কুরআনে বৈপরীত্য নিয়ে কথিত অভিযোগের চমৎকার জবাব সমূহ (পার্ট ১)


🖋লিখেছেনঃ এম ডি আলী
__________________________________________________________________________________

ℹ️আজকের আলোচনা শুরু করার আগে ইসলাম বিদ্বেষী সমকামীরা ভূমিকাতেই যে জালিয়াতি করেছেন প্রথমে সেটি নিয়ে কিছু আলোকপাত করা যাক ।

❓অভিযোগঃ সুরা নিসা ৪:৮২ =  এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? এই কোরআন যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতে অবশ্যই বহু বৈপরীত্য দেখতে পেত।
শুরুতেই জানিয়ে রাখি, কোরআনের এই আয়াতগুলোতে (সুরা বাকারা ২:২১৯, সুরা বাকারা ২:২৪২, সুরা ইউনুস ১০:৩৭, সুরা হুদ ১১:১, সুরা নাহল ১৬:৮৯, সুরা বনী ইসরাইল ১৭:৪১, সুরা হজ ২২:১৬, সুরা নুর ২৪:১৮, সুরা নুর ২৪:৪৬, সুরা নামল ২৭:১, সুরা ফুসসিলাত ৪১:৩, সুরা জাসিয়া ৪৫:৬, সুরা কামার ৫৪:৩২, সুরা কামার ৫৪:৪০, সুরা কামার ৫৪:২২, সুরা কামার ৫৪:১৭) আল্লাহ বারবার জানিয়েছেন যে কুরআন একটি সুস্পষ্ট কিতাব, সহজ কিতাব, কুরআন বিস্তারিত বিশ্লেষণকারী, আপনি যদি সেটা না মানেন তাহলে আপনি এই পোস্ট নিয়ে কিছু বলার আগে আমি জানিয়ে রাখি প্রতিটা বৈপরীত্য তথা মাছ কোনো না কোনো ত্যানা বা শাক দিয়ে ঢাকা যাবে। আর একটি কথা তা হল, এখানে আলোচনা করা হয়েছে কোরআন নিয়ে, হাদিস নিয়ে নয়। তাদের সুবিধার্থে যারা সারাক্ষণ নিজেদের কোরআন অনলি মুমিন বলে দাবি করে। সুতরাং হাদিস অথবা তাফসীর দিয়ে কোন জবাব দেয়া যাবে না ।

🆗উত্তরঃ জনাব আপনি আসলে ইসলামের উসুলই ঠিক মত জানেন না । না জেনে কেন কথা বলছেন আপনি ? ইসলামে শুধুই কুরআন মানতে হবে বাকি হাদিস আর তাফসীরের কথা মানা যাবে না এই কথা ইসলামের আইনে কোথায় আছে, বলবেন কি ? আর মজার ব্যাপার হল আপনারা খগেন সমাজ নিজেরাও জানেন, আপনি কুরআনের যেই কথিত বৈপরীত্য অভিযোগ তুলেছেন সেগুলা সব আসলে বৈপরীত্য নয় বরং কুরআনে বিন্দুমাত্র কোন বৈপরীত্য নেই , তানা হলে আপনি কেন বলবেন যে হাদিস আর তাফসীর দিয়ে সব গুলার জবাব দেয়া সম্ভব আর আপনি শাঁক দিয়ে মাছ লুকানো বলতে তো তাই বুঝায়েছেন । কুরআন আসলেই স্পষ্ট এবং পরিস্কার । এখানে কোন বৈপরীত্য নাই , হ্যাঁ আমি ইচ্ছা করলে হাদিস এবং তাফসীর ছাড়া সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি কিন্তু দিব না কারন যদি দেই তাহলে এটি অন্যায় হবে কারন ইসলাম আমাকে কুরআন সুন্নাহ ও বিশুদ্ধ তাফসীর সবই মানতে বলে । আর ইসলাম বুঝতে হলে আপনাকে এসব মানতেই হবে । কুরআন দিয়ে প্রশ্ন করলে  হাদিস অথবা তাফসীর থেকে উত্তর দেয়া যাবে না এটি ইসলামের উসুলে কোথায় আছে ? কোথাও নেই । সুতরাং ইসলাম যা করতে বলেছে আমি কেন সেটা করবো না ।

আপনি কুরআনের সেই আয়াত সমূহ যেখানে বলা হয়েছে কুরআন স্পস্থ কিতাব এসব আয়াত দেখিয়ে প্রমান করতে চাইলেন হাদিস আর তাফসীর থেকে ব্যাখ্যা না করতে , কিন্তু কেন ? কুরআন স্পস্থ কিতাব , আবার এই কুরআন আপনাকে বলছে সুন্নাহ ও তাফসীর মানতে তাহলে আপনি কুরআনের এক আয়াত মেনে আরেক আয়াত কেন লুকালেন ? নাকি আপনি নিজেও জানেন যে আপনার কথিত বৈপরীত্য আসলে ভেলুলেস অর্থাৎ নাস্তিক্যধর্মের কোন সমকামীই কুরানের বৈপরীত্য বের করতে পারেনি ।

* সুরা নিসা ৪:৫৯ = হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।

* সুরা ইয়া-সীন ৩৬:২১ = অনুসরণ কর তাদের, যারা তোমাদের কাছে কোন বিনিময় কামনা করে না, অথচ তারা সুপথ প্রাপ্ত।

উপরের দুই আয়াতের ব্যাখ্যায় সহিহ হাদিস এবং তাফসীরে যাওয়ার আগেই আপনাদের আয়াতের দিকে খেয়াল দিতে বলব । দেখুন আয়াতে আল্লাহ কি বলেছেন তোমরা আল্লাহকে মানো মানে কুরআন , এরপরে বলেছেন নবীজি মানো, মানে নবীজি (সা)এর সুন্নাহ এরপরেই আবার বলেছেন তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদেরকেও মানো, এরমানে এমন লোকদের কথা আমাদের মানতে বলেছে যারা ইসলামকে সঠিকভাবে আমাদের পালন করতে বলে । সুতরাং আমরা উপরের দুই আয়াত হতে পেলাম কুরআন হাদিস মানার পাশা পাশি এমন জ্ঞানী লোকদের কথাও মানতে হবে যারা আমাদেরকে সঠিকভাবে ইসলাম পালনকরতে উৎসাহ দেয় । আর এ থেকেও আরেকটি জিনিস আমরা পরোক্ষভাবে জানতে পারলাম যে কুরআন হাদিসের পাশাপাশি আমাদেরকে এর সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ তাফসীর এগুলাও জানতে হবে তানাহলে আমরা ইসলামকে সঠিক ভাবে বুঝতে পারব না ।

