🖋Author:- Aminur Rashid
____________________________________________________________________________
.
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ
সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার। আজ আলোচনা করব আরেকটি বিষয় নিয়ে। খ্রিষ্টানরা সব সময় চায় কিভাবে যীশুকে ঈশ্বর বানাতে যেখানে কিনা সকল প্রমাণ তথ্য থেকে প্রমাণ হয়
যীশু ঈশ্বর নয়।
তাদের আরেকটি মিথ্যাচার থাকে সেটা হলো ইবনে কাসীরের পৌল নাকি বাইবেলের সেই পৌল।(সহীহ সনদ নেই)
যা নিতান্তই ভুল।
অতঃপর, এখন নতুন দাবী খ্রিষ্টানরা উপস্থাপন করেছে। আর সেটা হলো সূরা ইয়াসির একটি আয়তে ইবনে কাসীর তার ব্যাখ্যায় নাকি বলেছেন পৌলকে সয়ং ঈসা (আঃ) প্রেরণ করেছে। আর অন্যান্য নবীকে আল্লাহ প্রেরণ করেছেন। আর এর থেকে নাকি প্রমাণ হয় যীশু ঈশ্বর।
.
.
.
◾
আসুন দেখে নেই আয়াতটি আর তার ব্যাখ্যা।
.
اِذۡ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلَیۡہِمُ اثۡنَیۡنِ فَکَذَّبُوۡہُمَا فَعَزَّزۡنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوۡۤا اِنَّاۤ اِلَیۡکُمۡ مُّرۡسَلُوۡنَ ﴿۱۴﴾
যখন তাদের কাছে দু’জন রসূল পাঠিয়েছিলাম তখন তারা সে দু’জনকে মিথ্যে ব’লে প্রত্যাখ্যান করল। অতঃপর আমি তৃতীয় আরেকজন দ্বারা তাদের শক্তি বৃদ্ধি করলাম। তারা বলল- আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত হয়েছি। ১৩-১৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে মুহাম্মাদ (সঃ)! তোমার কওমের সামনে তুমি ঐ লোকদের ঘটনা বর্ণনা কর যারা এদের মত তাদের রাসূলদেরকে অবিশ্বাস করেছিল। এটা হলো ইনতাকিয়া শহরের ঘটনা। তথাকার বাদশাহর নাম ইনতায়খাস। তার পিতা ও পিতামহেরও এই নামই ছিল। রাজা ও প্রজা সবাই মূর্তিপূজক ছিল। তাদের কাছে সাদিক, সদূক ও শালুম নামক আল্লাহর তিনজন রাসূল আগমন করেন। কিন্তু এ দুর্বত্তরা তাদেরকে অবিশ্বাস করে। সতুরই এই বর্ণনা আসছে যে, এটা যে ইনতাকিয়ার ঘটনা একথা কোন কোন লোক স্বীকার করেন না।
প্রথমে তাদের কাছে দু’জন নবী আগমন করেন। তারা তাদেরকে অস্বীকার করলে তাঁদের শক্তি বৃদ্ধিকল্পে তৃতীয় একজন নবী আসেন। প্রথম দু'জন নবীর নাম ছিল শামউন ও বুহনা এবং তৃতীয়জনের নাম ছিল বুলাস। তাঁরা তিনজনই বলেনঃ “আমরা আল্লাহর প্রেরিত যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের মাধ্যমে তোমাদেরকে হুকুম করেছেন যে, তোমরা তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদত করবে না।” হযরত কাতাদা ইবনে দাআমাহ (রঃ)-এর ধারণা এই যে, এই তিনজন বুযর্গ ব্যক্তি হযরত ঈসা (আঃ)-এর প্রেরিত ছিলেন। ঐ গ্রামের লোকগুলো তাদেরকে বললোঃ “তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ। তাহলে এমন কি কারণ থাকতে পারে যে, তোমাদের কাছে আল্লাহর অহী আসবে আর আমাদের কাছে আসবে না? হ্যা, তোমরা যদি রাসূল হতে তবে তোমরা ফেরেশতা হতে।” অধিকাংশ কাফিরই নিজ নিজ যুগের রাসূলদের সামনে এই সন্দেহই পেশ করেছিল। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “ওটা এ কারণে যে, তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ দলীল প্রমাণসহ আগমন করতো তখন তারা বলতোঃ মানুষ কি আমাদেরকে হিদায়াত করবে?”(৬৪:৬) অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ তারা বলেছিল- তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ, তোমরা চাচ্ছ যে, আমাদের পিতৃপুরুষরা যাদের ইবাদত করতো তা হতে আমাদেরকে ফিরিয়ে দিবে, সুতরাং আমাদের কাছে প্রকাশ্য দলীল আনয়ন কর।”(১৪:১০) আর এক জায়গায় আছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “তোমরা যদি তোমাদের মত মানুষের আনুগত্য কর তাহলে অবশ্যই তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে।”(২৩:৩৪) আল্লাহ তা'আলা আরো বলেনঃ (আরবী) অর্থাৎ “মানুষকে তাদের কাছে হিদায়াত আসার পর ওর উপর ঈমান আনতে শুধু এটাই বাধা দিয়েছে যে, তারা বলেঃ আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন?”(১৭:৯৪) এই কথা ঐ লোকগুলোও তিনজন নবীকে বলেছিলঃ “তোমরা আমাদের মতই মানুষ। আসলে আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তোমরা মিথ্যা কথা বলছো।” নবীগণ উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ্ খুব ভাল জানেন যে, আমরা তাঁর সত্য রাসূল। যদি আমরা মিথ্যাবাদী হতাম তবে আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই আমাদেরকে মিথ্যা বলার শাস্তি প্রদান করতেন। কিন্তু তোমরা দেখতে পাবে যে, তিনি আমাদের সাহায্য করবেন এবং আমাদেরকে সম্মানিত করবেন। ঐ সময় তোমাদের কাছে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, পরিণাম হিসাবে কে ভাল! যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ “আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। আকাশসমূহে ও যমীনে যা কিছু আছে সবই তিনি জানেন, আর যারা বাতিলের উপর ঈমান এনেছে ও আল্লাহকে অস্বীকার করেছে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত।"(২৯:৫২) নবীগণ বললেনঃ স্পষ্টভাবে পৌছিয়ে দেয়াই শুধু আমাদের দায়িত্ব। মানলে তোমাদেরই লাভ, আর না মানলে তোমাদেরকেই এ জন্যে অনুতাপ করতে হবে। আমাদের কোন ক্ষতি নেই। কাল তোমাদেরকে তোমাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হবে।
.
