যয়তুন নিয়ে যত কথা!



সূরা নূর পড়ছিলাম, পড়তে পড়তে ৩৫ নম্বর আয়াতে এসে থামলাম।বলা চলে থামতে বাধ্য হলাম।দুনিয়াতে কত ধরণের তেল আছে।কিন্তু সব বাদ দিয়ে আল্লাহ কেন যায়তুন তেলের উপমা দিলেন?
তাছাড়া সূরা ত্বীনেও এই একই যায়তুনের নামে শপথ করেছেন!
.
সূরা নূরের আয়াতটির দিকে লক্ষ্য করুন-
"আর এ প্রদীপটি যায়তুনের এমন একটি মুবারক গাছের তেল দিয়ে উজ্জ্বল করা হয়, যা পূর্বেরও নয়,পশ্চিমেরও নয়।"[সূরা আন-নূর:৩৫]
.
স্বাভাবিকভাবেই যায়তুন নিয়ে আমার কৌতূহল সৃষ্টি হলো।এরপর অনুসন্ধান করে যা পেলাম তা রীতিমত বিস্ময়কর। তারই কিছু অংশ সংক্ষেপে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
...
প্রথমত যায়তুন সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় তেল হিসেবে।যাকে আমরা অলিভ অয়েল নামে চিনি।
এটি সবচেয়ে বিশুদ্ধ তেল।প্রায় সময়ই দেখা যায় ডাক্তাররা রান্নার কাজে এই তেল ব্যবহারের জন্য বলে থাকেন।বাজারে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল নামে একটা তেল পাওয়া যায় যা ডায়েটকারীদের জন্য খুবই উপকারী।
এই তেল খাওয়া যেতে পারে,খাবার তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।সুগন্ধি তৈরিতে এর ব্যবহার আছে।এটা শরীরে ব্যবহার করা যেতে পারে আবার জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।ভাবতে পারেন একটি তেলের কত কাজ!
.
প্রতি ১০০ গ্রাম যায়তুনে পাওয়া যায় ১১৫-১৪৫  ক্যালরি।যায়তুনে রয়েছে ১১-১৫% ফ্যাট এবং এর ৭৪% হলো অলিক এসিড।
আর অলিক এসিডের কার্যকারীতা নিশ্চই জানা আছে।
অলিক এসিড ইনফ্লামেশন কমায়,হৃদ রোগের সম্ভাবনা কমায় এবং ক্যান্সার এর সাথেও লড়তে পারে!
.
তাছাড়া যায়তুন ভিটামিন-ই,আয়রন(লোহিত রক্ত কণিকার জন্য প্রয়োজনীয়),কপার(হৃদ রোগ কমায়),ক্যালসিয়াম এবং সোডিয়ামেরও ভালো উৎস।
.
লিভারের রোগীদের জন্য এটা অনেক উপকারী।
যায়তুনে অনেক এন্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে।যেমন,অলিনলিক এসিড লিভার ড্যামেজ কমায়।

যায়তুনে বিদ্যামান এন্টিওক্সিডেন্ট ক্রোনিক ডিজিজ,হার্ট ডিজিজ এবং ক্যান্সারের রিস্ক কমায়।

কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকারক।
যায়তুন কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে এবং এলডিএল কোলেস্টেরলকে অক্সিডেশন থেকে রক্ষা করে।
.
দেখা গেছে যে,পশ্চিমা দেশগুলো থেকে মধ্যপ্রাচ্যে ক্যান্সার তুলনামূলক কম আর এর কারণ হলো যায়তুনের বেশি ব্যবহার হয় এই অঞ্চলে।মনে করা হয় যে যায়তুন ক্যন্সার রিডিউস করতে পারে।
...
তাহলে দেখলেনতো যায়তুনের(olive) এর কার্যকারীতা?আল্লাহ এমনি এমনি যায়তুনের নামে শপথ করেননি।যায়তুনের এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্য গুলো তাকে অন্যান্য ফল থেকে আলাদা করেছে।
কত নিপুণ সেই স্রষ্টা যিনি যায়তুনের মতো ফল সৃষ্টি করেছেন।
.
সবশেষে যায়তুন সম্পর্কে রাসূল ﷺ এর একটি হাদীস শুনে নেই-
"উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যায়তুন তেল দিয়ে রুটি খাও ও তা দেহে মাখো। কারন তা বরকতপূর্ণ গাছ থেকে নির্গত হয়।"[ইবনে মাজাহ:৩৩১৯]
.
— নাবিল হাসান

Post a Comment

0 Comments