"[৫]
.
এখানে দেখা যাচ্ছে, আদম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মানুষ রূপে সৃষ্টির পূর্বেই ফেরেশতাদের আল্লাহ তাআলা আদম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে সিজদা করার নির্দেশ দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে ১৫:২৯ আয়াতের একটি জায়গায় বলা হচ্ছে, //আমি যখন তাকে পূর্ণ মাত্রায় বানিয়ে দেব আর তাতে আমার পক্ষ হতে রূহ ফুঁকে দেব// ; এখানে শব্দগুচ্ছ যেটি এই অনুবাদে ব্যবহার করা হয়েছে সেটি হল "আমার পক্ষ হতে রূহ"। এই বিষয়টিকে আরও পরিষ্কার করতে ১৫:২৯ আয়াতের আমরা আরও দুটি ইংরেজি অনুবাদ দেখব।
.
"And when I have proportioned him and breathed into him of **My [created] soul,** then fall down to him in prostration."
.
[Al-Quran, 15:29; Sahih International Translation]
.
.
"So, when I have fashioned him completely and breathed into him (Adam) **the soul which I created for him,** then fall (you) down prostrating yourselves unto him."
.
[Al-Quran, 15:29; Translated by Khan & Hilali]
.
.
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, প্রথম ইংরেজি অনুবাদ অর্থাৎ 'সহিহ ইন্টারন্যাশানাল'(Sahih International) এর অনুবাদে "My [created] soul" ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ হল "আমার (সৃষ্ট) রূহ"।
.
অন্যদিকে দ্বিতীয় ইংরেজি অনুবাদ অর্থাৎ 'খান এবং হিলালি'(Khan & Hilali) এর অনুবাদে ব্যবহার করা হয়েছে "the soul which I created for him", যার অর্থ হল "রূহ যা আমি তার জন্য সৃষ্টি করেছিলাম"।
.
অর্থাৎ এখানে আমরা মূলত বুঝাতে চাইছি যে, ইসলামিক আকিদায় রূহ আল্লাহর অংশ নয়। বরং রূহ, আল্লাহ এর নিজের অংশ থেকে পৃথক। কারণ ইসলামিক সহিহ আকিদায় রূহ হল আল্লাহর সৃষ্টি যা মহান আল্লাহর হুকুমে সৃষ্টি হয়েছে এবং কোনো সৃষ্টি আল্লাহর নিজের অংশ হতে পারে না।
.
وَيَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلرُّوحِۖ قُلِ ٱلرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّى وَمَآ أُوتِيتُم مِّنَ ٱلْعِلْمِ إِلَّا قَلِيلًا
.
"তোমাকে তারা রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বল, ‘রূহ হচ্ছে আমার প্রতিপালকের হুকুমের অন্তর্ভুক্ত (একটি হুকুম)। এ সম্পর্কে তোমাকে অতি সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে।’"[৬]
.
আল্লাহ তাআলা রূহ এবং যাবতীয় সকল কিছুর মূল উপাদান শূন্য হতে বা from nothing বা out of nothing থেকে সৃষ্টি করেছেন।
.
أَوَلَا يَذْكُرُ ٱلْإِنسَٰنُ أَنَّا خَلَقْنَٰهُ مِن قَبْلُ وَلَمْ يَكُ شَيْـًٔا
.
"মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি পূর্বে তাকে সৃষ্টি করেছি আর সে তখন কিছুই ছিল না।"[৭]
.
"But does not man call to mind that We created him before **out of nothing?"**[৮]
.
এই শূন্য বা out of nothing থেকে সমগ্র সৃষ্টির মূল উপাদান এর উদ্ভব ঘটানো এবং সেই মূল উপাদান থেকে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টিকে সুগঠিত কাঠামোয় রূপান্তরের জন্য আল্লাহ তাআলা কেবল নির্দেশ বা হুকুম প্রদান করেন, আর সেই হুকুমই ফলাফলে রূপান্তরিত হয়।
.
إِنَّ مَثَلَ عِيسَىٰ عِندَ ٱللَّهِ كَمَثَلِ ءَادَمَۖ خَلَقَهُۥ مِن تُرَابٍ ثُمَّ قَالَ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ
.
"আল্লাহর নিকট ঈসার অবস্থা আদামের অবস্থার মত, মাটি দ্বারা তাকে গঠন করে তাকে হুকুম করলেন, হয়ে যাও, ফলে সে হয়ে গেল।"[৯]
.
.
مَا كَانَ لِلَّهِ أَن يَتَّخِذَ مِن وَلَدٍۖ سُبْحَٰنَهُۥٓۚ إِذَا قَضَىٰٓ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ
.
"সন্তান গ্রহণ করা আল্লাহর কাজ নয়, তিনি পবিত্র, মহান; যখন তিনি কিছু করার সিদ্ধান্ত করেন তখন তার জন্য শুধু বলেন, ‘হয়ে যাও’, আর তা হয়ে যায়।"[১০]
.
তাফসিরে আহসানুল বয়ানে আল-কোরআন ১৯:৩৫ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে:
.
"যে আল্লাহর মহিমা ও ক্ষমতা এই, তার আবার সন্তানের প্রয়োজন কি? আর এমনিভাবে তার পক্ষে বিনা পিতায় সন্তান জন্ম দেওয়া কোন কঠিন কাজ নয়। সুতরাং যারা আল্লাহর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে ও ঈসার মু'জিযা স্বরূপ অলৌকিকভাবে জন্মের কথা অস্বীকার করে, তারা আসলে আল্লাহর শক্তি ও ক্ষমতাকে অস্বীকার করে।"[১১]
.
.
পরিশেষে তাই বলা যায়, পুরুষের শুক্রাণু হল পুরুষের শরীরের একটা অংশ। তাই পুরুষের শুক্রাণু নারীর দেহে প্রবেশ করায় বলা হয় যে, পুরুষ ও নারীর শারীরিক সম্পর্কে সন্তান উৎপন্ন হয়েছে।
কিন্তু আমরা দেখতেই পাচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর কোনো অংশকে রূপান্তরিত করে জগতের কোনো সৃষ্টির আবির্ভাব ঘটান নি। সুতরাং, আল্লাহ তাআলা এর সাথে মারইয়াম(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ভিন্ন স্তরের শারীরিক সম্পর্ক এর মাধ্যমে ঈসা(আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর জন্ম হয়েছে - এই দাবি পুরো বানোয়াট, মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন! বরং এটি মূলত হিন্দু দর্শনের তত্ত্ব যে, ঈশ্বর নিজের দেহের অংশকে রূপান্তরিত করে জগতের আবির্ভাব ঘটায়। অর্থাৎ সেই ঈশ্বরের একেবারে শূন্য থেকে বা out of nothing থেকে সৃষ্টি করার কোনো ক্ষমতা নেই। তাই বাংলার ভণ্ড নাস্তিক আর মুক্তমনাদের অনেকাংশই যে ছুপা হিন্দু, তা তাদের চিন্তাধারা থেকেই অনেকটা সুস্পষ্ট হয়ে যায়!
.
وَمَكَرُوا۟ وَمَكَرَ ٱللَّهُۖ وَٱللَّهُ خَيْرُ ٱلْمَٰكِرِينَ