.
◾
তাফসীরে মধ্যে ইবনে কাসীর যদিও পৌলের কথা উল্লেখ করেছেন তবে তিনি কোথায় বলা হয় নি ঈসা (আঃ) পৌলকে সরাসরি আল্লাহ ছাড়াই নিজেই নবী বানিয়ে প্রেরণ করেছে। বরং ইবনে কাসীর নিজেও বলেছেন।
.
"প্রথম দু'জন নবীর নাম ছিল শামউন ও বুহনা এবং তৃতীয়জনের নাম ছিল বুলাস। তাঁরা তিনজনই বলেনঃ “আমরা আল্লাহর প্রেরিত যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের মাধ্যমে তোমাদেরকে হুকুম করেছেন যে, তোমরা তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদত করবে না।”
.
.
তাহলে বুঝুন খ্রিষ্টানরা কিভাবে মিথ্যাচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
.
আশা করি বুঝেছেন তিনজন কেই আল্লাহ পাঠিয়েছেন।
.
◾এবার বলব এই যে তিনজন নবীর নাম বলা হয়েছে তার কি কোন সনদ আছে!? উত্তর হচ্ছে "না" আমরা জানি ইবনে কাসীর অনেক বর্ণনা দিয়ে থাকেন ইস্রায়েল বর্ণনাও দিয়ে থাকেন। আসলে তিনজন নবীর কথা বলা হলেও তাদের নাম কিংবা তিনজনের মধ্যে একজন হলো পৌল তার কোন সনদ নেই।
.
.
এই বিষয়ে আহসানুল বয়ান,,,
.
اِذۡ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلَیۡہِمُ اثۡنَیۡنِ فَکَذَّبُوۡہُمَا فَعَزَّزۡنَا بِثَالِثٍ فَقَالُوۡۤا اِنَّاۤ اِلَیۡکُمۡ مُّرۡسَلُوۡنَ ﴿۱۴﴾
ওদের নিকট দু’জন রসূল পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু ওরা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলল; তখন আমি তাদেরকে তৃতীয় একজন দ্বারা শক্তিশালী করেছিলাম এবং তারা বলেছিল, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের নিকট প্রেরিত হয়েছি।’ [১]
[১] উক্ত তিন জন রসূল কে ছিলেন? মুফাসসিরীনগণ তাঁদের বিভিন্ন নাম বর্ণনা করেছেন। কিন্তু নামগুলি কোন সহীহ সনদ দ্বারা প্রমাণিত নয়। কোন কোন মুফাসসিরের ধারণা যে, তাঁরা ঈসা (আঃ)-এর দূত ছিলেন, যাঁদেরকে তিনি আল্লাহর আদেশে আন্ত্বকিয়া নামক গ্রামে দাওয়াত ও তবলীগের জন্য পাঠিয়েছিলেন।
.
.
.
◾অতএব,, আমরা সুস্পষ্ট বুঝতে পারলাম তিনজন নবীকে পাঠিয়েছেন আল্লাহ তার পরে ঈসা (আঃ) তাদের অন্য গ্রামে পাঠিয়েছেন। আর আমরা এটাও বুঝলাম যে তিনজনের নাম আসলে সহীহ সনদ অনুযায়ী প্রমাণিত নয়। তাই মিথ্যা বলে বিভ্রান্ত করে কোন লাভ নেই। তিনজনই বলেছে তারা আল্লাহ প্রেরিত এবং আল্লাহর ইবাদত করতে। খ্রিষ্টানদের বলব মিথ্যা আকাঙ্খা বাদ দিন। আমি আবারো ধন্যবাদ......
.
.
وَ مِنۡہُمۡ اُمِّیُّوۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ الۡکِتٰبَ اِلَّاۤ اَمَانِیَّ وَ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا یَظُنُّوۡنَ ﴿۷۸﴾
আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে।
(Quran 2:78)
0 Comments