অভিযোগদাতাকে আমি প্রশ্ন করতে চাই আপনি কি আমাকে এমন একটি আয়াত অথবা হাদিস দেখাতে পারবেন যেখানে বলা হয়েছে তোমরা বিশুদ্ধ হাদিস আর তাফসীর মানতে পারবে না শুধুই কুরআন মানো, অথবা নবীজি (সা) থেকে এমন একটি বিশুদ্ধ হাদিস আমাকে দেখাতে পারবেন যেখানে নবীজি (সা) নিজে বলেছেন যে তোমরা শুধুই কুরআন মানো, আর কিছুই মাইনো না ? রাসুলকে অনুসরন করো না ? কুরানের ব্যাখ্যা উসুল মেনো না ?  কুরানকে ভুল ভাবে বুঝো ? ইসলামের বিশুদ্ধ তথ্য দিয়ে একল প্রশ্নের উত্তর দিন তো দাদা ।

অভিযোগদাতা নিজের মিথ্যাচারে ধরা খাবেন তাই আমাদেরকে শর্ত দিয়েছেন শুধু কুরআন থেকে সব জবাব দিতে হবে মজার ব্যাপার হল অভিযোগদাতা হয়ত এই হাদিস সমূহ চোখে দেখতে পারেননি । কিন্তু আমি সেটি লিক করে দিলাম । আসুন পড়িঃ

*  ihadis.com,  সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ৩৬৬০, সহিহ হাদিসঃ যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আমার নিকট হতে হাদীস শুনে তা মুখস্থ রাখলো এবং অন্যের নিকটও তা পৌছে দিলো, আল্লাহ তাকে চিরউজ্জ্বল করে রাখবেন। জ্ঞানের অনেক বাহক তার চেয়ে অধিক সমঝদার লোকের নিকট তা বহন করে নিয়ে যায়; যদিও জ্ঞানের বহু বাহক নিজেরা জ্ঞানী নয়।

* ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১২, সহিহ হাদিসঃরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অচিরেই কোন ব্যক্তি তার আসনে হেলান দেয়া অবস্থায় বসে থাকবে এবং তার সামনে আমার হাদীস থেকে বর্ণনা করা হবে, তখন সে বলবে, আমাদের ও তোমাদের মাঝে মহামহিম আল্লাহ্‌র কিতাবই যথেষ্ট। আমরা তাতে যা হালাল পাব তাকেই হালাল মানবো এবং তাতে যা হারাম পাবো তাকেই হারাম মানবো। (মহানবী বলেন) সাবধান! নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ্‌ যা হারাম করেছেন তার অনুরূপ।

এই হাদিস থেকে পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে যে অনেকেই আছেন যারা বলেন আমরা কুরআন মানি হাদিস মানি না তাদের জন্য নবীজি (সা)এর উপরের হাদিসই এনাফ । এখানে একটি বুঝার বিষয় হল নবীজি (সা) আল্লাহর কথা অনুযায়ী চলেন তিনি নিজ থেকে কিছুই বলেন না । সুতরাং হাদিসেও তাই নবীজি এই কথাই বলেছেন যে নবী যা হারাম করেছেন সেটি আল্লাহ যা হারাম করেছেন তার অনুরুপ । এরপরের হাদিস তো মুখস্ত করার ব্যাপারে নবীজি আদেশই দিয়েছেন ।

* দেখুন "ihadis.com", হাদিসের বিখ্যাত বই যেমন বুখারি, মুসলিম , জামে আত তিরমিজি,ইত্যাদি বড় বড় হাদিসের কিতাবে "তাফসীর" নামে একটি অধ্যায় আছে যেখানে নবীজি (সা) সহ তাঁর সাথীরা কুরআনের তাফসীর করেছেন । যদি তাফসীর মানা ইসলামে নিষেধ হত তাহলে তাঁরা কেন তাফসীর করলেন ? উত্তর দিন জনাব পণ্ডিত মাতুদা খগেন মশাই ।

প্রশ্নকর্তার যে ইসলাম সম্পর্কে কোন পড়াশোনা নেই সেটি এতক্ষনে আপনারা বুঝেই গিয়েছেন । এখন আসুন আমরা বিদ্বেষীদের হালকা অভিযোগের কঠিন উত্তর দিব আশা করি সত্যবাদীদের জন্য এটি উপলব্ধি করতে সুবিধা হবে যে কুরআনে বিন্দুমাত্র কোন বৈপরীত্য নেই ।

❓১/  সবকিছু কখন নির্ধারিত হয়? এক আয়াতে বলা হচ্ছে কদরের রাতে আরেক আয়াতে বলা হচ্ছে সৃষ্টির পূর্বেই ?
ক্বদরের রাতেঃ সুরা দুখান ৪৪:৪-৫ = এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী।
সৃষ্টির পূর্বেইঃ সুরা হাদিদ ৫৭:২২ = পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।

🆗উত্তরঃ প্রথম আয়াতে খেয়াল করুন । সেখানে বলা হচ্ছে এই রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থির হয় আল্লাহর আদেশে, আল্লাহই প্রেরন করেন সেই আদেশ  । অন্য আয়াতে বলা হচ্ছে সৃষ্টির আগেই সব আল্লাহ লিখে রেখেছেন অর্থাৎ তাকদির । এখানে আসলে কোন বৈপরীত্য হচ্ছে না কেননা আল্লাহ আগেই তাকদির লিখে রেখেছেন আর সেটি ফেরেশতাদের কাছে প্রেরন করেন শবে কদরের রাতে । যেমন ধরুন আমি আগেই খাবার তৈরি করে রেখেছি কিন্তু সেটি তোমাকে দিলাম রবিবারে অনেকতা এরকম । এখানে আসলে কোন বৈপরীত্য নেই ।

