কুরআন অনুযায়ী আকাশ কি কঠিন পদার্থ!? 🖋Author:- Aminur Rashid
__________________________________________________________________________________________________________________
.
[ বিঃদ্রঃ দ্বীনি ভাইদের সাহয্য নেওয়া হয়েছে তাদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি ]
.
আজ ভোর সকলে সাজিদ নীল আকাশের নিচে খোলা মাঠে সবুজ ঘাসে মুক্ত বাতাসের খূঁজে হাঁটছে এমন সময় রবির সাথে দেখা হলো নিলয় বলতে লাগলো।,,,,,
নিকয়: কিরে তুই নাকি রবি ব্রেণওয়াশ করেছিস ?
সাজিদ: না ওয়াশ করতে পারি নি গোবরে ভরপুর হা হা হা।
নিলয়: মানে ?
সাজিদ: মজা করে বললাম আরকি।কোথায় যাচ্ছিস?
নিলয়: এই তো যাচ্ছি দরজা খূঁজতে সিঁড়ি খূঁজতে হা হা হা।
সাজিদ: মানেটা বুঝলাম না ?
নিলয়: কেনো আমি দরজা খূঁজছি আকাশের আর আকাশ ছাদের খূঁজে আর ছাদটা খুবি শক্ত তাই ছাদকে পিলার ছাড়াই আমরা দেখতে পাই।ছাদটা এতো শক্ত এতো শক্ত যে ছাদে কোন ফাটল নাই।সেই ছাঁদ আবার সাতটা ভাগে বিভক্ত হা হা হা।
[ সাজিদের বুঝতে বাকি রইলো না সে কি বলতে চাচ্ছে ]
সাজিদ: জিলেপির মতন কথাকে না পেঁচিয়ে সুজাসুজি বল কি বলতে চাচ্ছো।
নিলয়: কি আর বলব আমি যা বললাম তা কুরআন থেকেই পাওয়া হা হা হা।হস্যকর না ?
সাজিদ: দাঁড়িয়ে কথা না বলে চল সামনের চা ওয়ালা ভাইয়ার কাছে যাই।চা খেতে খেতে না হয় আলাপ করা যাবে।
নিলয়:হুম চলো।
[ চা আসলো সাজিদ চায়ে চুমুক দিয়ে বলতে লাগল ]
সাজিদ: কি জেনো বলতে ছিলি এবার বল।
নিলয়: বলতে বলতে শেষ করা যাবে না।
সাজিদ: বলতে থাক একসময় নিশ্চই শেষ হবে।
নিলয়: কুরআনে আকাশ নিয়ে অনেক রূপকথার গল্প বানানো হয়েছে।এসব বলতে বলতে লিষ্ট হয়ে যাবে।
সাজিদ: বললাম তো সময় ব্যায় না করে বলতে থাক।
নিলয়: কুরআন অনুযায়ী,,,
১) আকাশ ছাঁদ।_(Quran 21:32)
২) আকাশে ফাটল নেই।_(Quran 67:3)
৩) আকাশ সাত ভাগে বিভক্ত ।_(Quran 65:12)
৪) আকাশে কোন পিলার নাই।_(Quran 13:2)
৫) আকাশে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।_(Quran 78:19) ৬) আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে।_(Quran 77:9)
৭) আকাশের দরজা দিয়ে চলাচল করা যাবে_(Quran 15:14)
৮) আকাশের ছিদ্র নেই।_(Quran 50:6)
৯) আকাশ একদিন কাগজের মতন গোটিয়ে নেওয়া হবে।_(Quran 21:104)
১০) আকাশকে ধরে রাখা হয়েছে যাতে পৃথিবীর উপর না ভেঙ্গে পড়ে।_(Quran 22:65)
১১) আকাশের খন্ড পৃথিবীতে পড়বে।_(Quran 34:9)
১২) আকাশকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেলবেন।_(Quran 17:92)
◼ তাই নির্ভুল ভাবেই বলা যায় কুরআন অনুযায়ী আকাশ শক্ত ◼
কুরআন থেকে আকাশ সম্পর্কে এই এতোগুলি SCIENTIFIC ERROR পাওয়া যায়।
সাজিদ: আচ্ছা এতো গুলি রেফারেন্স দিয়ে তুই কি প্রমাণ করতে চাচ্ছিস ?
