🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________________________________________________
.
আসসালামু আলাইকুম,,
একটি হাদিস আছে আর এই হাদিসটি বহুল প্রচলিত একটি অভিযোগের অংশ। জার্মান নাস্তিকরাও হাদিসটি নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ায়। তো এই ইসলাম বিরোধীরা যে হাদিসটি দিয়ে অভিযোগ আনে সেই হাদিসটি নিম্নরূপ,,,
.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ، قَالَ قُلْتُ لِعَلِيٍّ هَلْ عِنْدَكُمْ كِتَابٌ قَالَ لاَ، إِلاَّ كِتَابُ اللَّهِ، أَوْ فَهْمٌ أُعْطِيَهُ رَجُلٌ مُسْلِمٌ، أَوْ مَا فِي هَذِهِ الصَّحِيفَةِ. قَالَ قُلْتُ فَمَا فِي هَذِهِ الصَّحِيفَةِ قَالَ الْعَقْلُ، وَفَكَاكُ الأَسِيرِ، وَلاَ يُقْتَلُ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ.
____________________________________________________________________________
.
আসসালামু আলাইকুম,,
একটি হাদিস আছে আর এই হাদিসটি বহুল প্রচলিত একটি অভিযোগের অংশ। জার্মান নাস্তিকরাও হাদিসটি নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ায়। তো এই ইসলাম বিরোধীরা যে হাদিসটি দিয়ে অভিযোগ আনে সেই হাদিসটি নিম্নরূপ,,,
.
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُطَرِّفٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ، قَالَ قُلْتُ لِعَلِيٍّ هَلْ عِنْدَكُمْ كِتَابٌ قَالَ لاَ، إِلاَّ كِتَابُ اللَّهِ، أَوْ فَهْمٌ أُعْطِيَهُ رَجُلٌ مُسْلِمٌ، أَوْ مَا فِي هَذِهِ الصَّحِيفَةِ. قَالَ قُلْتُ فَمَا فِي هَذِهِ الصَّحِيفَةِ قَالَ الْعَقْلُ، وَفَكَاكُ الأَسِيرِ، وَلاَ يُقْتَلُ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ.
আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেনঃ আমি ‘আলী (রাঃ)-কে বললাম, আপনাদের নিকট কি কিছু লিপিবদ্ধ আছে? তিনি বললেনঃ ‘না, শুধুমাত্র আল্লাহর কিতাব রয়েছে, আর একজন মুসলিমকে যে জ্ঞান দান করা হয় সেই বুদ্ধি ও বিবেক। এছাড়া কিছু এ সহীফাতে লিপিবদ্ধ রয়েছে।’ তিনি [আবূ জুহাইফা (রাঃ)] বলেন, আমি বললাম, এ সহীফাটিতে কী আছে? তিনি বললেন, ‘ক্ষতিপূরণ ও বন্দী মুক্তির বিধান, আর এ বিধানটিও যে, ‘মুসলিমকে কাফির হত্যার বিনিময়ে হত্যা করা যাবে না।’
(১৮৭০, ৩০৪৭, ৩১৭২, ৩১৭৯, ৬৭৫৫, ৬৯০৩, ৬৯১৫, ৭৩০০ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১১২)
(১৮৭০, ৩০৪৭, ৩১৭২, ৩১৭৯, ৬৭৫৫, ৬৯০৩, ৬৯১৫, ৭৩০০ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১০৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১১২)
◾এই হাদিস দিয়ে তারা যে বিদ্বেষ করে সেটা হলো হাদিসে বলা হয়েছে "মুসলিমকে কাফির হত্যার বিনিময়ে হত্যা করা যাবে না।" এই অংশ দেখিয়ে বলা হয় ইসলাম বর্বর একটি বিধান।
আসলে আমরা হাদিস বুঝতে হলে আমাদের তার কারণ প্রক্ষাপট বুঝতে হবে। কুরআন সুস্পষ্ট ভাবে বলেছে হত্যার বদলে হত্যা অর্থাৎ যদি কোন মুসলিম কোন কাফেরকে হত্যা করে তাহলে মুসলিমকেও হত্যা করা হবে এটাই হলো সমান অধিকার।
◾আসুন সূরা বাকারার ১৭৮ নং আয়াতটি দেখি আর সেই আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর কি বলেছেন তাও দেখি।
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُتِبَ عَلَیۡکُمُ الۡقِصَاصُ فِی الۡقَتۡلٰی ؕ اَلۡحُرُّ بِالۡحُرِّ وَ الۡعَبۡدُ بِالۡعَبۡدِ وَ الۡاُنۡثٰی بِالۡاُنۡثٰی ؕ فَمَنۡ عُفِیَ لَہٗ مِنۡ اَخِیۡہِ شَیۡءٌ فَاتِّبَاعٌۢ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ اَدَآءٌ اِلَیۡہِ بِاِحۡسَانٍ ؕ ذٰلِکَ تَخۡفِیۡفٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ رَحۡمَۃٌ ؕ فَمَنِ اعۡتَدٰی بَعۡدَ ذٰلِکَ فَلَہٗ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ ﴿۱۷۸﴾
হে মু’মিনগণ! তোমাদের প্রতি নিহতদের কিসাস সম্পর্কে আদেশ দেয়া যাচ্ছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন, গোলামের বদলে গোলাম এবং স্ত্রীলোকের বদলে স্ত্রীলোক। তারপর যাকে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কিছু অংশ মা‘ফ করে দেয়া হয়। সে অবস্থায় যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার দেয় আদায় করা বিধেয়। এটা তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে ভার লাঘব ও অনুগ্রহ। এরপর যে কেউ বাড়াবাড়ি করবে, তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ‘সম-অধিকার’ আইন এবং এর তাৎপর্য মহান আল্লাহ বলেন, হে মু’মিনগণ! প্রতিশোধ গ্রহণের সময় ন্যায় পন্থা অবলম্বন করা তোমাদের ওপর অবধারিত তথা ফরয করে দেয়া হয়েছে। অতএব স্বাধীন ব্যক্তির পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তি, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারীকে হত্যা করবে। এ ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করবে না। যেমন সীমালঙ্ঘন করেছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা। তারা মহান আল্লাহ্র নির্দেশ পরিবর্তন করে ফেলেছিলো।’ এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ এই যে, অজ্ঞতার যুগে বানু নাযীর ও বানু কুরাইযা নামক ইয়াহুদীদের দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বানু নাযীর জয়যুক্ত হয়। অতঃপর তাদের মধ্যে এ কথার চালু হয় যে, যখন বানু নাযীরের কোন লোক বানু কুরাইযার লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে বানু নাযীরের ঐ লোকটিকে হত্যা করা হবে না। বরং রক্ত পণ হিসেবে তার নিকট হতে এক ওয়াসাক অর্থাৎ প্রায় একশ’ আশি কেজি খেজুর আদায় করা হবে। আর যখন বানু কুরাইযার কোন লোক বানু নাযীরের কোন লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে তাকেও হত্যা করা হবে এবং রক্তপণ গ্রহণ করা হলে দ্বিগুণ অর্থাৎ দুই ওয়াসাক খেজুর গ্রহণ করা হবে। সুতরাং মহান আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে অজ্ঞতার যুগে ঐ জঘন্য প্রথাকে উঠিয়ে দিয়ে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশ দেন। ইমাম আবূ মুহাম্মাদ ইবনে আবি হাতিম (রহঃ) এর বর্ণনায় এই আয়াত অবতীর্ণের কারণ এটাও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘আরবের দু’টি গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিলো। ইসলাম গ্রহণের পর তারা পর¯পরে প্রতিশোধ গ্রহণের দাবীদার হয় এবং বলে, আমাদের দাসের পরিবর্তে তাদের স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা হোক এবং আমাদের নারীর পরিবর্তে তাদের পুরুষকে হত্যা করা হোক। তাদের এই দাবি খণ্ডনে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এই হুকুমটিও মানসূখ। কুর’আন মাজীদ ঘোষণা করেঃ النفس بالنفس অর্থাৎ প্রাণের পরিবর্তে প্রাণ। সুতরাং প্রত্যেক হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির পরিবর্তে হত্যা করা হবে। স্বাধীন দাসকে হত্যা করুক বা এর বিপরীত পুরুষ নারীকে হত্যা করুক বা এর বিপরীত। সর্বাবস্থায় এই বিধানই চালু থাকবে। ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এরা পুরুষকে নারীর পরিবর্তে হত্যা করতো না, এই কারণেই النفس بالنفس والعين بالعين আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। সুতরাং স্বাধীন লোক সবাই সমান। প্রাণের বদলে প্রাণ নেয়া হবে। হত্যাকারী পুরুষই হোক বা স্ত্রী হোক। অনুরূপভাবে নিহত লোকটি পুরুষই হোক বা স্ত্রী হোক। যখনই কোন স্বাধীন ব্যক্তি, স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করবে তখন তার পরিবর্তে তাকেও হত্যা করা হবে। এরূপভাবে এই নির্দেশ দাস ও দাসীর মধ্যে চালু থাকবে। যে কেউই প্রাণ নাশের ইচ্ছায় অন্যকে হত্যা করবে, প্রতিশোধ স্বরূপ তাকেও হত্যা করা হবে। হত্যা ছাড়া যখম বা কোন অঙ্গহানীরও একই নিদের্শ। ইমাম মালিক (রহঃ) এই আয়াতটিকে النفس با لنفس এই আয়াত দ্বারা মানসূখ বলেছেন। জিজ্ঞাস্যঃ ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) ইমাম সাওরী (রহঃ) ইমাম আবূ লায়লা (রহঃ) এবং ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ)-এর মাযহাব এই যে, কোন আযাদ ব্যক্তি যদি কোন গোলামকে হত্যা করে তবে তার পরিবর্তে তাকেও হত্যা করা হবে। ‘আলী (রাঃ), ইবনে মাস‘উদ (রাঃ), সা‘ঈদ ইবনে যুবাইর (রহঃ) ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহঃ)-এরও একটি বর্ণনা অনুসারে সাওরী (রহঃ)-এরও মাযহাব এটাই যে যদি কোন মনিব তার গোলামকে হত্যা করে তবে তার পরিবর্তে মনিবকেও হত্যা করা হবে। এর দালীল রূপে তাঁরা এই হাদীসটি পেশ করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "من قتل عبده قتلناه، ومن جذعه جذعناه، ومن خصاه خصيناه" ‘যে ব্যক্তি তার গোলামকে হত্যা করবে আমারাও তাকে হত্যা করবো। যে তাঁর গোলামকে নাক কেটে নিবে আমরাও তাঁর নাক কেটে নিবো এবং যে তাঁর অণ্ডকোষ কেটে নিবে তারও এই প্রতিশোধ নেয়া হবে।’ (হাদীস য‘ঈফ। সুনান আবূ দাউদ ৪/১৭৬/৪৫১৫, জামি‘ তিরমিযী ৪/১৮, ১৯, ৪৭৫১, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৮৮৮/২৬৬৩, সুনান দারিমী ২/২৫০/২৩৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৫/১০, ১২, ১৮, মুসতাদরাক হাকিম ৪/৩৬৭) কিন্তু জামহূরের মাযহাব এই মনীষীদের উল্টো। তাদের মতে দাসের পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে না। কেননা, দাস এক প্রকারের মাল। সে ভুল বশতঃ নিহত হলে রক্তপণ দিতে হয় না, শুধুমাত্র তার মূল্য আদায় করতে হবে। অনুরূপভাবে তার হাত, পা ইত্যাদির ক্ষতি হলে প্রতিশোধের নির্দেশ নেই। কাফেরের পরিবর্তে মুসলিমকে হত্যা করা যাবে কিনা এ ব্যাপারে বেশির ভাগ ‘আলিমের সিদ্ধান্ত হলো এই যে, একজন মুশরিককে হত্যার পরিবর্তে হত্যাকারী মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ لَا يُقْتَلُ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ ‘কাফেরকে হত্যা করার জন্য মুসলিম হত্যাকারীকে হত্যা করা যাবেনা।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী ১/২৪৬/১১১, জামি‘ তিরমিযী ৪/১৮, ১৯/১৪১৪, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৮৮৭/২৬৫৮, সুনান দারিমী ২/২৪৯/২৩৫৬, মুসনাদে আহমাদ ১/৭৯/৫৯৯) এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ নেই কিংবা এর বিপরীত বর্ণনার কোন সহীহ হাদীসও পাওয়া যায় না। কিন্তু ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) সূরা আল মায়িদার النفس بالنفس আয়াতটি ব্যাপকতার দিকে লক্ষ্য করে কাফিরের পরিবর্তে মুসলিমকেও হত্যা করা যাবে বলে অভিমত দিয়েছেন। মাস’আলাঃ হাসান বাসরী (রহঃ) এবং আত্তার (রহঃ) এর উক্তি রয়েছে যে, পুরুষকে নারীর পরিবর্তে হত্যা করা হবে না। এর দালীল রূপে তারা উপরোক্ত আয়াতটি পেশ করে থাকেন। কিন্তু জামহূর ‘উলামা এর বিপরীত মত পোষণ করেন। কেননা সূরাহ আল মায়িদার এই আয়াতটি সাধারণ , যার মধ্যে النفس بالنفس বিদ্যমান রয়েছে। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তি রয়েছেঃ "المسلمون تتكافأ دماؤهم" অর্থাৎ মুসলমানদের রক্ত পরস্পর সমান। (হাদীসটি সহীহ। সুনান আবূ দাউদ-৩/৮০/২৭৫১, সুনান ইবনে মাজাহ-২/৮৯৫/২৬৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৫২/১৯২/৬৭৯৭, সুনান বায়হাক্বী- ৮/২৯) লাইস (রহঃ) এর মাযহাব এই যে, স্বামী যদি তার স্ত্রীকে মেরে ফেলে তবে তাঁর পরিবর্তে তাকে অর্থাৎ স্বামীকে হত্যা করা হবে না। মাস’আলাঃ চার ইমাম এবং জামহূর ‘উলামার মতামত এই যে, কয়েকজন মিলে একজন মুসলিমকে হত্যা করলে তার পরিবর্তে তাদের সকলকে হত্যা করা হবে। ‘উমার (রাঃ)-এর যুগে সাতজন মিলে একটি লোককে হত্যা করে। তিনি সাতজনকেই হত্যা করার আদেশ দেন এবং বলেনঃ لَوْ تَمَالْأَ عَلَيْهِ أَهْلُ صَنْعَاءَ لَقَتَلْتُهُمْ যদি ‘সান‘আ’ পল্লীর সমস্ত লোক এই হত্যায় অংশগ্রহণ করতো তাহলে আমি প্রতিশোধস্বরূপ সকলকেই হত্যা করতাম।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী-১২/২৩৬/৬৮৯৬, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/১৩/৮৭১) কোন সাহাবীই তাঁর যুগে তাঁর এই ঘোষণার বিরোধিতা করেন নি। সুতরাং এ কথার ওপর যেন ইজমা‘ হয়ে গেছে। কিন্তু ইমাম আহমাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন যে, একজনের পরিবর্তে একটি দলকে হত্যা করা হবে না, বরং একজনের পরিবর্তে একজনকেই হত্যা করা হবে। মু‘আয (রাঃ), ইবনে যুবাইর (রহঃ), ‘আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান (রহঃ), যুহরী (রহঃ), ইবনে সীরীন (রহঃ) এবং হাবীব ইবনে আবি সাবীত (রহঃ) হতেও এই উক্তিটি বর্ণিত আছে। ইবনুল মুনজির (রহঃ) বলেন যে, এটাই সর্বাপেক্ষা সঠিক মত। অতঃপর বলা হয়েছে যে, ‘নিহত ব্যক্তির কোন উত্তরাধিকারী যদি হত্যাকারী কোন অংশ ক্ষমা করে দেয় তাহলে সেটা অন্য কথা।’ অর্থাৎ সে হয়তো হত্যার পরবর্তী রক্তপণ স্বীকার করে কিংবা হয়তো তার অংশের রক্তপণ ছেড়ে দেয় এবং স্পষ্টভাবে ক্ষমা করে দেয়। যদি সে রক্তপণের ওপর সম্মত হয়ে যায় তাহলে সে যেন হত্যাকারীর ওপর জোর-জবরদস্তি না করে, বরং যেন ন্যায় সঙ্গতভাবে তা আদায় করে। হত্যাকারীর কর্তব্য এই যে, সে যেন তার সদ্ভাবে পরিশোধ করে, টাল-বাহানা না করে। মাস’আলাঃ ইমাম মালিক (রহঃ), ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) এবং তাঁর ছাত্রবৃন্দ, ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মাযহাব এবং একটি বর্ণনা অনুসারে ইমাম আহমাদ (রহঃ) এর মাযহাবও এই যে, নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের কিসাস ছেড়ে দিয়ে রক্তপণের ওপর সম্মত হওয়া তখন জায়িয হবে যখন স্বয়ং হত্যাকারীও তাতে সম্মত হয়। কিন্তু অন্যান্য মনীষীগণ বলেন যে, এতে হত্যাকারীর সম্মতির শর্ত নেই। মাস’আলাঃ পূর্ববর্তী একটি দল বলেন যে, নারীরা যদি কিসাসকে ক্ষমা করে দিয়ে রক্তপণের ওপর সম্মত হয়ে যায় তবে তার কোন মূল্য নেই। হাসান বাসরী (রহঃ), কাতাদাহ (রহঃ), যুহরী (রহঃ), ইবনে শিবরামাহ (রহঃ), লায়স (রহঃ) এবং আওযা‘ঈ (রহঃ) এর অভিমত এটাই। কিন্তু অন্যান্য ‘উলামায়ি দ্বীন তাদের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেন যে, যদি কোন নারীও রক্তপণের ওপর সম্মত হয়ে যায় তবে কিসাস উঠে যাবে। অতঃপর বলা হচ্ছে যে, ‘ইচ্ছাপূর্বক হত্যায় রক্তপণ গ্রহণ, এটা মহান আল্লাহ্র পক্ষ হতে লঘু বিধান ও করুণা।’ পূর্ববর্তী উম্মাতদের এ সুযোগ ছিলো না। ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, বানী ইসরাঈলের ওপর ‘কিসাস’ অর্থাৎ হত্যার পরিবর্তে হত্যা ফরয ছিলো। ‘কিসাস’ ক্ষমা করে রক্তপণ গ্রহণের অনুমতি তাদের জন্য ছিলো না। কিন্তু উম্মাতে মুহাম্মাদির ওপর মহান আল্লাহ্র এটি বড় অনুগ্রহ যে, রক্তপণ গ্রহণও তাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে। তাহলে এখানে তিনটি জিনিস হচ্ছে (১) ‘কিসাস’, ২) রক্তপণ, (৩) ক্ষমা। পূর্ববর্তী উম্মাতদের মধ্যে শুধুমাত্র ‘কিসাস’ ও ‘ক্ষমা’ ছিলো, কিন্তু ‘দিয়্যাতের’ বিধান ছিলো না। তাওরাতধারীদের জন্য শুধু কিসাস ও ক্ষমার বিধান ছিলো এবং ইঞ্জিলধারীদের জন্য শুধু ক্ষমাই ছিলো। তারপরে বলা হচ্ছে, ‘যে ব্যক্তি রক্তপণ গ্রহণ বা মেনে নেয়ার পরেও বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে কঠিন বেদনাদায়ক শাস্তি।’ যেমন মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ مَنْ أُصِيبَ بِقَتْلٍ أَوْ خَبْل فَإِنَّهُ يَخْتَارُ إِحْدَى ثَلَاثٍ: إِمَّا أَنْ يَقْتَصَّ، وَإِمَّا أَنْ يَعْفُوَ، وَإِمَّا أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ؛ فَإِنْ أَرَادَ الرَّابِعَةَ فَخُذُوا عَلَى يَدَيْهِ. وَمَنِ اعْتَدَى بَعْدَ ذَلِكَ فَلَهُ نَارُ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا যে ব্যক্তি বিপদগ্রস্ত হত্যার মাধ্যমে কিংবা অন্য কোন কারণে, তাহলে সে প্রতিশোধস্বরূপ তিনটির কোন একটি গ্রহণ করতে পারে। হয়তো ১. হত্যার পরিবর্তে হত্যা, ২. ক্ষমা, ৩. দিয়্যাত বা রক্ষপণ। যদি এ গুলোর পরিবর্তে চতুর্থ কোন কিছু অন্নেষণ করে তাহলে জাহান্নামই তার একমাত্র স্থায়ী আবাসস্থল হবে। (হাদীসটি য‘ঈফ। মুসনাদে আহমাদ-৪/৩১, সুনান আবূ দাউদ-৪/১৬৯/৪৪৯৬, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৮৭৬/২৬২৩, সুনান দারিমী ২/২৪৭/২৩৫১, সুনান বায়হাক্বী-৮/৫২, সুনান দারাকুতনী ৩/৯৬/৫৬) সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ لَا أُعَافِي رَجُلًا قَتَلَ بَعْدَ أَخْذِ الدِّيَة ‘দিয়্যাত গ্রহণ করার পর যে ব্যক্তি আবার তাকে হত্যা করবে আমি তোমাকে ক্ষমা করবো না।’ (হাদীসটি য‘ঈফ। মুসনাদে আহমাদ-৩/৩৬৩) অর্থাৎ এ হত্যার বদলা হিসেবে আর তার থেকে দিয়্যাত নেয়া হবে না, বরং তাকেই হত্যা করা হবে। কিসাসের উপকারিতা এবং এর অপরিহার্যতা অতঃপর ইরশাদ হচ্ছেঃ ﴿وَ لَكُمْ فِی الْقِصَاصِ حَیٰوةٌ ﴾ হে জ্ঞানীরা! তোমরা জেনে রেখো যে, কিসাসের মধ্যে মানব গোষ্ঠীর অমরত্ব রয়েছে। এর মধ্যে বড় দূরদর্শিতা রয়েছে। যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে যে, একজনের পরিবর্তে অপরজন নিহত হচ্ছে, সুতরাং দু’জন মারা যাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যদি অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখা যায় তাহেল জানা যায় যে, এটা জীবন লাভেরই কারণ। হত্যা করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির স্বয়ং এই ধারণা হবে যে, সে যাকে হত্যা করতে যাচ্ছে তাকে হত্যা করা উচিত হবে না। নতুবা তাকেও নিহত হতে হবে। এই ভেবে সে হত্যার কাজ থেকে বিরত থাকবে। তাহলে দু’ব্যক্তি মৃত্যু হতে বেঁচে যাচ্ছে। পূর্বের গ্রন্থসমূহের মধ্যেও তো মহান আল্লাহ এই কথাটি বর্ণনা করেছিলেন যে, الْقَتْلُ أَنْفَى لِلْقَتْلِ অর্থাৎ হত্যা হত্যাকে বাধা দেয়, কিন্তু কুর’আনুল হাকীমের মধ্যে অত্যন্ত বাকপটুতা ও ভাষা অলঙ্কারের সাথে এই বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। অতঃপর বলা হচ্ছেঃ ‘এটা তোমাদের বেঁচে থাকার কারণ। প্রথমতঃ তোমরা মহান আল্লাহ্র অবাধ্যতা থেকে রক্ষা পাবে। দ্বিতীয়ত না কেউ কাউকে হত্যা করবে, আর না সে নিহত হবে। সুতরাং পৃথিবীর বুকে সর্বত্র নিরাপত্তা ও শান্তি বিরাজ করবে। تَقْوَى হচ্ছে প্রত্যেক সাওয়াবের কাজ করা এবং প্রত্যেক পাপের কাজ ছেড়ে দেয়ার নাম।