তাফসীরে আহসানুল বয়ান, পৃষ্ঠাঃ ৮৬৫ , সুরা দুখান ৪৪:৪ , ৫ আয়াতের বলা হয়েছে সাহাবা ও তাবেঈন থেকে এর ব্যাখ্যায় বর্ণিত হয়েছে যে , এই রাতে আগামী বছরের জীবন, মরন ও জীবিকার উপায় উপকরন ফয়সালা লউহে মাহফুজ থেকে অবতীর্ণ করে ফেরেশতাদেরকে সোপর্দ করা হয় ।

সুতরাং আল্লাহ সব কিছু আগেই নিরধারন করে রেখেছেন কথা সত্য কিন্তু সেগুলা সেসব কদরের রাতে ফেরেশতাদের দিয়ে দেন এটাই বুঝানো হয়েছে আর এখানে কোন বৈপরীত্য হচ্ছে না ।

❓২/ মানুষ কি অন্যের পাপের বোঝা বহন করবে? এক আয়াতে বলা হচ্ছে হ্যাঁ আরেক আয়াতে বলা হচ্ছে না ?
হ্যাঁ: সুরা আনকাবুত ২৯:১৩ = তারা নিজেদের পাপভার এবং তার সাথে আরও কিছু পাপভার বহন করবে। অবশ্য তারা যে সব মিথ্যা কথা উদ্ভাবন করে, সে সম্পর্কে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হবে।  এবং সুরা নাহল ১৬:২৫ = ফলে কিয়ামতের দিন তারা নিজেদের বোঝাও পুরোপুরি বহন করবে এবং এমনসব লোকদের বোঝার একটি অংশও বহন করবে যাদেরকে তারা জ্ঞান ছাড়াই গোমরাহ করে, খুবই নিকৃষ্ট বোঝা যা তারা বহন করে।
না: সুরা আনআম ৬:১৬৪ = যে ব্যক্তি কোন গোনাহ করে, তা তারই দায়িত্বে থাকে। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। অতঃপর তোমাদেরকে সবাইকে প্রতিপালকের কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অনন্তর তিনি তোমাদেরকে বলে দিবেন, যেসব বিষয়ে তোমরা বিরোধ করতে।

🆗উত্তরঃ বাহ্যিক আয়াত সামনে রেখেই উত্তর দিয়ে এরপরে ব্যাখ্যায় প্রবেশ করব । সুরা আনকাবুত ২৯:১৩ এবং সুরা নাহল ১৬:২৫ আয়াতে বলা হচ্ছে এমন লোকদের কথা যারা নিজেরা তো খারাপ কাজ করতই পাশাপাশি অন্যদের খারাপ কাজের উৎসাহ দিত এতে তারা তো নিজেদের পাপের বঝা বহন করবে এবং অন্যকে খারাপ কাজে উৎসাহ দেয়ার জন্য এর একটি পাপের অংশও তারা বহন করবে এবং অন্যদিকে সুরা আনআম ৬:১৬৪ আয়াত এমন লোকের কথা বলা হচ্ছে যে নিজে পাপ করছে এবং সে এর জন্য নিজেই দায়ী । এখানে মোটেও বৈপরীত্য হচ্ছে না ।

যেমন, একজন মানুষ নিজে বিড়ি খায় এবং অন্যদেরকে সেও বিড়ি খেওয়ার অভ্যাস গড়ায় সাহায্য করেছে । এখানে কিন্তু সে নিজেও অপরাধী পাশাপাশি অন্যকে এই খারাপ অভ্যাসে জড়ানোর জন্য এর একভাগ বেশি শাস্তি সেও পাবে কারন সেই এর হতা । এবং অন্যদিকে এক মানুষ নিজে পাপ কাজ করেছে কিন্তু অন্য কাউকে বলে নি এই ক্ষেত্রে তার এই পাপের ভার কেউই নিবে না , তাকে নিজেরেই নিতে হবে । সুতরাং এখানে কোন বৈপরীত্য হচ্ছে না বরং নাস্তিক সমকামীরা আয়াত আমাদেরকে ভুলভাবে দেখিয়েছে - যা অন্যায়  ।

* ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিস ৬৬৯৭ , সহিহ হাদিসঃ রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে লোক সঠিক পথের দিকে ডাকে তার জন্য সে পথের অনুসারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান রয়েছে। এতে তাদের প্রতিদান হতে সামান্য ঘাটতি হবে না। আর যে লোক বিভ্রান্তির দিকে ডাকে তার উপর সে রাস্তার অনুসারীদের পাপের অনুরূপ পাপ বর্তাবে। এতে তাদের পাপরাশি সামান্য হালকা হবে না।

* ihadis.com, সুনানে আন নাসায়ী , হাদিসঃ ৩৯৮৫ , সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ অন্যায়ভাবে যে ব্যক্তিকেই হত্যাই করা হোক না কেন, তার রক্তের একাংশ আদম (আঃ) -এর প্রথম পুত্র কাবিলের উপর বর্তায়। কেননা সে-ই সর্বপ্রথম তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে রক্তপাতের রীতি প্রবর্তন করেছে।

আরও মজার কথা হল এই প্রশ্নের চমৎকার জবাব তাফসীরে ইবনে কাসীর, ১৩ খণ্ড , ৩২৫ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করা হয়েছে, বলা হয়েছেঃ সুরা আনকাবুত ২৯:২৩ এবং সুরা নাহল ১৬:২৫ - এই দুই বিষয় কোন বৈপরীত্য মনে করা ঠিক না । কারন যারা অপরকে পথভ্রষ্ট করে, তাদেরকে পথভ্রষ্ট করার পাপ বহন করতে হবে , এটা নয় যে যাদেরকে পথভ্রষ্ট করা হয়েছে তাদের পাপ হালকা করে তাদের বোঝা এদের উপর চাপিয়ে দেয়া হবে । আমাদের ন্যায় বিচারক আল্লাহ এইরুপ করতেই পারেন না ।

সুতরাং আপনি নিজে অপরাধ করলে তো তার শাস্তি বহন করবেনই সাথে অন্যদেরকে উস্কানি দেয়ার মূল হতা যদি আপনি হন এতেও অতিরিক্ত বোনাস শাস্তির বোঝা বহন আপনি করবেন কিন্তু যদি শুধু নিজে পাপ করেন আর কাউকে করতে বলেন নাই তাইলে আপনি শুধু নিজেই নিজের আকামের বোঝা বহন করবেন । এখানে বিন্দুমাত্র বৈপরীত্য হচ্ছে না ।

❓৩/ আল্লাহ কতটি সুরা রচনার চেলেঞ্জ করেছেন ? একটি দশটি বা পুরা কিতাব,  এরকম বৈপরীত্য কেন ?
* সুরা বাকারা ২:২৩ = এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো।
* সুরা ইউনুস ১০:৩৮ = মানুষ কি বলে যে, এটি বানিয়ে এনেছ? বলে দাও, তোমরা নিয়ে এসো একটিই সূরা, আর ডেকে নাও, যাদেরকে নিতে সক্ষম হও আল্লাহ ব্যতীত, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক।
* সুরা হুদ ১১:১৩ = তারা কি বলে? কোরআন তুমি তৈরী করেছ? তুমি বল, তবে তোমরাও অনুরূপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে নাও, যদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে।
* সুরা কাসাস ২৮:৪৯ = বলুন, তোমরা সত্যবাদী হলে এখন আল্লাহর কাছ থেকে কোন কিতাব আন, যা এতদুভয় থেকে উত্তম পথপ্রদর্শক হয়। আমি সেই কিতাব অনুসরণ করব।

🆗উত্তরঃ খুবই হাস্যকর একটি বৈপরীত্য যা টস লাইট দিয়ে বেচারা গুগল মামার থেকে ধার করেছে । আমার উত্তর দিতেও লজ্জা লাগছে যে এত লেইম মার্কা অভিযোগ কেউ করে । ধরুন আপনি খুব শক্তিশালী একজন মানুষ । এখন দুর্বল কিছু বালক এসে আপনার সাথে বাহাদুরি দেখাচ্ছে । আপনি তাদেরকে বললেন যদি পারো তাহলে ১০০ কেজি উঠিয়ে দেখাও । তারা পারল না । আপনি আবার বলেন যদি এটি না পারো তাহলে  ৫০ কেজি উঠিয়ে দেখাও । তারা এরপরেও পারল না । আপনি তাদেরকে আবার বললেন আচ্ছা তাহলে এবার ১০ কেজি উঠাও , এরপরেও তারা পারল না । তাহলে ৫ কেজি উঠাও, তাও পারল না ।  এখন কোন মূর্খ এসে যদি বলে এখানে ১০ কেজি নাকি ১০০ কেজি , ৫ কেজি উঠাতে কেন বলা হল এটি তো বৈপরীত্য ? এই প্রশ্নটি যেরকম শিশুসুলভ ও হাস্যকর ঠিক একইইভাবে কুরআনের বৈপরীত্য খুজে বের করা মহা...কলা বিজ্ঞানী খগেনদের অবস্থাও একই রকম হাস্যকর ।

কেননা কুরআনে প্রথমে কুরআনের মত সুরার মত একটি সুরা নিয়ে আসার চেলেঞ্জ জানানো হয়েছে, বিদ্বেষীরা পারে নাই , এরপরে সহজ করার জন্য মাত্র একটি সুরা লিখে আনার জন্য বলেছে তাও পারে নাই এরপরে কুরআনের ছোট একটি সুরার মত সুরা লিখে আনার জন্য বলেছে তাও পারে নাই , পরিশেষে কুরআনের বিধান যে সেরা সেটা প্রমান করার জন্য আল্লাহ চেলেঞ্জ দিয়েছেন পারলে এর থেকে ভাল কোন বিধান এনে দেখাও । এখন পর্যন্ত কেউ পারে নাই । ধরুন আপনার শিক্ষক আপনাকে বলল আজকে ১০ টি অংক করে আনবা আপনি পারেননি, এরপরে বলল আচ্ছা ৫ টি অংক করে আনবা , আপনি তাও পারেননি এরপরে বলল আচ্চা ১ অংক করে আনবা .....আপনি তাও পারলেন না -- এখানে শিক্ষকের কথায় কিভাবে বৈপরীত্য হয় সেটি যুক্তিবাদীদের কাছে বোধগম্য নয়। আর পরিশেষে কথা হল এখানে মোটেও বৈপরীত্য নেই বরং খগেনদের ব্রেনে কেমিক্যাল গেস্তিক প্রবেশ করেছে বিধায় এই সহজ বিষয় তারা বুঝতে পারে নি এর জন্য আমরা দুক্ষিত এবং মর্মাহত ।

❓৪/ সমগ্র কুরআন এক সাথে নাজিল হয়েছে ? এক আয়াতে বলা হচ্ছে হ্যাঁ, আরেক আয়াতে বলা হচ্ছে না , এরকম কেন ?
হ্যাঁ: সুরা দুখান ৪৪:৩ = আমি একে নাযিল করেছি। এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এবং সুরা কদর ৯৭:১ = আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।
নাঃ সুরা ইনসান ৭৬:২৩ = আমি আপনার প্রতি পর্যায়ক্রমে কোরআন নাযিল করেছি। এবং সুরা ফুরকান ২৫:৩২ = সত্য প্রত্যাখানকারীরা বলে, তাঁর প্রতি সমগ্র কোরআন একদফায় অবতীর্ণ হল না কেন? আমি এমনিভাবে অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করেছি আপনার অন্তকরণকে মজবুত করার জন্যে।

🆗উত্তরঃ পাঠক উপরের আয়াত সমূহ মনোযোগ দিয়ে পাঠ করুন । নিজেরাই উত্তর পেয়ে যাবেন । যে আয়াতে বলা হচ্ছে "কুরআন নাজিল করা হয়েছে বরকতময় রাতে" আবার "আরেক আয়াতে বলা হচ্ছে আল্লাহ পর্যায়ক্রমে নাজিল করেছেন"  দুইটি আয়াতকে সামনে রাখলে জবাব পরিস্কার হয় । আল্লাহ যদি শবে কদরের রাতে সম্পূর্ণ কুরআন নাজিলই করে থাকেন তাহলে কেন তিনি আবার সেগুলা পর্যায়ক্রমে নাজিল করেছেন ? এর সহজ উত্তর হল আল্লাহ মুলত শবে কদরের রাতে কুরআন নাজিল করা শুরু করেছেন এবং এভাবেই ধিরে ধিরে নবীজি (সা)এর কাছে পর্যায়ক্রমে নাজিল করেছেন । এখানে মোটেও বৈপরীত্য হল না বরং খগেনদের জালিয়াতি প্রকাশ পেল । কারনঃ