নিলয়: প্রমান করতে চাচ্ছি কুরআন অনুযায়ী আকাশ কঠিন পদার্থ।
সাজিদ: OK যেহেতু তোমার জবাব পাওয়ার এতো ইচ্ছা তাহলে তা পূরণ করাও আমার দায়িত্ব।আমি এক এক করে প্রত্যাক বিষয়ে আলোচনা করব।বুঝেছো।
নিলয়: হুম।
সাজিদ: তোমার ১ম অভিযোগ
১) আকাশ ছাঁদ।_(Quran 21:32)
আসো আমরা দেখে নেই আয়াতে কি বলা আছে,,, وَجَعَلْنَا السَّمَاءَ سَقْفًا مَحْفُوظًا ۖ وَهُمْ عَنْ آيَاتِهَا مُعْرِضُونَ
আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি; অথচ তারা আমার আকাশস্থ নিদর্শনাবলী থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখে।
(সূরাঃ আম্বিয়া, আয়াতঃ ৩২)
দেখো আল্লাহ সুবাহানু তায়ালা বলেছেন "আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি" আল্লাহ নিজেই বলে দিয়ে এমন ছাদ যেটা হলো সুরক্ষিত ছাদ।আর এই ছাদ দিয়ে কখনো কঠিন পদার্থ বুঝায় না।কুরআনে বলা নেই "আমি আকাশকে ঘড়-বাড়ীর ছাদ করেছি" আমরা জানি ছাদ অনেক রকমের হয় যেমন ছনের,বাঁশের,ইটের,মাটির Right ?
নিলয়: হুম।
সাজিদ: এই আকাশের ছাদ হলো সুরক্ষার ছাদ।কি থেকে সুরক্ষা দেয় আকাশ তা বিজ্ঞান আমাদের বলে দেয়। পৃথিবীর আকাশের বায়ু মন্ডল
মহাজাগতিক অনেক ক্ষতিকর বিষয় যেমন
আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মিসহ আরও অন্যান্য
অনেক ক্ষতিকর পদার্থকে পৃথিবীতে আসতে
বাঁধা প্রদান করে। বায়ুমন্ডল একটি গ্যাসের
স্তর যার 78% নাইট্রোজেন, 21% অক্সিজেন,
0.9% আর্গন, 0.03% কার্বন ডাই অক্সাইড এবং
অবশিষ্টাংশ বিভিন্ন ধরনের গ্যাস।
পৃথিবীর আকাশের বায়ুমন্ডলের কারনে
প্রায় সকল উল্কাপিন্ড পৃথিবীতে
পৌছানোর আগেই তা বায়ুমন্ডলের
সংস্পর্শে এসে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তাছাড়া
সূর্য থেকে বেরিয়ে আসা বিদ্যুৎ-চুম্বকীয়
বিকিরণ, তেজস্ক্রিয় রশ্মি, অতি বেগুণী
রশ্মি যা ঘন্টায় 900000 মাইল বেগে
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করে। যদি সেই
মহাজাগতিক রশ্মি, আয়ন এবং ইলেকট্রন
কণা যদি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে
ভূপৃষ্ঠে পৌছতে পারে তবে উদ্ভিদজদৎ,
প্রাণীজগৎ এর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হতো।
কিন্তু বায়ুমণ্ডলীয় স্তরগুলো সূর্য থেকে
আগত ক্ষতিকর রশ্মি ও অণু কণাগুলোকে
বাধা প্রদান করে।
এই কারণে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন "আমি আকাশকে সুরক্ষিত ছাদ করেছি" যা আমাদের সুরক্ষা করছে ক্ষতি থেকে। বুঝতে পরেছো নিলয় ?
নিলয়: হুম বাকি গুলি ?