"অতঃপর তারা ষড়যন্ত্র করল এবং আল্লাহও কৌশল প্রয়োগ করলেন। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্বোত্তম কৌশলী।"[১২]
.
.
আল্লাহই ভালো জানেন।
.
______________________
তথ্যসূত্র:
[১] আল-কোরআন, ২১:৯১;
বাংলা অনুবাদ - তাইসিরুল কুরআন
[২] ভগবতগীতা, ৪:৩৫
[৩] ভগবতগীতা, ১৪:৩-৪
[৪] গ্রন্থঃ প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষা/অধ্যায়ঃ তাওহীদ সম্পর্কে প্রশ্ন এবং উত্তর/লেখক: আব্দুল আলীম ইবনে কাওসার/উৎস - http://www.hadithbd.com/shareqa.php?qa=1489
[৫] আল-কোরআন, ১৫:২৮-২৯;
বাংলা অনুবাদ - তাইসিরুল কুরআন
[৬] আল-কোরআন, ১৭:৮৫;
বাংলা অনুবাদ - তাইসিরুল কুরআন
[৭] আল-কোরআন, ১৯:৬৭;
বাংলা অনুবাদ - তাইসিরুল কুরআন
[৮] Al-Quran, 19:67;
translated by Abdullah Yusuf Ali
[৯] আল-কোরআন, ৩:৫৯;
বাংলা অনুবাদ - তাইসিরুল কুরআন
[১০] আল-কোরআন, ১৯:৩৫;
বাংলা অনুবাদ - তাইসিরুল কুরআন
[১১] তাফসিরে আহসানুল বয়ান/আল-কোরআন ১৯:৩৫ আয়াতের ব্যাখ্যা হতে বিবৃত
[১২] আল-কোরআন, ৩:৫৪;
বাংলা অনুবাদ - তাফসিরে আহসানুল বয়ান
======================

Post a Comment

1 Comments