তাফসীরে কুরতুবি এ ছাড়া তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ , সুরা দুখান ৪৪:৩ আয়াতের ব্যাখ্যায় সেটাই বলা হচ্ছে যে, কুরআন শবে কদরে নাজিল হওয়ার অর্থ এই যে লওহে মাহফুজ থেকে সমগ্র কুরআন দুনিয়ার আকাশে এ রাতেই নাজিল হয়েছে । অতপর নবুওয়াতের তেইশ বছরে প্রয়োজনানুপাতে খণ্ড খণ্ড করে রাসুল (সা)এর প্রতি নাজিল করা হয় । কেউ বলেছেন প্রতি বছর যতটুকু কুরআন নাজিল হওয়ার প্রয়োজন ছিল , ততটুকুই শবে কদরে দুনিয়ার আকাশে নাজিল হয়েছে ।

তাফসীরে ফি যিলালিল কুরআন, ১৮ খণ্ড , ২৪৮ পৃষ্ঠাঃ সুরা দুখান ৪৪:৩ ব্যাখ্যা = যে পবিত্র কল্যাণময় রাতে কুরআন নাজিল হয়েছে, সেটা কোনটা ? এ সম্পর্কে নিগূঢ়তম সত্য ও নির্ভুলতম তথ্য একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন । তবে আমরা এতটুকু নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে এটা রমজানের কোন এক রাত যখন কুরআন নাজিল হওয়ার সূচনা হয়েছে । কেননা কুরআনে বলা হয়েছে রমজান মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে । এ কথা সুবিদিত যে সেই রাতে সম্পূর্ণ কুরআন নাজিল হয়নি । তবে এই রাতে পৃথিবীর সাথে এর যোগাযোগ শুরু হয়েছে । "কল্যাণময় রাতে কুরআন নাজিল হয়েছে" এ উক্তির তাফসীর প্রসঙ্গে এতটুকুই যথেষ্ট ।

ইঃফা, তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ৩ খণ্ড , ২৮৭,২৮৮ পৃষ্ঠা, সুরা দুখান ৪৪:৩ ব্যাখ্যাঃ আমি তা অবতীর্ণ করেছি অর্থাৎ জিবরাইলকে প্রেরন করেছি কুরআনসহ । এ বিষয়টি শপথ করে বলা হয়েছে । আল্লাহ জিবরাইল (আ)কে দুনিয়ার আকাশে প্রেরন করেছিলেন । এরপরে জিবরাইল (আ) লেখক ফেরেশতাদের তা পড়ে শোনান । এ লেখকগন দুনিয়ার আকাশের অধিবাসী এক মুবারক রজনীতে রহমত, ক্ষমা ও বরকতের রাত্রিতে, সেটি হল লাইলাতুল কদর ।তারপর আল্লাহ জিবরাইলকে প্রয়োজন মুতাবিক আয়াত ও সুরা নিয়ে মোহাম্মদ (সা)এর নিকট প্রেরন করেন ।

তাফসীরে জালালাইন, খণ্ড ৫ ,  ৮৬০ পৃষ্ঠাঃ কুরআন শবে কদরে নাজিল হয়েছে এর অর্থ এই যে লওহে মাহফুজ থেকে সমগ্র কুরআন এই দুনিয়ার আকাশে এ রাত্রিতেই নাজিল করা হয়েছে এবং তারপরে পর্যায়ক্রমে মোহাম্মদ (সা)এর কাছে নাজিল করা হয় ।

তাফসীরের এই বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা সমূহ আপনাদের যেন আমি দেখাতে না পারি এর জন্যই প্রশ্নকর্তা প্রথমেই আমাকে হাদিস এবং তাফসীরের ব্যাখ্যা না দেওয়ার পরোক্ষভাবে অনুরধ করেছিলেন কিন্তু আমি তাদের এসব ডাহা মিত্থাচারে কখনো সমর্থন দিব না ইনশা আল্লাহ । আর পরিশেষে পরিস্কার হল যে কুরআন এক রাতেই দুনিয়াতে সমগ্র নাজিল হয়নি বরং নবী (সা)এর কাছে প্রয়োজন অনুপাতেই নাজিল করা হয়েছে তাই এখানে বৈপরীত্যর অস্তিত্ব নাই ।

❓৫/ সৃষ্টির সময়ে আল্লাহ আকাশ ও জমিন একত্রিত নাকি পৃথক করেছেন? কোথাও একত্রিত আবার কোথায় পৃথক করেছেন এরকম কেন ?
একত্রিতঃ সুরা ফুসসিলাত ৪১:১১ = অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম।
পৃথকঃ সুরা আম্বিয়া ২১:৩০ = কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?

🆗উত্তরঃ খেয়াল করুন, সুরা আম্বিয়ার ২১:৩০ আয়াতেই তো বলা হচ্ছে যে আকাশ ও পৃথিবী মিশে ছিল পরে আল্লাহ তাদেরকে পৃথক বা আলাদা করে দিলেন । এখানে বিন্দুমাত্র বৈপরীত্য হচ্ছে না । উদাহরণ, চায়ের সাথে চা পাতি ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল পরে আমি ছাকনি দিয়ে দুটিকে আলাদা করে দিলাম । এখানে তো বৈপরীত্য হল না । ঠিক একইভাবে আসমান ও পৃথিবী একত্রে মিশে ছিল পরে আল্লাহ এদেরকে আলাদা করলেন অথবা পৃথক করলেন । ব্যাস । হ্যাঁ , কোন শিশু যদি প্রশ্ন করে চা আর চা পাতি কোথাও এক সাথে আবার কোথাও আলাদা বলা হচ্ছে কেন ? এর উত্তরে আমি বলবো তুমি এখনো কথা বলাই শিখনি তাই এসব সহজ সাধারন বিষয় তুমি বুঝবে না বাবু । চিন্তাশীল পাঠক আপনারাই বিবেচনা করুন কেউ যদি খাতা আর কলম এক সাথে রাখে এবং পরে আলাদা করে দেয় এটি কিভাবে পরস্পর বৈপরীত্য হয়? এইবার বুঝেছেন কেন আমি মাতুদাকে বাবু বললাম ।