সাজিদ: এক এক করে সব বলব।
নিলয়: আচ্ছা।
সাজিদ: তোমার ২য় অভিযোগ
২) আকাশে ফাটল নেই।_(Quran 67:3)
প্রথমে আসো আয়াতে কি বলা আছে দেখে নেই,,,
" الَّذِي خَلَقَ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا ۖ مَا تَرَىٰ فِي خَلْقِ الرَّحْمَٰنِ مِنْ تَفَاوُتٍ ۖ فَارْجِعِ الْبَصَرَ هَلْ تَرَىٰ مِنْ فُطُورٍ
অনুবাদঃ তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি?
(সূরাঃ আল মুলক, আয়াতঃ ৩)
এখান আসলে ফাটল দিয়ে কি বুঝিয়েছে তা জানতে হবে।এখানে ফাটল বা ( فُرُوجٍ ) এই শব্দটিকে তাফসিরে আহসানুল বায়ান সহ আরও অনেক স্কলার ত্রুটি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।বেদের বিষয়কে তোমরা সংস্কৃত দিয়ে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করো তবুও সক্ষম হয় না।তাই আমি বলব কোন ধর্মগ্রন্থকে ভুল প্রমাণের জন্য সেই ধর্মের মূল টেক্সেট বুঝতে হবে।বেদের বেলায় সংস্কৃত ঠিক।তবে দুঃখের বিষয় হলো বেদের ভুল গুলোকে সংস্কৃত দ্বারাও খন্ডন করা যায় না।সে যাইহোক, তাহলে বুঝতে পেরেছো ? এখানে "ত্রুটি" অর্থটাই যুক্তি-যুক্ত।বুঝতে পেরেছো ?
নিলয়: হুম,পরের টায় যাও।
সাজিদ: তোমার ৩য় অভিযোগ
৩) আকাশ সাত ভাগে বিভক্ত ।_(Quran 65:12)
প্রথমত আমরা মহাবিশ্ব নিয়ে সব কিছু জেনে ফেলি নি অনেক কিছু অজানা রয়েছে বিজ্ঞানেরকাছে।সাত আসমান দিয়ে আল্লাহ সুবাহানু তায়ালা কি বুঝিয়েছেন তা আল্লাহই ভলো জানেন।আমাদের মহাকাশ-মহাবিশ্ব নিয়ে এখন সব কিছু জানা হয় নি।তবুও বলি
দৃশ্যমান মহাবিশ্ব ও এর বাইরের অংশ সকল কিছুকে বিবেচনায় এনে তুর্কী মহাকাশবিজ্ঞানী ড. হালুক নুর বাকি(Haluk Nur Baki) সমগ্র মহাবিশ্বকে ৭টি স্তর বা অংশে বিভক্ত করেছেন। এই স্তরগুলো হচ্ছেঃ
১. মহাশূন্যের যে ক্ষেত্র সৌরজগত দ্বারা গঠিত তা প্রথম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
২. সম্প্রতি ‘মিল্কিওয়ে’ বা আকাশগঙ্গার চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। আমাদের ছায়াপথের এই বিস্তৃত ক্ষেত্রটি দ্বিতীয় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৩. ছায়াপথসমূহের ‘Local Cluster’ মহাকাশীয় ক্ষেত্র তৃতীয় আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৪. ছায়াপথসমূহের সমন্বয়ে গঠিত মহাবিশ্বের কেন্দ্রীয় চৌম্বক ক্ষেত্র চতুর্থ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৫. অতি দূর থেকে আগত আলোকতরঙ্গের উৎসসমূহের প্রতিনিধিত্বকারী মহাজাগতিক বলয় পঞ্চম আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
৬. মহাবিশ্বের প্রসারমান ক্ষেত্র ষষ্ঠ আসমানের প্রতিনিধিত্ব করে।
আসমানের এই স্তরসমূহ অকল্পনীয় স্থান জুড়ে আছে। প্রথম আসমান স্তরের পুরুত্ব আনুমানিক ৬.৫ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। দ্বিতীয় স্তর তথা আমাদের ছায়াপথের ব্যাস হল ১৩০ হাজার আলোকবর্ষ। তৃতীয় স্তরের বিস্তার ২ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। চতুর্থ স্তরের ব্যাস ১০০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ। পঞ্চম স্তরটি ১ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। ষষ্ঠ স্তরটি অবস্থিত ২০ বিলিয়ন আলোকবর্ষের দূরত্বে। এ কথা বলা বাহুল্য যে, সপ্তম স্তরটি বিস্তৃত হয়ে আছে অসীম দূরত্ব পর্যন্ত। [ http://www.ghanaweb.com/GhanaHomePage/religion/Qur-anic-Commentary-Analysis-through-the-Lens-of-Modern-Science-4-315276 ]
কুরআন হলো আল্লাহর কালাম যা হলো সবচেয়ে বড় প্রমাণ বিজ্ঞানের সকল বিষয় দিয়ে কুরআনকে যাচাই করা খুবি বোকার মতন কাজ।কারণ কুরআন নিজেই একটা "ফ্যাক্ট" তাই সাত আসমান নিয়ে এমন অভিযোগ আসলেই বোকামি বৈ কিছু নয়।
নিলয়: না না না এটা হবে বায়ুমন্ডল এবার বলো বায়ুমন্ডল কি সাতটি ?