হে মু’মিনগণ! তোমাদের প্রতি নিহতদের কিসাস সম্পর্কে আদেশ দেয়া যাচ্ছে। স্বাধীন ব্যক্তির বদলে স্বাধীন, গোলামের বদলে গোলাম এবং স্ত্রীলোকের বদলে স্ত্রীলোক। তারপর যাকে তার ভাইয়ের পক্ষ থেকে কিছু অংশ মা‘ফ করে দেয়া হয়। সে অবস্থায় যথাযথ বিধির অনুসরণ করা ও সততার সাথে তার দেয় আদায় করা বিধেয়। এটা তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে ভার লাঘব ও অনুগ্রহ। এরপর যে কেউ বাড়াবাড়ি করবে, তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। ‘সম-অধিকার’ আইন এবং এর তাৎপর্য মহান আল্লাহ বলেন, হে মু’মিনগণ! প্রতিশোধ গ্রহণের সময় ন্যায় পন্থা অবলম্বন করা তোমাদের ওপর অবধারিত তথা ফরয করে দেয়া হয়েছে। অতএব স্বাধীন ব্যক্তির পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তি, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারীকে হত্যা করবে। এ ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করবে না। যেমন সীমালঙ্ঘন করেছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা। তারা মহান আল্লাহ্র নির্দেশ পরিবর্তন করে ফেলেছিলো।’ এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ এই যে, অজ্ঞতার যুগে বানু নাযীর ও বানু কুরাইযা নামক ইয়াহুদীদের দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বানু নাযীর জয়যুক্ত হয়। অতঃপর তাদের মধ্যে এ কথার চালু হয় যে, যখন বানু নাযীরের কোন লোক বানু কুরাইযার লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে বানু নাযীরের ঐ লোকটিকে হত্যা করা হবে না। বরং রক্ত পণ হিসেবে তার নিকট হতে এক ওয়াসাক অর্থাৎ প্রায় একশ’ আশি কেজি খেজুর আদায় করা হবে। আর যখন বানু কুরাইযার কোন লোক বানু নাযীরের কোন লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে তাকেও হত্যা করা হবে এবং রক্তপণ গ্রহণ করা হলে দ্বিগুণ অর্থাৎ দুই ওয়াসাক খেজুর গ্রহণ করা হবে। সুতরাং মহান আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে অজ্ঞতার যুগে ঐ জঘন্য প্রথাকে উঠিয়ে দিয়ে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশ দেন। ইমাম আবূ মুহাম্মাদ ইবনে আবি হাতিম (রহঃ) এর বর্ণনায় এই আয়াত অবতীর্ণের কারণ এটাও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘আরবের দু’টি গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিলো। ইসলাম গ্রহণের পর তারা পর¯পরে প্রতিশোধ গ্রহণের দাবীদার হয় এবং বলে, আমাদের দাসের পরিবর্তে তাদের স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা হোক এবং আমাদের নারীর পরিবর্তে তাদের পুরুষকে হত্যা করা হোক। তাদের এই দাবি খণ্ডনে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এই হুকুমটিও মানসূখ। কুর’আন মাজীদ ঘোষণা করেঃ النفس بالنفس অর্থাৎ প্রাণের পরিবর্তে প্রাণ। সুতরাং প্রত্যেক হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির পরিবর্তে হত্যা করা হবে। স্বাধীন দাসকে হত্যা করুক বা এর বিপরীত পুরুষ নারীকে হত্যা করুক বা এর বিপরীত। সর্বাবস্থায় এই বিধানই চালু থাকবে। ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এরা পুরুষকে নারীর পরিবর্তে হত্যা করতো না, এই কারণেই النفس بالنفس والعين بالعين আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। সুতরাং স্বাধীন লোক সবাই সমান। প্রাণের বদলে প্রাণ নেয়া হবে। হত্যাকারী পুরুষই হোক বা স্ত্রী হোক। অনুরূপভাবে নিহত লোকটি পুরুষই হোক বা স্ত্রী হোক। যখনই কোন স্বাধীন ব্যক্তি, স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করবে তখন তার পরিবর্তে তাকেও হত্যা করা হবে। এরূপভাবে এই নির্দেশ দাস ও দাসীর মধ্যে চালু থাকবে। যে কেউই প্রাণ নাশের ইচ্ছায় অন্যকে হত্যা করবে, প্রতিশোধ স্বরূপ তাকেও হত্যা করা হবে। হত্যা ছাড়া যখম বা কোন অঙ্গহানীরও একই নিদের্শ। ইমাম মালিক (রহঃ) এই আয়াতটিকে النفس با لنفس এই আয়াত দ্বারা মানসূখ বলেছেন। জিজ্ঞাস্যঃ ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) ইমাম সাওরী (রহঃ) ইমাম আবূ লায়লা (রহঃ) এবং ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ)-এর মাযহাব এই যে, কোন আযাদ ব্যক্তি যদি কোন গোলামকে হত্যা করে তবে তার পরিবর্তে তাকেও হত্যা করা হবে। ‘আলী (রাঃ), ইবনে মাস‘উদ (রাঃ), সা‘ঈদ ইবনে যুবাইর (রহঃ) ইবরাহীম নাখ‘ঈ (রহঃ)-এরও একটি বর্ণনা অনুসারে সাওরী (রহঃ)-এরও মাযহাব এটাই যে যদি কোন মনিব তার গোলামকে হত্যা করে তবে তার পরিবর্তে মনিবকেও হত্যা করা হবে। এর দালীল রূপে তাঁরা এই হাদীসটি পেশ করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "من قتل عبده قتلناه، ومن جذعه جذعناه، ومن خصاه خصيناه" ‘যে ব্যক্তি তার গোলামকে হত্যা করবে আমারাও তাকে হত্যা করবো। যে তাঁর গোলামকে নাক কেটে নিবে আমরাও তাঁর নাক কেটে নিবো এবং যে তাঁর অণ্ডকোষ কেটে নিবে তারও এই প্রতিশোধ নেয়া হবে।’ (হাদীস য‘ঈফ। সুনান আবূ দাউদ ৪/১৭৬/৪৫১৫, জামি‘ তিরমিযী ৪/১৮, ১৯, ৪৭৫১, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৮৮৮/২৬৬৩, সুনান দারিমী ২/২৫০/২৩৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৫/১০, ১২, ১৮, মুসতাদরাক হাকিম ৪/৩৬৭) কিন্তু জামহূরের মাযহাব এই মনীষীদের উল্টো। তাদের মতে দাসের পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা হবে না। কেননা, দাস এক প্রকারের মাল। সে ভুল বশতঃ নিহত হলে রক্তপণ দিতে হয় না, শুধুমাত্র তার মূল্য আদায় করতে হবে। অনুরূপভাবে তার হাত, পা ইত্যাদির ক্ষতি হলে প্রতিশোধের নির্দেশ নেই। কাফেরের পরিবর্তে মুসলিমকে হত্যা করা যাবে কিনা এ ব্যাপারে বেশির ভাগ ‘আলিমের সিদ্ধান্ত হলো এই যে, একজন মুশরিককে হত্যার পরিবর্তে হত্যাকারী মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ لَا يُقْتَلُ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ ‘কাফেরকে হত্যা করার জন্য মুসলিম হত্যাকারীকে হত্যা করা যাবেনা।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী ১/২৪৬/১১১, জামি‘ তিরমিযী ৪/১৮, ১৯/১৪১৪, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৮৮৭/২৬৫৮, সুনান দারিমী ২/২৪৯/২৩৫৬, মুসনাদে আহমাদ ১/৭৯/৫৯৯) এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত পোষণ করার অবকাশ নেই কিংবা এর বিপরীত বর্ণনার কোন সহীহ হাদীসও পাওয়া যায় না। কিন্তু ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) সূরা আল মায়িদার النفس بالنفس আয়াতটি ব্যাপকতার দিকে লক্ষ্য করে কাফিরের পরিবর্তে মুসলিমকেও হত্যা করা যাবে বলে অভিমত দিয়েছেন। মাস’আলাঃ হাসান বাসরী (রহঃ) এবং আত্তার (রহঃ) এর উক্তি রয়েছে যে, পুরুষকে নারীর পরিবর্তে হত্যা করা হবে না। এর দালীল রূপে তারা উপরোক্ত আয়াতটি পেশ করে থাকেন। কিন্তু জামহূর ‘উলামা এর বিপরীত মত পোষণ করেন। কেননা সূরাহ আল মায়িদার এই আয়াতটি সাধারণ , যার মধ্যে النفس بالنفس বিদ্যমান রয়েছে। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তি রয়েছেঃ "المسلمون تتكافأ دماؤهم" অর্থাৎ মুসলমানদের রক্ত পরস্পর সমান। (হাদীসটি সহীহ। সুনান আবূ দাউদ-৩/৮০/২৭৫১, সুনান ইবনে মাজাহ-২/৮৯৫/২৬৫৮, মুসনাদে আহমাদ ৫২/১৯২/৬৭৯৭, সুনান বায়হাক্বী- ৮/২৯) লাইস (রহঃ) এর মাযহাব এই যে, স্বামী যদি তার স্ত্রীকে মেরে ফেলে তবে তাঁর পরিবর্তে তাকে অর্থাৎ স্বামীকে হত্যা করা হবে না। মাস’আলাঃ চার ইমাম এবং জামহূর ‘উলামার মতামত এই যে, কয়েকজন মিলে একজন মুসলিমকে হত্যা করলে তার পরিবর্তে তাদের সকলকে হত্যা করা হবে। ‘উমার (রাঃ)-এর যুগে সাতজন মিলে একটি লোককে হত্যা করে। তিনি সাতজনকেই হত্যা করার আদেশ দেন এবং বলেনঃ لَوْ تَمَالْأَ عَلَيْهِ أَهْلُ صَنْعَاءَ لَقَتَلْتُهُمْ যদি ‘সান‘আ’ পল্লীর সমস্ত লোক এই হত্যায় অংশগ্রহণ করতো তাহলে আমি প্রতিশোধস্বরূপ সকলকেই হত্যা করতাম।’ (হাদীসটি সহীহ। সহীহুল বুখারী-১২/২৩৬/৬৮৯৬, মুওয়াত্তা ইমাম মালিক-২/১৩/৮৭১) কোন সাহাবীই তাঁর যুগে তাঁর এই ঘোষণার বিরোধিতা করেন নি। সুতরাং এ কথার ওপর যেন ইজমা‘ হয়ে গেছে। কিন্তু ইমাম আহমাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন যে, একজনের পরিবর্তে একটি দলকে হত্যা করা হবে না, বরং একজনের পরিবর্তে একজনকেই হত্যা করা হবে। মু‘আয (রাঃ), ইবনে যুবাইর (রহঃ), ‘আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান (রহঃ), যুহরী (রহঃ), ইবনে সীরীন (রহঃ) এবং হাবীব ইবনে আবি সাবীত (রহঃ) হতেও এই উক্তিটি বর্ণিত আছে। ইবনুল মুনজির (রহঃ) বলেন যে, এটাই সর্বাপেক্ষা সঠিক মত। অতঃপর বলা হয়েছে যে, ‘নিহত ব্যক্তির কোন উত্তরাধিকারী যদি হত্যাকারী কোন অংশ ক্ষমা করে দেয় তাহলে সেটা অন্য কথা।’ অর্থাৎ সে হয়তো হত্যার পরবর্তী রক্তপণ স্বীকার করে কিংবা হয়তো তার অংশের রক্তপণ ছেড়ে দেয় এবং স্পষ্টভাবে ক্ষমা করে দেয়। যদি সে রক্তপণের ওপর সম্মত হয়ে যায় তাহলে সে যেন হত্যাকারীর ওপর জোর-জবরদস্তি না করে, বরং যেন ন্যায় সঙ্গতভাবে তা আদায় করে। হত্যাকারীর কর্তব্য এই যে, সে যেন তার সদ্ভাবে পরিশোধ করে, টাল-বাহানা না করে। মাস’আলাঃ ইমাম মালিক (রহঃ), ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) এবং তাঁর ছাত্রবৃন্দ, ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ)-এর মাযহাব এবং একটি বর্ণনা অনুসারে ইমাম আহমাদ (রহঃ) এর মাযহাবও এই যে, নিহত ব্যক্তির অভিভাবকদের কিসাস ছেড়ে দিয়ে রক্তপণের ওপর সম্মত হওয়া তখন জায়িয হবে যখন স্বয়ং হত্যাকারীও তাতে সম্মত হয়। কিন্তু অন্যান্য মনীষীগণ বলেন যে, এতে হত্যাকারীর সম্মতির শর্ত নেই। মাস’আলাঃ পূর্ববর্তী একটি দল বলেন যে, নারীরা যদি কিসাসকে ক্ষমা করে দিয়ে রক্তপণের ওপর সম্মত হয়ে যায় তবে তার কোন মূল্য নেই। হাসান বাসরী (রহঃ), কাতাদাহ (রহঃ), যুহরী (রহঃ), ইবনে শিবরামাহ (রহঃ), লায়স (রহঃ) এবং আওযা‘ঈ (রহঃ) এর অভিমত এটাই। কিন্তু অন্যান্য ‘উলামায়ি দ্বীন তাদের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেন যে, যদি কোন নারীও রক্তপণের ওপর সম্মত হয়ে যায় তবে কিসাস উঠে যাবে। অতঃপর বলা হচ্ছে যে, ‘ইচ্ছাপূর্বক হত্যায় রক্তপণ গ্রহণ, এটা মহান আল্লাহ্র পক্ষ হতে লঘু বিধান ও করুণা।’ পূর্ববর্তী উম্মাতদের এ সুযোগ ছিলো না। ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, বানী ইসরাঈলের ওপর ‘কিসাস’ অর্থাৎ হত্যার পরিবর্তে হত্যা ফরয ছিলো। ‘কিসাস’ ক্ষমা করে রক্তপণ গ্রহণের অনুমতি তাদের জন্য ছিলো না। কিন্তু উম্মাতে মুহাম্মাদির ওপর মহান আল্লাহ্র এটি বড় অনুগ্রহ যে, রক্তপণ গ্রহণও তাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে। তাহলে এখানে তিনটি জিনিস হচ্ছে (১) ‘কিসাস’, ২) রক্তপণ, (৩) ক্ষমা। পূর্ববর্তী উম্মাতদের মধ্যে শুধুমাত্র ‘কিসাস’ ও ‘ক্ষমা’ ছিলো, কিন্তু ‘দিয়্যাতের’ বিধান ছিলো না। তাওরাতধারীদের জন্য শুধু কিসাস ও ক্ষমার বিধান ছিলো এবং ইঞ্জিলধারীদের জন্য শুধু ক্ষমাই ছিলো। তারপরে বলা হচ্ছে, ‘যে ব্যক্তি রক্তপণ গ্রহণ বা মেনে নেয়ার পরেও বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে কঠিন বেদনাদায়ক শাস্তি।’ যেমন মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ مَنْ أُصِيبَ بِقَتْلٍ أَوْ خَبْل فَإِنَّهُ يَخْتَارُ إِحْدَى ثَلَاثٍ: إِمَّا أَنْ يَقْتَصَّ، وَإِمَّا أَنْ يَعْفُوَ، وَإِمَّا أَنْ يَأْخُذَ الدِّيَةَ؛ فَإِنْ أَرَادَ الرَّابِعَةَ فَخُذُوا عَلَى يَدَيْهِ. وَمَنِ اعْتَدَى بَعْدَ ذَلِكَ فَلَهُ نَارُ جَهَنَّمَ خَالِدًا فِيهَا যে ব্যক্তি বিপদগ্রস্ত হত্যার মাধ্যমে কিংবা অন্য কোন কারণে, তাহলে সে প্রতিশোধস্বরূপ তিনটির কোন একটি গ্রহণ করতে পারে। হয়তো ১. হত্যার পরিবর্তে হত্যা, ২. ক্ষমা, ৩. দিয়্যাত বা রক্ষপণ। যদি এ গুলোর পরিবর্তে চতুর্থ কোন কিছু অন্নেষণ করে তাহলে জাহান্নামই তার একমাত্র স্থায়ী আবাসস্থল হবে। (হাদীসটি য‘ঈফ। মুসনাদে আহমাদ-৪/৩১, সুনান আবূ দাউদ-৪/১৬৯/৪৪৯৬, সুনান ইবনে মাজাহ ২/৮৭৬/২৬২৩, সুনান দারিমী ২/২৪৭/২৩৫১, সুনান বায়হাক্বী-৮/৫২, সুনান দারাকুতনী ৩/৯৬/৫৬) সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ لَا أُعَافِي رَجُلًا قَتَلَ بَعْدَ أَخْذِ الدِّيَة ‘দিয়্যাত গ্রহণ করার পর যে ব্যক্তি আবার তাকে হত্যা করবে আমি তোমাকে ক্ষমা করবো না।’ (হাদীসটি য‘ঈফ। মুসনাদে আহমাদ-৩/৩৬৩) অর্থাৎ এ হত্যার বদলা হিসেবে আর তার থেকে দিয়্যাত নেয়া হবে না, বরং তাকেই হত্যা করা হবে। কিসাসের উপকারিতা এবং এর অপরিহার্যতা অতঃপর ইরশাদ হচ্ছেঃ ﴿وَ لَكُمْ فِی الْقِصَاصِ حَیٰوةٌ ﴾ হে জ্ঞানীরা! তোমরা জেনে রেখো যে, কিসাসের মধ্যে মানব গোষ্ঠীর অমরত্ব রয়েছে। এর মধ্যে বড় দূরদর্শিতা রয়েছে। যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে যে, একজনের পরিবর্তে অপরজন নিহত হচ্ছে, সুতরাং দু’জন মারা যাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যদি অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখা যায় তাহেল জানা যায় যে, এটা জীবন লাভেরই কারণ। হত্যা করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির স্বয়ং এই ধারণা হবে যে, সে যাকে হত্যা করতে যাচ্ছে তাকে হত্যা করা উচিত হবে না। নতুবা তাকেও নিহত হতে হবে। এই ভেবে সে হত্যার কাজ থেকে বিরত থাকবে। তাহলে দু’ব্যক্তি মৃত্যু হতে বেঁচে যাচ্ছে। পূর্বের গ্রন্থসমূহের মধ্যেও তো মহান আল্লাহ এই কথাটি বর্ণনা করেছিলেন যে, الْقَتْلُ أَنْفَى لِلْقَتْلِ অর্থাৎ হত্যা হত্যাকে বাধা দেয়, কিন্তু কুর’আনুল হাকীমের মধ্যে অত্যন্ত বাকপটুতা ও ভাষা অলঙ্কারের সাথে এই বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। অতঃপর বলা হচ্ছেঃ ‘এটা তোমাদের বেঁচে থাকার কারণ। প্রথমতঃ তোমরা মহান আল্লাহ্র অবাধ্যতা থেকে রক্ষা পাবে। দ্বিতীয়ত না কেউ কাউকে হত্যা করবে, আর না সে নিহত হবে। সুতরাং পৃথিবীর বুকে সর্বত্র নিরাপত্তা ও শান্তি বিরাজ করবে। تَقْوَى হচ্ছে প্রত্যেক সাওয়াবের কাজ করা এবং প্রত্যেক পাপের কাজ ছেড়ে দেয়ার নাম।