❓৬/ আল্লাহ কি নবী রাসুলদের মধ্যে তারতম্য করেন? কোথাও হ্যাঁ আবার কোথাও না বলা হচ্ছে কেন?
হ্যাঁ: সুরা বনী ইসরাইল ১৭:৫৫ = আমি তো কতক নবীরাসুলকে কতক নবীরাসুলদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি এবং দাউদকে যবুর দান করেছি।
না: সুরা নিসা ৩:৮৪ =  বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত।

🆗উত্তরঃ প্রথম অংশে, আল্লাহ এক নবীর থেকে অন্য নবীকে মর্যাদা দিয়েছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই । এখানে আল্লাহ নবীদের মর্যাদার তফাৎ নিয়ে কথা বলেছেন । কিছু কিছু নবীর মর্যাদা কিছু কিছু নবীদের থেকে বেশি । যেমন আল্লাহ আদম (আ) কে নিজ হাতে সৃষ্টি করে মর্যাদা দিয়েছেন যা অন্য কোন নবীর নেই, নুহ (আ) কে প্রথম রাসুল হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন যা অন্য কোন নবীর নেই , ইবরাহিম (আ)কে খলীল বা অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসেবে গ্রহন করে মর্যাদা দিয়েছেন যা অন্য নবীদের নেই, মুসা (আ)এর সাথে সরাসরি কথা বলে কালিমুল্লাহর মর্যাদা দিয়েছেন যা অন্য কেউর নেই, আমাদের নবী (সা) কে শেষ নবী হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন যা অন্য নবীদের থেকে আলাদা । এই বিষয়টি আল্লাহ আরেক আয়াতে পরিস্কার করেছেন যেমনঃ সুরা বাকারা ২:২৫৩ = এ সকল রাসুল যাদের কারো উপর আমি কাউকে মর্যাদা দান করেছি, তাঁদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কারো মর্যাদাকে সমুন্নত করেছেন ।

 পরের আয়াতে খগেনরা একটি মিথ্যাচার করেছে সেটি হল সুরা নিসা ৩:৮৪ বলা হচ্ছে যে "আমরা তাঁদের কারো মধ্যে কোন পার্থক্য করি না" আসলে আয়াতের প্রথম লাইন খেয়াল করুন সেখানে বলা হচ্ছে বলুন আমরা ইমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং বাকি নবীদের উপর এরপরেই বলা হচ্ছে আমরা তাঁদের উপর কোন পার্থক্য করি না অর্থাৎ মানুষ যে তাঁদের উপর ইমান এনেছে আর এই ইমানের উপরে আমরা কোন পার্থক্য করি না । সুতরাং এখানে বৈপরীত্য হচ্ছে না ।

তাফসীরে ফতহুল মাজিদ, সুরা আল ইমরান ৩:৮৪ আয়াতের ব্যাখ্যাঃ এই আয়াতে আল্লাহ রাসুল (সা) থেকে স্বীকৃতি নিচ্ছেন যে বল আমি আল্লাহর প্রতি ইমান আনলাম এবং আমার প্রতি ও পূর্ববতী সকল নবীর প্রতি যা নাজিল করা হয়েছে তার প্রতি ইমান আনলাম এবং এ ইমানে কোন পার্থক্য করিনি । অতএব সকল নবী ও তাঁদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাবের উপর কোন পার্থক্য ছাড়াই ইমান আনতে হবে ।
ই,ফাঃ তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ১ খণ্ড , ১৭৪ পৃষ্ঠাঃ সুরা আল ইমরান ৩:৮৪ ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে আল্লাহর সমস্ত নবী রাসুলদের উপর আমরা ইমান আনি এবং তাঁদের মধ্যে কোন তারতম্য করি না অর্থাৎ অস্বীকার করি না ।

তাফসীরে জালালাইন, ১ খণ্ড, ৬৬৯ পৃষ্ঠাঃ এখানে খুবই সুন্দর করে আয়াতের ব্যাখ্যা করা হয়েছে , এখানে সুরা আল ইমরান ৩:৮৪ একই কথা বলা হয়েছে যে আল্লাহ আমাদেরকে বলতে বলছেন যে আমরা সমস্ত নবীদের উপর যেন ইমান আনি এবং এক নবীকে মেনে আরেক নবীকে অস্বীকার করে তারতম্য করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন । 

উদাহরণঃ শিক্ষক বলছেন তোমাদের ক্লাসে যারা ছাত্র আছেন তাঁদের একজনের উপর আরেকজনের মর্যাদা আছে । কারন কেউ অনেক ভাল ফলাফল করেছে আবার কেউ কম ভাল ফলাফল করেছে আবার কেউ এরথেকে নিচু মানের ফলাফল এনেছে । কিন্তু তোমাদেরকে একটি কথা মানতে হবে যে তারা সকলেই ছাত্র আর এই বিষয় তোমরা কোন পার্থক্য করো না ।

উপরের তাফসীরের বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা আর সহজ উদাহরণ বুঝে থাকলে কুরআনে যে বৈপরীত্য নেই এটাই স্পষ্ট হচ্ছে ।

❓৭/ কাফের মুশরিক নারীদের ইমান না আনলে বিয়ে করা যাবে? কোথায় হ্যাঁ আবার কোথায় না বলা হচ্ছে কেন ?
হ্যাঁ: সুরা মায়দা ৫:৫ = আজ তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করা হল। আহলে কিতাবদের খাদ্য তোমাদের জন্যে হালাল এবং তোমাদের খাদ্য তাদের জন্য হালাল। তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়। যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে, তার শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
না: সুরা বাকারা ২:২২১ = আর তোমরা মুশরেক নারীদেরকে বিয়ে করোনা, যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করে। অবশ্য মুসলমান ক্রীতদাসী মুশরেক নারী অপেক্ষা উত্তম, যদিও তাদেরকে তোমাদের কাছে ভালো লাগে। এবং তোমরা (নারীরা) কোন মুশরেকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ো না, যে পর্যন্ত সে ঈমান না আনে। একজন মুসলমান ক্রীতদাসও একজন মুশরেকের তুলনায় অনেক ভাল, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর আল্লাহ নিজের হুকুমের মাধ্যমে আহ্বান করেন জান্নাত ও ক্ষমার দিকে। আর তিনি মানুষকে নিজের নির্দেশ বাতলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।