সাজিদ: আরবী "سَمَ" থাকলে হতো বায়ুমন্ডল কিন্তু কুরআনে (اَسَّماَ) ব্যাবহার হয়েছে।যা দিয়ে সাত আসমান পর্যন্ত বুঝায়।যেমন পবিত্র কুরআন বলে,
وَلَقَدْ زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَجَعَلْنَاهَا رُجُومًا لِلشَّيَاطِينِ ۖ وَأَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابَ السَّعِيرِ
বাংলা অনুবাদঃ আমি সর্বনিম্ন আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুসজ্জত করেছি; সেগুলোকে শয়তানদের জন্যে ক্ষেপণাস্ত্রবৎ করেছি এবং প্রস্তুত করে রেখেছি তাদের জন্যে জলন্ত অগ্নির শাস্তি।
(সূরাঃ আল মুলক, আয়াতঃ ৫)
দেখো এখানে "আসসামা" বলা তাই এখানেও বায়ুমন্ডল ধরা যাবে না।বুঝলে ?
নিলয়:হুম,পরেরটায় যাও।
সাজিদ: তোমার ৪র্থ অভিযোগ
৪) আকাশে কোন স্তম্ভ নাই।_(Quran 13:2)
তুমি বললে যে এটা দিয়ে আকাশকে শক্ত বুঝিয়েছে।আসলে তোমাকে বুঝতে হবে তখনকার সময় মানুষের আকাশ নিয়ে কি ধারনা ছিলো।তখন কার সময়ে মানুষরা ভাবতো আকাশ শক্ত আর সেটার আছে স্তম্ভ এমন কি কুরআনের আগে আসা বাইবেলে বলে আকাশের স্তম্ভ আছে।সেই সময়ে মানুষ যে ভুল ভাবতো সেই ভুলি বাইবেল করেছে।বাইবেল বলে,,,
"তিনি[ঈশ্বর] দুনিয়াকে তার জায়গা থেকে নাড়া দেন, তার #থামগুলোকে কাঁপিয়ে তোলেন।”
[বাইবেল, ইয়োব(আইয়ুব/Job) ৯:৬ {কিতাবুল মোকাদ্দস, বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি অনুবাদ}]
“He shakes the earth from its place so that its #pillarstremble.”