◾দেখুন তাফসীরে সুস্পষ্ট ভাবে বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে।
"‘সম-অধিকার’ আইন এবং এর তাৎপর্য মহান আল্লাহ বলেন, হে মু’মিনগণ! প্রতিশোধ গ্রহণের সময় ন্যায় পন্থা অবলম্বন করা তোমাদের ওপর অবধারিত তথা ফরয করে দেয়া হয়েছে। অতএব স্বাধীন ব্যক্তির পরিবর্তে স্বাধীন ব্যক্তি, দাসের পরিবর্তে দাস এবং নারীর পরিবর্তে নারীকে হত্যা করবে। এ ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করবে না। যেমন সীমালঙ্ঘন করেছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা। তারা মহান আল্লাহ্র নির্দেশ পরিবর্তন করে ফেলেছিলো।’ এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ এই যে, অজ্ঞতার যুগে বানু নাযীর ও বানু কুরাইযা নামক ইয়াহুদীদের দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বানু নাযীর জয়যুক্ত হয়। অতঃপর তাদের মধ্যে এ কথার চালু হয় যে, যখন বানু নাযীরের কোন লোক বানু কুরাইযার লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে বানু নাযীরের ঐ লোকটিকে হত্যা করা হবে না। বরং রক্ত পণ হিসেবে তার নিকট হতে এক ওয়াসাক অর্থাৎ প্রায় একশ’ আশি কেজি খেজুর আদায় করা হবে। আর যখন বানু কুরাইযার কোন লোক বানু নাযীরের কোন লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে তাকেও হত্যা করা হবে এবং রক্তপণ গ্রহণ করা হলে দ্বিগুণ অর্থাৎ দুই ওয়াসাক খেজুর গ্রহণ করা হবে। সুতরাং মহান আল্লাহ এই আয়াতের মাধ্যমে অজ্ঞতার যুগে ঐ জঘন্য প্রথাকে উঠিয়ে দিয়ে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশ দেন। ইমাম আবূ মুহাম্মাদ ইবনে আবি হাতিম (রহঃ) এর বর্ণনায় এই আয়াত অবতীর্ণের কারণ এটাও বর্ণনা করা হয়েছে যে, ‘আরবের দু’টি গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিলো। ইসলাম গ্রহণের পর তারা পর¯পরে প্রতিশোধ গ্রহণের দাবীদার হয় এবং বলে, আমাদের দাসের পরিবর্তে তাদের স্বাধীন ব্যক্তিকে হত্যা করা হোক এবং আমাদের নারীর পরিবর্তে তাদের পুরুষকে হত্যা করা হোক। তাদের এই দাবি খণ্ডনে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এই হুকুমটিও মানসূখ। কুর’আন মাজীদ ঘোষণা করেঃ النفس بالنفس অর্থাৎ প্রাণের পরিবর্তে প্রাণ। সুতরাং প্রত্যেক হত্যাকারীকে নিহত ব্যক্তির পরিবর্তে হত্যা করা হবে। স্বাধীন দাসকে হত্যা করুক বা এর বিপরীত পুরুষ নারীকে হত্যা করুক বা এর বিপরীত। সর্বাবস্থায় এই বিধানই চালু থাকবে।"
◼ তাহলে আমরা বুঝলাম যে ইসলাম বিরোধীরা কখনো তাফসীর সহ কুরআন পড়ে নাই। খ্রিষ্টানদের উইকি ইসলাম থেকে কপি মেরে মেরে চলে। জার্মান নাস্তিকের ওয়েবে সব জায়গায় ইবনে কাসীরের তাফসীর কিন্তু তা কপি করে লেখা। যার কারণে তারা হাদিস বিষয়ে ইবনে কাসীরের জবাবটি পড়ে নি। ইবনে কাসীর তাদের জবাব দিয়ে গেছে অনেক আগেই।
জাহেলি যুগে, অজ্ঞতার যুগে বানু নাযীর ও বানু কুরাইযা নামক ইয়াহুদীদের দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বানু নাযীর জয়যুক্ত হয়। অতঃপর তাদের মধ্যে এ কথার চালু হয় যে, যখন বানু নাযীরের কোন লোক বানু কুরাইযার লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে বানু নাযীরের ঐ লোকটিকে হত্যা করা হবে না। আর এই প্রথাকে আল্লাহ নাকচ করে প্রাণের বদলে প্রাণ যাবে বলে দিলেন। যদিও মতভেদ রয়েছে কিন্তু কুরআনের আয়াত দ্বারা হানাফি মাযহাবের মত গ্রহণযোগ্য। ইবনুল মুনজির (রহঃ) বলেন যে, এটাই সর্বাপেক্ষা সঠিক মত। বাকি অনুগ্রহের ব্যাপার।
জাহেলি যুগে, অজ্ঞতার যুগে বানু নাযীর ও বানু কুরাইযা নামক ইয়াহুদীদের দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে বানু নাযীর জয়যুক্ত হয়। অতঃপর তাদের মধ্যে এ কথার চালু হয় যে, যখন বানু নাযীরের কোন লোক বানু কুরাইযার লোককে হত্যা করবে তখন প্রতিশোধরূপে বানু নাযীরের ঐ লোকটিকে হত্যা করা হবে না। আর এই প্রথাকে আল্লাহ নাকচ করে প্রাণের বদলে প্রাণ যাবে বলে দিলেন। যদিও মতভেদ রয়েছে কিন্তু কুরআনের আয়াত দ্বারা হানাফি মাযহাবের মত গ্রহণযোগ্য। ইবনুল মুনজির (রহঃ) বলেন যে, এটাই সর্বাপেক্ষা সঠিক মত। বাকি অনুগ্রহের ব্যাপার।
আলহামদুলিল্লাহ,,,
💗 আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুক।



0 Comments