🆗উত্তরঃ সেই আহলে কিতাবদের আল্লাহ বিয়ে করা জায়েজ করেছেন যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে আমাদের আগে যেমন তাওরাত , ইঞ্জিল এসব কিতাবের সঠিক অনুসারী যদি কেউ থাকে তাহলে তাকে বিয়ে করা জায়েজ । কিন্তু সে যদি আহলে কিতাব না হয় তাহলে তাকে বিয়ে করা জায়েজ হবে না ।  আর এখানে বৈপরীত্য নেই বরং কি শর্তে অমুসলিম নারীদের বিয়ে করা যাবে আর যাবে না সেটাই বলা হচ্ছে ।

আর আয়াতে একটি সাবধানতার কথা আল্লাহ বলেছেন তা হল যে ব্যাক্তি বিশ্বাসের বিষয় অবিশ্বাস করে তার শ্রম বিফলে যাবে এবং আখিরাতে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে , তাহলে কেন আল্লাহ আহলে কিতাবদের বিয়ে করা জায়েজ করেছেন ? এর উত্তর হল অনেক সময় স্বামীর দাওয়াতে স্ত্রী ইসলাম গ্রহন করে এমনও হয় তাই এই দিকে লক্ষ্য করে তাদেরকে বিয়ে করা জায়েজ কিন্তু যদি এর বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যে আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে বিয়ে করে নিজেই পথভ্রষ্ট হন তাহলে তাকে বিয়ে করাই জায়েজ হবে না । আহলে কিতাব অমুসলিম বিয়ে করার ফলে যদি ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে তাহলে বিয়ে না করাই ভাল । কেননা অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেছেন সুরা বাকারা ২:১৯৫ = তোমরা তোমাদের জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেও না ।

তাফসীরে জালালাইন, ২ খণ্ড , ৭১ পৃষ্ঠাঃ আহলে কিতাব শব্দটি যুক্ত হওয়ায় আহলে কিতাব নয়, এমন অমুসলিম মহিলাকে সর্বসম্মতিতেক্রমে বিবাহ করা হারাম প্রমানিত হল ।

উদাহরনঃ উগ্র অমুসলিমদের সাথে চলাফেরা করবে না যতক্ষণনা তারা ভদ্র হয় । আর এমন অমুসলিমদের সাথে চলতে পারবে যে উগ্র না এবং যার চরিত্র ভাল । এখানে বৈপরীত্য নেই কারন কি টাইপের অমসুলিমদের সাথে চলা যাবে আর যাবে না সেটাই বলা হচ্ছে ।  ঠিক একইভাবে আল্লাহ এমন অমুসলিম নারীদের বিয়ে করতে নিষেধ করেছেন যারা আহলে কিতাব নয় আর এমন অমুসলিম নারী বিয়ে করা জায়েজ যারা আহলে কিতাব । আরো সহজে বলি, যখন পরিক্ষা দেয়ার সময় তখন পরিক্ষা দিবেন , যখন পরিক্ষা নেই তখন দিবেন না ব্যাস । সুতরাং এখানে বৈপরীত্য নেই ।

❓৮/ আল্লাহ মানুষকে কেমন রূপে সৃষ্টি করেছেন? কোথাও সুন্দর আবার কোথাও দুর্বল করে এরকম বৈপরীত্য কেন ?
উত্তম সুন্দরতমঃ সুরা ত্বীন ৯৫:৪ = আমি সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে।  এবং সুরা সাজদাহ ৩২:৭ = যিনি তার প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছেন উত্তম রূপে এবং কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন।
দুর্বলতমঃ সুরা নিসা ৪:২৮ = মানুষ তো সৃষ্টি হয়েছে দুর্বল চিত্ত রূপে। এবং সুরা মারিজ ৭০:১৯ = আল্লাহ তোমাদের ভার লঘু করতে চান, কারণ মানুষকে দুর্বলরূপে সৃষ্টি করা হয়েছে।

🆗উত্তরঃ খগেনদের প্রশ্নের করুন অবস্থা দেখে আমার হাঁসি পায় । যাই হোক তারপরেও শিশুরা প্রশ্ন করলে সেটার উত্তর দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি । একটি উদাহরণ দেই তাহলেই উপরের আয়াতের মর্ম বুঝে আসবে ।

ধরুন আমি একটি রোবট তৈরি করলাম এবং বললাম আমি রোবট করে করেছি অনেক সুন্দর করে, স্টিল দিয়ে কিন্তু এটি যতই সুন্দর হোক না কেন এটি দুর্বল কারন রোবট মানুষের থেকে বেশি বুদ্ধিমান কখনোই হতে পারবে না ।

ঠিক একইভাবে আল্লাহ মানুষকে সুন্দর গঠনে সৃষ্টি করেছেন কিন্তু সুন্দর হলেও মানুষ দুর্বল কেননা একটি হাতি থেকে মানুষ অনেক দুর্বল আবার একটি সিংহ থেকেও মানুষ দুর্বল কিন্তু হাতি আর সিংহর দেহের গঠন থেকে মানুষের দেহের গঠন সুন্দর । এটি আমরা বাস্তবেই বুঝতে পারি, নিজ চোখে দেখেই কিন্তু এই সাধারন বিষয়টি বুঝা যায় কিন্তু যাদের চোখ থেকেও নেই তারা এসব সহজ বিষয় কিভাবে বুঝবে ? ।  সুতরাং এখানেও বৈপরীত্য হচ্ছে না । মানুষের গঠন খুবই সুন্দর এটিও যেমন সত্য আবার মানুষ দুর্বল এটিও বাস্তব সত্য ।

❓৯/ মুহাম্মাদ ও তার কোরআন কাদের জন্য? মক্কার লোকদের জন্য নাকি সমগ্র মানুষের জন্য ?
মক্কার লোকদের জন্যঃ সুরা আশ শুরা ৪২:৭ = এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
সমস্ত মানবজাতির জন্যঃ সুরা সাবা ৩৪:২৮ =  আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। এবং সুরা জাসিয়া ৪৫:২০ = এটা মানুষের জন্যে জ্ঞানের কথা এবং বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য হেদায়েত ও রহমত।