[ Job 9:6; Holman Christian Standard Bible (HCSB) ]
"ভূগর্ভস্থ থামগুলি আকাশকে ধারণ করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঈশ্বর যখন তাদের তিরস্কার করেন তখন তারা ভয়ে চমকে যায় এবং কাঁপতে থাকে।"
[বাইবেল, ইয়োব(Job) ২৬:১১, বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি অনুবাদ]
আর পবিত্র কুরআন সেই সময়ের এবং বাইবেলের কথাকে কে নাকচ করলো এবং বলল,
"আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এবং সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত করেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন, নিদর্শনসমূহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সাথে সাক্ষাত সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও।"
(সূরাঃ রা'দ, আয়াতঃ ২)
আশা করি বুঝতে পেরেছো।
নিলয়: [ না পারতে ] হুম,পরেরটায় যাও
সাজিদ: তোমার এক রকমের অভিযোগ ২ টি
৫) আকাশে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।_(Quran 78:19)
৬) আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে।_(Quran 77:9)
এই দুই অভিযোগ এক ধরেনের।
আমাদের বুঝতে হবে সেটা কেয়ামতের সময়।আর কেয়ামতের দিন অনেক কিছুই হবে।
Wormhole এর কথা শুনে নাই। আলবার্ট আইনস্টাইন ও নাথান রোজেন ১৯৩৫ সালে গবেষনা করে দেখেন যে স্থান-কালের অভ্যন্তরে এক প্রকার সেতু ও গহবরের অস্তিত্ত্ব রয়েছে। এই পথসমুহকেই বলা হয় আইনস্টাইন রোজেন সেতু বা ওয়ার্মহোল। তত্ত্বীয়ভাবে এটি এমন একটি সংক্ষিপ্ত গমনপথ, দরজা কিংবা ছিদ্র যা দ্বারা স্থান কালের ভেতর দিয়ে মহাবিশ্বের এক স্থান থেকে দীর্ঘ দূরত্বে অন্য স্থানে ভ্রমন সম্ভব করে। https://en.wikipedia.org/wiki/Wormhole
তাই এই দুইটি অভিযোগ ভুল।বুঝেছো ?
নিলয়: Next,,,
সাজিদ: তোমার ৭ম অভিযোগ
৭) আকাশের দরজা দিয়ে চলাচল করা যাবে_(Quran 15:14)
এটাকেও Wormhole ধরা যাবে আর আমাদের বুঝতে হবে আসসামা বা সাত আসমানের উপরে দরজা রয়েছে আরশ রয়েছে ফেরেস্তারা আশা যাওয়া করে এটা কিন্তু আমাদের বিশ্বাসের ব্যাপার কার সাত আসমানের উপরে দরজা আছে আরশ আছে এসবের কেছে বিজ্ঞান পৌছাতে পারে নি।তাই এই অভিযোগটাও অচল।
নিলয়: [ হাতাশ হয়ে ] তার পর ?
সাজিদ: তোমার ৮ম অভিযোগ
৮) আকাশের ছিদ্র নেই।_(Quran 50:6)
আলহামদুলিল্লাহ এখানেও আল্লাহ এমন শব্দ ব্যাবহার করেছেন যার অর্থ ত্রুটি/ফাটল/ছিদ্র/খুঁত কারণ আয়াতে আরবী ( فُرُوجٍ ) শব্দটি ব্যাবহার হয়েছে।তাই এখানেও খুঁত/ত্রুটি যুক্তি-যুক্ত।বুঝতে পরেছো ?
নিলয়: পরেরটা,,,,,
সাজিদ: তোমার ৯ম অভিযোগ
৯) আকাশ একদিন কাগজের মতন গোটিয়ে নেওয়া হবে।_(Quran 21:104)
এটা আসলে তোমার অজ্ঞতা।প্রথমে দেখে নেই আয়াতে কি বলা হয়েছে,,,
یَوۡمَ نَطۡوِی السَّمَآءَ کَطَیِّ السِّجِلِّ لِلۡکُتُبِ ؕ کَمَا بَدَاۡنَاۤ اَوَّلَ خَلۡقٍ نُّعِیۡدُہٗ ؕ وَعۡدًا عَلَیۡنَا ؕ اِنَّا کُنَّا فٰعِلِیۡنَ ﴿۱۰۴﴾
সেদিন আমরা আসমানসমূহকে গুটিয়ে ফেলব, যেভাবে গুটানো হয় লিখিত দফতর ; যেভাবে আমরা প্রথম সৃষ্টির সুচনা করেছিলাম সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব; এটা আমার কৃত প্রতিশ্রুতি, আর আমরা তা পালন করবই।
এই আয়াত মোটেও বিজ্ঞানের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। হয়তো তুমি বলবে এট কেমন কথা আকাশ কি কাগজ নাকি আর কাগজ তো সমতল তাহলে কি মহাকাশো সমতল?
মূলত বিজ্ঞান নিজেও বলে যে মহাকাশ বা Universe সম্পুর্ন Flat বা বলতে গেলে কাগজের মত।
নিলয়: মানে কোথায় পেলে এমন কথা ?