🆗উত্তরঃ মক্কার আশে পাশের লোকদের সতর্ক করা দ্বারা মক্কার আশে পাশের সমগ্র মানুষকে বুঝানো হয়েছে যেহেতু আল্লাহ আরেক আয়াতে বলেছেন সমগ্র মানুষের জন্য মহানবী (সা) সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী।

তাফসীরে জালালাইন, ৫ খণ্ড, ৭৮২ পৃষ্ঠাঃ মক্কা মকাররমার আশপাশ । এর অর্থ আশে পাশের আরব দেশ সমূহও হতে পারে এবং পূর্ব পশ্চিম আরব দেশ সমূহও হতেও পারে এবং পূর্ব পশ্চিম তথা সমগ্র বিশ্বও হতে পারে । তাফসীরে নুরুল কুরআনের ভাষায় - মক্কার চতুর্দিক বলতে সমগ্র বিশ্বকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে । এ ব্যাপারে তাফসীরকারকগণ একমত । এ ছাড়া তাফসীরে আবু বকর জাকারিয়া, তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ, তাফসীরে ইবনে কাসির, তাফসীরে ফি যিলাযিল কুরআন , তাফসীরে ইবনে আব্বাস , তাফহিমূল কুরআন সহ আরও তাফসীরে একই কথা বলা হয়েছে ।

ধরুন ক্লাসে শিক্ষক উপদেশ দিচ্ছেন, ভিটামিন তোমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তোমাদের আশে পাশে যারা আছেন সবার জন্য । আবার অন্য দিন ক্লাসে এসে শিক্ষক সবাইকে বললেন ভিটামিন পুরো মানবজাতির জন্যই প্রয়োজনীয় । পাঠক এখানে মোটেও বৈপরীত্য হচ্ছে না কারন আমরা সবাই জানি ভিটামিন শুধু ক্লাসের ছাত্রদের জন্যই না শুধু বরং গোটা মানবজাতির জন্য ঠিক একই ভাবে ইসলাম শুধু মাত্র মক্কার অথবা তার পাশে পাশের মানুষের জন্যই না শুধু পুরো মানবজাতির জন্য এই সত্য । আমার সত্যবাদী পাঠক বুঝে গিয়েছেন এখানে বৈপরীত্য নেই কারন ইসলাম শুধু মক্কাবাসীদের জন্য না সমগ্র মানবজাতির জন্য । 

❓১০/ সঙ্গী ছাড়া সন্তান জন্ম হওয়া সম্ভব? হ্যাঁ আবার নাও বলা হচ্ছে কেন ?
হ্যাঁ: সুরা মারঈয়াম ১৯:২১ = সে বললঃ এমনিতেই (পুত্রসন্তান জন্ম) হবে। তোমার পালনকর্তা বলেছেন, এটা আমার জন্যে সহজ সাধ্য এবং আমি তাকে মানুষের জন্যে একটি নিদর্শন ও আমার পক্ষ থেকে অনুগ্রহ স্বরূপ করতে চাই। এটা তো এক স্থিরীকৃত ব্যাপার।
নাঃ সুরা আন’য়াম ৬:১০১ = তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আদি স্রষ্টা। কিরূপে আল্লাহর পুত্র হতে পারে, অথচ তাঁর কোন সঙ্গী নেই? তিনি যাবতীয় কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ।

🆗উত্তরঃ হায়রে হাস্যকর অভিযোগ ! আল্লাহ ইচ্ছা করলে কোন নারীকে পুরুষের মাধ্যম ছাড়াই সন্তান দিতে পারেন । খৃষ্টানরা বলে আল্লাহর সন্তান আছে কিন্তু এটি অসম্ভব কারন আল্লাহ মানুষ না যে তার  সন্তান হবে । অনেক খগেন এখানে প্রশ্ন করতে পারেন যে আল্লাহ ইচ্ছা করলে তার নিজের সন্তান কেন নিজে নিতে পারবেন না ? এর উত্তরে আমি বলব খগেন দাদা আপনারা তো প্রকৃতির অস্তিত্ব বিশ্বাস করেন । আচ্ছা বাতাসের কি সন্তান হতে পারে ? উত্তর হল না । বাতাসের সন্তান হওয়া প্রশ্নটাই অযৌক্তিক কারন বাতাস মানুষ না , যার সন্তান হয় । আবার ভবিষ্যৎ কালের পুত্র সন্তান হয় না কেন ? প্রকৃতির জন্যই যদি সব হয় তাহলে প্রকৃতি কেন ভবিষ্যৎ কালকে একটি পুত্র সন্তান দিতে পারে না ? আসলে এসব প্রশ্ন অযৌক্তিক এবং হাস্যকর । কারন ভবিষ্যৎ কালের যদি সন্তানই হয় তাহলে সে আর ভবিষ্যৎ কাল হবে না সে হয়ে যাবে মানুষ ঠিক একই ভাবে আল্লাহর যদি কোন সন্তান হয় তাহলে আল্লাহ আর আল্লাহ হবেন না তিনিও মানুষ হয়ে যাবেন । আল্লাহ আর মানুষের মাঝে পার্থক্য খগেন দাদারা করতে পারেন না বিধায় এসব গাজাখুরি প্রশ্ন করে নিজেদের অবুঝ শিশু প্রমান করে মুসলিমদের কাছে বার বার ।

সুরা মারঈয়াম ১৯:২১ আয়াতেই পরিস্কার বলা হচ্ছে মরিয়ম (আ) কে সন্তান আল্লাহ দিবেন সেটি মানুষের জন্য নিদর্শন সরূপ আর সুরা আন’য়াম ৬:১০১ আয়াতে যা বলা হচ্ছে আল্লাহর নিজের কথা যে আল্লাহর কিভাবে সন্তান হবে কারন তিনি তো আর সৃষ্টি নন, তিনি হলেন স্রষ্টা । পাঠক আপনারা এক কাজ করুন এখনি উপরের আয়াতের সামনে আর পিছনে আয়াত সমুহ পড়ুন নিজেরাই বুঝে যাবেন , আসলে এসব আয়াতে বৈপরীত্য নেই বরং নাস্তিক্যধর্মের অন্ধ বিশ্বাসীরা আসলে মিথ্যুক এবং ধাপ্পাবাজ ।

Post a Comment

0 Comments