সাজিদ: নাসার অফিশিয়াল সাইট থেকে। সেখানে বলা আছে,
the geometry of the universe is flat like a sheet of paper
সমগ্র ইউনিভার্স এর ক্ষেত্রমিতি হচ্ছে অনেকটা সমতল কাগজের শিট এর মত।
[ https://map.gsfc.nasa.gov/universe/uni_shape.html ]
.
এখান থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে আমাদের ইউনিভার্স হচ্ছে সমতল। এর কারণ হচ্ছে এই ইউনিভার্স এর ঘনত্ব এখনো Equality তে আছে [ https://map.gsfc.nasa.gov/universe/uni_shape.html ]
নিলয়: আচ্ছা তাহলে সেটা কি গুটিয়ে নেওয়া সম্ভব ?
সাজিদ: এর উত্তরও নাসার ওয়েবসাইট ই দিচ্ছে সেখানে বলা হচ্ছে
The density of the universe also determines its geometry. If the density of the universe exceeds the critical density, then the geometry of space is closed and positively curved like the surface of a sphere.
অর্থঃ ইউনভার্স এর ঘনত্ব এর ক্ষেত্রমিতি নির্ধারন করতে সক্ষম। যদি ইউনিভার্স এর ঘনত্ব চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে ফেলে তাহলে এই ইউনিভার্স এর ক্ষেত্রমিতি Closed এবং সুনিশ্চিতভাবে বাকা হয়ে যাবে বা গুটিয়ে যাবে গোলকের পৃশঠের মত।
এটা কোন থিওরি নয় বরং ফ্যাক্ট। এবং হাদিসে আরও স্পষ্ট এসেছে সেখানে বলা আছে।
আর আল্লাহই ভালো জানেন।
নিলয়: [ হতবম্ভ হয়ে ] তার পরেরটায় যাও।
সাজিদ: তোমার ১০ম ও ১১তম অভিযোগ মূলত একি,,,
১০) আকাশকে ধরে রাখা হয়েছে যাতে পৃথিবীর উপর না ভেঙ্গে পড়ে।_(Quran 22:65)
এখানে তোমাকে মূল কনসেপ্ট বুঝতে হবে।প্রথমে দেখি কুরআনে কি বলা আছে,,,
⦁أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاءَ أَنْ تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ
"তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, যমীনে যা কিছু আছে এবং নৌযানগুলো যা তাঁরই নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণ করে সবই আল্লাহ তোমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন। আর তিনিই আসমানকে আটকিয়ে রেখেছেন, যাতে তাঁর অনুমতি ছাড়া তা যমীনের উপর পড়ে না যায়। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের প্রতি বড়ই করুণাময়, পরম দয়ালু।"
প্রথমত এখানে আটিকে রেখেছেন এর আরবী শব্দটি দেওয়া হয়েছে ( يُمْسِكُ ) যার অর্থ - ধারণ রাখা , আনুগত্যে রাখা , পরিচালিত করা , স্থির , আটকিয়ে রাখা , আয়ত্তে রাখা ইত্যাদি ।
এটা তুমি দেখতে পারো [ Wikitionary - ( يُمْسِكُ ) ] থেকে।
এবার আসি মূল কথায়।মূলত আকাশ পতিত হয়।এটা শুধু কুরআন নয় নাসা ( Nasa ) এর মত ওয়েবসাইটেও বলা হয়েছে যে , The Sky is Falling (Nasa.com /The Sky is Falling)
এখন আকাশের খন্ড দিয়ে নক্ষত্র,উল্কাপিন্ডও বুঝায়।
নিলয়: কিভাবে?
সাজিদ: কারণ আরবী ⦁ ( السَّمَاءَ ) এর অর্থ - আকাশ , স্বর্গ , মহাকাশ , শামিয়ানা
মহাজ্যোতির্ময় ( প্রচুর আলোময় কোন বস্তু ) , আলোকময় , বিশুদ্ধ আগুনে গঠিত , গোলোকধাম , অর্থাৎ এক কথায় মহাজাগতিক কোন নক্ষত্র , ধূমকেতু ইত্যাদি । ( Wikitionary / السَّمَاءَ )
সাজিদ: আর তার পরেরটা আইমিন ১১তম অভিযোগটাও এমন।
১১) আকাশের খন্ড পৃথিবীতে পড়বে।_(Quran 34:9)
এখানেও আকাশের খন্ড দিয়ে ঠিক আগের মতই নক্ষত্র,উল্কা এসব বুঝিয়েছে।
[ নিলয় চুপ করে রয়েছে ]
সাজিদ: তোমার শেষ অভিযোগ
১২) আকাশকে খন্ড-বিখন্ড করে ফেলবেন।_(Quran 17:92)
এই অভিযোগটাও একরোকম।এখানেও খন্ড-বিখন্ড দিয়ে নক্ষত্র,উল্কাপিন্ড পড়বে খন্ড-বিখন্ড হয়ে।বুঝেছো ?
[ নিলয় চুপ ]
সাজিদ: আর কিছু বলার আছে ?
[ নিলয় চুপকরে রয়েছে ]
সাজিদ: তুই এতোটা রেফরেন্স দিয়েও পারলি না প্রমাণ করতে যে কুরআন অনুযায়ী আকাশ কঠিন পদার্থ Right ?
[ নিলয় কিছু বলছে না ]
সাজিদ: কি হলো চুপ কেনো উত্তর দেও।
নিলয়: হুম।
সাজিদ: গুড বয়।তবে আমি বেদের থেকে মাত্র একটা রেফারেন্স দিবো যা থেকে প্রমাণ হবে যে কুরআন অনুযায়ী নয় বেদ অনুযায়ী আকাশ শক্ত।
নিলয়: কিভাবে ?
সাজিদ: বেদ বলে,,,
◼ ATHARVA-VEDA 11/3/11
This earth is the pan for the boiling of rice, and the heaven is its cover.
( Tulsi Ram )
হয়তো তুই এই ঢাকনা দিয়ে কুরআনের ছাদের মতন বুঝাবি কিন্তু আসলেই সেটা করা জ্বালিয়াতী হবে।এখন এই মন্ত্রের জবাব অনেকেই দিতে গিয়ে তারা কুরআনের ছাদের সাথে ঢাকনাকে মিলাতে চেষ্টা করে।অনেক হিন্দুরা এটার জবাব দিতে গিয়ে এসব করে।কিন্তু এসব হলো বড় মাপের জ্বালিয়াতি।
নিলয়: কিভাবে?
সাজিদ: পুরা মন্ত্রটাযদি কেউ পড়ে তাহলেই সে বুঝতে পারবে।পুরা মন্ত্রে বলা হয়েছে,,,
"পৃথিবী হলো চাল সিধ্বের কড়াই এবং আকাশ তার ঢাকনা"
আচ্ছা বলতো নিলয় এখানে কিসের ঢাকনার কথা বলা হয়েছে ? এখানে চাল সিধ্ব করার কড়াইয়ের ঢাকানার কথা বলা হয়েছে।এর মানে হলো পৃথিবী হলো চাল সিধ্ব করার করই এবং আকাশ সেই কড়াইয়ের ঢাকনা।
যদি বেদ বলত "আকাশ ঢাকনা" তবুও মানা যেতো কিন্তু বেদ বলে আকাশ হলো চাল সিধ্ব কড়াইয়ের ঢাকনা।
আর চাল সিধ্ব কড়াইয়ের ঠাকনা কঠিন পদার্থ তা ছোট শিশুও জানে।
এবার আমাকে তুই বল কুরআনের কোথায় বলে "আকাশ হলো তোমাদের ঘড়বাড়ীর ছাদ" ???
যদি কুরআনে এটা বলা হতো তাহলে ভুল হতো কিন্তু কুরআন বলে "সুরক্ষিত ছাদ" আর বেদ বলে চাল সিধ্ব করার কড়াইয়ের ঢাকনা যদি শুধু আকাশকে ঢাকনা বলত তাহলে তাদের উত্তর মানা যেতো কিন্তু বেদ বলে "আকাশ চাল সিধ্ব কড়াইয়ের ঢাকনা"
0 Comments